- বই : দ্য হুইস্পার ম্যান
- মূল লেখক : অ্যালেক্স নর্থ
- অনুবাদক : সালমান হক
- প্রকাশনী : চিরকুট
চিরকুট প্রকাশনী – Chirkut চিরকুট প্রকাশনী – Chirkut Prokashoni এর কামব্যাক ট্রায়োর তৃতীয় কিস্তি ছিল অ্যালেক্স নর্থের দ্য হুইস্পার ম্যান। বইটাকে আমি শুধু থ্রিলার বলবো না। বরং আমার কাছে একে সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার + ডার্ক থ্রিলার ঘরানার বই বলেই মনে হয়েছে। মিথ্যে বলবো না, বইটা শেষ করেছি আমার সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে। ঘোর এখনও কাটেনি।
রিভিউ এর শুরুটা করবো বইটা পড়ার পর মাথায় যে লাইনটা প্রথম এসেছে সেটা দিয়ে – “কোনো ক্ষত যতই নিরীহ দর্শন হোক না কেন, পচন যখন শুরু হয় সে আর তেমনটা থাকে না।”
বইয়ের প্রোডাকশন ছিল অসাধারণ। প্রচ্ছদ যে এতটা দারুণ হবে আমি আশা করি নাই। ছবি দেখে বা পড়ে বুঝা যাবে না। হাতে নিলেই বুঝবেন কী দারুন জিনিস। বাঁধাই নিয়ে পাপেট শো আর প্ল্যান্টেশন এ যে আক্ষেপ ছিল চিরকুট তা এবার ঘুচিয়ে দিয়েছে।
বইয়ের মূল চরিত্র বেশী না। টম কেনেডি এবং তার ছেলে জ্যাক কেনেডি, ডিআই অ্যামেন্ডা, একজন প্রবীণ ডিটেকটিভ পিট আর জেলে থাকা ফ্র্যাংক কার্টার – দ্য হুইস্পার ম্যান হিমসেল্ফ।
বইটি লেখা হয়েছে ফার্স্ট এবং থার্ড, এই দুই ন্যারেটিভেই। অধ্যায়গুলো বড় না। সো পড়তে পড়তে বোর হবেন না। কাহিনিবিন্যাস ফাস্ট বার্নিং। কোথাও এই পেইসের ড্রপ হয়নি। এর কৃতিত্ব অ্যালেক্স নর্থ আর সালমান হকের। মূল লেখকের লেখনী এবং অনুবাদকের সুখপাঠ্য অনুবাদ এই দুইয়ে মিলে বইটা হয়ে গেছে জাস্ট ওয়াও।
অ্যালেক্স নর্থ ডেব্যু থ্রিলার ছিল এই হুইস্পার ম্যান। এই বইতে একদিকে যেমন বাবা-ছেলের সম্পর্ক আর তাদের টানাপোড়েনের সাথে মানবীয় আবেগ আছে, অন্যদিকে আছে মানবচরিত্রের অন্ধকার দিক। আমাদের সবার মাঝেই একটা পিশাচ লুকিয়ে থাকে। আর তাকে ভয় না পাওয়াটা কিন্তু সাহস না, বরং তার ভয় নিয়ে চলাটাই সাহস। লেখক খুব সুনিপুণভাবেই দেখিয়েছেন কীভাবে বাবা ছেলে খুব অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে সিরিয়াল কিলার আর পুলিসের ক্রসফায়ারের মাঝে পড়ে যায় এবং তার আফটার ইফেক্ট কী হতে পারে। আর সেই ক্রসফায়ারের মাঝে সামনে আসে তাদের এক অতীত। যে অতীত এখনও বর্তমানে এসে জানিয়ে দিয়ে যাচ্ছে যে তাকে অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু এই গল্পের শেষ কী আদৌ হয়েছিল, নাকি শুরু হয়েছিল নতুন কোন কিছু? জানতে হলে পড়ে ফেলুন বইটি।
বাই দি ওয়ে, দরজাটা বন্ধ করেছেন তো? জানালায় কোন ফিসফিসানি শুনছেন কী?