বাটারফ্লাই ইফেক্ট : আমিনুল ইসলাম | Butterfly Effect By Aminul Islam

বইয়ের নাম : বাটারফ্লাই ইফেক্ট
লেখক : আমিনুল ইসলাম
প্রচ্ছদ : আদনান আহমেদ রিজন
প্রকাশনায় : সতীর্থ
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১২৮
মুদ্রিত মূল্য : ২৩০ টকা
জনরা : ক্রাইম থ্রিলার (নভেলা)

“বাটারফ্লাই ইফেক্ট” পড়ার সময় প্রথম ভাবনা এসেছিলো বাটারফ্লাই ইফেক্ট জিনিসটা আদতে কি? পড়াশোনা করে জানতে পারলাম, এটা একটা থিওরি, এর মূলকথা হলো ‘পৃথিবীর একপ্রান্তে ঘটা কোনো ক্ষুদ্র ঘটনাও অন্য প্রান্তে বিশাল বড়ো কোনো ঘটনার কারণ হতে পারে!’ উদাহরণ দিলে বুঝতে সুবিধা হয়। যেমন : আমাজন জঙ্গলে যদি কোনো প্রজাপতি পাখা ঝাপটায়, তাহলে তা ইউরোপের অর্ধেকজুড়ে সাইক্লোন আঘাড হানার কারণ হতে পারে!

এখন আবার প্রশ্ন আসে তাহলে বইটার এ নাম রাখার কারণ কি?
সেটাই মূলত বইটার টুইস্ট!

কাহিনী সংক্ষেপণ :
অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বেশ কয়েকটি খুনের ঘটনা ঘটে এবং খুনীরাও প্রমাণ সহকারে ধরা পড়ে। কিন্তু খটকা ধরা পড়ে ডিবি পুলিশের ক্রাইম কনসালটেন্ট অর্কর চোখে। তাঁর মনে হতে থাকে এটা আলাদা আলাদা কোনো খুনের ঘটনা নয়। বরং এটা নিশ্চয় সিরিয়াল কিলিং। কারণ, সিরিয়াল কিলিং এর সব গুণই এই হত্যাকান্ডতে পাওয়া যায়।
ক্রাইম কনসালটেন্ট অর্ক যখন তাঁর ডিপার্টমেন্ট নিয়ে তদন্তে নামেন তখন তাঁর সামনে চলে আসে তাঁরই স্কুল জীবনের কিছু ঘটনা!
অতঃপর…
অর্ক নিজেই একটা খুনের ঘটনার আসামী হিসেবে বিবেচিত হয় এবং সবধরনের প্রমাণ সহকারে!
এমন কি ঘটনা ঘটেছিলো, যে কারণে ক্রাইম কনসালটেন্ট অর্ককেও জেলে যেতে হয়েছিলো?
অর্ক কি পারবে এ রহস্যের সমাধান করতে?

পাঠ-প্রতিক্রিয়া :
“বাটারফ্লাই ইফেক্ট” মূলত একটি নভেলা অর্থাৎ উপন্যাসিকা, যা একটি উপন্যাস সিরিজ তৈরি করার শুরুতে লেখা হয়। উপন্যাসিকার কাহিনীর বিস্তার তাড়াতাড়িই হয়, “বাটারফ্লাই ইফেক্ট” বইতেও তেমনটাই হয়েছে। এটি লেখকের গডফাদার ট্রিলজির প্রথম বই। বইটি মূল উপন্যাস না হওয়ায় এবং ঘটনাগুলো দ্রুত ঘটে যাওয়ায় অন্যরকম মনে হতে পারে, আবার বইটির পরবর্তী বই গডফাদার পড়তে গেলে বইটা না পড়া থাকলে পাঠক কাহিনী বুঝতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলবেন। তাই সিরিজ, ট্রিলজি পড়তে গেলে এগুলো পড়ার ধরন অনুযায়ী পড়তে হয়, তাহলে পড়ে মজা পাওয়া যায়। আমি সেভাবেই পড়েছি, তাই পড়ে মজা পেয়েছি। বইয়ের কাহিনীটা অসাধারণ, বিশেষকরে ট্রিলজির শুরু হিসেবে অনেকগুলো টুইস্ট দেওয়া হয়েছে বইটিতে এবং সবগুলো টুইস্টই পাঠকের মুখ ‘হা’ করাতে বাধ্য!

কিছু দুর্বল দিকও চোখে পড়েছে। বিশেষ করে সর্বনাম ব্যবহারের দুর্বলতাটা অত্যধিক। কখনো আপনি বলে সম্বোধন করা হচ্ছে তো কখনো তুমি বলে। এছাড়াও আরো কিছু টাইপিং মিসটেক এবং বানান ভুল চোখে পড়েছে, এগুলো সংশোধন কাম্য।

এই বিষয়গুলো বাদ বইটিকে একটি অসাধারণ উপন্যাসিকা না বলে উপায় নেই। আর এই বইটি পড়েই লেখকের “গডফাদার” পড়তে যাবেন। কারণ, গডফাদার হলো “বাটারফ্লাই ইফেক্ট” এর পরবর্তী বই।

Leave a Reply 0

Your email address will not be published. Required fields are marked *