Ghumer buddhe Leela ashe by pijush kanti barua

বইয়ের নাম :ঘুমের মধ্যে লীলা আসে।
লেখক:পীযূষ কান্তি বড়ুয়া।
প্রকাশক:দৃষ্টি।
পাতা সংখ্যা :৭৯
প্রথম প্রকাশ:ফেব্রুয়ারি ২০১৮
মূল্য :২০০ টাকা
মরিয়ম আক্তার (review all credit)
ISBN:978-984-34-3352-7

ℹ️উপন্যাসটির চরিত্রগুলোর বর্ননা:
         “ঘুমের মধ্যে লীলা আসে” উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র হরিৎ। বাস্তব জীবনে যে কীছুটা চঞ্চল। যে তার স্বপ্নে প্রিয়তমাকে খুঁজে পেতো। লীলা নামের মেয়েটির বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই। হরিৎ এর স্বপ্নের জগতের স্বপ্নকন্যা সে। বৃষ্টি নামের তরুনীটির বয়স কম  হলেও হরিৎ এর মতে সে খুব পাকা। বৃষ্টির মনে হয় হরিৎ নিতান্তই বোকা আর সে তার বোকামোকেই ভালোবাসতো।
 🧾উপন্যাসটির সংক্ষিপ্ত বিবরন:
 পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার উপন্যাস ঘুমের মধ্যে লীলা আসে এক রোমাঞ্চকর কাহিনী দিয়ে লেখা। এর প্রধান চরিত্র হরিৎ নামের এক দুরন্ত যুবক। সে  তার স্বপ্নে এই যুবতীর সন্ধান পায়। সত্যিকারার্থে যার কোনো অস্তিত্ব নেই। 
স্বপ্নে দেখা মেয়েটির একটা সুন্দর নামও দেয় হরিৎ। লীলা।লেখকের মতে লীলার সৌন্দর্যের বর্ননা প্রগাঢ়। “লীলা নামের মেয়েটি পরী নয় তবে পরীর মতো দেখতে।তার পরীর মতো ডানা নেই। তবে জ্যোৎস্নার দুধ-সাদা রঙের স্রোতে তার ত্বকের দ্যুতি। “
হরিৎ প্রতি রাত ঘুমের মাঝে লীলার প্রতীক্ষায় থাকতো। ঘুমের ঘোরে লীলা আসতে কখনো দেরী করেনি। লীলার  কোমল হাত ধরে হরিৎ বেরিয়ে পড়তো দূরদুরান্তের  ভ্রমনে।
স্বপ্নেই লীলার হাত ধরে হরিৎ বাংলাদেশের কোনো দর্শনীয় স্থানে ভ্রমন করতে বাদ দেয়নি। ভ্রমনে গিয়ে হরিৎ লীলার কাছ থেকে শুনতো ভ্রমনকৃত জায়গার পূর্ব ইতিহাসগুলো। যেমন : কক্সবাজারের অন্যনাম প্যানোয়া। যদিও ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স এর নামানুযায়ী কক্সবাজার হয়েছে কিন্তু এর প্রাচীন নাম প্যানোয়া। 
এভাবে লীলার সাথে রোজ স্বপ্নে হরিৎ ভ্রমনে যেতো আর জানতো নানান জায়গার ইতিহাস। হরিৎ এর স্বপ্নে লীলা প্রতিদিনই ধরা দিতো।আর তার হাত ধরে হরিৎ চলে যেতো কল্পনার রাজ্যে। বাস্তব জগতে বৃষ্টি নামের এক যুবতীও হরিৎ এর জীবনের কোনো অংশে জায়গা করে নেয়। প্রায়ই হরিৎ বৃষ্টির সাথে দেখা করতো। বৃষ্টি মনে মনে হরিৎকে ভালোবাসতো। হরিৎ এর ও  বৃষ্টিকে ভালোই লাগতো। বৃষ্টি প্রতীক্ষায় থাকতো কবে সে হরিৎকে ভালোবাসার কথা জানাবে। বৃষ্টির জন্মদিন। হরিৎ একটি তৈলচিত্র আর এক গোছা রক্ত গোলাপ নিয়ে চলে গেল বৃষ্টির জন্মদিনের দাওয়াতে। বৃষ্টিও বাঙালী নারীর রুপে নীল শাড়ী আর সাদা ব্লাউজ পড়ে এসেছে। ভালোই কাটলো সময়টা। যাওয়ার সময় বৃষ্টি হরিৎ এর হাতে একটা খাম ধরিয়ে দেয়।সারাদিন আড্ডা শেষে রাতের ঘুমোতে যাওয়ার আগে হরিৎ খামটা খুলে। খামটা পড়তেই হরিৎ কিংকর্তব্যবিমূঢ়। চিঠিতে দুলো লাইন লেখা 
“আপনি একটু বেশিই বোকা। আর আমি এই বোকারামকেই ভালোবাসি। আই লাভ ইউ বোকারাম।”
চিঠিটা পড়ে হরিৎ ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুমের মাঝেই স্বপ্নের কন্যা লীলার প্রতীক্ষা। ভাবে আজ লীলা এলে বৃষ্টির বোকামোর কথা বলবে। হরিৎ এর প্রতীক্ষার অবসান হয়। লীলার আগমন। তবে আজ স্বাভাবিক নয়। আজ তার পরনে নীল শাড়ী, সাদা ব্লাউজ। ক্রমশ এগিয়ে আসছে হরিৎ এর দিকে।  আরো কাছে আসে। 
আরে! এতো বৃষ্টি! লীলা কই  লীলা? 
বৃষ্টি হরিৎ এর মুখের কাছে চলে আসে। বলে “অ্যাই যে হরিৎ ভাই আপনি একটা বোকা। এই বোকারামকেই আমি ভালোবাসি। আই লাভ ইউ হরিৎ ভাই।”
হরিৎ এর স্বপ্নের অবসান হয়। ঘেমে ভিজে যায় সে। চারদিকে শুধু অন্ধকার। তবে কী বৃষ্টিই ছিলো লীলা? যে রোজ স্বপ্নে হরিৎকে সঙ্গ দিতো। নাকি লীলারও আদালা কোনো অস্তিত্ব আছে? যদি উপন্যাসটির লেখককের সন্ধান পেতাম তবে এই প্রশ্নটির উত্তর অবশ্যই যেনে নিতাম।
😍পাঠ প্রতিক্রিয়া :
“ঘুমের মধ্যে লীলা আসে ” উপন্যাসটি পড়তে পড়তে যেনো আমিও হরিৎ এর সাথে হারিয়ে যেতাম তার কল্পনার রাজ্যে। নিজেকে যেনো লীলার মাঝে খুজে পেয়েছি। সত্যিই অসাধারন ছিলো লেখকের ভাব প্রকাশের উক্তিগুলো।  
#লেখক প্রতিক্রিয়া:
 লেখক শুধু বইটিতেই একটি উপন্যাসের কাহিনীই রচনা করেননি। তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের পূর্ব ইতিহাস। যেখান থেকে নিঃসন্দেহে যে কেউ তার জ্ঞানের ধারা প্রসারিত করতে পারবেন।
👌ভালো লাগার কয়টি লাইন:
      ” হরিৎ পা টিপে টিপে মায়ের পিছনে গিয়ে দুহাতে মায়ের চোখ টিপে ধরে।মা- কে? কে? দুইবার বলার পরে হেসে দেয়। গায়ের এই গ্রান তার ঘ্রাণ তার অতি চেনা। তার বাপজানের।মা তাকে আদর করে হরু ডাকে। হরিৎ মায়ের চোখ ছেড়ে দেয়। মা তার ছেলের কপালে আদরের চুমু এঁকে ঘরে নিয়ে যায়।”
✍️লেখক পরিচিতি:

পীযূষ কান্তি বড়ুয়া একাধারে কবি,ছড়াকার,প্রাবন্ধিক ও কথাসাহিত্যিক। এ দুরন্ত লেখকের জন্ম ১০ অক্টোবর ১৯৭৩ সালে কর্নফুলির নিবিড় মায়ায়সিক্ত চরনদ্বীপ গ্রামে। পিতা সুরেশ চন্দ্র বড়ুয়া এবং মাতা পাখী রানী বড়ুয়া।লেখালেখির সূচনা শৈশবে ছড়া দিয়ে খেলাঘরের সাহিত্য বাসরে। পেশায় চিকিৎসক হলেও নিয়মিত সাহিত্য শাখায় নিজেকে সংশ্লিষ্ট রেখেছেন।সনাতনী বিতর্ক বিষয়ে লেখালেখির সুবাদে বিতর্ক – সাহিত্যিক হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
যে কোনো পাঠকের মনে স্থান করে নিতে পারবে পীযূষ কান্তির লেখা উপন্যাস “ঘুমের মধ্যে লীলা আসে।”
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?