একেবারে শুরু থেকেই কাদিয়ানিদের বিরোধিতা করে আসছেন উপমহাদেশের আলিমগণ। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যানারে কাদিয়ানি-বিরোধী আন্দোলন করেছেন বাংলাদেশের আলিমরাও। কিছুদিন আগেও ২০১৯ এর ফেব্রুয়ারিতে কাদিয়ানিরা পঞ্চগড়ে ‘জলসা’ এবং ‘মহাসমাবেশ’ করার উদ্যোগ নিলে এর তীব্র বিরোধিতা করে বাংলাদেশের আলিমগণ আবারও কাদিয়ানিদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কথা বলেন।
বই : চিন্তাপরাধ |
দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এ আন্দোলনের মূল দাবি হলো, রাষ্ট্রীয়ভাবে কাদিয়ানিদের কাফির ঘোষণা করা, তাদের প্রকাশনা ও প্রচারণা নিষিদ্ধ করা, কাদিয়ানিদের জন্য ইসলামী পরিভাষা ব্যবহার নিষিদ্ধ করা (যেমন : কাদিয়ানিদের উপাসনার জায়গাকে ‘মসজিদ’ না বলে ‘উপাসনালয়’ বলা)। ২০১৩ তে প্রকাশিত হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার ৬ নম্বর দাবিটিও ছিল কাদিয়ানিদের নিয়ে। এ দাবিতে বলা হয়,
‘সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।’
বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ এবং সুশীলদের তরফ থেকে বিভিন্ন সময়ে আলিমদের এ দাবিগুলোর সমালোচনা ও বিরোধিতা করা হয়েছে। তাদের বক্তব্য হলো, কাদিয়ানিরা যদি নিজেদের মুসলিম মনে করে, তাহলে তাদের আত্মপরিচয় পরিবর্তন করার অধিকার রাষ্ট্রের নেই। এটি সরাসরি মানুষের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী এবং বাংলাদেশে সংবিধানের ঘোষিত ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক।
সংবিধান প্রত্যেক নাগরিককে সমান ও স্বাধীনভাবে নিজের পছন্দমতো ধর্ম পালন ও প্রচারের স্বাধীনতা দেয়। নিজস্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার অধিকার আছে প্রত্যেক ধর্মের অনুসারীদের। কাজেই এ ধরনের দাবি প্রথমত নির্যাতনমূলক, দ্বিতীয়ত অসাংবিধানিক।
চিন্তাপরাধ বইয়ের “পূজারি ও পূজিত” অধ্যায়ে কাদিয়ানি নিয়ে আলোচনার দ্বিতীয় অংশ আজ আমরা তুলে ধরলাম। প্রথম অংশটির লিংক আমরা কমেন্টবক্সে দিয়ে দিচ্ছি ইনশাআল্লাহ।