পাঠক শিশু গড়তে হলে – ড. আব্দুল কারীম বাক্কার

পাঠক শিশু গড়তে হলে
  • পাঠক শিশু গড়তে হলে
  • লেখক : ড. আব্দুল কারীম বাক্কার
  • প্রকাশনী : দারুল কারার পাবলিকেশন্স
  • বিষয় : শিশু কিশোরদের বই
  • অনুবাদক : আহমাদ রাফি, মোঃ মাহমূদুল হক
  • সম্পাদক : শাইখ আবু আহমাদ সাইফুদ্দিন বেলাল মাদানী
  • পৃষ্ঠা : 111, কভার : পেপার ব্যাক
  • ভাষা : বাংলা

ইবনুল কাইয়্যম জাওযী তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ মিফতাহু দারি আস-সায়াদাহ’তে লিখেছেন—“অজ্ঞতা হলো এমন একটি বৃক্ষ যেখান থেকে সমস্ত অনিষ্টতার জন্ম নেয়।” আর এই অজ্ঞতাকে দূর করতে প্রয়োজন বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। পড়া এবং বইয়ের সাথে জীবন কাটানোর মাধ্যমে একজন মানুষ তার জীবনের সাথে আরো জীবনকে যুক্ত করতে পারে। সেটা হতে পারে তার এই পৃথিবীতে জীবদ্দশায়, যেখানে সে তার এই জীবনকে অধিক বেশি আনন্দের সাথে ইতিবাচকভাবে এবং ফলপ্রসূভাবে উপভোগ করতে পারবে। আর পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার পর তিনি পাবেন আরেকটি জীবন, কারণ সেই ব্যক্তিটি যে জ্ঞান রেখে যাবেন সেটা দ্বারা মানুষ উপকৃত হবে এবং তাঁর মৃত্যুর পরে মানুষ তাঁকে স্মরণ করবে-এ যেন আরেকটি জীবন।

এটা বলতেই পারি যে, শিশুদের মাঝে বই পড়ার কল্যাণকর এই অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়ক হবে উস্তাদ ড. আব্দুল কারীম বাক্কার (হাফিজাহুল্লাহ)-এর এ বইটি। লেখক অত্যন্ত সুনিপূনভাবে শিশুদের বয়সের বিভিন্ন ধাপকে বিবেচনা করে গবেষণালব্ধ ফলাফলের ভিত্তিতে কিভাবে তার মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা যায় তা তুলে ধরেছেন সূচারুরূপে। একইভাবে শিশুদের মাঝে পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে যে প্রতিবন্ধকতাগুলো রয়েছে সেগুলোর সমাধানসহ উল্লেখ করেছেন।

পাঠক শিশু গড়তে হলে

বইটি অত্যন্ত চমৎকার ও যুগোপযোগী। বইটি পড়তে গিয়ে শাইখ বিন বায এর একটি উক্তি আমার দৃষ্টিগোচর হয়। তিনি বলেছেন, “পড়ার প্রতি ভালোবাসা পরকালের নিয়ামতের পূর্বে দুনিয়াতেই দেওয়া মুমিনদের জন্য একটি নিয়ামত।”

পরিশেষে আমি এই বইয়ের সাথে জড়িত সকলের কল্যাণ কামনা করছি। আল্লাহ তা’আলা যেন তাদের এই মহৎ প্রচেষ্টাকে কবুল করে নেন।
আবু আহমাদ সাইফুদ্দিন বেলাল, মাকারেম আল-আখলাক ফাউন্ডেশন, উত্তরা, ঢাকা।

মানুষ বেঁচে থাকে খাওয়ার জন্য নয়। বরং বেঁচে থাকার জন্য মানুষকে খেতে হয়। তাহলে মানুষ বেঁচে থাকে কিসের জন্য? তার উদ্দেশ্য কী?

যদি বলি বিয়ে-শাদী সন্তান-সন্ততী ও বংশ পরম্পরা পৃথিবীতে রেখে যাওয়া কিংবা ভালোভাবে পৃথিবীতে থাকতে উন্নত বসতবাড়ি নির্মাণ আমাদের উদ্দেশ্য! তখন বলবো, এসবই কিন্তু প্রাণীরা মানুষের চেয়ে ভাল পারে এবং তারা সেটা কোনো প্রকার শিক্ষা ছাড়াই অত্যন্ত নির্ভুলভাবে করে যাচ্ছে।

তাহলে মানব জাতির মানুষ হিসেবে তার বৈশিষ্ট্য ও স্বকীয়তা কোথায়? তাছাড়া
সুখ অন্তর্নিহিত আপেক্ষিক বিষয়। বস্তুর ভূমিকা তাতে থাকলেও বস্তুই মূখ্য নয়।
যদি আপনি এই প্রশ্নটি সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারেন তাহলে বুঝতে পারবেন, মানব সৃষ্টির পেছনে একটি সুদূরপ্রসারি, সুসংহত, সুনিপুণ ও পুতপবিত্র উদ্দেশ্য রয়েছে। আর তা হলো, বিশ্বজগতের প্রতিপালক মহান আল্লাহর ইবাদত ও উপাসনা করে পরকালে অবিনশ্বরে নিজের অবস্থান সুসংহত করা। নিজের আসনকে সমুন্নত করা এই অল্প সময়ে।

আমার বলার উদ্দেশ্য

আমার বলার উদ্দেশ্য হলো, কারিগরি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বেঁচে থাকার জন্য অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু মানুষ বেঁচে থাকবে কিসের জন্য? এই প্রশ্ন থেকেই পৃথিবীতে নবী-রাসূল প্রেরণ এর প্রয়োজনীয়তা এসেছে। সৃষ্টি হয়েছে নানাবিদ বিদ্যার। জন্ম নিয়েছে যুগ-যুগান্তরে ভূপৃষ্ঠের ক্ষণজন্মা মহাপুরুষগণ। জ্ঞান সাধনার মাধ্যমে কপালে অমরত্বের তিলক এঁটে দিয়েছে আপন ললাটে। তারা অমূল্য; কারণ অমূল্যের রত্ন জ্ঞান তাদের জ্যোতির্ময় করে দিয়েছে। যে জ্যোতির দ্যূতিতে প্রাণবন্ত এই মানব ভূমি। তারা দেখিয়েছেন, বিদ্যার উদ্দেশ্য তা দিয়ে করে খাওয়া নয়; বিদ্যার মূল্য কেবল মূল্যায়ন!

শিক্ষা হলো, একটি অপেশাদার খেলা। শিক্ষা ও জ্ঞানকে অর্থ উপার্জন এবং পদ পদবির অনেক ঊর্ধ্বে নিয়ে না আসা পর্যন্ত বিদ্যা কোনোদিন কোনো জাতিতে আপন সৌরভ ছড়াবে না। যেমন চিড়িয়াখানায় বন্দী কোনো প্রাণী আপন গুণ ও মহিমার পেখম খোলে না।

পাখির সৌন্দর্য মুক্ত আকাশে সারিবদ্ধ নীলাভে। প্রাণীর সৌন্দর্য স্তব্ধ ঘন অরণ্যে, জঙ্গলে। তেমনি শিক্ষা ও জ্ঞানের সৌন্দর্য- অর্থোপার্জন, সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রটোকলের অনেক ঊর্ধ্বে। এগুলো জ্ঞানকে অর্থের শেকলে আটকে তার সৌন্দর্য নাশ করেছে। ভূপৃষ্ঠে জন্ম নেয়া প্রতিটি মহাজ্ঞানী জীবনচরিত আপনাকে চোখে আঙুল দিয়ে তা শেখাবে।

Leave a Reply 0

Your email address will not be published. Required fields are marked *