PDF | ক্রীতদাসের হাসি শওকত ওসমান | Kritodaser Hashi By Shawkat Osman | পিডিএফ এবং রিভিউ

  • Title ক্রীতদাসের হাসি (পিডিএফ ডাউনলোড -PDF)
  • Author শওকত ওসমান বই pdf
  • Publisher সময় প্রকাশনী বই পিডিএফ
  • Quality পিডিএফ ডাউনলোড / PDF Download ☑️
  • ISBN 984458440X
  • Edition 8th Printed, 2015
  • Number of Pages 80 Only
  • Country বাংলাদেশ
  • Language বাংলা
  • প্রথম সংস্করণ ১৯৬৩

‘Kritodasher Hashi Is Most Popular Historical Novel’ We Added This Book PDF Download Free Link On boipaw.com. You Can Also Read Online Kritodaser Hashi Or Download PDF & eBook Version. Kritodaser Hashi First Published On 1963 And It’s Wrote by Author Shawkat Osman. So Read Review Download This Book. If you want to download Kritodasher Hashi by Author Shawkat Osman Then Please Go to the bottom page & enjoy the Book.’

আচ্ছা আপনি কি হাসতে ভালোবাসেন? কখনো অর্থ-সম্পদ কিংবা ক্ষমতার বিনিময়ে সুখ কিনতে চেষ্টা করে দেখেছেন? সুখ কি আদৌ কেনা যায়? আপনি সুখ কিনে থাকুন বা না থাকুন, বাগদাদের খলিফা হারুনর রশিদ কিনতে চেয়েছিলেন সুখ। আর সেই সুখ কেনার গল্প নিয়েই লেখা হয়েছে “ক্রীতদাসের হাসি”। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক ” ক্রীতদাসের হাসি”র প্লট।

PDF | ক্রীতদাসের হাসি শওকত ওসমান | Kritodaser Hashi By Shawkat Osman | পিডিএফ এবং রিভিউ

বাগদাদের খলিফা হারুনর রশিদ রোজ রাতে নর-নারীর সম্মিলিত হাসির শব্দ পান যে হাসি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে উৎসারিত, যে হাসি প্রাণোচ্ছলতায় পরিপূর্ণ। বাগদাদের অধিপতি, খলিফা হারুনর রশিদ যিনি অগাধ ঐশ্বর্যের মালিক, যার সম্পদ আর ক্ষমতা সীমাহীন, তিনিও কিনা এমন হাসি হাসতে পারেন না! কার এতো সুখ বাগদাদে? অনেক অনুসন্ধানে জানা গেলো এ হাসি এক হাবসী গোলামের। খলিফা গোলামের হাসির পুরস্কার স্বরূপ তাকে অনেক সহায়-সম্পত্তি আর অর্থ-সম্পদের মালিক করে দিলেন। কিন্তু সুকৌশলে গোলাম তাতারীর প্রণয়নী স্ত্রীকে আলাদা করে দিলেন তাতারীর থেকে। হাবসী গোলাম তাতারী যাকে দিন রাত করতে হতো পরিশ্রম তবু দুবেলা দু মুঠো জুটতোনা অন্ন, সে এখন সম্পদশালী। কিন্তু কোথায় সেই প্রাণখোলা হাসি? তাতারী যে আর হাসে না। কথা কয় না। যে হাসির বিনিময়মূল্যে তাতারী পেল এতো অর্থ-সম্পদ, দাস-দাসী সেই হাসিই কি তাতারীকে করে দিয়েছিলো নিঃস্ব? জানতে হলে পড়তে হবে “ক্রীতদাসের হাসি”।

‘ক্রীতদাসের হাসি’র ভূমিকা অংশে লেখক শওকত ওসমান এটিকে ‘আলেফ লায়লা’র সহস্র ও দুই রাত্রি অর্থাৎ একদম শেষ গল্পখানা যার পাণ্ডুলিপি খুঁজে পাওয়া যায় না সেই পাণ্ডুলিপির বাংলা অনুবাদ বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এ ভূমিকা আরেক ধরনের ছদ্মবেশ। “ক্রীতদাসের হাসি” মূলত আলেফ লায়লার হৃত কাহিনীর আদলে লেখা তৎকালীন স্বেচ্ছাচারী শাসকের বিরুদ্ধে এক প্রচ্ছন্ন প্রতিবাদ। হ্যাঁ, এখানেই অবাক হওয়ার পালা। 
১৯৪৭ সালের ১৪ ও ১৫ আগস্ট পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। জন্মলগ্ন থেকেই পাকিস্তান রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে জন্ম নেয় সমস্যা। পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতায় ছিলো পশ্চিম পাকিস্তানের নেতৃবৃন্দ যারা কারণে অকারণে শোষণ করতেন পূর্ব-পাকিস্তানের জনগোষ্ঠীকে। দুটি অংশ নিয়ে গড়ে ওঠা পাকিস্তানের এক অংশ শাসক আর অন্য অংশ শোষিতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। পাকিস্তানকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করা হলেও ছিলো না সংবিধানের কার্যকারিতা। নামে মাত্র সংবিধান আর পূর্ব-বাংলাকে শোষণ এই ছিলো পাকিস্তান। 

১৯৫৮ সালের ০৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্জা সমগ্র পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি করেন। এটি ছিলো সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক আইয়ুব খানের কূটচাল। ২৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট মির্জাকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে আইয়ুব খান নিজেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন। সামরিক আইন জারি করে সাধারণ জনগণের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিলো। পাকিস্তানে পরবর্তী ১১ বছর এ সামরিক শাসন বহাল থাকে।  

পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী, বিশেষত আইয়ুব খান ও তার ‘মার্শাল ল’ কে নিয়ে বিদ্রুপ করে লেখা শওকত ওসমানের “ক্রীতদাসের হাসি”। ” ক্রীতদাসের হাসি” এখানে রূপক অর্থে উঠে এসেছে। ক্রীতদাস তাতারীর হাসি যেন পূর্ব-বাংলার বাকস্বাধীনতা যা শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতার বিনিময়ে কিনতে চায়।  
১৯৬১ সালে রচিত “ক্রীতদাসের হাসি” ১৯৬২ সালে প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয়। সময়টা তখন সামরিক শাসনের, প্রেসিডেন্ট আইয়ুব ক্ষমতায়। ওরকম পরিস্থিতিতে পাকিস্তানি স্বৈরশাসন সম্পর্কে বিদ্রুপাত্মক একখানা বই রচনা এবং প্রকাশ ছিলো মারাত্মক বিপদজনক। শাসকগোষ্ঠী আঁচ করতে পারলে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ এনে নিতে পারতো শাস্তিমূলক সর্বোচ্চ ব্যবস্থা। শওকত ওসমান তাঁর ৯৫ সালে প্রকাশিত হওয়া পুনঃমুদ্রণে তাই কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রকাশক আব্দুল বারী ওয়ার্সীকে যিনি স্বৈরতন্ত্রের যুগে নৈতিক সাহস নিয়ে বইটি প্রকাশে এগিয়ে আসেন।
এবারে আরো একবার চমকাবার পালা। ১৯৬২ সালের প্রকাশিত “ক্রীতদাসের হাসি” ঐ বছরই পায় শ্রেষ্ঠ উপন্যাসের পুরস্কার। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীকে বিদ্রুপ করে লেখা রূপকাশ্রয়ী উপন্যাস কিনা পাকিস্তান সরকার কতৃক শ্রেষ্ঠ উপন্যাসের মর্যাদা পেল! এ থেকে শওকত ওসমানের কৌশলী লেখনী যেমন প্রশংসার দাবী রাখে তেমনি শাসকশ্রেণির নির্বুদ্ধিতা হাস্যরসের সঞ্চার করে।  
“ক্রীতদাসের হাসি” লেখাটি উপন্যাস না নাটক এটি বেশ দ্বান্দ্বিক প্রশ্ন। সংলাপের ব্যবহার, কাহিনী প্রসারে নাটকীয়তা, দৃশ্যপটের বিন্যাস, সংলাপের শুরুতে মঞ্চায়নের নির্দেশনা দেখে বোধ হয় এটি নাটক। কিন্তু লেখকের ভাষ্যমতে এটি উপন্যাস। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়েছে এটি না নাটক না উপন্যাস ঘরানার একটি লেখা।    
যদি এটাকে উপন্যাস হিসেবেও ধরে নিই, উপন্যাসের প্রধান চরিত্র ক্রীতদাস তাতারী। তাতারীর প্রণয়িনী স্ত্রী হচ্ছে আর্মেনীয় বাঁদী মেহেরজান। অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হচ্ছে খলিফা হারুনর রশিদ। গল্পের প্রয়োজনে আরো বেশ কিছু চরিত্রের অবতারণা করা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে খলিফার সহধর্মিণী বেগম জুবায়দা। জুবায়দার চরিত্রটিকে লেখক মাতৃরূপে প্রতিষ্ঠা দিতে চেয়েছেন যাঁর অন্তর স্নেহ-মমতায় পূর্ণ। তবে চরিত্রটি অপ্রধান। তাছাড়া মশরুর চরিত্রটি রয়েছে হারুনর রশিদের অনেকটা খোদ লোক হিসেবে। স্বৈরিনী বুসায়না চরিত্রটি অনন্য। যে বুসায়না নিজেকে বিকিয়ে দিয়েছে অনায়াসে, সেই বুসায়নার চরিত্রের বৈপ্লবিক পরিবর্তন ফুটে উঠেছে পরবর্তীতে।   
ক্রীতদাসের হাসির খলনায়ক হারুনর রশিদ যে আর কেউ নয়, প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান এবং খলিফার স্বেচ্ছাচারিতাই যে পাকিস্তানের মার্শাল ল তা গভীরভাবে চিন্তা করলে বুঝতে পারা যায়। গোলাম তাতারী খলিফার ক্রীতদাস, কিন্তু তাতারীর হাসি দাস্যতা মেনে নেয় নি। সবকিছুর বিনিময়েও শেষ পর্যন্ত হারুনর রশিদ কিনতে পারেন নি সে হাসিকে। তেমনিভাবে আইয়ুব খান পূর্ব বাংলার বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিতে চাইলেও কাড়তে পারেন নি চিন্তা, মননশীলতা আর স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা। 
উপন্যাসটিকে যেহেতু আলেফ লায়লার গল্প জাহাকুল আব্‌দ আনুবাদ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন লেখক। পুরো লেখা জুড়ে বিদেশী শব্দের আধিক্য লক্ষ্য করা যায়৷ এ সমস্ত শব্দের ব্যবহারের কারণে উপন্যাসটিকে পাঠকের কাছে দুর্বোধ্য ঠেকতে পারে। এজন্য উপন্যাসের শেষে শব্দপঞ্জীর মাধ্যমে বিদেশি শব্দের বাংলা অর্থ দেওয়া হয়েছে। উপন্যাসে আরবি-ফারসি শব্দের ব্যবহার যে শুধু দুর্বোধ্যতার জন্ম দেয় তা নয়, লেখকের সমৃদ্ধ শব্দভাণ্ডার সম্পর্কেও জানান দেয়। 
 উল্লেখযোগ্য লাইন:
• যে নারী বিশ্বের সৃষ্টি মানব জাতির শিশুকে পৃথিবীতে আমন্ত্রণ দিয়ে আনে, যে নারী শাশ্বত মানবতার জননী-বসুন্ধরার অনন্ত অঙ্গীকার, সে অত সস্তা হয় না, বুসায়না। 
• জীবনের নিঃশ্বাস প্রশ্বাস কবিতা কি কখনো বিশ্রাম নিতে পারে?
• সময়ের ভারের কাছে হিমালয় পরাজয় স্বীকার করে। এখানে মহাকাল স্বয়ং অনড়। সকলের নিঃশ্বাস ভারী। 
• কণ্টক-মুকুট মাথায় হযরত ঈসা, যীশুখ্রীষ্ট অমর। আমার কণ্টক শয্যা আমাকে কি দেবে? 
• যুক্তির পিছনে থাকে মুক্তির স্বপ্ন। এই মুক্তির স্বপ্নই মানুষকে মানুষ বানায়। 
• সরাইখানায় কি কেউ আসে গৃহোচিত নীরবতা উপভোগে? সকলের তরঙ্গে গা ঢেলে সবাই স্নানার্থী এখানে। 
• জাঁহাপনা ভুলকে ভুল বলা কবিদের ধর্ম। আমরা শুধু সুন্দরের পূজারী-ই নই
• বাগদাদের প্রেম আমাকে বানিয়েছে কবি,বাগদাদের প্রেম আমাকে করে তোলে শহীদ – কারণ জীবন সবসময় তারা পিছনে ফেলে চলে। জীবন থেকে জীবনান্তর। কবিরা তাই মাত্র একটিবার পুনরুজ্জীবনের স্বর্গলোভী শহীদ নয়। তাঁরা বেঁচে আবার শহীদ হয়, শহীদ হয়, আবার বেঁচে ওঠে। জীবনমৃত্যুর সাময়িক ফারাকে তাই তাঁরা বিহ্বল হয় না, শঙ্কাত্রাসে ধুলায় লুটিয়ে পড়ে না। কবিমাত্র রক্তবীজ, বিবেকের নিষ্কাম সাধক। 
“ক্রীতদাসের হাসি” সম্পর্কে লিখতে গেলে প্রথমেই যে কথাটি মাথায় আসবে, সেটি হচ্ছে শ্লেষ। বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা আর শ্লেষাত্মক লেখনীর অপূর্ব মিশ্রণ এই লেখা। উপন্যাসের শেষ লাইন, ‘হাসি মানুষের আত্মারই প্রতিধ্বনি’ যেব পূর্ব-বাংলার মানুষ এবং তাদের স্বাধীনতাকাঙ্ক্ষাকেই নির্দেশ করে। উপন্যাসের শেষের “অসমাপ্ত” লেখাটি পাঠকের চিন্তার দ্বারকে উন্মোচিত করে৷ 
 ৭৭ পাতার এ উপন্যাস পড়ে মুগ্ধ হয়েছি। কলম, চিন্তাশীলতা আর কৌশলের সমন্বয়ে যে নিদারুণ প্রতিবাদমুখরতার জন্ম দেয়া সম্ভব তা অনুধাবন করে আশ্চর্য হয়েছি। এক বসায় শেষ করার মতন একখানা বই। 
 উপন্যাসে চরিত্র ও গল্পের প্রয়োজনে এসেছে যৌনতা যেটি অনেক পাঠকের কাছে ভালো নাও লাগতে পারে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা আন্দোলন সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকলে বইটির প্রেক্ষাপট বুঝতে সুবিধে হবে।
এককথায় বলতে গেলে “ক্রীতদাসের হাসি” অবশ্যপাঠ্য একখানা বই যার পাতায় পাতায় রয়েছে প্রতিবাদ আর বিদ্রোহ।  

About the Author

Sowkot Osman) তাঁর পৈতৃক নাম শেখ আজিজুর রহমান। নাটক, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, রম্যরচনা, রাজনৈতিক লেখা, শিশু-কিশোর সাহিত্য সর্বত্র তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে তিনি ছিলেন এক উচ্চকিত কণ্ঠের অধিকারী।
জন্ম -১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের ২ জানুয়ারি পশ্চিম বঙ্গের হুগলী জেলার জেলার সবল সিংহপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।বাংলাদেশের একজন চিন্তক, লেখক ও কথাসাহিত্যিক। পিতা শেখ মোহাম্মদ এহিয়া, মাতা গুলজান বেগম। পড়াশোনা করেছেন মক্তব, মাদ্রাসা, কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি কলকাতার আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ালেখা শুরু করলেও পরবর্তীকালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও অর্থনীতি বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। কিন্তু একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। আইএ পাস করার পর তিনি কিছুদিন কলকাতা করপোরেশন এবং বাংলা সরকারের তথ্য বিভাগে চাকরি করেন।
এমএ পাস করার পর ১৯৪১ সালে তিনি কলকাতার গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজে লেকচারার পদে নিযুক্ত হন। ১৯৪৭ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ অফ কমার্সে যোগ দেন এবং ১৯৫৮ সাল থেকে ঢাকা কলেজে অধ্যাপনা করে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে স্বেচ্ছা অবসরে যান। চাকরি জীবনের প্রথমদিকে কিছুকাল তিনি ‘কৃষক’ পত্রিকায় সাংবাদিকতাও করেন। প্রয়াত হুমায়ুন আজাদ শওকত ওসমানকে বলতেন ‘অগ্রবর্তী আধুনিক মানুষ’। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশ বিভাগের পর তিনি চলে আসেন পূর্ববঙ্গে।বাংলাদেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মুক্তবুদ্ধির আন্দোলনে জীবনব্যাপী অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার – এই তিনটিতেই ভূষিত হয়েছিলেন। ক্রীতদাসের হাসি তাঁর একটি জনপ্রিয় ঐতিহাসিক উপন্যাস। তাঁর জনপ্রিয় গ্রন্থ গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ জননী, জাহান্নম হইতে বিদায়, বনী আদম, ওটেন সাহেবের বাংলো, কালরাত্রি খ-চিত্র, মুজিবনগর, দুই সৈনিক ও অন্যান্য। মৃত্যু -১৪ মে ১৯৯৮।
ক্রীতদাসের হাসি(প্রথম সংস্করণ ১৯৬৩) 
ক্রীতদাসের হাসি(প্রথম সংস্করণ ১৯৬৩)
তৎকালীন পাকিস্থানের স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের শাসন ব্যবস্থাকে ব্যঙ্গ করে এ উপন্যাস রচিত

বুক রিভিউ ২

  • বই: ক্রীতদাসের হাসি
  • লেখক: শওকত ওসমান
  • ক্যাটাগরি: বাংলা উপন্যাস
  • প্রথম সংস্করণ : ১৯৬৩ (ওয়ার্সি বুক সেন্টার)
  • প্রকাশনা: সময় প্রকাশন
  • পুরস্কার: আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৬)
 প্রখ্যাত লেখক শওকত ওসমানের অন্যতম কালজয়ী উপন্যাস ‘ক্রীতদাসের হাসি’ হলো, স্বৈরাচারী শাসকের অগণতান্ত্রিক ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়ামূলক রাজনৈতিক উপন্যাস। তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের সামরিক শাসনামলে, জনগণের বাকস্বাধীনতার বীজকে মূলোৎপাটন করা হয়েছিল। তাঁরই প্রেক্ষিতে রচিত হয়েছে শওকত ওসমানের ‘ক্রীতদাসের হাসি’ উপন্যাসটি। এই উপন্যাসে, স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে তাতারী (উপন্যাসের প্রধান চরিত্র) হয়ে ওঠেন, বাকস্বাধীনতাকামী ও প্রতিবাদী কন্ঠস্বর।
বাগদাদের খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী বেগম জুবাইদা বাদশার অগোচরে প্রাসাদের বাদী মেহেরজানকে, বাদশার গোলাম তাতারীর সাথে বিবাহ দিয়ে দেয়। এক গভীর রাতে, বাগানে পায়চারি করতে করতে, খলিফা শুনতে পায় ভেঁসে আসা সুমিষ্ঠ হাসির আওয়াজ যা তাঁর হৃদয়ের যাবতীয় বেদনার উপশম হয়ে দাঁড়ায়। অবশেষে, গোলাম বস্তীতে (তাতারীর থাকার ঘর) খলিফার হাতে-নাতে ধরা খেয়ে যায় এই দম্পতি (মেহেরজান ও তাতারী), যাঁদের হাসিতে দূর হয়েছিল খলিফার হৃদয়ের যাবতীয় যাতনার জল্পনা- কল্পনা। খলিফা হারুনুর রশিদ বলল, ” আলেম আব্দুল কুদ্দুস বলেছে, মালিকের হুকুম ব্যতিত বাদী/ গোলামের শাদি নাজায়েজ।”
যাইহোক, খলিফা তাতারীকে ক্ষমা করে দিলেন।বাদশাহ তাতারীকে একটা বাগিচা ও কিছু গোলাম পাশাপাশি মালামালও দিয়ে দেয়, বিনিময়ে তাতারী বাদশাকে প্রয়োজনমাফিক মুখের হাসি উপহার দেবে।এদিকে মেহেরজানকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো প্রাসাদে। 
 প্রিয়জনকে হারিয়ে তাতারী এখন বাকশূন্য। এখন রীতিমতো মতো হাসে না,তাতারী। খলিফার নির্দেশেও, বুসায়নার (বাগদাদের নামকরা সন্দরী) প্রেম-নিবেদনেও সাঁড়া দেয়নি এই হাবসী গোলাম। ‘বুসায়না-হত্যা’ নামক ভূয়া মামলায়, তাতারী নিরবে সয়ে যায় তিন বছর জেল নির্যাতন। যদিও তাঁকে বলা হয়েছিল, মুখে হাসি দিলে তাঁর জেল হবে না!!
  এভাবে শত অত্যাচারের পরেও, খলিফা হারুনুর রশিদ এই কৃষ্ণ-গোলামের মুখে হাসি ফোটাতে পারেনি। 
      কয়েদখানায়, খলিফা মেহেরজানকে ( তখন খলিফার সহধর্মিণী) সঙ্গে নিয়ে হাজির হয় তাতারীর সম্মুখে। কিন্তু হায়!! তাতারীর শারীরিক অবস্থা দেখে, বাদশাহ কর্তৃক পরিচয় করিয়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত মেহেরজান তাতারীকে চিনতে সক্ষম হয়নি। খলিফার নির্দেশে মেহেরজান চলে যাওয়ার সময় তাতারী বলল, “মেহেরজান, মেহেরজান, মেহেরজান?” আরো বলল, “শোন ( নির্ভীকচিত্তে) হারুনুর রশিদ, দীরহাম দৌলত দিয়ে ক্রীতদাস গোলাম কেনা যায়। কিন্তু ক্রীতদাসের হাসি! না-না-না-না!!!!”
কবি নওয়াস (খলিফার সভাকবি) খলিফার সম্মুখে বলেছিল, ” হাসি মানুষের আত্মারই প্রতিধ্বনি।”
    ‘ক্রীতদাসের হাসি’ বইটিকে তথ্যের দিক দিয়ে উপন্যাস হলেও গঠনগত দিকদিয়ে নাটকও বলা চলে।মূলত লেখক শওকত ওসমান এই উপন্যাসের মাধ্যমে চেয়েছেন, তখনকার পরিস্থিতিতে তাতারী চরিত্রের মত বাকস্বাধীনতাকামী ও প্রতিবাদী জনশক্তি গড়ে তুলতে। হলোও তাই! পরিশেষে, এদেশে হাজারো তাতারী (এ চেতনার ধারক) স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্যদিয়ে ফিরে পেয়েছে বাকস্বাধীনতা। এখানেই উপন্যাসটির সার্থকতা নিহিত।
কলমে
আবছার রুহেদ 
শিক্ষার্থী, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, 
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

 People Also Search On Our Website 🔍

  • ক্রীতদাসের হাসি উপন্যাসের শেষ বাক্য
  • ক্রীতদাসের হাসি rokomari
  • ক্রীতদাসের হাসি উপন্যাসের আঙ্গিক
  • ক্রীতদাসের হাসি কত সালে প্রকাশিত হয়
  • ক্রীতদাসের হাসি কী ধরনের উপন্যাস
  • ক্রীতদাসের হাসি কার লেখা
  • ক্রীতদাসের হাসি উপন্যাসের আরবি নাম কি
  • ক্রীতদাসের হাসি উপন্যাসের রূপকধর্মীতা
  • kritodasher hashi summary
  • bangla uponnash pdf free download
  • bengali pdf
  • poro pdf
  • best bangla uponnash pdf download
  • vallabhacharya books pdf in gujarati
  • borof gola nodi pdf
  • ebookmela bangla

Kritodaser Hashi PDF Download

বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?