খ্রিস্টীয় নববর্ষ ও মুসলিম সমাজ
সংকলন : বিলিভার্স ভিশন টিম।
সমাজে অশ্লীলতা ও বিজাতীয় সংস্কৃতি চর্চার কুপ্রভাব
সমাজে অশ্লীলতা ও অপসংস্কৃতি চর্চার ফলে ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন ধরণের অপকর্ম বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা সমাজদেহকে একেবারে বিষাক্ত করে তুলেছে। নিম্নে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো —
(১) পরকীয়া ও বিবাহ বিচ্ছেদ: বিবাহ স্বামী-স্ত্রী একত্রে বসবাসের পবিত্র বন্ধন। পরকীয়া এ পবিত্র বন্ধনকে নিমিষেই কলুষিত করে তুলে। পরকীয়া একটি সাজানো-গোছানো সংসারকে ভেঙ্গে তছনছ করে দেয়। এর চূড়ান্ত পরিণতি হচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদ। ব্যক্তি ও পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সংসার ভেঙ্গে জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। পরকীয়ার ঘটনা আমাদের সামাজিক জীবনে বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা সামাজিক ভারসাম্য ও স্থিতিশীলতাকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। নিজ স্বামী বা স্ত্রী ব্যতীত অন্য কোন পুরুষ বা নারীর সাথে যেনা করলে চরম শাস্তি রয়েছে। এক্ষেত্রে শারঈ বিধান হচ্ছে বিবাহিত নারী বা পুরুষকে রজম করে হত্যা করা। (সহীহ মুসলিম, হা.১৬৯০; সুনান ইবনু মাজাহ, হা.২৫৫০)
(২) আত্মহত্যা: সমাজে আত্মহত্যার হার বহুগুণে বেড়েছে। কেউ ইভটিজিং-এর শিকার হয়ে, কেউ প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার কারণে, আবার কেউ সংসার ভেঙ্গে যাওয়ায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এমন অসংখ্য ঘটনা অহরহ ঘটছে দেশের আনাচে-কানাচে।
(৩) অবৈধ বিবাহ: অশ্লীলতা ও পর্দাহীনতার কারণে যুবক-যুবতীরা অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে পিতা-মাতাকে না জানিয়ে পালিয়ে গিয়ে অন্যত্র একত্রে অবস্থান করে। অবশেষে সর্বস্ব খুইয়ে নিজের পরিবারের কাছে প্রত্যাবর্তনে বাধ্য হয়। কেউবা গোপনে কাজি অফিসে বা আদালতে গিয়ে বিবাহ করে। এক সময়ে যখন মোহ কেটে যায় তখন নিজেদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন সৃষ্টি হয়। ভাঙ্গে ভুল, ভাঙ্গে সংসার, ক্ষয়ে যায় মূল্যবান জীবন।
(৪) অপহরণ ও ধর্ষণ: অশ্লীল পোশাক পরিহিতা ও নগ্ন নারীদেহ দর্শনে যুবকের মাঝে কুপ্রবৃত্তি জেগে ওঠে। স্বীয় লালসা চরিত্রার্থ করতে সে মরিয়া হয়ে ওঠে। ফলে বেছে নেয় অপহরণ ও ধর্ষণের মতো জঘন্য ও নিকৃষ্টতম পন্থা। যা ডেকে আনছে ভয়াবহ পরণতি।
(৫) দুরারোগ্য রোগের প্রাদুর্ভাব: অশ্লীলতার কারণে মানুষ বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ও বহুগামিতায় লিপ্ত হয়। এ কারণে বিভিন্ন যৌন বাহিত রোগ যেমন সিফিলিস, গণোরিয়া, ক্ল্যামাইডিয় মোনিলিয়াসিস, ট্রাইকোমোনিয়াসি ব্যাকটেরিয়াল ভেজাইনোসিস, জেনিট হার্পিস, জেনিটাল ওয়ার্টস, এইডস ও এ্যাবোলা প্রভৃতি মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়।
(৬) খুন: পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ার কারণে নিজের স্বামী বা স্ত্রীকে খুন করা, অন্যের প্রেমিকা বা বান্ধবীর সাথে সম্পর্ক করার কারণে সেই বান্ধবীর আগের প্রেমিক বা বন্ধু কর্তৃক খুন হওয়ার মূলে রয়েছে এই অশ্লীলতা।
এসব কারণসমূহ ছাড়াও আরো অসংখ্য কারণ বা অপকারিতা রয়েছে এই থার্টি ফাস্ট নাইটসহ নানাবিধ অশ্লীলতা ও অপসংস্কৃতি চর্চার। সুতরাং একথা এখন নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, মুসলিম সমাজকে ধ্বংস করার লক্ষ্যেই এই থার্টি ফাস্ট নাইট সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সারা বিশ্বে। কোনো মুসলিমের জন্য উচিত নয়, এসব অসভ্য ও অশালীন সংস্কৃতি গ্রহণ করা।
মুমিন হিসেবে আমাদের কর্তব্য হলো, থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন থেকে বিরত থাকা। একে কেন্দ্র করে সকল প্রকার অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, হৈ-হুল্লোড় এবং নগ্নতা প্রদর্শনকে এড়িয়ে চলা।
আল্লাহ আমাদেরকে সুস্থ-সুন্দর ইসলামি সমাজ বিনির্মাণের তাওফীক দান করুন।
━━━━━━━━
⬤ বইয়ের নাম : খ্রিস্টীয় নববর্ষ ও মুসলিম সমাজ
⬤ সংকলন : বিলিভার্স ভিশন টিম
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?