ঘরোয়া ব্যবসা অন্যান্য ব্যবসাগুলোর তুলনায় কম ঝুঁকিপূর্ণ ও লাভজনক একটি ব্যবসার আইডিয়া । বন্ধুরা আজকে আপনাদের সাথে কয়েকটি অত্যন্ত লাভজনক ঘরোয়া ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করব । এবং
এই ঘরোয়া ব্যবসাগুলো শুরু করার জন্য আনুমানিক কি পরিমাণ পুঁজি এর প্রয়োজন হতে পারে তার সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে ।
এছাড়াও আপনি যদি একজন নারী বা গৃহিণী মহিলা হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে এই ঘরোয়া ব্যবসাগুলো আপনার জন্য উপযুক্ত একটি ব্যবসা হবে ।
আমাদের বাংলাদেশ হল একটি রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থা । তাই মেয়েদের জন্য ঘরে বসে ব্যবসা করাই শ্রেয় । আজকের আর্টিকেলে দেওয়া ঘরোয়া ব্যবসার আইডিয়াগুলোর মধ্যে অনলাইন এবং অফলাইন দুটি উপায় দেখানো হয়েছে ।
ছাত্র-ছাত্রী, চাকুরীজীবী ও ব্যবসায়ীরা চাইলে পার্ট টাইম হিসেবে এই ঘরোয়া ব্যবসাগুলো করে অতিরিক্ত কিছু অর্থ উপার্জন করতে পারবেন । তাহলে চলুন বন্ধুরা কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক ।
১/ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ঘরোয়া ব্যবসা
আজকের “ ঘরোয়া ব্যবসা “ আর্টিকেলের সবার উপরে স্থান করে নিয়েছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যবসা । আফিলিয়েট মারকেটিং আমার কাছে অত্যন্ত পছন্দনীয় একটি ব্যবসার আইডিয়া ।
আপনি যদি ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার চিন্তা করে থাকেন সেক্ষেত্রে আফিলিয়েট মারকেটিং আপনার জন্য সবচেয়ে সেরা একটি মাধ্যম হবে ।
এফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে মূলত বুঝায় অন্য কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পণ্য সামগ্রী বা সেবাগুলো অনলাইনের মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা করে বিক্রি করে দেওয়া । এবং সে বিক্রিত পণ্য ও সেবা থেকে কমিশন লাভ করা । আর এটাকেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয়ে থাকে ।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে যা যা প্রয়োজন :
- একটি প্রফেশনাল মানের ওয়েবসাইট প্রয়োজন হবে ।
- ওয়েব সাইটে নিয়মিত পণ্যসামগ্রীরগুলো নিয়ে আর্টিকেল প্রকাশ করতে হবে ।
- ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য প্রাথমিক কিছু মূলধন এর প্রয়োজন হবে ।
- ওয়েবসাইটটি সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য SEO এর উপর দক্ষতা অর্জন করতে হবে ।
- এরপর আপনাকে বিভিন্ন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হতে হবে ।
এই কাজগুলো করলেই আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন শুরু করে দিতে পারবেন । অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার সবচেয়ে মজার একটি ব্যাপার হচ্ছে এটির মাধ্যমে প্যাসিভ ইনকাম জেনারেট করা যায় ।
প্যাসিভ ইনকাম বলতে বুঝায় এমন একটি ইনকামের প্রক্রিয়া যেখানে আপনি নিয়মিত কিছুদিন পরিশ্রম করার পর পরবর্তীতে আপনার ব্যবসা বা ওয়েবসাইটে কাজ করতে না পারলেও অটোমেটিক ইনকাম হবে ।
উদাহরণস্বরূপ : একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী শুরুতে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বড় বড় দালানকোঠা তৈরি করে থাকেন ।
কিন্তু পরবর্তীতে তাকে আর বড় কোন পুঁজি বিনিয়োগ করতে হয় না । সেখান থেকে তিনি প্রতিমাসে নিয়মিত অর্থ উপার্জন করতে পারছেন । এখন তিনি ঘুমিয়ে থাকলেও তার ইনকাম হবে ।
অন্যদিকে আপনি যদি একজন মুদি ব্যবসায়ীর কথা চিন্তা করেন তাহলে দেখতে পাবেন তিনি যতক্ষণ দোকান খুলছেন ততক্ষনই তিনি ব্যবসা করতে পারছেন না । অর্থাৎ দোকান না খুলে তিনি অর্থ উপার্জন করতে পারছেন না । একে বলা হয় অ্যাক্টিভ ইনকাম প্রক্রিয়া ।
অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি প্রোগ্রাম হচ্ছে অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম । আমরা জানি অ্যামাজন হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম ও বড় ইকমার্স প্রতিষ্ঠান ।
যেখানে প্রায় লক্ষাদিক প্রোডাক্ট ও সার্ভিস পাওয়া যায় । বিভিন্ন নামিদামি প্রতিষ্ঠানের পণ্য সামগ্রী এই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনে পাওয়া যায় ।
তাই আপনি যদি অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হতে পারেন তাহলে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো পণ্য ও সেবা নিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন । অ্যামাজন সর্বোচ্চ ১০ পারসেন্ট কমিশন দিয়ে থাকে তাদের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারদের ।
২/ গ্রাফিক ডিজাইন ঘরোয়া ব্যবসার আইডিয়া
ঘরোয়া ব্যবসার আইডিয়াগুলোর মধ্যে অন্যতম আরো একটি লাভজনক ও স্মার্ট ব্যবসা আইডিয়া হচ্ছে গ্রাফিক ডিজাইন ব্যবসা । বিশেষ করে তরুণ তরুণীদের কাছে এই গ্রাফিক ডিজাইন পেশাটি বর্তমানে প্রচুর জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ।
গ্রাফিক্সের কাজ শিখে আপনি ঘরে বসেই বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোর সাহায্যে কাজ করতে পারবেন । বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টদের জন্য ব্যানার, পোস্টার, ওয়েবসাইটের লোগো, বিজনেস কার্ড ইত্যাদি তৈরি করে দিয়ে গ্রাফিক ডিজাইন ব্যবসা করতে পারবেন ।
বর্তমানে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে গ্রাফিক ডিজাইনের প্রচুর কাজ পাওয়া যায় ।
তাই আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইন কাজের উপর দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে আজকে থেকেই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ শুরু করে দিন ।
আরো পড়ুন ,,
অথবা আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইন কাজ না জেনে থাকেন তাহলে নিকটবর্তী কোন আইটি ইন্সটিটিউট থেকে বা অনলাইন এর মাধ্যমে গ্রাফিক ডিজাইন কাজ শিখে নিতে পারেন ।
ঘরে বসে গ্রাফিক ডিজাইন কাজ করতে যা যা প্রয়োজন :
- একটি মোটামুটি ভালো মানের কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ থাকতে হবে ।
- ইন্টারনেট কানেকশন প্রয়োজন হবে ।
- ইংরেজিতে কমিউনিকেশন করার মতো দক্ষতা থাকতে হবে ।
- গ্রাফিক ডিজাইন এর সফটওয়্যারগুলোর উপর ভালো দক্ষতা থাকতে হবে ।
তাহলেই আপনি ঘরে বসে গ্রাফিক ডিজাইন করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ।
৩/ ওয়েব ডিজাইন ঘরোয়া ব্যবসার আইডিয়া
আমরা আমাদের মোবাইল ফোনে বা স্মার্টফোনে যে ডাটাগুলো ব্যবহার করি তা মূলত বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করে ডাটাগুলো খরচ করে থাকি ।
অর্থাৎ ইন্টারনেট খরচ করার জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট । আমরা ইন্টারনেটের বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার মাধ্যমে এই ইন্টারনেটগুলো খরচ করে থাকি ।
তাহলে বুঝতে পারছেন ওয়েবসাইট ছাড়া ইন্টারনেটে আর কোন কিছুই নেই । ফেইসবুক, ইউটিউব, গুগোল সবকিছু এক একটি ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটাগরির ওয়েবসাইট ।
বিভিন্ন প্রয়োজনে বর্তমানে ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে । এবং এই ছোট – বড় সকল ধরনের ওয়েবসাইটগুলো ডিজাইন ও তৈরি করে থাকেন বিভিন্ন ধরনের ওয়েব ডিজাইনার ও ডেভেলপাররা ।
যার ফলে ওয়েব ডিজাইন কাজের অনেক বেশি চাহিদা রয়েছে । তাই নিজেকে যদি এই সেক্টরে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তোলা যায় তাহলে ভবিষ্যতে সুন্দর একটি ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব ।
ওয়েব ডিজাইন ব্যবসা করতে যা যা প্রয়োজন :
- একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ প্রয়োজন হবে ।
- ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে ।
- এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্ট, জেকুয়ারি , বুটস্ট্রাপ , ওয়াডপ্রেস , পিএইচপি ইত্যাদি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখতে হবে ।
- ইংরেজি ভাষায় কমিউনিকেশন করার মতো দক্ষতা থাকতে হবে ।
- নিজের একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট থাকতে হবে ।
মোটামুটি এই কাজগুলো করলেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসগুলো থেকে ওয়েব ডিজাইনের কাজ পাবেন । একটি মোটামুটি মানের ওয়েবসাইট তৈরী করে দিয়ে আপনি ১০০ থেকে ৩০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন ।
৪/ ব্লগিং ঘরোয়া ব্যবসার আইডিয়া
অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করার সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং স্থায়ী একটি উপায় হল ব্লগিং ব্যবসা । আপনি ঘরে বসেই এই ব্লগিং ব্যবসা করে সুন্দর একটি ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারবেন ।
ইতিমধ্যে আমাদের বাংলাদেশের প্রচুর তরুণ-তরুণীরা এই সেক্টরটিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলেছেন ।
ব্লগিং করে ব্যবসা করতে হলে যা যা প্রয়োজন :
- একটি প্রফেশনাল ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে ।
- ওয়েবসাইটে নিয়মিত নানান বিষয় নিয়ে লেখালেখি করতে হবে ।
- একটি ইন্টারনেট কানেকশন যুক্ত কম্পিউটার বা ল্যাপটপ প্রয়োজন হবে ।
- আর্টিকেল রাইটিং এর উপর নিজেকে দক্ষ করে তুলতে হবে ।
- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা SEO কাজের উপর দক্ষতা অর্জন করতে হবে ।
এই কাজগুলো করলে আপনি একটি ব্লগ ওয়েবসাইট থেকে ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন । নিয়মিত দুটি করে ব্লগ আর্টিকেলস পাবলিশ করলে আপনি দু’মাসের মধ্যেই একটি ভালো পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারবেন ।
ব্লগিং আপনি প্রধানত দুটি উপায় অবলম্বন করে করতে পারবেন যেমন : ভিডিও ব্লগিং করা ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে লিখালিখি ব্লগিং করা ।
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কিভাবে ব্লগিং করতে হবে তা সম্পর্কে উপরে আপনাদের সাথে ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি । ভিডিও ব্লগিং বলতে বুঝায় আপনি সামাজিক মিডিয়াগুলোতে ভিডিও পাবলিশ করে অর্থ উপার্জন করাকে ।
আপনি ফেইসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, লাইকি, ও ইউটিউবে ভিডি পাবলিশ করে সেখান থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন । অন্যদিকে আপনি যদি লেখালেখি করে ব্লগিং করতে চান তাহলে অবশ্যই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্লগিং করতে হবে ।
৫/ কনটেন্ট রাইটিং ব্যবসা
বন্ধুরা আপনাদের সাথে একটু উপরেই ওয়েবসাইট এবং ব্লগিং নিয়ে আলোচনা করেছি । ইন্টারনেটে কোটি কোটি ওয়েবসাইট রয়েছে এবং এই কোটি কোটি ওয়েবসাইটের জন্য প্রতিদিন প্রয়োজন হয় হাজার হাজার আর্টিকেলের ।
এবং এই আর্টিকেলগুলো লিখতে প্রয়োজন হয়ে থাকে কনটেন্ট রাইটারদের । যার ফলে বর্তমানে কন্টেন রাইটারদের তুমুল চাহিদা রয়েছে । যা আপনি ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে খুব ভালো লক্ষ করতে পারবেন ।
কনটেন্ট রাইটারদের প্রচুর চাহিদা থাকার কারণে চড়া মূল্য দিয়ে তাদেরকে ভাড়া করতে হয় । তাই আপনি যদি নিজেকে একজন প্রফেশনাল কনটেন্ট রাইটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে তুলতে পারেন তাহলে ভবিষ্যতে সুন্দর একটি ক্যারিয়ার গঠন করতে পারবেন ।
তাছাড়াও আপনি কন্টেন্ট রাইটিং এর পাশাপাশি ব্লগিং করে ও অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করতে পারবেন । বিশেষ করে আপনি যদি ইংরেজি ভাষায় ভালো পারদর্শী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে কনটেন্ট রাইটিং আপনার জন্য দারুন ও লাভজনক একটি পেশা হবে ।
কনটেন্ট রাইটিং ব্যবসা করতে যা যা প্রয়োজন :
- ইন্টারনেট কানেকশন যুক্ত একটি ল্যাপটপ বা কম্পিউটার থাকতে হবে ।
- SEO অপটিমাইজ আর্টিকেল লেখার ওপর নিজেকে দক্ষ করে তুলতে হবে ।
- ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী হতে হবে ।
এই কাজগুলো করলে আপনি একজন কনটেন্ট রাইটার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে একটি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন ।
৬/ঘরে বসে কাপড়ের ব্যবসা
বন্ধুরা আজকের ঘরোয়া ব্যবসা আর্টিকেলে এতক্ষণ পর্যন্ত আপনাদের সাথে অনলাইনের মাধ্যমে করা যাবে এমন কয়েকটি ঘরোয়া ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে । এখন আপনাদের সাথে কিছু অফলাইনে ঘরোয়া ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করব ।
আপনি ঘরে বসে কাপড়ের ব্যবসা করার মাধ্যমেও অর্থ উপার্জন করতে পারবেন । বিভিন্ন ধরনের পাইকারি বাজার থেকে অথবা পাইকারি ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে কাপড় ক্রয় করে এনে তা খুচরা মূল্যে আপনি আপনার পাড়া-প্রতিবেশীদের নিকট বিক্রি করতে পারেন ।
সেক্ষেত্রে প্রথমদিকে আপনাকে আপনার কাপড়ের ব্যবসার প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে । পরবর্তীতে আপনার পাড়া প্রতিবেশীরাই মার্কেটিং করে দেবে ।
ঘরে বসে কাপড়ের ব্যবসা করার ক্ষেত্রে আপনি থ্রি পিস, গজ কাপড়, শাড়ি কাপড়, পাঞ্জাবি, শার্ট ইত্যাদি বিক্রি করতে পারেন ।
ঘরে বসে কাপড়ের ব্যবসা করতে আপনার কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পুঁজি প্রয়োজন হতে পারে । তবে পুঁজির পরিমাণটা নির্ভর করছে আপনার উপর কারণ আপনি কি পরিমান কাপড় নিয়ে ব্যবসা শুরু করবেন তা আপনিই ভাল জানেন ।
নিত্যনতুন ডিজাইনের ও ফ্যাশনের কাপড় সংগ্রহে রাখতে পারলে আপনার পাড়া-প্রতিবেশীরা আপনার নিকট থেকে এই কাপড়গুলো ক্রয় করে নেবে । তাই সব সময় চেষ্টা করতে হবে অল্প মূল্যে ভালো মানের কাপড় সরবরাহ করার জন্য ।
৭/ হাসঁ – মুরগি ও মাছ চাষের ব্যবসা
বাড়িতে বসে ঘরোয়া ব্যবসা এর মধ্যে অন্যতম দারুন ও লাভজনক একটি ব্যবসার আইডিয়া হলো হাঁস-মুরগী ও মাছ চাষে সমন্বিত ব্যবসা । আপনি যদি গ্রামের দিকে বসবাস করে থাকে সেক্ষেত্রে এই ব্যবসাটি আপনার জন্য উপযুক্ত একটি ব্যবসা হবে ।
আপনার বাড়িতে যদি একটি পুকুর থাকে তাহলে আপনি পুকুরের উপর মাচাং তৈরি করে সেখানে হাঁস-মুরগী পালন করতে পারেন ।
এবং পুকুরের মধ্যে মাছ চাষ করতে পারেন যার ফলে হাঁস-মুরগির বিষ্ঠাগুলো মাছের খাবার হিসেবে আপনি ব্যবহার করতে পারবেন । এতে করে আপনার খরচ আরো কমে আসবে এবং হাঁসগুলো পুকুরে বিচরণ করার ফলে মাছের দৈহিক বৃদ্ধি ও দ্রুত হবে ।
তাই কৃষিবিদরা সবসময় পরামর্শ দিয়ে থাকেন হাঁস-মুরগি ও মাছ সমন্বিত আকারে করার জন্য ।
৮/ পশু পালনের ব্যবসা
ঘরোয়া ব্যবসা আইডিয়াগুলোর মধ্যে পশুপালনের ব্যবসা অন্যতম লাভজনক একটি ব্যবসার আইডিয়া । আপনি আপনার বাড়িতে কয়েকটি পশু যেমন : গরু , ছাগল , ভেড়া ইত্যাদি পালন করে এই পশুপালনের ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন ।
এই ধরনের গৃহপালিত পশুগুলোর দুধ বিক্রি করেও অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করা যায় । এছাড়াও বিভিন্ন উৎসবে ও অনুষ্ঠানে এই পশুগুলোর প্রচুর চাহিদা রয়েছে ।
পশু পালনের ঘরোয়া ব্যবসা শুরু করতে যা যা প্রয়োজন :
- পশুগুলোর জন্য একটি ঘর তৈরি করতে হবে ।
- এরপর পশুর বাচ্চা ও খাবার ক্রয় করার জন্য মূলধনের প্রয়োজন হবে ।
- পশুগুলোকে দেখাশোনা করার জন্য একজন কর্মী এর প্রয়োজন হবে ।
- নিয়মিত পশুগুলোর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করতে হবে ।
বিশেষ করে আপনি যদি গ্রামের দিকে বসবাস করে থাকেন তাহলে পশুপালনের ব্যবসাটি আপনার জন্য লাভজনক একটি ঘরোয়া ব্যবসার উপায় হবে ।
আরো পড়ুন ,,
অন্যদিকে আপনি যদি শহরের অবস্থান করে থাকেন কিন্তু পশুপালনের ব্যবসাটি করতে আগ্রহী তাহলে আপনি খামার তৈরীর মাধ্যমেও এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন । এছাড়াও বিভিন্ন গ্রাম থেকে পশু ক্রয় করে এনে শহরে তা বিক্রি করতে পারেন ।
৯/ কোচিং ও ট্রেনিং সেন্টার
বাড়িতে বসে ঘরোয়া ব্যবসা আইডিয়াগুলোর মধ্যে কোচিংয়ের ট্রেনিং ব্যবসার আইডিয়া অন্যতম একটি দারুন ও লাভজনক ব্যবসা । আপনি ঘরে বসেই বিভিন্ন ছাত্র ছাত্রীদের কোচিং ও টিউশনি করাতে পারেন ।
আপনি বিভিন্ন বিষয় যেমন : বাংলা , ইংরেজি , গণিত , বিজ্ঞান ও কম্পিউটার ট্রেনিং দিয়ে এই ব্যবসাটি পরিচালনা করতে পারেন ।
আপনার বাড়ির একটি কক্ষের মধ্যে কয়েকটি চেয়ার – টেবিল সংগ্রহের মাধ্যমে এই কোচিং ট্রেনিং সেন্টার ব্যবসাটি শুরু করে দিতে পারেন ।
আপনি যদি ছাত্র-ছাত্রীদের আন্তরিকতার সহিত টিচিং দিতে পারেন তাহলে দ্রুতই আপনি প্রচুর স্টুডেন্ট জোগাড় করতে পারবেন ।
একটি কোচিং সেন্টার ব্যবসা শুরু করতে যা যা প্রয়োজন :
- আপনাকে অবশ্যই কোন একটি বিষয়ের উপর দক্ষ হতে হবে ।
- একটি কক্ষ বা রুম ম্যানেজ করতে হবে ।
- ছাত্র-ছাত্রীদের বসার জন্য টেবিল ও চেয়ার জোগাড় করতে হবে ।
- এছাড়াও লাইট, ফ্যান, ও টিচিং দেওয়ার জন্য হোয়াইট বোর্ড ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জোগাড় করতে হবে ।
- ছাত্র-ছাত্রী জোগাড় করার জন্য লিফলেট ও ব্যানার এর মাধ্যমে প্রচারণা চালাতে হবে ।
উপরে দেওয়া এই নিয়মগুলো ফলো করলে দ্রুত আপনি আপনার কোচিং সেন্টারে প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী জোগাড় করতে সক্ষম হবেন । এবং ঘরে বসেই একটি লাভজনক ব্যবসা গড়ে তুলতে পারবেন ।
১০/ যানবাহন ক্লিনিং ব্যবসা
ঘরোয়া ব্যবসা হিসেবে যানবাহন ক্লিনিং ব্যবসার আইডিয়াকেও কাজে লাগানো যেতে পারে । আপনার বাড়ি যদি রাস্তার পাশে হয়ে থাকে তাহলে আপনি এই যানবাহন ক্লিনিং ব্যবসার আইডিয়াটি কাজে লাগাতে পারেন ।
বাড়ির একটি রুমকে রাস্তার মুখী করে যানবাহন ক্লিনিং ব্যবসা শুরু করতে পারেন । বর্তমানে মানুষ এত বেশি ব্যস্ত হয়ে উঠেছে যে তাদের প্রিয় গাড়িটিও পরিষ্কার করার সময় পাচ্ছে না ।
তাই আপনি এই সার্ভিসটি প্রদান করে একটি যানবাহন ক্লিনিং ব্যবসা গড়ে তুলতে পারেন । বিভিন্ন মোটরসাইকেল ও ট্রাক পরিষ্কার করে দিয়ে এই ধরনের যানবাহন ক্লিনিং ব্যবসাটি পরিচালনা করা যেতে পারে ।
আরো পড়ুন ,,
তবে এই যানবাহন ক্লিনিং করার সময় অবশ্যই সতর্কতার সহিত পরিষ্কার করতে হবে যাতে গাড়ির কোনো ধরনের পার্টসের ক্ষতি না হয় ।
এছাড়াও যানবাহন ক্লিনিং ব্যবসার পাশাপাশি আপনি যানবাহনের বিভিন্ন এক্সেসরিজ প্রোডাক্ট বিক্রি করে অতিরিক্ত টাকা উপার্জন করতে পারবেন ।
পরিশেষে – Conclusions
বন্ধুরা আজকের ঘরোয়া ব্যবসা এই আর্টিকেলে আপনাদের সাথে আমরা লাভজনক দশটি আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি । এবং আমরা অনলাইনে এবং অফলাইনে করা যায় এমন কয়েকটি ব্যবসার আইডিয়াও আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি ।
যাতে করে ঘরে বসে চাকুরীজীবী, ছাত্র-ছাত্রী ও গৃহিণী মহিলারা সহজেই ব্যবসাগুলো করতে পারে । তাই আপনি যদি একজন চাকুরীজীবী, ছাত্র-ছাত্রী অথবা গৃহিণী মহিলা হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে এই ব্যবসাগুলো করে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ।
আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভাল লেগে থাকলে নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে মন্তব্য করে জানাবেন । এবং নিয়মিত বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও চাকরি টিপস ও ট্রিক্স পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের উপর নজর রাখুন ।
#ঘরোয়া ব্যবসা