বইঃ সালাফদের সিয়াম ( Salafder Siam )
লেখকঃ উম্মে আব্দ মুনীব, শায়খ মুহাম্মদ বিন সাইদ কাহতানি |রহ|
প্রকাশনায়ঃ আযান প্রকাশনী
ভাষান্তরঃ মুহিবুল্লাহ খন্দকার
সম্পাদনা ও সংযোজনঃ রাজিব হাসান
পৃষ্ঠা সংখ্যা: 112
সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ “সালাফদের সিয়াম” বইটিতে মূলত: সাহাবীগণ (রাদিয়াল্লাহু আনহুম ওয়া আজমাঈন), তাবেঈ ও তাবে-তাবেঈন (রাহিমাহুমুল্লাহ) কীভাবে সিয়াম পালন করতেন, কীভাবে রমাদ্বানের রজনীগুলো অতিবাহিত করতেন, কুরআনের সাথে কীভাবে সম্পর্ক স্থাপন করতেন, সাহরী ও ইফতার কীভাবে করতেন, ইতিকাফের দিনগুলো কীভাবে কাটাতেন, লাইলাতুল ক্বদর কীভাবে তালাশ করতেন এগুলো নিয়ে
সবিস্তারে আলোচনা করা হয়েছে৷
আমরা আশা করছি এই বইটির মাধ্যমে রমাদ্বান মাসকে উত্তমরুপে কাজে লাগানোর একটা নির্দেশনা পাওয়া যাবে এই বইটি থেকে।
সাইয়িদুনা আবদুল্লাহ ইবন উমার (রা.) সাথীদের সাথে কোন এক সফরে বের হলেন। রাস্তায় তার জন্য দস্তরখান বিছানো হল। এক রাখাল পথ দিয়ে যাচ্ছিল দেখে ইবন উমার (রা.) তাকে ডাকলেন যাতে সেও তাদের সাথে খাবারে শরীক হতে পারে।
রাখাল বলল, “আমি রোজাদার (নফল সিয়াম)।“
ইবন উমার (রা.) আশ্চার্যান্বিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
“এই প্রচন্ড গরমে, উত্তপ্ত মরু উপত্যকায় ভেড়া-বকরির পালের পিছনে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে তুমি কিভাবে রোজা রাখো?”
রাখাল বলল, “আমি অতিবাহিত দিনগুলোর ব্যাপারে তাড়াহুড়া করছি” (অর্থাৎ জীবনের প্রতিটি মূহুর্তকে গণিমত মনে করে নেকি হাসিলের ব্যাপারে তাড়াহুড়া করছি, মৃত্যু যেখানে অবশ্যম্ভাবী)।
রাখালের এ কথা শুনে আবদুল্লাহ ইবন উমার (রা.) এর বিস্ময় আরো বেড়ে গেল। তিনি তাকে বললেন, “তোমার একটা বকরি আমাদের কাছে বিক্রি করে দাও, এর গোশত তোমাকেও খাওয়াবো, আর তুমি এই মাংসের দ্বারা তোমার রোজাও ভাঙতে পারবে (নফল সিয়াম ভাঙার অনুমতি আছে), আর আমরা তোমাকে ঐ বকরির মূল্যও দিয়ে দিব।“
এ প্রস্তাব শুনে রাখাল বলল, “এই বকরির পাল আমার নয়, আমার মালিকের। এটা আমার কাছে আমানত।“
.
তখন আবদুল্লাহ ইবন উমার (রা.) তাকে পরীক্ষা করার জন্য বললেন, “তুমি তোমার মালিককে বলবে, ঐ বকরিটিকে বাঘে খেয়ে ফেলেছে।”
.
এ কথা শুনে রাখাল আকাশের দিকে আঙ্গুল উঠিয়ে চিৎকার দিয়ে বলল, “তাহলে আল্লাহ কোথায়।“(অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা তো দেখছেন)
ইবন উমার (রা.) তার এ কথায় প্রভাবিত হয়ে বারবার বলতে লাগলেন, “তাহলে আল্লাহ কোথায়, তাহলে আল্লাহ কোথায়।“
ঐ ঘটনার পর ইবন উমার (রা.) মদিনা মুনাওয়ারায় ফিরে এসে ঐ রাখালকে তার মালিকের কাছ থেকে কিনে নেন। রাখালের সাথে ঐ বকরির পালকেও তিনি কিনে নেন। অতঃপর তিনি তাঁকে আজাদ করে দেন এবং তাঁর সততায় মুগ্ধ হয়ে বকরিগুলোকে পুরস্কার হিসেবে তাঁকে দিয়ে দেন।
আমাদের জন্য এই ঘটনায় চিন্তার খোঁড়াক রয়েছে। এরা হচ্ছে ঐ সকল লোক যারা মরুভূমির তীব্র গরমের লম্বা দ্বিপ্রহরে পশু চড়াতো, কাজের তাগিদে প্রখর রোদ্রে চলাফেরা করতো, সাথে সাথে সিয়াম পালন করে আখিরাতের সামান হাসিল করতো। তারা দৈনন্দিন জীবনোপকরণের ফিকির করার পরও ইবাদতের ব্যাপারে উদাসীন থাকতো না।
রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেন, ঐ ব্যক্তির জন্য দিগুণ নেকি যে তার দুনিয়াবি মালিকের হক আদায় করে (তার আনুগত্য করে) এবং তার প্রকৃত মালিকের (তথা আল্লাহ তাআলার) হক আদায় করে তথা ইবাদত করে।
মহান আল্লাহর তাদের উপর শান্তি ও রহমত বর্ষণ করুন,