Punnoboti Boi | পুণ্যবতী লেখক আরিফুল ইসলাম – পাঠ প্রতিক্রিয়া!

বই: পুণ্যবতী
লেখক: আরিফুল ইসলাম
প্রকাশনায়: দ্বীন পাবলিকেশন
Review Credit 💕 সিরাজাম বিনতে কামাল
◾প্রাককথন:
___________________
মহীয়সী নারী হিসেবে সাধারণত আমরা চিনি মাদার তেরেসা আর বাংলার বেগম রোকেয়াকে। আমরা আরও চিনি এ’যুগের হলিউড-বলিউড গায়িকা, নায়িকাদের। বিভিন্ন সিরিয়ালের নায়িকাদের কথা আলাদা করে বলার দরকার নেই।

ছোটবেলায় জি.কে বইয়ে কত পড়েছি পৃথিবীর প্রথম অমুক তমুক নারী, বাংলাদেশের প্রথম নারী- এইসব। বা রত্নগর্ভা মায়েদের আমরা চিনলেও রত্নগর্ভা মায়েদের গল্প আমাদের জানানো হয়নি। ইসলামের ইতিহাসের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, মুসলিমদের ইতিহাসে রয়েছে অনেক অনেক মহীয়সী নারীর গল্প। যে গল্পগুলো জানলে আমরা আগে একজন শ্রেষ্ঠ মা, শ্রেষ্ঠ বোন, শ্রেষ্ঠ স্ত্রী, একজন আলেমা, হাফেজা, ফকীহা, মুহাদ্দিসা, মহিলা কবি- সর্বোপরি আল্লাহর সন্তুষ্টিগুজার বান্দী হতে চাইতাম। অথচ, জীবনের অনেক সময় পেরিয়ে যাই এই শব্দগুলোর সাথে আমাদের পরিচয়ই হয় না।

◾বইকথন:
__________________

যখন আমাদের পূর্ববর্তী উত্তম নারীদের সাথে আমাদের পরিচয় হয়না, মুসলিম কন্যা সন্তানদের জানানো হয়না মুসলিম নারীদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। ঠিক এমন-ই একটি সময়ে উদীয়মান লেখক আরিফুল ইসলাম মুসলিম মহিয়সী নারীদের কীর্তিগাঁথা নিয়ে মলাটবন্দী করেছেন বই “পুণ্যবতী”।

বইটিতে আমরা ৩৯ জন মহিয়সী নারীর জীবন-কর্ম সম্পর্কে জানতে পারবো। আমরা জানবো ছোট ছোট কিছু কাজের মাধ্যমেও তারা কিভাবে অমর হয়ে আছেন আমাদের মাঝে। আবার দেখবো নারী হয়েও তাঁরা ইসলামে কত বড় অবদান রেখে গিয়েছেন। পরিচিত হবো সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী নারীর সাথে, জানবো কুরআনে উল্লিখিত নারীর নাম, ইতিহাসের প্রথম নার্স, প্রথম শহিদ, প্রথম শিক্ষিকা, কবি, সেই সময়ের সবচেয়ে জ্ঞানী মহিলা কে ছিলেন! এখানে রয়েছে রত্নগর্ভা মা, প্রেমময়ী স্ত্রী, আল্লাহওয়ালী, মসজিদপ্রেমী নারীর গল্প।

◾বই পাঠ্যানুভূতি:
_______________________

বইটিতে মহীয়সী নারীগণের পূর্ণাঙ্গ জীবনকাহিনী নেই। শুধুমাত্র সকল তাঁদের পরিচয় এক মলাটে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়েছে। বইটি পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। কারণ, আমরা অনেক কাজকে ছোট কাজ মনে করি এতো গুরুত্ব দিই না। কিন্তু বইটা পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে আসলে ছোট বলে কিছু নেই। নেক নিয়তে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইসলামি শরীয়ত অনুযায়ী আপনি যা-ই করেন তা’ই আপনার জন্য সম্মান বয়ে আনবে।
“মহিলাগণের শেষ গোসল করাতেন তিনি” পাঠ পড়ে আমারও ইচ্ছে হচ্ছিলো আমিও মাইয়্যাতের গোসল করাবো। ইন শা আল্লাহ!

কিছু একটা হওয়া নয় বরং কিছু একটা করার মাধ্যমেই আমরা নেককাজে শামিল হতে পারি। নিজের গন্ডির মধ্যে থেকেও আমাদের অনেক কিছু করার আছে- এই বইটি আমাকে তা-ই শেখালো আলহামদুলিল্লাহ! বইটি যত পড়ছিলাম ততই অবাক হচ্ছিলাম। ভাবছিলাম, তাঁদের কাজকর্ম চিন্তাভাবনা আর আমাদের কাজকর্ম চিন্তাভাবনায় আকাশপাতাল তফাৎ।

অত্যন্ত সহজ, প্রাঞ্জল ভাষায়, গুছিয়ে লেখা বইটি সকলের কাছেই সুখপাঠ্য হবে।

Leave a Reply 0

Your email address will not be published. Required fields are marked *