বই: জলরঙ
লেখক: সুব্রত কুমার মোহন্ত
প্রচ্ছদ :চারু পিন্টু
প্রকাশনা :কলম যোদ্ধা প্রকাশনী
মুদ্রিত মূল্যঃ ৩০০ টাকা
সুব্রত কুমার মোহন্ত লেখক পরিচিতি:
সুব্রত কুমার মোহন্ত। বাবা সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন বলে ছোটবেলা থেকেই তার কাছে সাহিত্যের পাঠ শুরু। জলরঙ তার প্রথম উপন্যাস। এছাড়াও তার একক কবিতার বই বৃত্ত বন্দী বৃষ্টি, ভালোবাসার জল, ফাগুনের কাছে শ্রাবনের চিঠি।
উপন্যাসের চরিত্রসমূহ:
উপন্যাসটিতে বেশ কিছু চরিত্র রয়েছে। মূল চরিত্র নবনীতা সরকার। এছাড়াও মিলন সরকার, তার স্ত্রী মৌলি বেগম এবং ছোট মেয়ে মিতা আর নবনীতার স্বামী রঙ্গন। উল্লেখযোগ্য।
কাহিনী সংক্ষেপ:
মিলন সরকারের স্ত্রী এবং দুই কন্যা নিয়ে সুখের সংসার। অনেক টাকা পয়সা থাকার পরও তিনি তার দুই মেয়ে কে খুব সাধারণভাবেই বড় করেছেন। বড় মেয়ে নবনীতা বাবার মতোই দৃঢ় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া তার বিশেষ গুণ। অপরদিকে শুভমিতা সরকার তার বিপরীত। খুব আবেগী। মিলন সরকার মেয়েদের সত্য ও ন্যায়ের পথে চলতে শিখিয়েছেন। যদিও তাকে এর জন্য কৃপন শুনতে হয়েছিল তারপরও দমে যান নি। নবনীতা তার ভালোবাসাকে অপূর্ণ রেখেই সন্তুষ্ট হয়ে যায় কারণ তার ভালোবাসা তার ব্যক্তিত্ববোধকে আঘাত করে। কিছু ইচ্ছা অপূর্ণ থাকায় শ্রেয়। সে অন্য একজনকে বিয়ে করে নেয়। দুটো সন্তান নিয়ে সুখরে সংসার করে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, তাকে সেই সুখের সংসারে ইতি টানতে হয়। তারপর নতুন করে শুরু করে জীবন। না, কাউকে সাথে নিয়ে নই। তারপর সে অন্য সাধারণ নারীর মতে পিছু হটে নি।নিজের অদম্য আত্মবিশ্বাসে হয়ে উঠেন সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিত্ব।হয়ে উঠেন শ্রেষ্ঠ মহিলার একজন। গুছিয়ে নিয়েছেন জীবনকে। সন্তানেদের বড় করে তোলা তাদের জীবন গুছিয়ে দেওয়ার ।শেষ পর্যন্ত মনে থেকে যায় রঙ্গনের কথা।
প্রিয় লাইন:
•রূপ মেয়েদের যোগ্যতা হতে পারে ছেলেদের নয়। ছেলেদের যোগ্যতা-সৎ,কর্মঠ, দায়িত্বশীল মানুষ হওয়া।
•আমরা কেউই অনন্তকাল বেঁচে থাকার। জন্য পৃথিবীতে আসি না ।যতদিন বেঁচে থাকবো , ততদিন স্বপ্ন নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে।
• বেঁচে থাকার জন্য টাকা প্রয়োজন তবে সেটা খুব বেশি নয়।বেশী টাকা মানুষকে অহংকারী করে তুলে, অমানুষ করে তুলে।
•পৃথিবীর মানুষগুলোর মধ্যে সম্পদের অসব বণ্টন,কতো শ্রেনীবিন্যাস। উচ্চবিত্ত,মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত
•সময় দ্রুত ফুরিয়ে যায়। অনন্তকাল বাঁচার জন্য মানুষ আসে না। মানুষ আর সময়ের সাথে ,দ্রুত শব্দটা মিলে যায় ।
•হায়রে ভালোবাসা! কত রঙ তার । পৃথিবীতে যত রঙ আছে,গাঢ় থেকে ধূসর; ভালোবাসার রঙ তার থেকেও হাজার গুণ বেশি।
আর ও কিছু লাইন আছে মনে নাই।
ব্যাক্তিগত মতামত: সামাজিক উপন্যাস হিসেবে যথার্থ একটি উপন্যাস। একজন ব্যর্থ নারীর জন্য এটি একটি সমাধান। নারীকে আত্মমর্যাদাশীল হয়ে ওঠার অনন্য দৃষ্টান্ত।তবে আমার শুভমিতার শেষের পরিণতি জানার ইচ্ছা ছিল সাথে রঙ্গন ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর। লেখক শেষদিকে অনেক দ্রুত সবকিছু শেষ করার তীব্র চেষ্টা চালিয়েছেন। লেখকের প্রথম উপন্যাস হিসেবে অনেক অনেক ভালো হয়েছে। তবে উপসংহার টা
বেশ ছিল। তাছাড়া প্রচ্ছদ ছবি সুন্দর ছিল। বানান বেশ কিছু ভুল ছিল না।
আসলেই সব জলরঙের মতো।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?