শরয়ি আলোকে কাফন-দাফন – কিভাবে করবেন?

  • শরয়ি আলোকে কাফন-দাফন
  • লেখক : মুফতি আরিফ মাহমুদ
  • প্রকাশনী : মাকতাবাতুল ক্বলব
  • বিষয় : ইসলামি বিবিধ বই
  • পৃষ্ঠা : 176, কভার : পেপার ব্যাক
  • ভাষা : বাংলা

পরম করুণাময় অসীম দয়াময় আল্লাহর নামে শুরু করছি। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি মহাজ্ঞানী, সর্বশক্তিমান, চিরঞ্জীব, অবিনশ্বর, মহাশ্রোতা, মহাদ্রষ্টা। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই। তিনি এক ও অদ্বিতীয়; তার কোনো শরিক নেই। ঘোষণা করছি তাঁর পূর্ণ মহিমা-মাহাত্ম্য। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসুল। আল্লাহ রহমত বর্ষণ করুন আমাদের সরদার মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর, যাকে তিনি করেছেন সমগ্র মানবজাতির সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা। তার পরিবার ও সাহাবার ওপরও বর্ষণ করুন দয়ার বারিধারা।

মৃত্যু নির্ধারিত। মৃত্যু অবধারিত। এ থেকে পালাবার কোনো পথ নেই; কোনো সুযোগ নেই। মুমিন-বান্দার জন্য এই মৃত্যু আরও গুরুত্বপূর্ণ জরুরি ও তাৎপর্যবহ; মৃত্যুর মাধ্যমেই তার সাক্ষাৎ হয়, মিলন ঘটে পরম প্রিয় প্রভুর সাথে। মুমিনের জন্য মৃত্যু হচ্ছে একটি সাঁকো, যা অতিক্রম করে সে মিলিত হবে পরম প্রিয় প্রভুর সাথে; তাই মৃত্যুক্ষণ থেকে শুরু করে দাফন-পরবর্তী প্রতিটি অনুক্রম অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শরিয়াতসম্মতভাবে হওয়া জরুরি। যেন প্রভুর সাথে তার সাক্ষাৎ তাঁর ইচ্ছানুযায়ী সম্পন্ন হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এসব বিষয়ের শরয়ি বিধি না-জানার নিমিত্ত আমরা মৃত ব্যক্তির সাথে সুন্নাহ-বিরোধী আচরণ করে নিজেরাও যেমন গুনাহগার হচ্ছি তাকেও আজারের সম্মুখীন করছি।

সুতরাং মৃতব্যক্তির সাথে কীরূপ হবে আমাদের আচরণ, কীরূপ হবে তার কাফন-দাফন এবং দাফন-পরবর্তী সময়ে আমাদের কী করণীয় সে-সম্পর্কে বক্ষ্যমাণ পুস্তিকায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় আলোকপাত করা হয়েছে। যুক্ত হয়েছে অন্তিমশয্যায় বরেণ্য সালাফদের অবিস্মরণীয় কিছু উক্তিমালা।

বক্ষমাণ গ্রন্থনা জানাজা, কাফন-দাফন ও প্রথা প্রচলন বিষয়ক একটি সংকলিত প্রামাণ্য পুস্তক।সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মনীষীদের রয়েছে প্রচুর রচনা। হাদিস ও ফিকহের কিতাবে এসেছে ‘কিতাবুল জানাইজ’ শিরোনামে। রয়েছে বিভিন্ন ভাষার বিভিন্ন পুস্তক-প্রবন্ধ; কিন্তু বাংলা ভাষায় তা অপ্রতুল কিংবা অসম্পূর্ণ। নজরে পড়েছে দু-একটি রচনা-গ্রন্থনা। কিছু লেখায় রয়েছে অপূর্ণ তত্ত্বান্বেষণের ছাপ; রয়েছে ন্যায়বিরুদ্ধ অসত্য তথ্য। কিছু লেখা ইনসাফপূর্ণ; কিন্তু উদ্ধৃতিশূন্য কিংবা আধা-উদ্ধৃতি ও অসম্পূর্ণ তথ্য; আর কিছু লেখা ন্যায়নিষ্ঠ, উদ্ধৃতিপূর্ণ; কিন্তু বিক্ষিপ্ত।

তাই বাংলাভাষীদের সম্মুখে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সংক্ষিপ্ত কিন্তু পূর্ণাঙ্গ ও প্রামাণ্য একটি সংকলন তৈরির মনস্থ করলাম। যেন সাধারণ মানুষ সহজেই তা আয়ত্ত করতে পারে এবং প্রয়োজনে প্রমাণ পেশ করতে পারে।বইটিতে স্থান পেয়েছে আমাদের এই জীবন, অন্তিম জীবন, শেষ সময়ে নিজের এবং অন্যদের কী করণীয় ও বর্জনীয়, জানাজা, কাফন-দাফন এবং উক্ত বিষয়ে জনসাধারণের অজ্ঞতা, সামাজিক কুপ্রথা, কুসংস্কার, বিদআত ও অশুদ্ধি এবং এর সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি। যুক্ত হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের দলিলসিদ্ধ বিবিধ মাসায়িল।

শেষে যুক্ত হয়েছে বিতর্কিত কয়েকটি বিষয় সংবলিত একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিশিষ্ট। সবশেষে রয়েছে খ্যাতিমান সালাফদের মৃত্যু-দর্শন ও অন্তিমশয্যায় তাদের শেষ উক্তি।সংকলন কর্ম ও ফাতাওয়ায় বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছি উপমহাদেশের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ইলমি সাময়িকী মাসিক আল-কাউসার থেকে।

আল্লাহ তাআলা তাদের উত্তম প্রতিদান দান করুন। যেসব মনীষীর রচনা ও ফাতাওয়ার শরণাপন্ন হয়েছি তাদেরকে কবুল করুন। উম্মাহর তরে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াসকে নাজাতের ওসিলা বানিয়ে দিন। বিশেষত যার আগ্রহে এই গ্রন্থনা, প্রকাশক সুহৃদ এইচ এম মাজহার ভাইকে কবুল করুন। আমিন, ইয়া রব্বাল আলামিন। -আরিফ মাহমুদ।

প্রকাশকের কথা

সকল প্রশংসা মহা-মহীয়ান আল্লাহর, যিনি আমার মতো পাপিষ্ঠকে দিয়ে দ্বীনের কাজ নিচ্ছেন। আলহামদুলিল্লাহ।

আমাদের দেশে কাফন-দাফন নিয়ে যে ভুল-ভ্রান্তির প্রচলন রয়েছে সেগুলো থেকে মুসলিম উম্মাহকে হেফাজত করার লক্ষেই মূলত এই বইটি প্রকাশ করা হয়েছে। দাওয়াহ’র বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা নাম মাত্র মূল্যে পৌঁছে দিচ্ছি বাংলাদেশের সর্ব সাধারণ মুসলমান ভাইয়ের দোরগোড়ায়। যে কেউ যেন বইটি পড়ে উপকৃত হতে পারেন।

বইটি পড়ে জানা যাবে, ‘কাফন-দাফনের শরয়ি বিধানসহ জীবনের অন্তিম মূহুর্তের

জন্য আমাদের কীভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করা প্রয়োজন।’

বইটি পড়ে আরও জানা যাবে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাহাবী ও মনীষীগণ মৃত্যু নিয়ে কতটা ফিকির করতেন।

আমরা আশা রাখি, এই বইটি পড়ে আপনি উপকৃত হবেন। ইনশাআল্লাহ। পাশাপাশি দাওয়াহ’র কাজে অংশ নিয়ে অপর ভাইয়ের কাছেও এই বইটির কথা পৌঁছে দিতে পারেন।

আমরা দোআর মুহতাজ। রাব্বে কারীমের দরবারে প্রার্থনার সময় আমাদের ভুলবেন না, আমরা যেন দ্বীনের বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দিতে বইকে একটি মাধ্যম করে নিতে পারি।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই মেহনতকে কবুল করে নিন, আমিন। এইচ এম মাজহার –প্রকাশক

 

Leave a Reply 0

Your email address will not be published. Required fields are marked *