বই – দীনেশ গুপ্তের রিভলভার
একটা পুরোনো ড্রয়িং খাতা ও একটি রহস্যময় বাড়ি ও কিছু পুরোনো চিঠি।এই রহস্যের জালে জড়িয়ে যায়
এক কিশোর
একজন গনিতের অধ্যাপক ও তার স্ত্রী কন্যা
এক রহস্যময় পুরুষ
এক চিত্রশিল্পী দম্পতি
একজন ধর্মভীড়ু লোক
এক ট্যাক্সি ড্রাইভার
রহস্যের গোড়া খুজতে খুজতে তারা এর যোগসূত্র খুজে পায় ১৯২৭-১৯৩৩ এর সময়কালে সংঘটিত বিপ্লব আন্দোলনের বিপ্লবীদের সাথে ও তাদের ট্রেজারের সাথে। যা কিনা একটা গুপ্ত সংগঠন এর মাধ্যমে বছরের পর বছর ধরে সুরক্ষিত করে রাখা হয়েছে। একের পর এক ঘটনা পার হয়ে তারা পৌছায় রহস্যের শেষ ধাপে।তারা কি খুজে পায় বিপ্লবীদের সেই অমূল্য ট্রেজার। বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তের রিভলভার এর ই ভূমিকাই বা কি এই গোটা উপন্যাস জুড়ে??? সকল প্রশ্নের উত্তর এই বইয়ের চরিত্রগুলো সারা উপন্যাস জুড়ে খুজে ফেরে।
এটাকে ইতিহাস আশ্রয়ী রহস্যোপন্যাস বলা যায়,বিপ্লবীদের ইতিহাসের টুকরা টুকরা ছাপ, একশনের নিখুত বর্ননা ও রয়েছে কিন্তু তা আপনার কাছে ইতিহাসের কচকচানি মনে হবেনা।বিপ্লবী দীনেশ,বাদল,বিমল,যতীশ,প্রদ্যোত এদের বিভিন্ন একশন সম্পর্কে,ইংরেজ রাজের বিভিন্ন বিভাগের অত্যাচারীদের হত্যার ও বেশ সুচারু বর্ননা আছে। ঠিক তেমনি রয়েছে জাতীয় ইতিহাসে এই বীরদের সঠিক সম্মান না দেয়ার কথাও।ইতিহাস বইয়ের পাতায় কিভাবে খুব অবহেলার সাথেই এই বিপ্লবীদের ঠাই দেয়া হয়েছে। যাদের মহান আত্মত্যাগ আর দেশপ্রেমের সঠিক স্বীকৃতি আজো দেয়া হয়নি।
বইটা রহস্যোপন্যাস হলেও সেরকম টান টান উত্তেজনা এখানে পাওয়া যাবেনা,বলা যায় অনেকটা ঢিমেতালেই বই এগিয়েছে এমনকি চূড়ান্ত ক্লাইমেক্সে গিয়েও চরিত্রগুলোর মাঝে কল্পনার আশ্রয় নেয়াটা ক্লাইমেক্স একটু ধীর গতির করে দিয়েছে। বইয়ের শেষে পরিশিষ্টতে লেখক খুব সুন্দর করে লিখে দিয়েছেন এই উপন্যাসের কোন কোন ঘটনাগুলো ইতিহাস থেকে সরকারি নেয়া আর কোন অংশগুলোতে লেখক কল্পনার আশ্রয় নিয়েছেন। বইটা পড়তে একদম ই বেগ পেতে হবেনা,গল্প একটু ঢিমেতালে হলেও নিজস্ব ছন্দে এগিয়েছে বিশেষ করে বিপ্লবীদের বিভিন্ন একশনের বর্ননা পড়তে গেলে গায়ে কাটা দিতে বাধ্য।। বহু বহু কিছু জানা যায় ওই সময়কার বিপ্লবীদের সম্পর্কে, কি অপরিসীম দেশপ্রেম আর কি অনন্য আত্মত্যাগ এর বাসনা নিয়ে তারা ঝাপিয়ে পরেছিলো দেশ উদ্ধারে,আফসোস সেই অগ্নি সময়ের বিপ্লবীদের ইতিহাস প্রায় ভুলেই গেছে।