১০টি সেরা ডিলারশিপ ব্যবসার আইডিয়া – 10 Best Dealership Business idea 

১০টি সেরা ডিলারশিপ ব্যবসার আইডিয়া

ডিলারশিপ ব্যবসা বর্তমান সময়ে আমাদের বাংলাদেশে অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসায় রূপান্তরিত হয়েছে । আমরা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতে বা অনলাইনে দেখতে পাই বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির ডিলার নিয়োগ চলছে ।

 

অনেকেই এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি দেখে বুঝতে পারে না যে কীভাবে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করবে? বা ডিলারশিপ ব্যবসা কিভাবে নিবে?

 

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি তাদের জন্য যারা ডিলারশিপ ব্যবসা করতে আগ্রহী। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব ডিলারশিপ ব্যবসা কি? ডিলারশিপ ব্যবসা করার নিয়ম? 

 

ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে কি প্রয়োজন? ডিলারশিপ ব্যবসায় মূলধন কেমন? ডিলারশিপ ব্যবসায় মুনাফা কেমন বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো আমাদের এই আর্টিকেলে। 

 

আশা করা যায় আমাদের আজকের ডিলারশিপ ব্যবসার আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়লে ডিলারশিপ ব্যবসা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য ও ধারণা পাবেন। তাই বন্ধুরা আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইল। 

 

ডিলারশিপ ব্যবসা কি?

 

ডিলারশিপ ব্যবসা হচ্ছে মূলত কোন একটি কোম্পানির নির্দিষ্ট একটি এলাকা বা অঞ্চলে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করা। অর্থাৎ উৎপাদনকারীর সেই পণ্যগুলো পাইকারি বা খুচরা নির্দিষ্ট একটি এলাকা বা অঞ্চলে বিক্রয় করা।

 

কোন একটি কোম্পানির ডিলারশিপ নেওয়া মানে, নির্দিষ্ট একটি এলাকায় কোন কোম্পানির পণ্যের বিপণন বন্টনসহ যাবতীয় সকল কাজের দায়িত্ব পালন করা। আর যিনি এই দায়িত্ব পালন করেন তাকে মূলত ডিলার বলা হয়।

 

ডিলারশিপ ব্যবসায় ঝুঁকির সম্ভাবনা অনেক কম , এর কারণ হলো আপনি যে কোম্পানির পণ্য সামগ্রী গুলো নিয়ে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করবেন সেই পণ্য সামগ্রীগুলোর মার্কেটিং থেকে শুরু করে আপনার নিকট পৌছে দেওয়া পর্যন্ত সকল কাজ সে কোম্পানি করে থাকবে। 

 

ডিলারশিপ ব্যবসায় লাভের সম্ভাবনা অনেক বেশি কারণ ডিলেরশিপ ব্যবসায়ে মুনাফার কোন সীমাবদ্ধতা নেই আপনি যত বেশি পণ্য বিক্রয় করতে পারবেন তত বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারবেন । তাই বর্তমানে অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা হিসেবে পরিচিতি হয়েছে ডিলারশিপ ব্যবসা। 

 

 

ডিলারশিপ ব্যবসার নিয়ম

 

ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করার জন্য দরকার সঠিক পরিকল্পনা ও সঠিক বাজার বাছাই করা। এই ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। 

 

আপনি যেকোনো একটি কোম্পানির ডিলারশিপ নিয়েও ব্যবসা শুরু করতে পারবেন অথবা একাধিক কোম্পানির ডিলারশিপ নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

 

তবে একাধিক কোম্পানির বিভিন্ন ধরনের পণ্য সামগ্রী নিয়ে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করা বেশি লাভজনক। তাই প্রথমে আপনাকে আপনার মূলধন বিনিয়োগের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। 

 

আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ মূলধন বিনিয়োগ করার মত অর্থ থাকে তাহলে একসাথে একাধিক পণ্যের  ডিলারশিপ নেওয়াটা আপনার জন্য লাভজনক হবে ।

 

ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে কি কি প্রয়োজন ?

 

বর্তমানে যে কোন ব্যবসা শুরু করার পূর্বে সরকার কর্তৃক বৈধ কিছু লাইসেন্সের প্রয়োজন পড়ে। ঠিক তেমনি ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করার পূর্বে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন হবে।

 

সেগুলো নিম্নরূপ : 

 

  • প্রথমে নিজের একটা ফার্ম বা এজেন্সি লাগবে ।
  • যে কোম্পানির থেকে ডিলারশিপ নিবেন সে কোম্পানির নিকট রেজিস্ট্রেশন করতে হবে ।
  • আপনার ব্যবসায় এর একটি ট্রেড লাইসেন্স লাগবে ।
  • আপনার নামে একটি ব্যাংক একাউন্ট লাগবে ।

 

উপরিউক্ত কাজগুলো করার পর আপনার একটি অফিস প্রোফাইল লাগবে।

 

অফিস প্রোফাইলে যা থাকবে তা নিম্নরূপ:

 

আপনার অফিস প্রোফাইল 

 

  • আপনার অফিসটি কোথায় অবস্থিত রয়েছে তা উল্লেখ করতে হবে ।
  • অফিসে গোডাউন আছে কিনা, তাকলে সেটা কত বড় তা উল্লেখ করতে হবে ।
  • আপনার অফিসে কতজন কর্মচারী কাজ করে তা উল্লেখ করতে হবে । 
  • আপনি কোন এরিয়ায় পণ্যদ্রব্যগুলো বিক্রয় করতে চান সেটা উল্লেখ করতে হবে ।

 

এই সকল বিস্তারিত তথ্য দিয়ে নিজের অফিসের একটি প্রোফাইল তৈরি করে আপনি যে কোম্পানির কাছ থেকে ডিলারশিপ নিতে চান সে কোম্পানির নিকট পাঠাতে হবে। 

ডিলারশিপ ব্যবসার চুক্তিপত্র

 

আপনি যে কোম্পানির নিকট থেকে ডিলারশিপ নিতে চান সে কোম্পানির সাথে একটা চুক্তিপত্র করতে হবে এবং সেই চুক্তিপত্রে কোম্পানির প্রতিনিধি হিসাবে আপনাকে স্বাক্ষর করতে হবে।

 

চুক্তিপত্রের যে সকল বিষয় থাকবে :

 

  • কোম্পানি থেকে কি কি এবং কিধরনের পণ্য নিতে চান ?
  • একসাথে কি পরিমাণ পণ্য নিতে চান ?
  • কোম্পানি আপনাকে কি পরিমান কমিশন দিবে ?
  • ট্রাক বা অন্য কোন ট্রান্সপোর্ট দিয়ে মালামাল কোম্পানি আপনার গোডাউনে পাঠাবে কিনা ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে ।

 

এই সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যদি চুক্তিপত্রের মধ্যে উল্লেখ থাকে তবেই আপনি সেখানে স্বাক্ষর করবেন । তারপর আপনি ডিলানশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

 

ডিলার চুক্তিতে যেসব বিষয় আপনাকে মাথায় রাখতে হবে তা নিম্নরূপ:

 

  • ডিলার চুক্তির আগে আপনাকে তাদের অফিস বা কোম্পানিতে গিয়ে দেখে আসতে হবে। তাছাড়া তাদের গোডাউন বা যেখানে উৎপাদন করে সেসব স্থানগুলো পরিদর্শন করতে হবে। প্রয়োজনে সেই কোম্পানির অন্য ডিলারদের সাথে আলোচনা করতে হবে।

 

  •  আপনার নিকট কোম্পানি কিভাবে পণ্য সামগ্রীগুলো পাঠাবে তা শিউর হয়ে নিন ।

 

  • মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্যসামগ্রীর ক্ষেত্রে কি নিয়ম হবে এবং পণ্যের ক্ষয়ক্ষতি কে বহন করবে তা নির্ধারণ করুন।

 

  • কোম্পানি এস আর বা সেলনম্যান নিয়োগ দিবে কিনা সে বিষয়টি নির্ধারণ করে নিতে হবে। কেননা কোম্পানি যদি এস আর বা সেলনম্যান নিয়োগ দেয় তাহলে সে  এস আর বা সেলনম্যান এর বেতন কোম্পানি বহন করবে।

 

  • ডিলারশিপ চুক্তি বাতিল করার নিয়ম কানুন ঠিক রাখতে হবে । যেন কেউ চাইলে নিজের ইচ্ছামত ডিলারশিপ চুক্তি বাতিল করতে না পারে। 

 

ডিলারশিপ ব্যবসায় মূলধন কেমন?

 

সকল ব্যবসার মতো ডিলারশিপ ব্যবসায় ও মূলধনের ও পুঁজির প্রয়োজন হয়। তবে ডিলারশিপ ব্যবসায় মূলধন বিনিয়োগ একটু আলাদা হয়ে থাকে। 

 

আপনি ডিলেরশিপ ব্যবসায়ী দুই ভাবে বিনিয়োগ করতে পারবেন। যেমন :  ১ / সিকিউরিটি মানি ইনভেস্টমেন্ট  ও ২/ পণ্যের খরচ বিনিয়োগ 

 

১/ সিকিউরিটি মানি ইনভেস্টমেন্ট: 

 

প্রায় সব কোম্পানি তাদের কাছে কিছু টাকা ডিপোজিট রাখে সিকিউরিটি হিসেবে। এই টাকাগুলা কোম্পানি একেবারে নিয়ে নেয় না। 

 

আপনার ডিলারশিপ ব্যবসার চুক্তি শেষ হলে সিকিউরিটি মানি হিসেবে যে টাকা রাখা হয়েছিল কোম্পানির নিকট সে টাকা কোম্পানি আপনাকে পুনরায় ফিরিয়ে দিবে। 

 

কোম্পানি অনুযায়ী সিকিউরিটি মানি ইনভেস্টমেন্ট ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন কোন কোম্পানি সিকিউরিটি মানি ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে ২০,০০০ টাকা নিয়ে থাকে। 

 

 

আবার অনেক কোম্পানি দেখা যায় ২ লক্ষ টাকারও বেশি সিকিউরিটি মানি হিসেবে নিতে পারে । সিকিউরিটি মানে ইনভেস্টমেন্ট নির্ভর করে কোম্পানির উপর। 

 

২/ পণ্যের খরচ  বিনিয়োগ 

 

ডিলেরশিপ ব্যবসায় মূলধনের আরেকটি হলো আপনি কোম্পানি থেকে যে পণ্য সামগ্রী গুলো নিবেন  সেই পণ্যগুলোর দামের নির্দিষ্ট একটি অংশ কোম্পানিকে অগ্রিম দিতে হবে। 

 

যেমন ধরুন আপনি ১০০ বস্তা চিনি আনবেন কোম্পানি থেকে তাহলে আপনাকে ৫০ বস্তা চিনির দাম অগ্রিম দিতে হবে কোম্পানিকে ।

 

বাকি টাকা মালগুলো আপনার গোডাউনে পৌঁছার পর কোম্পানিকে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতে হবে ।

 

ডিলারশিপ ব্যবসায় লাভ 

 

ডিলারশিপ ব্যবসার ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রতিটি কোম্পানি প্রায় ৬ থেকে ৮  পারসেন্ট কমিশন দিয়ে থাকে। তবে কোম্পানিগুলো ডিলারদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে থাকে । যেমন : গোডাউন ভাড়া,  ইনসেন্টিভ ইত্যাদি প্রদান করে থাকে।

 

 

এই ব্যবসায় লাভের কোন সীমাবদ্ধতা নেই । আপনি যত বেশি পণ্য সামগ্রী সেল করতে পারবেন তত বেশি মুনাফা করতে পারবেন। 

 

ডিলারশিপ ব্যবসা ২০২২

 

২০২২ সালে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও অনলাইনে আমরা প্রতিনিয়ত দেখতে পাই যে বিভিন্ন ডিলার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করছে অনেক কোম্পানি। 

 

ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই কোম্পানি এবং কোম্পানির পণ্য সামগ্রী গুলো  সম্পর্কে জানতে হবে। 

 

কোম্পানির পরিচালনা ও কোম্পানির পণ্য সামগ্রীগুলোর যদি গুণগত মান ভালো হয় তাহলে আপনি এই ধরনের কোম্পানি থেকে পণ্য সামগ্রী নিয়ে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। 

 

১/ স্টেশনারি পণ্য ডিলার

 

আপনি যদি কম পুঁজি বিনিয়োগ করে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে আপনার জন্য অত্যন্ত লাভজনক ডিলারশিপ একটি ব্যবসা হবে স্টেশনারি পণ্যের ডিলারশিপ ব্যবসা। 

 

২০২০ সালের মধ্যে আমরা দেখতে পাই যে আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৫  শতাংশ রয়েছে ১০  থেকে ১৯  বছরের মধ্যে। 

 

আর বিপুল সংখ্যক এই জনসংখ্যার একটা বড় অংশই হল শিক্ষার্থী এই শিক্ষার্থীদের স্টেশনারি জিনিসপত্রের সব সময় প্রচুর চাহিদা থাকে।

 

 

স্টেশনারি পণ্য সামগ্রী গুলো শুধু যে শিক্ষার্থীদেরই চাহিদা রয়েছে তেমনটা নয়। অফিস, আদালত থেকে শুরু করে বিভিন্ন কর্মজীবী মানুষজন সকলেই এই স্টেশনারি পণ্যগুলো ব্যবহার করে থাকে। এবং এর চাহিদা দিন দিন ব্যাপক হারে বেড়েই চলেছে।

 

মজার বিষয় হলো স্টেশনারি পন্যের পাইকারি দাম অনেক কম খুচরা মূল্যের চেয়ে  । অর্থাৎ আপনি কম মূল্যে স্টেশনারি পণ্যগুলো ক্রয় করে বেশি মূল্যে বিক্রি করতে পারবেন। 

 

স্টেশনারি পণ্যের ক্ষেত্রে প্রায় ১০ থেকে ২০  পারসেন্ট কমিশন দিয়ে থাকে কোম্পানিগুলো।

 

বুঝতে পেরেছেন কেমন লাভ রয়েছে স্টেশনারি পণ্য সামগ্রীগুলোতে । আপনি চাইলে স্টেশনারি পণ্যের ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারেন  । 

 

কম পুঁজি বিনিয়োগ করে বেশি টাকা আয় করার সম্ভাবনা রয়েছে স্টেশনারি পণ্যের ডিলারশিপ ব্যবসায়ে ।

 

২ / কসমেটিকস এর ডিলার

 

বর্তমানে শহর থেকে গ্রাম সব এলাকার মানুষজনই রূপচর্চা করতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। নিজেকে স্মার্ট রাখতে সকল বয়সের ছেলে-মেয়ে সবাই রূপচর্চা করতে পছন্দ করে। তাই দেখা যায় শহর থেকে শুরু করে গ্রামের মানুষ জন সবাই প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহার করে থাকে।

 

বিশেষ করে মেয়েরা এই সকল পণ্য সামগ্রী বেশি ব্যবহার করে থাকে। 

 

আমরা দেখতে পাই গ্রামের ছোট ছোট মুদির দোকান থেকে শুরু করে শহরের বড় বড় শপিং মলে প্রায় সব দোকানেই এই ধরনের প্রসাধনী বিক্রির প্রচুর চাহিদা লক্ষ করা যায়।

 

এমনকি বর্তমানে আমরা দেখতে পাই প্রসাধনীর জন্য আলাদা আলাদা রয়েছে তাই আপনি চাইলে কসমেটিকসের ডিলেরশিপ নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। 

 

 

মজার বিষয় হলো কসমেটিকস পণ্যসামগ্রীগুলোর মধ্যে কোম্পানিগুলো ভালো পার্সেন্টিস দিয়ে তাকে । ডিলারদের সর্বনিম্ন ১৫ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পণ্যে ৫০ পার্সেন্ট পর্যন্ত কমিশন দিয়ে থাকে । 

 

৩/ মুদি মালের ডিলার

 

বর্তমানে আরো একটি লাভজনক ডিলার ব্যবসা হল মুদি মালের ডিলারশিপ ব্যবসা। আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যসামগ্রীর গুলো আমরা মুদি দোকান থেকে ক্রয় করে থাকি । 

 

যেমন  আটা , ময়দা,  তেল, চাউল, আলু, পেঁয়াজ, ইত্যাদি বলতে গেলে আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় যেসব পণ্যগুলো প্রয়োজন পড়ে সেগুলো আমরা মুদি দোকান থেকে ক্রয় করে থাকি।

 

আপনি চাইলে মুদি মালের ডিলারশিপ নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তবে মুদি পণ্যের ডিলারশিপ নিতে গেলে আপনার থেকে একটু বেশি মূলধন বিনিয়োগ করতে হবে । 

 

 

কেননা মুদি মালের ক্ষেত্রে আপনাকে একসাথে অনেকগুলো পণ্য সামগ্রী ক্রয় করতে হবে।

 

তাই আপনার কাছে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ মূলধন থাকে তাহলে আপনি লাভজনক মুদি মালের ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। 

 

বলতে গেলে সারা বছরই চাহিদা রয়েছে মুদি মালের এবং আপনি অনেক বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারবেন মুদি মালের ডিলারশিপ ব্যবসা করে। 

 

৪/ সফট ড্রিংকস এর ডিলার

 

বর্তমান সময়ের অত্যন্ত লাভজনক একটি ডিলারশিপ ব্যবসা হল সফট ড্রিংকস এর ডিলারশিপ ব্যবসা। কেননা বর্তমানে সফট ড্রিংকসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । এবং দিন দিন এর চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

সফট ড্রিংকস কে তিন ভাগে ভাগ করা হয় :

 

  • এনার্জি ড্রিংকস ।
  • জুস ।
  • সাধারণ কোমল পানীয় ।

 

এনার্জি ড্রিংকস

 

বর্তমানে তরুণ তরুণীদের পছন্দের তালিকায় এই ড্রিংকস থাকে সবার উপরে। তাছাড়া সব বয়সের মানুষই এনার্জি ড্রিংকস পান করে থাকে। যেমন: টাইগার, স্পিড, রেড বুল, ইত্যাদি আরো অনেক ধরনের এনার্জি ড্রিংকস রয়েছে । 

 

এবং আমাদের দেশের জনপ্রিয় এনার্জি ড্রিংকস এগুলোর মধ্যে রয়েছে । আপনি চাইলে এরকম এনার্জি ড্রিংকস এর ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

 

জুস

 

বর্তমানে বাচ্চা থেকে শুরু করে সকল বয়সের মানুষেই জুস পান করতে পছন্দ করেন। বিশেষ করে দেখা যায় এখন ডাক্তাররা যেকোনো রোগীদের জুস খাওয়াতে বলে। তাই আপনি চাইলে বিভিন্ন কোম্পানির জুস নিয়ে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। 

 

আমাদের বাংলাদেশে অনেক জনপ্রিয় কিছু জুস কোম্পানি রয়েছে যেমন: প্রুটিকা, প্রাণ ফ্রুটো, সিজন  জুস, স্টার্শিপ জুস, ইত্যাদি অনেক কোম্পানির বিভিন্ন জুস আমাদের দেশে খুব জনপ্রিয় ।

 

আপনি চাইলে জুস এর ডিলারশিপ নিয়েও ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

 

সাধারণ কোমল পানীয় : 

 

কোকোলা, পেপসি, সেভেন আপ, স্প্রাইট, ফেইসাপ,   মেরিন্ডা, মোজো, ইত্যাদি অনেক ধরনের কোমল পানীয় আমরা সচরাচর পান করে থাকি। এবং গরমের সময় এর চাহিদা অনেক গুন বেড়ে যায় ।

 

আপনি চাইলে এসব সফট ড্রিংকস এর ডিলারশিপ নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন আশা রাখা যায় আপনি খুব তাড়াতাড়ি সফলতা অর্জন করতে পারবেন। 

 

৫/ কনস্ট্রাকশন বা নির্মাণসামগ্রীর ডিলার 

 

আবাসন খাতে মানুষের কার্যক্রম বর্তমানে দিন দিন বেড়েই চলেছে। আমাদের দেশে প্রতিদিন হাজার হাজার নতুন বিল্ডিং, ইন্ডাস্ট্রি, কোম্পানি প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, সেতু ইত্যাদি নির্মাণ করা হচ্ছে। 

 

এখন আপনি যদি আবাসন খাতের ব্যবহৃত জিনিস পত্র যেমন: ইট, বালু, রট, সিমেন্ট ইত্যাদির ডিলেরশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারেন তাহলে আপনি অনেক মুনাফা উপার্জন করতে পারবেন।

 

তবে কনস্ট্রাকশন বা নির্মাণসামগ্রীর ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে হলে আপনাকে অনেক বেশি মূলধন বিনিয়োগ করতে হবে। এর কারণ হল নির্মাণসামগ্রীর জিনিসপত্রগুলো অনেক দাম। 

 

তাই আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ মূলধন বিনিয়োগ করার মত অর্থ থাকে তাহলে আপনি লাভজনক এই ডিলারশিপ ব্যবসাটি শুরু করে দিন।

 

৬/ বসুন্ধরা ডিলেরশিপ

 

আমাদের বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে এক একটি হলো বসুন্ধরা কোম্পানি। বসুন্ধরা কোম্পানির পণ্যসামগ্রীগুলোর অনেক চাহিদা রয়েছে। এবং বসুন্ধরা কোম্পানির নিকট নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্য সামগ্রী রয়েছে ।

 

যেমন: বসুন্ধরা তেল, আটা, ময়দা, সুজি, বসুন্ধরা নুডুলস, চিপস ইত্যাদি শত শত পণ্য রয়েছে। যা আমাদের বাংলাদেশের অনেক জনপ্রিয় এবং চাহিদাও রয়েছে অনেক বেশি । 

 

আপনি চাইলে বসুন্ধরা কোম্পানির ডিলারশিপ নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। 

 

৭ / সিগারেট কোম্পানির ডিলার

 

সিগারেট একটি নেশাদ্রব্য পণ্য হলেও বর্তমানে এটি অত্যন্ত চাহিদা মূলক একটি দ্রব্য হিসাবে রূপান্তরিত হয়েছে। ব্যাবসায়িক চিন্তা-ভাবনা করলে সিগারেট কোম্পানির ডিলারশিপ নিয়ে আপনি ব্যবসা করে ভালো অর্থ আয় করার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

বর্তমানে অনেক কোম্পানির সিগারেট রয়েছে যেমন: বেনসন,  গোল্ড লিফ, নেভি, স্টার, মেরিচ, ডার্বি ইত্যাদি । আপনি চাইলে যেকোনো একটি সিগারেট কোম্পানি থেকে ডিলারশিপ নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বর্তমানে এটি অত্যন্ত চাহিদাযোগ্য একটি পণ্য হয়ে উঠেছে। 

 

8/ ওয়ালটন ডিলারশিপ

 

আমাদের দেশের ইলেকট্রনিক্স কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা একটি কোম্পানি হলো ওয়ালটন কোম্পানি। 

 

ওয়ালটন কোম্পানির নিকট অনেক ধরনের ইলেকট্রনিক্স পণ্য রয়েছে যেমন: ফ্রিজ, টিভি, রাইস কুকার, ওয়াশিং মেশিন, সিলিং ফ্যান, ব্লেন্ডার মেশিন, ইত্যাদি অনেক ধরনের ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী রয়েছে।

 

ইলেকট্রনিক্স পণ্যসামগ্রী মধ্যে ওয়ালটন কোম্পানি অনেক বেশি কমিশন প্রদান করে থাকে। আপনি চাইলে ওয়ালটন কোম্পানির ডিলারশিপ নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। 

 

তবে ওয়ালটন ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে চাইলে আপনাকে অনেক বেশি মূলধন বিনিয়োগ করতে হবে।

 

আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ মূলধন থাকে তাহলে ওয়ালটন ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করুন এটি অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসায় রূপান্তরিত হয়েছে।

 

৯/ ফ্রেশ কোম্পানির ডিলার

 

বাংলাদেশের স্বনামধন্য কোম্পানি এর মধ্যে অন্যতম একটি কোম্পানি হলো মেঘনা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রি। মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজর একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হল ফ্রেশ কোম্পানি। ফ্রেশ কোম্পানির কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় শত শত পণ্য সামগ্রী রয়েছে।

 

যেমন: ফ্রেশ তেল, আঠা, ময়দা, সুজি,  মিনারেল ওয়াটার পানি,  ফ্রেশ বিস্কুট চানাচুর ইত্যাদি শত শত পণ্য সামগ্রী রয়েছে। এবং তাদের পণ্য সামগ্রীগুলোর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে আমাদের দেশে। 

 

তাই আপনি চাইলে ফ্রেশ কোম্পানির ডিলার নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন আপনার এলাকাতে। 

 

১০/ অলটাইম ডিলার 

 

আমাদের বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বেকারি পণ্যের ব্রান্ড হল অলটাইম। অলটাইম এর রয়েছে ৪৬ টি পণ্য সামগ্রী। স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে ও আকর্ষণীয় প্যাকেজিং এর কারণে অলটাইম এর বন, পাউরুটি, কেক, কুকিজ, টোস্ট বিস্কুট, ইত্যাদি সর্বস্তরের মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

 

আপনি চাইলে আপনার এরিয়াতে বা অঞ্চলে অলটাইম এর ডিলার নিয়ে তাদের খাদ্যগুলো বিক্রয় করতে পারেন। বর্তমানে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে অলটাইম বেকারির পণ্যের।

 

পরিশেষে

বন্ধুরা আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি ডিলারশিপ ব্যবসা সম্পর্কে। ডিলারশিপ ব্যবসা কি? কিভাবে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করবেন? ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে কি কি প্রয়োজন? 

 

এবং বর্তমানে বাংলাদেশের সেরা কয়েকটি কোম্পানির ডিলারশিপ নিয়ে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। 

 

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনারা উপকৃত হবেন। আমাদের ডিলারশিপ ব্যবসার আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে অবশ্যই অবশ্যই শেয়ার করবেন এবং এই ধরনের নতুন নতুন ব্যবসা ও চাকরি সংক্রান্ত বিভিন্ন আইডিয়া পেতে আমাদের ওয়েবসাইটকে নজরে রাখুন ধন্যবাদ ।

Leave a Reply 0

Your email address will not be published. Required fields are marked *