আমার গার্লফ্রেন্ড বলল তার পেটব্যথা করতেছে এবং তার এই পেটব্যথার জন্য দায়ী আমি।
আমি অবাক হয়ে কারণ জানতে চাইলাম।
সে তখন কাঁচুমাচু হয়ে কোনোক্রমে বলল, “আমার পেটে ব্যথা, কারণ ইদানীং আমি প্রতিবেলা খাবার সময় আলাদা করে কাঁচামরিচ খাই। তো আজকে দুপুরে খাওয়ার সময় একটু বেশী খেয়ে ফেলছি, তাই বোধহয় এখন ব্যথা করতেছে।”
-তো এখানে আমার দোষটা কী?
-হুম, তোমারই দোষ।
-সেটা কিভাবে?
-আমাকে জিজ্ঞেস করো, কী জন্য আমি প্রতিবেলা কাঁচামরিচ খাই?
-করলাম জিজ্ঞেস, বলো এবার…
-খাই কারণ, প্রতিবেলায় খাওয়ার সময়ই আমার মন ভীষণ রকম খারাপ থাকে। আর এমন মুড অফ থাকে বলে আমার কাছে খাবারগুলাও বিরস লাগে, কোনো টেস্ট পাই না। আর খাবারের এই টেস্ট বাড়াতে গিয়েই পান্ডা যেমন আস্তো আস্তো বাঁশ খায়, আমিও তেমন গপগপ করে একটার পর একটা মরিচ খাই।
-তো এখানে আমার দোষটা কী, ঠিক বুঝলাম না!
এবার সে চোখ আগুনের গোলার মতো লাল করে বলল, “আমার মুড কী জন্য খারাপ থাকে শুনি?”
আমি নিতান্তই একটা আলাভোলা শিশুর মতো মুখভঙ্গি করে বললাম, “কী জন্য থাকে?”
সে আগের মতোই অগ্নিমূর্তি ধারণ করে বলল, “তুমি আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করো বলে। প্রতি বেলায় আমার সাথে ঝগড়া করো বলে!”
আমি চেয়ারে বসে ছিলাম। এই উত্তর শুনে আরেকটু হলে পড়েই যাচ্ছিলাম! তখুনি আমার গার্লফ্রেন্ড আবার বলল, “তো এখন বুঝতে পারছো কিভাবে আমার পেটে ব্যথার জন্য তুমি দায়ী?
আমি নিজেকে কোনোক্রমে সামলে নিয়ে বললাম, “সেটা বুঝতে পারছি! কিন্তু একটা কথা, তুমি যেন কোন সাবজেক্টে অনার্স করছো?”
-কেন বাংলা! জানো না তুমি?
-সে জানি। তবে আমার কী মনেহয় জানো?
-কী মনেহয়?
-আমার মনেহয় বাংলার সাথে তোমাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটা যুক্তিবিদ্যায় অনার্সের সার্টিফিকেটও ফ্রী দেয়া উচিত।
-এই বেয়াদব! তুমি কী আমার সাথে ফাজলামি করছো?
-নাহ্..মোটেই না, এত সাহস কী আর আমার আছে? আই’ম সিরিয়াস!
-আচ্ছা! সাহস নেই জেনে ভালো লাগলো। সে যাইহোক এবার আমি তাহলে তোমাকে যুক্তি দিয়ে দিয়ে বুঝাই, ঠিক কী কী কারণে আমাকে বাংলার সাথে যুক্তিবিদ্যার সার্টিফিকেট ফ্রী দেয়া উচিৎ নয়?
-না থাক! মাফ, দোয়া, আশীর্বাদ, প্রার্থনা সবই চাই..এটা আর লাগবে না। দোষটা আসলে আমারই! আমিই ভুলে গিয়েছিলাম, তুমি যে এই লাইনে অলরেডি ওলি-আউলিয়া লেভেলে চলে গেছো!
যুক্তিবিদ্যা এবং একজন যুক্তিবিদ || Rajib Debnath