বইয়ের নামঃ আঁধার মানবী।
লেখকঃ মাহিন মাহমুদ।
ফটোগ্রাফিঃ উম্মে আয়মান।
রিভিউ লিখেছেন 💕 উম্মে আয়ামান
শব্দঃ ৩৪০
“….আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করে তোমাকে অর্জন করেছি। আজ যখন আমার সকল চাওয়া পূর্ণতা পাচ্ছে,তখন তুমি চলে যেতে চাচ্ছে! তুমি আমাকে ছেড়ে এভাবে চলে যেতে পারো না,প্লিজ!… আমার স্বপ্ন ছিলো আমাদের সংসার হবে সাহাবীদের মতো। তুমি দ্বীনের মেহনত করে ঘর্মক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরবে।আমি তোমার ক্লান্ত পা-দুটো আমার আঁচল দিয়ে মুছে দেবো।স্বান্তনা দিয়ে তোমার সকল ক্লান্তি দূর করব। আমাদের যে সন্তান হবে সে বড় হবে তোমার আদর্শে।….এইযে আমার আদর্শবান স্বামী! চোখ খোলো প্লিজ!চোখ খোলো।তাকাও আমার দিকে।তাকাও না প্লিইজ!!”
আঁধার মানবীর এই লাইন গুলো এখনো আমার হৃদয়কে ছিন্নভিন্ন করে দেয়।কত সবর আর অক্লান্ত চোখের জল পড়েছে আজকের এই দিনটির পূর্ণতা পাওয়ার জন্য।জেরিনের সেই ভার্সিটির প্রথম দিন গুলো থেকে শুরু করে শুধু অপেক্ষা আর অপেক্ষা।জামিল কী পারতো না জেরিনের ডাকে সাড়া দিতে?পারতো সমাজের চোখে সুন্দর একটা জীবন কাটাতে। কিন্তু!সে রবের ভয়ে তাকওয়া অবলম্বন করেছেন।আল্লাহর জন্য এভয়েড করে নাস্তিক বাবার নাস্তিক মেয়েকে আস্তিকে পরিণত করেছেন। ভার্সিটিতে পড়লেই সে আল্ট্রা মর্ডান হয় না।জামীল চেয়েছে তার ফ্রেন্ড সার্কেলের সবাইকে দ্বীনের পথে ফিরিয়ে আনতে। বন্ধুদের ভালোবাসা অর্জনের মাধ্যমে যখন তা পূর্ণতা পেলো।সবাই তার সঙ্গ দিলো তখন বুঝি তার সময় ফুরিয়ে এলো।এই ক্ষণীকের ভুবনে তার সকল কাজের দ্বায়িত্য,ব্যস্ততা শেষ হলো।
•••
লেখক সমাজের বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন তার উপন্যাসে।এই স্বল্প সময়ের ধরণীতে ও আল্লাহর হুকমত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জীবন সুন্দর করার যায়।তার ও বাস্তব প্রমাণ দিয়েছেন।আর সুন্দর পবিত্র,স্বচ্ছ, শুভ্র ভালোবাসা ও মানুষকে পরিবর্তন করতে পারে ঠিক জেরিনের মত। ভালোবাসা কেনো আসে এই ক্ষণীকের ভুবনে! কেনো এই ভালোবাসার জন্য সকল ত্যাগ বরণ করে নিতে ভালো লাগে! নিজেকে পরিবর্তন করতেও ভালো লাগে ভালোবাসার মানুষটির মন অনুযায়ী।তবে,এই ভালোবাসা পবিত্র তখনই হয় যখন সেটা হালালে পরিপূর্ণ হয়।আর হারামের মধ্যে ডুবে থাকলে সেটা ভালোবাসা নয়, টাইমপাসের মত অখাদ্য,কু খাদ্য।
•••
পরিশেষে বলতে চাই।এই উপন্যাসটা যে পড়েনি সে এর মর্ম এতটুকুই বুঝবে না। হৃদয়ের অতলে আঘাত হেনেছে এই উপন্যাস।প্রতিটি চিত্রে তুলে ধরেছেন লেখক ইসলামী শরীয়তের গুরুত্ব।হালালের মাধ্যমে যে অসম্ভব সুখ,শান্তি লুকায়িত। আল্লাহর জন্য ত্যাগ করলে, তিনি অপেক্ষার দিন শেষে প্রাপ্তির খাতায় প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কিছু দেন।
______________________________________