ঝিন্দের বন্দী – শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
আজকাল প্রকাশনী – ১৬০ টাকা
কলকাতা শহরের দেওয়ান কালীশঙ্কর রায়ের অধস্তন পঞ্চম পুরুষ শিবশঙ্কর রায় এবং গৌরিশঙ্কর রায়। বড় ভাই শিবশঙ্কর এর যেখানে ইতিহাস কিংবা প্রত্নতাত্ত্বিক বিষয়াদি জানতে অপার উৎসাহ সেখানে ছোট ভাই গৌরিশঙ্কর এর আগ্রহ খেলাধুলা,সমিতি-ক্লাবে অংশগ্রহণ নিয়ে।আজ ফেন্সিং শিখছে ত কাল তলোয়ার চালনা শিক্ষা নিচ্ছে। বৌদি অচলা কিংবা ভাই শিবশঙ্কর এর পুনঃপুন বাক্যবাণ সত্ত্বেও ঘরের লক্ষ্মী আনতে আগ্রহ নেই গৌরীশঙ্কর এর।এমনই এক সময় তাদের বাড়িতে আগমন ঘটে ধনঞ্জয় নামের এক ব্যক্তির, যিনি নিজেকে মধ্যভারতের এক পাহাড়ি রাজ্যের রাজার পার্শ্বচর হিসেবে পরিচয় দেন।
মধ্যভারতের পাহাড়ঘেষা এক রাজ্য ঝিন্দ। ব্রিটিশ শাসন চলতি হলেও সেই এলাকার মানুষদের ব্রিটিশরা ঘাটায় না।ঝিন্দের পাশেই তাদের আত্মীয়ের রাজ্য ঝড়োয়া। ঝিন্দের রাজা ভাস্কর সিং মারা যাওয়াতে তার দুই অধিকারী শঙ্কর সিং ও উদিত সিং এর মাঝে রেষারেষি শুরু হয়ে যায়। বড় সন্তান হিসেবে শঙ্কর সিং সিংহাসনের যোগ্য অধিকারী। অথচ ছোট হয়েও উদিত সিং সিংহাসনে বসতে চায়।কিন্তু জনগণ তাকে চায় না কারণ মাতাল লম্পট হলেও শঙ্কর সিং এর প্রাণটা ভারি দরাজ অন্যদিকে উদিত সিং দুর্দান্ত অত্যাচারী। সিংহাসন দখলের লোভে দুই-দুইবার উদিত সিং অভিষেকের আগে নারীর লোভ দেখিয়ে বড় ভাই শঙ্কর সিংকে ভাগিয়ে দেন।কিন্তু পার্শ্বচর ধনঞ্জয় এর কারণে উদিত সিং এর কু-চিন্তা চরিতার্থ হয়না।একদিন সত্যি সত্যিই লাপাত্তা হয়ে যান কুমার শঙ্কর সিং এবং ভাগ্যক্রমে দেখা হয় কালীশঙ্কর রায়ের অধস্তন পঞ্চম পুরুষের সাথে। দুই ঘটনার মধ্যে সাদৃশ্য কোথায়?
বইটি মূলত Anthony Hope এর The Prisoner Of Zenda বইটির বাংলা সংস্করণ। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর নিপুণ হাতে ভারতবর্ষ হতে বইয়ের উপাদান নিয়ে বিদেশি কাহিনিকে দেশীয় মোড়কে আমাদের সামনে উপস্থান করেছেন। বাংলা এবং ইংরেজি দুই ভার্সনেরই সিনেমা আছে।
#ঝিন্দের বন্দী - শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়