Jaddus Salekin | যাদুস সালেকিন : ইসলাহে নফসের পথ ও পাথেয় লেখক : মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান

যাদুস সালেকিন : ইসলাহে নফসের পথ ও পাথেয়
লেখক : মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান
প্রকাশনী : মাজলিসে দাওয়াতুল হক
বিষয় : আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা
পৃষ্ঠা : 360, কভার : হার্ড কভার
আইএসবিএন : 9789843512451, ভাষা : বাংলা

نحمده ونصلي على رسوله الكريم، أما بعد:
অন্তর মানুষের সকল কর্মকাণ্ডের পার্থিব নিয়ন্তা। তার হস্তপদ, চক্ষুকর্ণ ও তাবৎ প্রত্যঙ্গ অন্তরের আজ্ঞাবহ। একজন ভালো ও মন্দ মানুষের পার্থক্য মূলত অন্তঃকরণে। বাহ্যতঃ তারা একই দেহ-কাঠামোর মানুষ, এমনকি সেক্ষেত্রে মন্দ-জন হতে পারে ভালোর চেয়েও উন্নততর। কোনো শুভক্ষণে কারোর মর্মস্পর্শী কথায় অন্তর প্রভাবিত হলে একজন উদ্ধৃত অপরাধী মুহূর্তেই সুমানুষে পরিণত হয়, আবার কোনো দূর্বল মুহূর্তে শয়তানের প্ররোচণায় অন্তর বিপথগামী হলে আজীবনের সুফিও হতে পারে পথভ্রষ্ট।

অন্তরের এই কেন্দ্রীয় ভূমিকার কথা স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণীতেও বিবৃত হয়েছে। তিনি ইরশাদ করেছেন—

ألا وإن في الجسد مضغة إذا صلحت صلح الجسد كله وإذا
فسدت فسد الجسد كله ألا وهي القلب . ‘

জেনে রাখো, শরীরে এমন এক মাংসপিণ্ড রয়েছে, যা সঠিক থাকলে পুরো শরীর সঠিক থাকে এবং নষ্ট হলে পুরো শরীর নষ্ট হয়ে যায়; তা হলো হৃৎপিণ্ড।’ [সহিহ বুখারী: ৫২]

সৃষ্টিগতভাবে মানব-অন্তরে আল্লাহ তাআলা শুদ্ধতা ও বক্রতা উভয়টির যোগ্যতা নিহিত রেখেছেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন—
ونفس وما سواها فألهمها فجورها وتقواها »

“শপথ মানুষের এবং তার, যিনি তাকে সুঠাম করেছেন; অতঃপর তাকে সৎকর্ম ও অসৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন।’ [সুরা শামস: ৭-৮]

এ প্রেক্ষিতে আমাদের করণীয়ও আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন পরবর্তী দু’আয়াতে—
ه قد أفلح من زكاها وقد خاب من دساها .
‘সে-ই সফলকাম হবে, যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করবে। এবং সে-ই ব্যর্থ হবে, যে নিজেক কলুষাচ্ছন্ন করবে।’ [সুরা শামস: ৯-১০]

সুতরাং অন্তরকে শক্তিশালীকরণই সফলতার মূল চাবিকাঠি। খোদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনে একাধিকবার ‘শাকে সদর’-এর ঘটনা ঘটেছে, যার উদ্দেশ্য ছিল অন্তরকে শক্তিশালী করা। সাহাবীদের আত্মিক শুদ্ধতার প্রতি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সস্নেহ নজর ছিল। হযরত আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন—“রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন, ‘বৎস, তুমি যদি সকাল-সন্ধ্যা এমনভাবে কাটাতে পার যে, তোমার অন্তরে কারো প্রতি কোনো রকম বিদ্বেষ নেই, তাহলে তাই করো। অতঃপর বলেন, বৎস, এটি আমার অন্যতম সুন্নাহ। যে আমার সুন্নাহকে জীবিত রাখে, সে মূলত আমাকে ভালোবাসে। যে আমাকে ভালোবাসে, সে জান্নাতে আমার সঙ্গে থাকবে।” [সুনানে তিরমিযী: ২৬৭৮] এখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ একান্ত সাহাবি ও খাদেম হযরত আনাস রাহিমাহুল্লাহকে গুরুত্বপূর্ণ এক আত্মিক গুণের তালিম দিয়েছেন এবং তাকে নিজ সুন্নাহ আখ্যা দিয়েছেন। এভাবে আত্মিক নানা গুণ ও শুদ্ধতার তালিম অসংখ্য হাদিসে আমরা পাই।

ইসলাম যেভাবে মানুষকে দৈহিক বিভিন্ন ইবাদতের হুকুম দিয়েছে, তেমনই আত্মিক ক্ষেত্রেও নানা বিধিনিষেধ দিয়েছে। বহুক্ষেত্রে সে বিধিনিষেধ মান্য করা বাধ্যতামূলক, তথা ফরজ। যেমন অহংকার, হিংসা ও কৃপণতার মতো ব্যাধি থেকে মুক্ত হওয়া এবং ইখলাস, তাফওয়িজ ও সবরের মতো গুণাবলি অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের অপরিহার্য কর্তব্য। সুতরাং আত্মশুদ্ধির সাধনাকে নিছক সৌখিন কোনো বিষয় কিংবা শুধু খানকাওয়ালা বা অতি-উৎসাহীদের কাজ বলে উড়িয়ে দেয়ার যে প্রবণতা আজকাল নানা ঘরানার দ্বীনদার শ্রেণির মধ্যে দেখা যায়, তা বিপদজনক এবং তার কুফলও বিভিন্ন সময় প্রকাশ পেয়ে থাকে।

বড় আলেম ও মুফতি-মুহাদ্দিসও আত্মশুদ্ধির মুখাপেক্ষী। হাকিমুল উম্মত মুজাদ্দিসে মিল্লাত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভি রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘অনেককে দেখা যায় ইলমের ওপর খুব গর্ব করে যে, বড় আলেম হয়ে গেছি। মনে রেখো, নিজেকে মেটানো ছাড়া কিছুই হয় না। মেটানো মানে কিতাবাদি মিটিয়ে দেয়া নয়; বরং নিজেকে এভাবে মিটিয়ে দেয়া যে, আমি কিছুই নই। যতক্ষণ এই ভাব অন্তরে স্থির না হবে, বুঝে নাও তুমি বরবাদ, অযোগ্য; আর কিছু নও।’ [আল-ইলমু ওয়াল উলামা ১৮৭]

আত্মশুদ্ধির অভাবে বড় আলেমও অনেক সময় পদস্খলনের শিকার হয়ে পড়েন। আরও ভয়াবহ ব্যাপার এই যে, আলেমের পদস্খলন প্রায়শঃ একটি সমাজের পদস্খলনের কারণ হয়। কবি বলেন—
إذا كان الغراب دليل قوم + سيهديهم إلى دار الخراب
“কাক যদি কোনো জাতির পথপ্রদর্শক হয়, তবে বিরান বাড়ি ছাড়া আর কোথায়ই বা তারা পৌঁছবে!

এ দৃষ্টিকোণ থেকে জনসাধারণের তুলনায় ওলামায়ে কেরামের আত্মশুদ্ধির প্রয়োজনীয়তা বহুগুণ বেশি। হযরত থানভি রাহিমাহুল্লাহ নবীন আলেমদেরকে ফারেগ হওয়ার পর যথাযথ সময় আত্মশুদ্ধির পেছনে ব্যয় করতে বলেছেন।

শারীরিক ব্যাধির চিকিৎসায় যেমন ডাক্তার প্রয়োজন, তেমন আত্মিক ব্যাধির আরোগ্যেও প্রয়োজন চিকিৎসক। নফস মানুষের চিরশত্রু। যারা নফসকে পরাস্ত করার কৌশল রপ্ত করেছেন, তাদের দিক-নির্দেশনা অনুসরণ ও সাহচর্য অবলম্বন করলে ধীরে ধীরে নিজ নফসও দূর্বল হয়ে পড়ে। এটিই আত্মশুদ্ধির মূল কথা। এ কারণেই আল্লাহওয়ালাগণ সোহবতে সালেহ ও বাইয়াতের প্রতি গুরুত্বারোপ করে থাকেন।

আজকাল উলামা-তলাবার মধ্যে আত্মশুদ্ধি ও সোহবতে সালেহের গুরুত্ব দিন-কে-দিন কমছে। মাদরাসাগুলোতে ইলমের চর্চা ব্যাপকভাবে হলেও সে অনুপাতে হয় না ইসলাহে কলবের চর্চা। ফলে একদিকে যেমন ফারেগীন ছাত্রদের আমলি হালত কাঙ্ক্ষিত মানের না হওয়ায় সমাজের মানুষ তাদের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উপকার পাচ্ছে না, অন্যদিকে মাদরাসার অভ্যন্তরীন পরিবেশ থেকেও ক্রমশ রুহানিয়ত হারিয়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে দুর্নামের বোঝা চাপছে নির্বিশেষে সকল আলেমের ওপর, এমনকি স্বয়ং ইলমে দ্বীনের ওপর। এ অবস্থা থেকে আশু উত্তরণ না ঘটলে এ অঞ্চলের দ্বীনি মাদারেস ও ওলামায়ে কেরামের ভবিষ্যৎ নিয়ে ঘোর শঙ্কা রয়েছে।

উলামা-তলাবাসহ সর্বশ্রেণির মুসলমান ভাইবোনের প্রয়োজন সামনে রেখে ‘যাদুস সালেকিন : ইসলাহে নফসের পথ ও পাথেয়’ গ্রন্থটি বিন্যস্ত করা হয়েছে। এতে আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব ও তার পথ-পন্থা সম্পর্কে অল্পবিস্তর আলোকপাত করা হয়েছে। নফসের হামলা থেকে কেউ-ই নিরাপদ নয়। নফসের কখনও সম্পূর্ণ মৃত্যু হয় না, সাধনার ফলে সে সাময়িক নিষ্ক্রীয় হয় মাত্র। কাজেই পীর ও মুরিদ সকলেরই নফসের ব্যাপারে সতর্ক থাকা কাম্য। আল্লাহ তাআলা সে তওফিক এ গ্রন্থের বিন্যাসকারী ও পাঠক উভয়কে দান করুন। বিশেষত, ওলামায়ে কেরামের দিলে জাগরুক হোক সালাফের মতো তাকওয়া ও রুহানিয়ত, তালিবে ইলমেরা পূর্বযুগের মতো ‘তালিবে ইলম ওয়া আমল’ হয়ে উঠুক, মাদরাসাগুলো হয়ে উঠুক একই সঙ্গে দরসগাহ ও খানকা এবং বক্ষ্যমাণ গ্রন্থখানি কবুল হোক সে লক্ষ্যপানে ক্ষুদ্র প্রয়াস হিসেবে, এ-ই প্রত্যাশা।

الله تعالى على سيدنا محمد وآله وصحبه وبارك وسلم وصلى هذا
বিনীত
(মাওলানা) মাহমূদুল হাসান
৫ আগস্ট ২০২১ ইং।

ভাষা বিন্যাস : কিছু কথা

মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান হাফিযাহুল্লাহর মতো একজন মহীরুহের মূল্যায়ন সহজ কাজ নয়। আকাবিরদের আল্লাহ তাআলা এমন বহুমুখী গুণে ভরে রাখেন যে, পর্যবেক্ষণ যত বাড়ে, কামালাতের নতুন সব দিগন্ত ততই খুলতে থাকে। মুহিউস সুন্নাহ হযরতকে যারা কাছে থেকে দেখেছেন, তারা জানেন, তিনি অন্যদের থেকে কতটা আলাদা।

আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি, আল্লাহ আমাকে এমন একজন মহীরুহের ছায়ায় রেখেছেন। এটি আমার প্রতি আল্লাহ তাআলার অশেষ মেহেরবানী। নয়ত ইনসাফের বিচার করলে আমি এ কাজের যোগ্য কখনোই ছিলাম না। যাদুস সালেকিন : ইসলাহে নফসের পথ ও পাথেয়’ গ্রন্থে আমি ভাষা বিন্যাসের কাজটি করেছি। পাঠকের কাছে ভাষা বিন্যাস পরিভাষাটি হয়ত নতুন। এ কারণে এ বিষয়ে কিছু বলে রাখা ভালো।

যাদুস সালেকিন‘ গ্রন্থটি মুহিউস সুন্নাহ হযরতের বয়ানের আলোকে রচিত। স্বাভাবিকভাবেই বয়ানের ভাষা আর বইয়ের ভাষার মধ্যে যথেষ্ট ব্যবধান রয়েছে। আমি হযরতের বয়ানের ভাষাকে বইয়ের ভাষায় রূপান্তর করেছি। মুহিউস সুন্নাহ হযরত নিয়মিত ওলামা-তলাবার বিভিন্ন মজলিসে বয়ান করেন। এসব বয়ানে সালেকিনদের জন্য জরুরি হেদায়াত থাকে। দেশের ইলমি জগতে মুহিউস সুন্নাহ হযরতের মুসলিহানা কাজের বিরাট প্রভাব রয়েছে। যার কারণে তিনি হয়ে উঠেছেন ওলামায়ে কেরামের অন্যতম প্রধান মুসলিহ, বর্তমান বিশ্বের ইসলাহে উম্মতের অন্যতম রাহবার।

মুহিউস সুন্নাহ হযরতের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে তাযকিয়ার অঙ্গনে। দেশ ও বিদেশের হাজার-হাজার আলেম ও তালেবে ইলম তার হাতে বাইয়াত অথবা তার পরামর্শ মেনে চলেন। প্রতিদিন তার বহু ইসলাহি চিঠির জবাব দিতে হয়। মুতায়াল্লিকীনের প্রতি মুহিউস সুন্নাহ হযরতের শফকত অতুলনীয়। তার মূল্যবান দিক-নির্দেশনায় অনেকের জীবনের মোড় ঘুরেছে, অনেকের জীবন হয়েছে সার্থক।

বলতে দ্বিধা নেই, আল্লাহ তাআলা মুহিউস সুন্নাহ হযরতকে এমন উপস্থাপনা-শক্তি দিয়েছেন, যা সর্বস্তরের শ্রোতাকে মুগ্ধ ও অভিভূত করে। তার বয়ানের তাসির অসাধারণ। হযরতের বয়ান থেকে তার বিস্তৃত অধ্যয়নের বিষয়টি অনুমান করা যায়। তিনি যখন আলোচনার মাঝে মাঝে হাওয়ালা দেন, শায ও নাদের কোনো কিতাব থেকে যখন জরুরি বিষয় তুলে আনেন, শ্রোতারা বিস্মিত না হয়ে পারে না।

মুহিউস সুন্নাহ হযরতের বয়ানে যদি আপনি বসে থাকেন, তাহলে জেনে থাকবেন, কোনো বিষয়ের ওপর মুহিউস সুন্নাহ হযরতের নিজস্ব তাওযিহাত বা নুকতা উদ্ভাবন শ্রোতাদের আরো বেশি বিমুগ্ধ করে রাখে। যেন মিনজানিবিল্লাহ তিনি বলে যাচ্ছেন সমাজ, রাষ্ট্র ও মানুষের রোগ এবং এর প্রতিকারের কথা। সর্বশ্রেণির মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা মুগ্ধ হয়ে তার বয়ান শোনে এবং ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়। আরো আশ্চর্যের বিষয় যে, বয়ানে তিনি কখনো ক্লান্ত হন না। একাধারে সাত-আট ঘন্টা বয়ানের ঘটনাও তার রয়েছে। এছাড়া হযরতের বাককৌশলের কথা তো সর্বজনবিদিত। ভ্রান্ত আকিদা বা ভুল মতবাদের লোকেরা তার সামনে ‘লাজওয়াব’ হয়ে যাওয়ার ঘটনাও রয়েছে প্রচুর।

যাদুস সালেকিন’ গ্রন্থটি এমন প্রায় পাঁচশত ইসলাহি ও দিকনির্দেশনামূলক বয়ানের আলোকে রচিত। বয়ান থেকে রচিত হলেও বইটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুহিউস সুন্নাহ হযরত নিজে দেখেছেন এবং প্রয়োজনীয় সংশোধন ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। পাণ্ডুলিপি চূড়ান্ত হওয়ার পর গ্রন্থটির আদ্যোপান্ত সম্পাদনা করেছেন প্রথিতযশা লেখক মুহিউস সুন্নাহ হযরতের আজাল্লে খলিফা এবং যাত্রাবাড়ি মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা হেমায়েত উদ্দীন হাফিজাহুল্লাহ। তিনি পাঠকপ্রিয় গ্রন্থের কারিগর। আল ইযাফাহ শরহু ইবনে মাজাহ, আহকামে যিন্দেগী, ফাযায়েলে যিন্দেগী, ইসলামী আকীদা ও ভ্রান্ত মতবাদ, ইসলামী মনোবিজ্ঞান, ইসলামী ভূগোল, আহকামুন নিসা তার লেখা অন্যতম গ্রন্থ। আরবি ও বাংলাভাষায় তার বইরচনা একটি যুগপৎ সংযোজন। তিনি তার বহু ব্যস্ততা সত্ত্বেও গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন, হযরতকে এর উত্তম প্রতিদান দান করুন।

যাদুস সালেকিন : ইসলাহে নফসের পথ ও পাথেয় গ্রন্থটিতে আমি হযরতের বয়ান থেকে কেবল ওই বিষয়গুলো গ্রন্থভূক্ত করেছি, যেগুলো ইসলাহে নফস বা আত্মশুদ্ধির সাথে সম্পর্কিত। অন্যান্য বিষয়গুলো অন্য কোনো বিষয়ভিত্তিক গ্রন্থ হিসেবে প্রকাশ করার ইচ্ছা আছে, ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তওফিক দান করুন।

সর্বশেষ কথা, বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি যে মহান ব্যক্তিত্বের মুখনিসৃত বাক্যমালা, তার ইলমি গভীরতা, দূরদৃষ্টি ও আমলি উচ্চতা প্রশ্নাতীত। দ্বীনের কথা উপস্থাপনায় তার দক্ষতা ও কৃতিত্ব প্রসিদ্ধ। যদি এই গ্রন্থ দ্বারা কারো সামান্যতম উপকার হয়, ইসলাহে নফসের খোরাক কিংবা তার জীবনের পাথেয় হয়, তাহলে এটি হবে সেই মহান ব্যক্তিত্বের গুণ ও তাওয়াজ্জুহের কৃতিত্ব। আর যদি গ্রন্থভূক্ত ভাষা বিন্যাসে কোথাও কোনো অসংগতি বা বিচ্যুতি থাকে, তাহলে এটি হবে স্রেফ আমার ত্রুটিজনিত। যথেষ্ট সতর্ক থাকার পরও ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে যাওয়া স্বাভাবিক। সে রকম কিছু পাওয়া গেলে অবশ্যই অবহিত করার অনুরোধ রইলো, ইনশাআল্লাহ পরবর্তী সংস্করণে তা শুধরে নেয়া হবে। ওয়ামা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ।

রিদওয়ান হাসান
দারে মাহমুদ
কাজীরগাঁও, যাত্রাবাড়ি, ঢাকা
১০ অক্টোবর ২০২১ ইং

Leave a Reply 0

Your email address will not be published. Required fields are marked *