কেন আমরা নামাজ পড়ি? লেখক : শাইখ মুহাম্মাদ ইসমাইল আল-মুকাদ্দাম

কেন আমরা নামাজ পড়ি?
লেখক : শাইখ মুহাম্মাদ ইসমাইল আল-মুকাদ্দাম
প্রকাশনী : তাসনিফ পাবলিকেশন
বিষয় : সালাত/নামায
অনুবাদক : মাসউদ আলিমী
পৃষ্ঠা : 240, কভার : পেপার ব্যাক
ভাষা : বাংলা


ঈমানের পর ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিধান কি?

উত্তর হচ্ছে সালাত। ঐশ্বর্যমণ্ডিত এই সালাতের রয়েছে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ কিছু তাৎপর্য। রয়েছে পার্থিব ও স্বর্গীয় সৌন্দর্য-সুষমা। নন্দিত আরব-লেখক শাইখ ইসমাঈল আল-মুকাদ্দাম সেই তাৎপর্য ও সৌন্দর্য জীবন্ত করে তুলেছেন তাঁর ‘কেন আমরা নামাজ পড়ি’ গ্রন্থে।সালাতের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ও শোভা, সাহাবা-তাবেয়িগণের সালাতপ্রীতি, সালাতের সৌন্দর্যে ঈমান আনয়নের হৃদয়স্পর্শী গল্প, সালাত ত্যাগের ভয়াবহ পরিণতি, খুশু-খুজু অর্জনের উপায়, সন্তানদের সালাতপ্রেমী হিসেবে গড়ে তোলার কার্যকরী টিপস-সহ আরও চিত্তাকর্ষক বহু বিষয় স্থান পেয়েছে ব‌ইটিতে। নির্দ্বধায় বলতে পারি, ব‌ইটি আপনার সালাতকে করবে আরও প্রাণবন্ত। আর‌ও খুশু-খুজুময়। প্রভু-প্রেমের উদ্যানে পরিণত হবে আপনার সালাত।

সালাত : ঈমানের পর ইসলামের সর্বপ্রধান রুকন

আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনার পর, সর্বাগ্রে পালনীয় বিধান হলো সালাত। মুমিন হওয়া মাত্রই সালাত আদায় তার ওপর অত্যাবশ্যক হয়ে পড়ে। কুরআনের একাধিক আয়াত ও অসংখ্য হাদিস, বিষয়টি অকাট্যভাবে প্রমাণ করে। যেমন মুশরিকদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন—

فإن تابوا وأقاموا الصلوة وعاثوا الزكوة فإخوتكم في الدين ‘যদি তারা তাওবা করে (শিরক থেকে ফিরে আসে। ইসলামের বিধিবিধান আঁকড়ে ধরে) এবং সালাত আদায় করে ও জাকাত দেয় তাহলে তারা তোমাদের দীনি ভাই।” [ সুরা তাওবা :১১]

উক্ত আয়াতে আল্লাহ শিরক থেকে তাওবার পর, সালাতের কথা সর্বাগ্রে এনেছেন। এতে প্রতীয়মান হয়, ঈমানের পরই সালাতের অবস্থান।

রাসুল * ও বিভিন্ন হাদিসে ঈমানের পর সালাতের কথা বলেছেন। ইসলামের মৌলিক পাঁচটি ভিত্তির কথা বলতে গিয়ে নবীজি বলেন—

“ইসলামের স্তম্ভ হচ্ছে পাঁচটি :

১. আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোনো উপাস্য নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসুল—এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা।

২. সালাত কায়েম করা।

৩. জাকাত আদায় করা।

৪. হজ সম্পাদন করা এবং

৫. রমজানের সিয়াম পালন করা।

উল্লিখিত হাদিসে নবীজি সাঃ কালিমার পরপরই এনেছেন সালাতের কথা; যা ঈমানের পর সালাতের সর্বপ্রধান রুকন হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে। এ ছাড়াও অসংখ্য হাদিসে এর প্রমাণ মেলে।

মুআয ইবনে জাবাল রা.-কে ইয়েমেনের গভর্নর করে প্রেরণকালে রাসুল * বলেছেন, ‘তুমি আহলে কিতাব লোকদের নিকট যাচ্ছ। তাই প্রথমে তাদেরকে আল্লাহর ইবাদতের দাওয়াত দেবে। যখন তারা আল্লাহর পরিচয় লাভ

করবে, তখন তাদের তুমি বলবে যে, আল্লাহ দিনে-রাতে তাদের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করে দিয়েছেন।” আল্লাহর রাসুল বলেছেন—’আমি লোকদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্য নির্দেশিত হয়েছি, যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোনো উপাস্য নেই ও মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসুল, আর কায়েম করে সালাত আদায় করে জাকাত। তারা যদি এগুলো করে, তবে আমার পক্ষ হতে তাদের জান

৪. সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৯। ৫. অপর এক বর্ণনায় এসেছে ‘প্রথমে তাদেরকে আল্লাহর একত্ববাদের দিকে আহ্বান করবে।

‘একত্ববাদ’-কে সর্বাগ্রে উল্লেখের রহস্য সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে শায়খ আবুল হাসান আলি নদভি রহ. বলেন, সালাতের তাৎপর্য, গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বোঝা, সালাতের প্রকৃত স্বাদ উপলব্ধি করা এমন ব্যক্তির পক্ষেই শুধু সম্ভব, যে রব ও বান্দা, স্রষ্টা ও সৃষ্টির মাঝে বিরাজমান অতুলনীয়, মহিমান্বিত ও আশ্চর্য-মধুর সম্পর্কের বিষয়টি পূর্ণরূপে অবগত।

রব ও বান্দার মাঝে বিদ্যমান সম্পর্কের যথার্থ পরিচয় পেতে হলে, সর্বাগ্রে আমাদেরকে আল্লাহর সিফাত ও গুণাবলির নিখুঁত একটা ধারণা অবশ্যই অর্জন করতে হবে। কেননা, সিফাত ও গুণাবলি হচ্ছে বিরাজমান সকল সম্পর্কের উৎস। সিফাত থেকেই ঘটে এর প্রকাশ। ফলে সকল আসমানি গ্রন্থ সালাত, ইবাদত, যাবতীয় বিধিবিধান ও আনুগত্যের নির্দেশ দানের পূর্বে এই সিফাত সম্পর্কে আলোকপাত করেছে। আর ঠিক এ কারণেই আমল ও ইবাদতের পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে আকিদার আলোচনা। সকল নবী-রাসুল মানুষকে অন্যান্য বিষয়াবলি ও বিধিনিষেধের দিকে আহ্বানের আগে আহ্বান করেছেন আল্লাহর একত্ববাদ, তাঁর নামসমূহ, গুণাবলি, কর্ম, মহিমা, পবিত্রতা ও পরিচিতির দিকে। স্বয়ং কুরআনই এর প্রত্যক্ষ প্রমাণ। [আল আরকানুল আরবাআ : ১৩-১৪; ঈষৎ পরিমার্জিত] ৬. সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৪৫৮; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩১।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply 0

Your email address will not be published. Required fields are marked *