রাত দশটা রাজন নিজের সাইজের চেয়ে প্রায় ডাবল সাইজের পাঞ্জাবি পরে বাইট্টা বাবুল এর ড্রইংরুমে বসা। থুতনিতে কয়েকটা দাড়ি এমন একজন তার সামনে খাতা নিয়ে বসে আছে। এ সম্ভবত কাজী। একজন বয়স্ক মহিলা আসা-যাওয়া করছেন যে দেখতে অনেকটা নাদিয়ার মতো। এ-ই বোধহয় নাদিয়ার ডাকাত পিটায়ে আধমরা করে ফেলা খালা। ড্রইংরুমে অনেকগুলা গুন্ডা টাইপ দেখতে মানুষ। হয়তোবা দেখতে এরা স্বাভাবিকই, রাজনের কাছে লাগছে এমন।
রাজনের মোবাইল ফোনটা বাইট্টা বাবুল এর পকেটে। প্রায়ই বেজে উঠছে। রাজনের মা হয়তো ফোন দিচ্ছে।
ঠিক রাত সাড়ে এগারোটায় রাজনের এক টাকা কাবিনে সম্পূর্ণ উসুল দেখিয়ে বিয়ে হয়ে গেল। নাদিয়াকে ছবি তুলবার জন্য ড্রইংরুমে আনা হয়েছে। রাজনের একবারের জন্য নাদিয়া ওরফে নাদুর দিকে তাকানোর মতো রুচি হচ্ছে না। ওর মনে হচ্ছে ওর বুকের ওপরে বাইট্টা বাবুল নামক এক খুনি আর মেয়ে নাদিয়া-সহ চেপে বসেছে। ও কিছুতেই দম ফেলতে পারছে না।
-দুলাভাই শরবত খান। শরবত।
রাজন চমকে তাকাল। বারো-তেরো বছরের একটা হেংলা মেয়ে শরবত হাতে দাঁড়িয়ে আছে। এ সম্ভবত নাদিয়ার খালাতো বোন।
রাজন এক চুমুক শরবত খেয়ে নামিয়ে রাখল। রাজন এই মুহূর্তে ভাবছে মিতু ভাবির কথা। বাবা-মাকে ও কোনোভাবেই বোঝাতে পারবে না বাইট্টা বাবুল নামক একজন কোচিং থেকে ফেরার পথে লোকজন দিয়ে তাকে কিডন্যাপ করে জোরপূর্বক তার মেয়ে নাদুকে এক টাকা দেন মোহর উসুলে বিয়ে করতে বাধ্য করেছে। মিতু ভাবিকে বুঝিয়ে বললে ভাবি হয়তো কিছু-একটা করতে পারবেন।
বই: শেষ পর্যন্তও
লেখক: সাজিদা সিদ্দিকী কথা
সিয়ান | বিশুদ্ধ জ্ঞান | বিশ্বমান