বই : জাপানের পুরাণ – কামি পর্ব
লেখক : মো. ফুয়াদ আল ফিদাহ
প্রচ্ছদ : রিয়াজুল ইসলাম
প্রকাশক : বিবলিওফাইল
মূদ্রিত মূল্য : ৬০০৳
পৃষ্ঠা : ৪০০
🔰পাঠ প্রতিক্রিয়া : জাপানের পুরাণ – কামি পর্ব
জাপান হলো পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। জাপানকে প্রায়শই “উদীয়মান সূর্যের দেশ” বলে অভিহিত করা হয়। সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে জাপান যেমন আকর্ষণীয় তেমনই বর্ণিল। সেই সাংস্কৃতিতে এখনো দেখা মেলে সুপ্রাচীন সভ্যতার পৌরাণিক প্রভাবের।
জাপানের পুরাণ বইটি সেই সব জনপ্রিয় পৌরাণিক নানান সব তথ্য, ঘটনা নিয়েই লেখা প্রথম বই- কামি পর্ব, যেখানে উঠে এসেছে জাপানের পুরাণ অনুসারে সৃষ্টিতত্ত্ব, উল্লেখযোগ্য দেবদেবীদের পরিচয়, কামি ও সম্রাট যুগ এবং শেষের দিকে এসে নানান সব ইয়োকাই অনুক্রমিকা। সেই সাথে পরবর্তীতে আসবে বীর পর্ব ও ইয়োকাই পর্বও।
বেটা রিডার হওয়ার সুবাদে বইটা আগেই পড়ে ফেলেছি আমি। বইটা পড়তে গিয়ে একদম প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খুব আগ্রহ নিয়েই পড়েছি। এবং বলতেই হয় যে বইটা খুবই উপভোগ্য লেগেছে যার একটা অন্যতম কারণ লেখক মো. ফুয়াদ আল ফিদাহ’র উপস্থাপনা। লেখক প্রতিটি বিষয় এনেছেন ধাপে ধাপে, পুরাণের কাহিনি গুলো উপস্থাপন করেছেন ফিকশনের মতো করে যার ফলে পড়তে গিয়ে বোরিং লাগেনি। সেই সাথে দিয়েছেন অনেক শব্দের ফুটনোট। তবে অন্যান্য পুরান-মিথ এই যেমন গ্রিক, মিশর কিংবা নর্স পুরান গুলো পড়তে গিয়ে ঠিক যতটা গোছালো এবং সমৃদ্ধ লাগে ঠিক ততটা সমৃদ্ধ বলা যায় না জাপানের পুরাণকে।
জাপানের পুরান বইটা পড়তে গিয়ে খেয়াল করেছি যে জাপানের বর্তমান সংস্কৃতি, দৈনন্দিন জীবনযাপনের সাথে তাদের পুরান জড়িয়ে আছে ওতোপ্রোতো ভাবে, সভ্যতার এতকাল পরে এসেও যা এখনও চোখে ধরা দেয়। সেই সাথে চৈনিক সভ্যতা এবং ভারতীয় সভ্যতার খুব কাছেই অবস্থান বলে জাপানের পুরাণের মাঝে স্থান করে নিয়েছে বেশ কিছু দেবদেবী, গল্পও। এবং কি গ্রিক মিথলজিরও বেশ কিছু পরিচিত দেবদেবী, গল্পেরও মিল পেয়েছি।
বইটিতে পুরানের ফাঁকে ফাঁকে ব্যবহৃত হয়েছে নানান সব ছবি যার কোনোটাতে যেমন দেখানো হয়েছে কোনোএক দেবদেবীকে কিংবা কোনোটাতে দেখানো হয়েছে পৌরাণিক কাহিনির বিশেষ কোনো ঘটনার ছবি যা বইটি পড়তে গিয়ে উপভোগের মাত্রাটা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
বইটি পড়তে গিয়ে ভালো লাগার ভীড়েও জাপানিদের নাম গুলো বেশ বাঁধা সৃষ্টি করেছে, অবশ্য নাম নিয়ে এমন ভোগান্তি আমার নতুন নই, এর আগেও জাপানি বেশকিছু থ্রিলার পড়তে গিয়ে এমনটায় ভুগেছি, তবে বইটির লেখায় যখন ডুবে যাবেন তখন সবকিছুই আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।
বইটার প্রোডাকশন কোয়ালিটি চমৎকার, ভিতরের ছবিগুলোও দারুন এসেছে। প্রচ্ছদটাও দারুণ হলেও আমার নামলিপিটা ভালো লাগেনি এর অন্যতম একটা কারণ হলো বইয়ের নামটা ঠিকভাবে চোখে না লাগা, এক্ষেত্রে নামলিপিটা বোল্ড করলে আরো ভালো হতো তবে প্রচ্ছদের অন্যান্য উপাদান বিশেষ করে জাপানের পতাকারও ব্যবহারটা সত্যি চমৎকার লেগেছে।
#জাপানের পুরাণ - কামি পর্ব