ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা করার আইডিয়াসমূহ ২০২২

ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা করার আইডিয়াসমূহ ২০২২

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সাথে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব । ইলেকট্রনিক্স পণ্যে সামগ্রী নিয়ে ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই আপনার ইলেকট্রিক পণ্য সম্পর্কে ভালো জ্ঞান ও  ধারণা থাকতে হবে ।

 

বর্তমান বাজারে ইলেকট্রনিক্স পণ্যসামগ্রীগুলো যেমন :  ফ্রিজ,  টিভি , বৈদ্যুতিক পাখা , বাতি ,  কম্পিউটার , মোবাইল ফোন , ইত্যাদি অনেক জনপ্রিয়

 

বর্তমান এই আধুনিক যুগে ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী ছাড়া আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবন পরিচালনার কথা চিন্তাও করতে পারি না । 

 

ইতিমধ্যে আমাদের বাংলাদেশের অনেক সফল ইলেকট্রনিক পণ্য সামগ্রী কোম্পানি রয়েছে ।   এরপরও আপনি যদি ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে সেটি হবে দারুন একটি  সম্ভাবনাময় আইডিয়া ।

 

তবে ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী নিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য করার পূর্বে আপনার এই পণ্য সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা দরকার । 

 

আজকের আমাদের এই ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা আর্টিকেলে আপনাদের সাথে এইসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব ।  তাহলে চলুন বন্ধুরা বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক ।

 

ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা শুরু করার নিয়ম সমূহ 

 

ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা আপনি সাধারণত দুটি উপায় অবলম্বন করে করতে পারবেন ।  যেমন :

 

  •  খুচরা ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী বিক্রি করা ।
  •  ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী নিয়ে ডিলারশিপ ব্যবসা করা ।

 

ডিলারশিপ ব্যবসা বলতে বুঝায় কোন নির্দিষ্ট একটি কোম্পানির পণ্য সামগ্রী নির্ধারিত একটি এলাকায় সেই কোম্পানির পণ্য-সামগ্রীর প্রচার প্রচারণা ও বিপণন করার দায়িত্ব পালন করাকে ।

 

তবে আপনি যদি ইলেকট্রনিক পন্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চান সেক্ষেত্রে  খুচরা ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী নিয়ে ব্যবসা করাই উত্তম । 

 

খুচরা ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী নিয়ে ব্যবসা করতে হলে আপনাকে কিছু স্টেপ অনুসরণ করতে হবে ।  

 

তাহলে চলুন ধাপ বা পদক্ষেপগুলো দেখে নেওয়া যাক :

 

ইলেকট্রনিক্স পণ্য নিয়ে ব্যবসা করার স্টেপসমূহ 

 

১/  ব্যবসায় পরিকল্পনা – Business plan

 

যে কোন ব্যবসা বাণিজ্য বা কাজ শুরু করার পূর্বে পরিকল্পনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।  বলা হয়ে থাকে পরিকল্পনা একটি কাজের ৬০% কাজ সম্পন্ন করে থাকে ।  

 

অর্থাৎ আপনি যদি কোনো কাজ শুরুর পূর্বে তা সম্পর্কে সঠিক একটি পরিকল্পনা তৈরি করে নেন তাহলে আপনার কাজটি অনেক সহজ হয়ে পড়বে ।

 

ঠিক একটি ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রীর দোকান দেওয়ার পূর্বে কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে তা নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করতে হবে ।  কি পরিমান লাভ হতে পারে এবং ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু ইত্যাদি মাথায় রাখতে হবে ।  

 

আরো পড়ুন ,,,

 

এবং আপনাকে অবশ্যই একটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী নিয়ে ব্যবসা করতে হলে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে ।

 

২/ ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসার জন্য মূলধন

 

ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা আপনি শুরুতে অল্প টাকা বিনিয়োগ করে শুরু করতে পারবেন ।  

 

তবে ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রীগুলো তুলনামূলক অন্যান্য পণ্যের চেয়ে দামী পণ্য হওয়ার কারণে আপনার পর্যাপ্ত মূলধনের ব্যবস্থা আগে থেকেই জোগাড় করে রাখতে হবে ।

 

আপনার কাছে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ মূলধন না থাকে তাহলে আপনি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারেন ।  কিভাবে একটি ব্যাংক থেকে লোন নিতে হয় তা সম্পর্কে জানতে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ুন ।

৩/ ইলেকট্রনিক্স পন্যের ব্যবসার জন্য দক্ষতা

 

আপনি যদি ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী নিয়ে ব্যবসা করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে ব্যবসা শুরুর পূর্বে আপনাকে ইলেকট্রনিক্স পণ্য সম্পর্কে ভালো ধারণা অর্জন করতে হবে ।  

 

একজন গ্রাহক যখন আপনার দোকানে ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী ক্রয় করার জন্য আসবে তখন সেই পন্যের সুবিধা –  অসুবিধা এবং কিভাবে ব্যবহার করতে হবে তা সম্পর্কে গ্রাহককে জানাতে হবে ।

 

আরো পড়ুন,,

 

তাহলেই একজন গ্রাহক আপনার ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রীগুলো ক্রয় করতে আগ্রহী হয়ে থাকবে ।  তাই ইলেকট্রনিক পণ্য সামগ্রী নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চাইলে অবশ্যই নিয়মিত পণ্যগুলো নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে ।

 

 তাহলেই আপনি ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী নিয়ে একটি সফল ব্যবসা গড়ে তুলতে পারবেন ।

 

৪/ ইলেকট্রনিক ব্যবসায়ের নাম

 

যে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ব্যবসায়টি জনপ্রিয় হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ।  আপনাকে আপনার ইলেকট্রনিক্স দোকানের একটি সুন্দর নাম নির্বাচন করতে হবে ।  এমন একটি নাম নির্বাচন করতে হবে যা ইউনিক এবং পূর্বে কেউ তা ব্যবহার করেনি ।

 

এছাড়াও নামটি হতে হবে খুবই ছোট এবং সহজে উচ্চারণ করা যায় এমন । নামটি শুনেই মানুষ যেন বুঝতে পারে এটি যে একটি ইলেকট্রনিক্স ব্যবসা প্রতিষ্ঠান । 

 

৫/ ইলেকট্রনিক্স পন্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য লাইসেন্স

 

যে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য লাইসেন্স প্রয়োজন হয় এখন সেটা হোক একেবারে ব্যবসা শুরু সময় অথবা ব্যবসা শুরুর কিছুদিন পর । 

 

আপনার ব্যবসার যদি প্রয়োজনীয় লাইসেন্সগুলো তৈরী করা থাকে সেক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন আইনি জটিলতা থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারবেন ।

 

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী একজন ১৮ বছরের নাগরিক লাইসেন্স সংগ্রহ করতে পারবেন । 

 

বিশেষ করে আপনি যদি সিটি করপোরেশন এলাকায় আপনার ইলেকট্রনিক্স ব্যবসাটি শুরু করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ থেকে লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে । 

 

এছাড়াও আপনি জেলা পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও আপনার ইলেকট্রনিক্স ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জন্য লাইসেন্স সংগ্রহ করতে পারবেন ।

 

আরো পড়ুন,,

 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে এবং লাইসেন্সের ফি প্রদান করে আপনি আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য সহজেই একটি লাইসেন্স সংগ্রহ করতে পারবেন ।

 

৬/ ইলেকট্রনিক্স ব্যবসার জন্য জায়গা নির্বাচন করা

 

ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী নিয়ে খুচরা ব্যবসার দোকান করতে চাইলে আপনাকে একটি উপযুক্ত জায়গা সিলেক্ট করতে হবে ।  

 

বাজারে বা যাতায়াতের সুযোগ সুবিধা রয়েছে এমন একটি স্থানের মধ্যে ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রীর দোকান স্থাপন করতে পারলে প্রচুর পণ্য সামগ্রী বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে । 

 

৭/ ইলেকট্রনিক্স ব্যবসার জন্য পণ্য সোর্স ও পাইকারি মার্কেট 

 

আপনি যদি ঢাকার মধ্যে ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী নিয়ে খুচরা ব্যবসা করতে চান সেক্ষেত্রে ঢাকার  নবাবপুর এলাকায় পাইকারি দামে ইলেকট্রনিক্স পণ্য পাবেন । 

 

ঢাকার নবাবপুর এলাকায় শত শত পাইকারি ইলেকট্রনিক দোকান রয়েছে । এছাড়াও এখানে পাইকারি ইলেকট্রনিক্স পণ্য বিক্রির পাশাপাশি খুচরাভাবেও ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য কিনতে পাওয়া যায় । 

 

আরো পড়ুন,,

 

অল্প দামে ভালো ভালো নামিদামি কোম্পানির ইলেকট্রনিক্স পণ্য পাবেন ঢাকার নবাবপুর পাইকারি বাজারে ।

 

এছাড়াও ঢাকার গুলশান ডিসিসি মার্কেট, এবং মোহাম্মদপুর এলাকার টাউন হল মার্কেটগুলোতে  পাইকারি দামে ইলেকট্রনিক পণ্য সামগ্রী ক্রয় করা যায় ।

 

তবে সবচেয়ে ভালো হয় যেসব ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি গুলো রয়েছে তাদের থেকে সরাসরি ইলেকট্রনিক পণ্য সামগ্রী ক্রয় করা ।

 

৮/ ইলেকট্রনিক ব্যবসায়  টার্গেট গ্রাহক খোজা

 

ইলেকট্রনিক পণ্য সামগ্রী নিয়ে ব্যবসা শুরু করার পূর্বে আপনাকে বাজার বিশ্লেষণ করতে হবে ।  আপনি যদি আপনার কাস্টমারের চাহিদা সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে পারেন তাহলে সহজেই ইলেকট্রনিক ব্যবসা করে লাভবান হতে পারবেন ।

 

আপনি গ্রাহকের আর্থিক সচ্ছলতা, বয়স ,  লিঙ্গ,   স্থান , ধর্মীয় মনোভাব ইত্যাদি মাধ্যমে বাজার বিশ্লেষণ করতে পারেন । এবং গ্রাহকের বাজেট অনুযায়ী ইলেকট্রনিক পণ্য সামগ্রীগুলো সংগ্রহে রাখতে হবে ।

 

৯/ আপনার ইলেকট্রনিক্স পন্যের ব্যবসার পরিচিতি বৃদ্ধি করুন 

 

ব্যবসায় একটি কথা রয়েছে যে ” প্রচারই প্রসার “ । ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী নিয়ে দোকান দেওয়ার পর সঠিকভাবে আপনার ব্যবসার প্রচার প্রচারণা চালাতে হবে ।  

 

আপনি যত বেশি আপনার প্রতিষ্ঠান ও পণ্যের প্রচার প্রচারণা করবেন আপনার পণ্য ততো বেশি বিক্রি হবে ।

 

আপনি বিভিন্ন ধরনের  পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট, কার্ড, এবং অনলাইনের মাধ্যমে আপনার পন্যের প্রচারণা চালাতে পারেন । এবং কাস্টমারদের নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের অফার করতে পারেন ।

 

বর্তমানে প্রচুর মানুষ অনলাইন ব্যবহার করছেন তাই আপনি অনলাইনের মাধ্যমে আপনার ব্যবসার প্রচার প্রচারণা চালাতে পারেন ।  একটি ফেসবুক পেইজ ও ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে আপনার পণ্যগুলো সাজিয়ে রাখতে পারেন ।

 

আরো পড়ুন,,

 

উন্নত বিশ্বের মতো দিনদিন বাংলাদেশের মানুষও অনলাইন থেকে পণ্য সামগ্রী কিনতে আগ্রহী হয়ে উঠছে । 

 

১০/ ইলেকট্রনিক্স পন্যের ব্যবসা আয় কেমন ?

 

ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী দাম প্রতিনিয়তই বাজারের উঠানামা করতে থাকে ।  তাই সঠিকভাবে যদি   ইলেকট্রনিক্স পন্যের ব্যবসা পরিচালনা করা যায় তাহলে দ্রুত আপনার ব্যবসা থেকে লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করতে পারবেন ।

 

এছাড়াও ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায় যত বেশি মূলধন বিনিয়োগ করা যায় তবে বেশি মুনাফা করা সম্ভাবনা থাকে ।  

 

কেউ যদি ন্যূনতম ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে তাহলে সে প্রতিমাসে অনায়াসে ৩০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবে ।

 

ইলেকট্রিক সামগ্রীর তালিকা

 

বন্ধুরা আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী তালিকা সম্পর্কে ।  তাদের জন্য কিছু জনপ্রিয় ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী তালিকা নিচে দেয়া হল :

 

এনার্জি লাইট, সিলিং ফ্যান,  ফ্রিজ, চার্জার লাইট, ব্লেন্ডার মেশিন, রাইস কুকার, আয়রন, স্পিকার, ডিভিডি প্লেয়ার, মাল্টিপ্লাগ, ইউপিএস, এয়ারকন্ডিশন, কম্পিউটার এবং এর অ্যাক্সেসরিজ প্রোডাক্ট ,  পানির ফিল্টার, ওয়াশিং মেশিন, ক্যামেরা, রুম হিটার, মাইক্রোওয়েভ, আইপিএস ইত্যাদি ।

 

পরিশেষে – Conclusions

বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সাথে একটি ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা শুরু করা জন্য বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে । 

উপরে দেওয়া দশটি উপায় অবলম্বন করে যদি আপনি একটি ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা শুরু ও পরিচালনা করতে পারেন তাহলে দ্রুতই ব্যবসায় সফলতা অর্জন করতে পারবেন ।  

আজকের আমাদের ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শেয়ার করতে পারেন ।  এবং নিচে থাকে কমেন্ট বক্সে আপনার গুরুত্বপূর্ণ  মন্তব্যটি জানাতে পারেন । 

 

Leave a Reply 1

Your email address will not be published. Required fields are marked *