বইয়ের নাম:- অচেনা পথিক
লেখকের নাম:- কাসেম বিন আবুবাকার
প্রকাশক:- নুর-কাসেম পাবলিশার্স
মুল্য:- ১৩০ টাকা
বইয়ের পৃষ্ঠা:- ৮৯
Kasem Bin Abubakar |
গল্পটা মুলত জোবেদা নামের এক মহিলাকে নিয়ে হলেও গল্পের মুল চরিত্রে রয়েছে তার বড় ছেলে আলতাফ । জোবেদার ৩ ছেলে এবং ১ মেয়ে রয়েছে । গল্পের শুরুতেই দেখা যায় জোবেদা ব্লাড ক্যান্সার এ আক্রান্ত । তিনি আর কতদিন বাচবেন তার ঠিক ছিলো না । তার জন্যই তিনি ঠিক করেন যে তিনি তার বড় সন্তানকে বলে দিবেন যে সে আসলে এতদিন যাকে বাবা হিসাবে জানতো সে তার আসল বাবা না । জোবেদার প্রথম স্বামী ছিলো হারুন যে সন্ত্রাসীদের হাতে মারা যায় । আলতাফ তখন ছোট ছিলো যখন তার বাবা মারা যায় । হারুন মারা জাবার পড়ে জোবেদা অনেকটা একা হয়ে পরে কারণ সে তার পরিবারের অমতে গিয়ে হারুন কে বিয়ে করেছিলো । হারুন মারা যাবার পরে তার জীবনে মেসবাহউদ্দিন আসেন । এই গল্পটাতে কিভাবে মেসবাহউদ্দিন জোবেদার জীবনে আসেন কিভাবে তাদের মধ্যে ভালোবাসার সৃষ্টি হয় তা খুব সুন্দর করে বর্ণনা করা হয়েছে । জোবেদা মারা যাওয়ার সময় তার বড় ছেলে কে একটা চিঠি দেই আর বলে যে এই চিঠি যেন জোবেদা মারার যাওয়ার পরে সে পড়ে
। চিঠি টা পড়েই আলতাফ বুঝতে পারে যে সে এতদিন যাকে বাবা বলে জানতা সে তার আসল বাবা না । চিঠিতে হারুন আর জোবেদার ভালোবাসার কাহিনি গুলো সম্পর্কে লেখা ছিলো । ছোট বেলার আবেগ কে মুল্য দিতে গিয়ে সে তার পরিবারের বিরুদ্ধে চলে যায় যার জন্য আজ পযন্ত তার পরিবারের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই । জোবেদার ইচ্ছা ছিলো যে আলতাফ যেন তার নানির কাছে যায় কারণ জোবেদার মায়ের উপর জোবেদার ভাই খুব অত্যাচার করত । এখান থেকেই মুল গল্পের শুরু হয় । গল্পটাতে একেকটা দৃশ্যকাব্য খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে ৷ আলতাফের গ্রামে যাওয়া, সেখানে গিয়ে তার কাছের মানুষ গুলোর সাথে দেখা হওয়া বিষয় গুলো খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই গ্রামে গিয়েই আলতাফের জীবনে নতুন কেউ প্রবেশ করে ভালোবাসার রুপ নিয়ে । গল্পটা সত্যিই খুব সুন্দর ছিলো । সামাজিক সুন্দর রোমান্টিক একটা গল্প ছিলো ।
পছন্দের চরিত্র বিশ্লেষণ ঃ
★আলতাফ ঃ আলতাফ একজন আদর্শ সন্তান ছিলো ৷ সে যথেষ্ট ধার্মিক ছিলো এবং সেই সাথে নানা বিষয়ে পারদর্শীও । সে বুদ্ধির সাথে সকল পরিস্থিতি খুব সুন্দর করে সামলে ফেলতো।
★মেসবাহউদ্দিন ঃ এই চরিত্রটা আমার খুব পছন্দের ছিলো । নিজের সন্তান না হলেও সে কখনো আলতাফকে তার অন্য সন্তানের থেকে কম ভালোবাসে নি । আলতাফ আর মেসবাহউদ্দিন এর মধ্যে খুব ভালো একটা সম্পর্ক বিদ্যামান ছিলো ।
★জোবেদা ঃ জোবেদা ছিলো একজন আদর্শ মা । তিনি তার সন্তানকে সঠিকভাবে বড় করেছেন । তবে তিনি জীবনে অনেক ভুল পদক্ষেপ ও নিয়েছেন এবং পরে তা বুঝতেও পেছেন ।
★ আফরোজা ঃ আফরোজা একজন বুদ্ধিমতি মেয়ে । সে একজন ডাক্তার । ভালোবাসা, অভিমান এই সব কিছু নিয়েই তৈরি মিষ্টি একটা মেয়ে সে ।
গল্পে আরো অনেক চরিত্র রয়েছে তবে এই ৪টা চরিত্র আমার বেশি পছন্দের ছিলো ।
পাঠ প্রতিক্রিয়া ঃ এই গল্পটা রোমান্টিক হলেও গল্পে অতিরিক্ত ভাবে কোনো অশ্লীলতা নেই বরং প্রতিটি বিষয়কে খুব সুন্দর করে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে ৷ গল্পটা অনেকটা ইসলামিক গল্পের ধরনের । গল্পটা পড়ে আমার সত্যিই খুব ভালো লেগেছে ৷ গল্পে সব থেকে অদ্ভুত বিষয় ছিলো যে মেসবাহউদ্দিন এর প্রথম স্ত্রী দেখতে হুবহু জোবেদার মতো ছিলেন । অনেকগুলো ভালো বাসার কাহিনি নিয়ে গঠিত সুন্দর একটি গল্প । গল্পটা পড়ে আমি যথেষ্ট মজা পেয়েছি ।
পছন্দের শিক্ষনীয় কিছু লাইন ঃ
১.আপনার পিছনের ইতিহাস আমার জানার দরকার নেই । মানুষ বর্তমান নিয়ে বাচে । অতীত দুঃখ বাড়ায় ।
২.বিয়ের আগে ভালোবাসা (প্রেম করা) ইসলামে নিষিদ্ধ ।
৩. তাকদিরে থাকলে ২ জন যদি ভিন্ন গ্রহেরও হয়, তা হলেও তাদের মিলন হবে । আল্লাহ যার সাথে যার জোড়া রেখেছেন, যে কোনো ঘটনাকে উপলক্ষ করে তাদের বিয়ে হবেই ।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?