ইবনে তাইমিয়্যার বক্তব্য শুনে লজ্জিত হলেন আল মালিকুন নাসির মুহাম্মদ বিন কালাউন। তিনি চাইলেন তক্ষুণি সেনাবাহিনী রওনা করতে, কিন্তু বৃষ্টি ও ঠাণ্ডার কারণে অভিযান মুলতবি করতে হলো। ইবনে তাইমিয়্যা সুলতানের প্রাসাদেই কয়েকদিন কাটালেন। এখানে আরাম আয়েশের কোনো অভাব নেই কিন্তু তার মন পুড়ছে দামেশকের জন্য। সেখানে তার দরসগাহ, ছাত্র সবকিছু যেন তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। প্রায় আট দিন কায়রো অবস্থানের পর ইবনে তাইমিয়্যা দামেশকে ফিরে যান। ফেরার সময় সুলতানের পক্ষ থেকে সফরের খরচ দেয়া হয় কিন্তু তিনি তা ফিরিয়ে দেন।
দামেশকে ফিরে ইবনে তাইমিয়্যা জানতে পারেন গাজান আবার তার বাহিনীসহ এগিয়ে আসছে। ইতিমধ্যে সে ইরাকে পৌঁছে গেছে। ইবনে তাইমিয়্যা বুঝতে পারেন এখন লোকজনের সাহস ধরে রাখাই বড় কাজ। তিনি জামে মসজিদের মিম্বরে বসে এক খুতবায় বলেন, আপনারা আজই জিহাদের প্রস্তুতি নিন। সুলতান মুহাম্মদ বিন কালাউনের বাহিনী যে কোনো সময় আমাদের মাঝে এসে উপস্থিত হবে। আল্লাহর সাহায্যে এবার আমরা তাতারদের পরাজিত করবো, ইনশাআল্লাহ
ইবনে তাইমিয়্যার কথায় জিহাদের জন্য প্রস্তুতি চলতে থাকে দামেশক জুড়ে। কাজি বদরুদ্দিন ইবনু জামাআ বেশ কিছু মাদরাসা পরিচালনা করতেন, সেখানে তিনি শুরু করেন তিরন্দাজি প্রশিক্ষণ। অনেক খ্যাতনামা আলেম এসে প্রতিদিন তীরন্দাজি ও মল্লযুদ্ধ শিখতে থাকেন।
শীতের শুরুতে সংবাদ এলো হালাবে প্রবেশ করেছেন মাহমুদ গাজান।দলে দলে লোকজন নানা শহরে থেকে পালিয়ে দামেশকে চলে আসে।
চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আতংক। ইবনে তাইমিয়্যা ততদিনে সুলতানের উপর বিরক্ত হয়ে উঠেছেন। তিনি ভালো করেই জানেন মামলুকদের সাহায্য না এলে বেশিদিন তাতারদের ঠেকিয়ে রাখা যাবে না।
বই: শাকহাব প্রান্তরে
সিরিজ: ইতিহাসের রোমাঞ্চকর অধ্যায়- ১
লেখক: ইমরান রাইহান
প্রকাশকাল: ১৫/৮/২০২২