লেখক মাওলানা আবু দারদা ইরাকি ও মুফতি তারেক মাসউদ এর সমন্বয়ে রচিত বই “বিয়ে ও রিযিক” এর মাধ্যমে দাম্পত্য-জীবন সম্পর্কে ইসলামের সঠিক দর্শন ও দিকনির্দেশনা তুলে ধরা হয়েছে। বিয়ে ও রিযিক বইটি পিতা-মাতাকে তাদের সন্তানদের উপযুক্ত বয়সে বিয়ে দিয়ে ধ্বংসের অতল গহ্বর থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে।
একনজরে বিয়ে ও রিযিক পরিচিতি
- বই : বিয়ে ও রিযিক
- লেখক : মাওলানা আবু দারদা ইরাকি, মুফতি তারেক মাসউদ
- প্রকাশনী : আয়াত প্রকাশন
- বিষয় : পরিবার ও সামাজিক জীবন
- অনুবাদ : জুবায়ের রশিদ
- পৃষ্ঠা : 208, কভার : হার্ড কভার
- ভাষা : বাংলা
বিয়ে ও রিযিক বইটি কেন পড়বেন?
‘যখন মানুষ মৃত্যুবরণ করে, তখন তিন প্রকার আমল ছাড়া তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়। ১. সদকায়ে জারিয়াহ ২. এমন ইলম যার দ্বারা উপকার হয়, ৩. পুণ্যবান সন্তান- যে তার জন্য দুআ করতে থাকে।
বিয়ে ও রিযিক বইটি পিতা-মাতাকে তাদের সন্তানদের উপযুক্ত বয়সে বিয়ে দিয়ে ধ্বংসের অতল গহ্বর থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে। আমাদের সমাজব্যবস্থা বিয়েকে কঠিন করার দরুন নানা অনাচার-ব্যভিচার ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। অথচ নববি আদর্শ বিয়েকে সব সময় সহজ করার প্রতি উৎসাহ জোগায়।তাই বিয়ে ও রিযিক বইটি জ্ঞানী ও চিন্তাশীল মানুষদের বিয়েকে সহজ করার ইতিবাচক ফলাফল চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবে। সেইসাথে সুন্দর ও সুখময় জীবন গঠনে দারুণ ভূমিকা রাখবে।
বিয়ের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য
প্রিয় বৎস! তুমি যখন শৈশব ও কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পদার্পণ করো তখন বিয়ে তোমার জন্য একটি মৌলিক ও অপরিহার্য বিষয়ে পরিণত হয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘বিয়ে ঈমানের অর্ধেক’। অন্য হাদিসে বলেছেন, “বিয়ে আমার সুন্নত’ ।৬বিয়ের মাধ্যমে মানুষের ঘর আবাদ হয়। বিয়ের অনেক অনেক উদ্দেশ্য আর উপকারিতা রয়েছে । তন্মধ্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি এখানে উল্লেখ করছি –
প্রথম উদ্দেশ্য : বিয়ের মাধ্যমে হৃদয়ের প্রশান্তি লাভ হয়। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন ومن آياته أن خلق لكم من أنفسكم أزواجا لتسكنوا إليها وجعل بينكم مودة ورحمة إن في ذلك لآيات لقوم يتفكرون ‘আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাকো এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদর্শনাবলি রয়েছে।
স্ত্রীর মাধ্যমে স্বামীর প্রশান্তি লাভ হয় এবং স্বামীর মাধ্যমে স্ত্রীর প্রশান্তি লাভ হয়। কেননা, বিয়ের প্রথম মৌলিক উদ্দেশ্য হচ্ছে হৃদয়ের প্রশান্তি।
দ্বিতীয় উদ্দেশ্য : পূত-পবিত্রতা। বিয়ের পর মানুষ পবিত্র জীবনযাপন করে। কেননা, স্ত্রীর মাধ্যমে স্বামী এবং স্বামীর মাধ্যমে স্ত্রী পাপাচার থেকে বেঁচে থাকে। এজন্য কুরআনে স্বামী ও স্ত্রীর একে অপরকে তাদের পোশাক বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে هن لباس لكم وأنتم لباس لهن তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক। বিয়ের পর স্বামী ও স্ত্রী পাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকা এবং পবিত্রজীবনযাপন করা সহজ হয়ে যায়।
তৃতীয় উদ্দেশ্য : বিয়ের মাধ্যমে মানুষের বংশীয় ধারা রক্ষিত হয়। মুজামুত তবারানিতে আবু হাফসা রহ. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা সন্তান উৎপাদনের ধারা ছেড়ে দিয়ো না।’ আর এ তো স্বতঃসিদ্ধ কথা যে, নিঃসন্তান লোক যখন মারা যায়, তখন তার নাম ও নিশানা মুছে যায়।’
চতুর্থ উদ্দেশ্য : উম্মতে মুসলিমা সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী হয়। কেননা, ঈমানদার লোকদের ঔরসে যত সন্তান-সন্ততি জন্মলাভ করবে, উম্মতে মুসলিমা ততই সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী হবে। হাদিসে রাসুল াল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন تزوجوا الودود الولود فإني مكاثر بگم الا ‘এমন নারীকে বিয়ে করো, যে প্রেমময়ী এবং অধিক সন্তান প্রসবকারী। কেননা, আমি অন্যান্য উম্মাতের কাছে তোমাদের সংখ্যাধিক্যের কারণে গর্ব করব।”
এজন্যই ইমাম বুখারি রহ. ‘জিহাদের জন্য সন্তান জন্মদান’ নামে একটি পৃথক অধ্যায় রচনা করেছেন। তাতে তিনি বলেছেন- যে ব্যক্তি এই নিয়ত করে-আমার যদি সন্তানাদি হয়, আমি তাদের দ্বীনের মুজাহিদ বানাব, তাহলে মুহাদ্দিসগণ তার ব্যাপারে লিখেছেন- সেই ব্যক্তির যদি সন্তানাদি নাও হয়, তথাপিও নিয়তের কারণে আল্লাহ তাকে সওয়াব দিয়ে দেবেন।
মুসলিম পিতা-মাতা ঈমানদার উম্মত তৈরির একেকটি ফ্যাক্টরি। আল্লাহ তায়ালা তাদের সন্তান দান করেন আর তারা উম্মতে মুসলিমার সমৃদ্ধি ও শক্তির কারণ হয়।
পঞ্চম উদ্দেশ্য : বিয়ের মাধ্যমে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দিল খুশি হয়। এক হাদিসে রাসুল তাঁর উম্মতকে সম্বোধন করে বলেছেন, তোমরা এমন নারী বিয়ে করবে, যে অধিক সন্তান জন্ম দিতে পারে ।
ষষ্ঠ উদ্দেশ্য : বিয়ে ঈমান পরিপূর্ণ করে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিয়েকে ঈমানের অর্ধেক বলেছেন। বিয়ের পূর্বে বান্দা যতই নেককার হোক না কেন, তখন সে অর্ধেক ঈমানের ওপর আমল করতে থাকে। বিয়ের পর ঈমান পরিপূর্ণ হয় এবং আল্লাহ তায়ালা তখন বান্দার সকল আমলের প্রতিদান আগের চেয়ে বাড়িয়ে দেন।
সপ্তম উদ্দেশ্য : বিয়ের মাধ্যমে স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের সম্মান লাভ হয়। বিয়ের পর স্ত্রী তার স্বামীর এবং স্বামী তার স্ত্রীর মর্যাদার কারণ বনে যায়। মিয়া বিবি একে অপরকে হৃদয়-মন উজার করে ভালোবাসে। সুখময় দাম্পত্য জীবনযাপন করে।
অষ্টম উদ্দেশ্য : বিয়ের মাধ্যমে শরিকে হায়াত (জীবনসঙ্গী/সঙ্গিনী) লাভ হয়। বিয়ে মানুষকে জীবনের চলার পথে উত্তম সঙ্গী/সঙ্গিনী উপহার দেয়, যে জীবনের সকল চড়াই-উতরাইয়ে আন্তরিকভাবে পাশে থাকে। সুখ-দুঃখ ওহাসি-কান্নার অংশীদার হয়।
নবম উদ্দেশ্য : বিয়ের মাধ্যমে সন্তানাদি হয়। প্রত্যেক মানুষেরই স্বভাবজাত কামনা থাকে যে, তার সন্তান হবে। প্রত্যেক পুরুষ পিতা হওয়ার এবং প্রত্যেক নারী মা হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় আকাঙ্ক্ষিত থাকে। নবি-রাসুলদের ন্যায় পূত পবিত্র ব্যক্তিবর্গও আল্লাহ তায়ালার নিকট সন্তান কামনা করে দুআ করেছেন। হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালাম দুআ করে বলেন ,
رب إني وهن العظم مني واشتعل الرأس شيبا ولم أكن بدعائك رب شقي وإني جفت الموالي من وراني وكانت امر أي غايرا لهب لي من لدنك وليا“
দশম উদ্দেশ্য : বিয়ের মাধ্যমে যে সন্তানাদির জন্ম হয়, তাদের উত্তমভাবে লালন-পালন করে আদর্শ মানুষরূপে গড়ে তুলতে পারলে পিতা-মাতার মৃত্যুর পর তারা সদকায়ে জারিয়া হয়। যেমনটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন اذا مات الإنسان القطع عنه عمله إلا من ثلاثة الأمن صدقة جارية أو علم ينتفع به أو ولي صالح بن غوله ‘যখন মানুষ মৃত্যুবরণ করে, তখন তিন প্রকার আমল ছাড়া তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়। ১. সদকায়ে জারিয়াহ ২. এমন ইলম যার দ্বারা উপকার হয়, ৩. পুণ্যবান সন্তান- যে তার জন্য দুআ করতে থাকে। এই হচ্ছে বিয়ের দশটি উপকারিতা।
বিয়ে ও রিযিক বইটি ক্রয় করুন
বিয়ে ও রিযিক বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১ জুলাই ২০২২ এ, অরিজিনাল কপি সংগ্রহ করুন ওয়াফিলাইফ অথবা রকমারি থেকে।
#নতুন বই #পরিবার ও সামাজিক জীবন