সাইফুল্লাহিল মাসলুল : খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ রাদি. : ইলিয়াস আশরাফ

  • সাইফুল্লাহিল মাসলুল : খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ রাদি.
  • লেখক : ইলিয়াস আশরাফ
  • প্রকাশনী : হাসানাহ পাবলিকেশন
  • বিষয় : সাহাবীদের জীবনী
  • পৃষ্ঠা : 464, কভার : হার্ড কভার
খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ (রাঃ) (english – Khalid Ibn Walid) ইসলামী ইতিহাসের আকাশে উজ্জ্বল অনন্য এক নক্ষত্র। যার বীরত্বে অভিভূত হয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ‘সাইফুল্লাহিল মাসলুল (তথা আল্লাহর উন্মুক্ত তরবারি) উপাধিতে ভূষিত করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে মুসলিম বীর যোদ্ধারা ইসলামের আহ্বান ও আবেদন ছড়িয়ে দিতে, মাজলুমদের সাহায্য করতে এবং জালিমদের উদ্ধত হাত ভেঙে দিতে ছুটে গিয়েছেন পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত _____
وأعدوا لهم ما استطعتم من قوة ومن رباط الخيل ترهبون به عدو الله وعدوكم وآخرين من دونهم لا تعلمونهم الله يعلمهم وما تنفقوا من شيء في سبيل الله يوف إليكم وأنتم لا تظلمون
‘তোমরা কাফিরদের মোকাবিলার জন্য যথাসম্ভব শক্তি ও অশ্ব-ছাউনি প্রস্তুত রাখো। যা দ্বারা তোমরা আল্লাহর শত্রু ও নিজেদের (বর্তমান) শত্রুদের সন্ত্রস্ত করে রাখবে এবং তাদের ছাড়া সেসব শত্রুকেও সন্ত্রস্ত রাখবে, যাদের তোমরা এখনও চেন না; কিন্তু আল্লাহ ঠিকই চেনেন। বস্তুত তোমরা আল্লাহর পথে যা কিছু ব্যয় করবে, তা পরিপূর্ণরূপে তোমাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তোমাদের কোনো হক অপূর্ণ থাকবে না।’
(সুরা আনফাল : ৬০)
_____এই মহান বীর সেনানী সারা জীবনে ছোট বড় প্রায় শতাধিক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, সম্মুখে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অনেক যুদ্ধে, কিন্তু তিনি একটি যুদ্ধেও পরাজিত হননি। তিনি ছিলেন অপরাজিত, অপ্রতিরোধ্য। সামরিক নেতৃত্বের সব গুণাবলিই তাঁর মধ্যে বিদ্যমান ছিল। অসীম বাহাদুরি, অনুপম সাহসিকতা, উপস্থিত বুদ্ধি, তীক্ষ্ণ মেধা, অত্যধিক ক্ষিপ্রতা এবং শত্রুর ওপর অকল্পনীয় আঘাত হানার ব্যাপারে তিনি ছিলেন অদ্বিতীয়।
তুলনারহিত খালিদ বিন ওয়ালিদ রা.-এর নেতৃত্বে একসময় গোটা বিশ্ব দাপিয়ে বেড়িয়েছেন মুসলিম বীর যোদ্ধারা। ইসলামের আহ্বান ও আবেদন ছড়িয়ে দিতে, মাজলুমদের সাহায্য করতে এবং ভেঙে দিতে জালিমদের উদ্ধত হাত ছুটে গিয়েছেন তৎকালীন পৃথিবীর সুপার পাওয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জিহাদ করতে। তাঁদের তরবারির ঝলকানি দেখে কম্পিত হয়ে উঠত কাফিরদের অন্তরাত্মা। মুহূর্তেই শক্তিশালী অমুসলিম রাষ্ট্র পদানত হয়ে যেত তাঁদের কাছে। রোম, পারস্য ও বাইজান্টাইনের বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনী নাস্তানাবুদ হয়ে গেছে খালিদ বিন ওয়ালিদ রা.-এর ক্ষুদ্র বাহিনীর সামনে।
খালিদ বিন ওয়ালিদ রা.-এর জীবনীতে দুটি চরিত্রের মিলন ঘটেছে:
এক. আরব চরিত্রের জন্মগত বীরত্ব এবং দুঃসাহসিকতা। দুই. ইসলামী চরিত্রের বিশুদ্ধ চেতনা ও শক্তিশালী সংস্কৃতিবোধ।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইনতিকালের অব্যবহিত পরেই পুরো মুসলিম বিশ্বে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে ধর্মত্যাগের মহামারী। ইসলামের ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় বিপদের ঘনঘটা। মিথ্যাবাদী মুসাইলামার শক্তিশালী বাহিনীকে পরাজিত করে ইসলামের মান ও শান সমুন্নত রাখতে অতুলনীয় ভূমিকা পালন করেছিলেন এই সমর-নায়ক।
খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহুর সমর-জীবনের বিস্তারিত বিবরণের পাশাপাশি বক্ষমান গ্রন্থে আলোচিত হয়েছে সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী মুসান্না বিন হারিসা শাইবানী রা., মুসলিম উন্মাহর বিশ্বস্ত সাহাবী আবু উবাইদা রা.-সহ ঝানু ঝানু কয়েকজন বীর সেনানীর সংক্ষিপ্ত কিন্তু অনুপম বীরত্বগাঁথা।
আমাদের আজকের মুসলিম তরুণ প্রজন্ম খালিদ বিন ওয়ালিদ রা.-এর পরিচয় জানে না। তাঁর কিংবদন্তি কারনামা সম্পর্কে তাদের নেই কোনো অবগতি। ইসলামী চেতনা ও মূল্যবোধ তাদের অন্তরে থেকে প্রায় অপসারিত হয়ে গেছে। খালিদ বিন ওয়ালিদ রা. তো দূরের কথা, তারা তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কেও জানে না!
এই খতরনাক বাস্তবতার দিকে তাকিয়েই এই বইয়ের কাজে হাত দেওয়া। আমি চাই, বর্তমান প্রজন্ম খালিদ বিন ওয়ালিদ রা.-এর সঙ্গে পরিচিত হোক। তাঁর জীবনী থেকে ইসলামী সুসংহত চেতনা ও সভ্য সংস্কৃতির সুস্পষ্ট ধারণা এবং বিশ্বাস লাভ করুক। পার্থক্য রেখা স্পষ্ট হয়ে যাক ইসলাম ও ইরতিদাদের মধ্যে, মুসলিম ও মুনাফিকের মধ্যে এবং মুমিন ও কাফেরের মধ্যে।
বইটি আপনাকে নিয়ে যাবে ইসলামী ইতিহাসের বিজয়গাথার স্বর্ণীল ইতিহাসের পটভূমিতে। যেন স্বশরীরে ঝাঁপিয়ে পড়বেন উত্তাল রণাঙ্গনে। আল্লাহর উন্মুক্ত তরবারির বিস্তারিত জীবনকথায় আপনাকে স্বাগতম।
হাসানাহ পাবলিকেশন। ‘শুদ্ধ চিন্তা শুদ্ধ প্রকাশ’ এই শ্লোগান বুকে ধারণ করে এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের বইয়ের সংখ্যা এখন অনেক। পাঠক মহলে ইতোমধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে নিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য সফল হোক, অবারিত থাকুক তাদের জনপ্রিয়তা, কবুল হোক তাদের খেদমত–এই কামনা।
পরিশেষে, মানুষ মাত্রই ভুল করে। নবীগণ ব্যতীত সকল মানুষই ভুলের আওতায়। এই ভুল আরো মারাত্মক আকার ধারণ করে, যখন তা হয় উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বেলায়। তাই সন্মানিত পাঠক বরাবর এই আবেদন থাকবে যে, সাহাবায়ে কেরামের ব্যাপারে যদি অসংগত কোনো শব্দও ব্যবহারিত হয়ে থাকে, তবে তা তাদের ব্যক্তিত্বের ওপর না নিয়ে পুরো দায়ভার লেখকের ওপর চাপিয়ে দিবেন এবং লেখককে এই বিষয়ে অবগত করে বাধিত করবেন। এবং পুরো মুসলিম উম্মাহকে নিজেদের দোয়ায় স্মরণ রাখবেন।
সাইফুল্লাহিল মাসলুল খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ রাদি এর সম্পর্কে আরো বিস্তরভাব জানতে আপনার প্রিয় শপ থেকে এখই বইটি ক্রয় করুন।
Leave a Reply 7

Your email address will not be published. Required fields are marked *