Post ID 00002
ভিন্ন রকম চিন্তাভাবনা এ আপনাকে স্বাগতম। জীবন দুরা আজকে এমন একটি বইয়ের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের সামনে যা অন্য অন্য গ্রহের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
তাই বইটির নাম টিও লেখক রেখেছে ভিন্ন রকম ভাবে। আজকে যে বইটি নিয়ে আলোচনা করব তার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি নিচে তুলে ধরা হলো।
ক্রিটিক্যাল থিংকিং এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়।
- বই:- ক্রিটিক্যাল থিংকিং
- লেখক:- নাজমুস সাদাত পারভেজ
- প্রকাশনায়:- শব্দশৈলী
- গুণগত মান:- হার্ডকভার
- প্রথম প্রকাশ:- 1st Published, 2021
- মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা:-:112
- Language বাংলা।
ক্রিটিক্যাল থিংকিং এ যা কিছু আলোচনা করা হয়েছে.
বইয়ের নাম টি শুনেই হয়তোবা বুঝতে পারছেন যে বইটিতে কি বিষয়ে লেখা থাকতে পারে। তাহলে প্রথমত বইয়ের অধ্যায় গুলো নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক। যেহেতু একজন প্রকৃত পাঠক বইটি পড়ার আগে অধ্যায়গুলোতে একটু চোখ বুলিয়ে নেন।
১/প্রথম থেকে পঞ্চম অধ্যায়ের মধ্যে যে বিষয়গুলো থাকছে, দ্য লাস্ট চ্যাপ্টার,মোটিভেশন স্পিচ এর মধ্যে যে ভুলগুলো হয়ে থাকে। মায়াজাল এবং চিন্তার অবয়ব এছাড়াও পঞ্চম অধ্যায় রয়েছে ক্রিটিক্যাল থিংকিং ফ্রেমওয়ার্ক।
অধ্যায়গুলোতে বেশ কিছু ইম্পরট্যান্ট কথা বলা হয়েছে। বইটি খুললে প্রথম অধ্যায় তেই হেডলাইন চোখে পড়বে “দ্য লাস্ট চ্যাপ্টার”এখানে একজন পাঠক একটি বইয়ের প্রথমে কোন দিক গুলো চোখে পড়ে বা কি চায় সেই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা হয়েছে। এবং মোটিভেশন স্পিচ এর ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। কেন আমরা মোটিভেশনাল স্পিচ শুনতে খুব পছন্দ করি কিন্তু সেটা বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত করতে পারিনা। তার প্রতিবন্ধকতা কি এখানে সে বিষয়টি নিয়েও আলোকপাত করা হয়েছে। তা ছাড়াও রয়েছে আপনি কিভাবে ক্রিটিক্যাল থিংকিং শুরু করবেন।
২/ষষ্ঠ থেকে দশম অধ্যায়ের মধ্যে যে বিষয়গুলো রয়েছে, সিদ্ধান্তে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রবণতা, পক্ষপাতদুষ্ট চিন্তা, সংখ্যা কাঠামো বর্ণনা কাঠামোর বিভ্রান্তি এবং পরামর্শ ও উপদেশ সংক্রান্ত চিন্তা।
আমরা খুব সহজেই আবেগ নিয়ে যেকোন একটি চিন্তায় ঝাঁপিয়ে পড়ি। যখন কোন মোটিভেশনাল স্পিচ শুনি এবং আমাদের ভালো লাগে তখন খুব সহজেই আমরা ভেবে ফেলি যে এখন থেকে আমিও এরকম হব বা এরকমটা করব। কিন্তু তার আগে বা পরে কি হবে সেটা ভাবি না। আশাকরি বইটি পড়লে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন। মনে আছে ঐ প্রবাদ বাক্যটি? সেটি কিন্তু এমনি এমনিতেই এত বিখ্যাত হয়নি। আর তা হল, “ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না”।
৩/একাদশ থেকে পঞ্চদশ অধ্যায় পর্যন্ত যে য বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে,
দুশ্চিন্তার চিন্তা, ইতিবাচক ও হাসিখুশি থাকার চিন্তা, সমালোচনার চিন্তা, এবং ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণের চিন্তা।
আমাদের দুশ্চিন্তার জন্য চিন্তা করতে হয় কেন? কিভাবে? সব উত্তর রয়েছে এই অধ্যায়ে, এবং আমরা সবাই চাই আমরা যেন সারা জীবন হাসিখুশি ভাবে থাকতে পারি এবং সেজন্য আমাদের কি করতে হবে? কিভাবে করলে ভালো হবে? সহজ পথটা কোথায়? কেউ যখন আমাদেরকে নিয়ে সমালোচনা করে তখন আমরা কেন তা নিয়ে চিন্তা করি? আমরা কিভাবে ধৈর্যধারণ করতে পারব? অথবা নিজেকে আত্মনিয়ন্ত্রণ করতে পারব! এই বিষয়গুলো নিয়ে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন। আশা করি এই 5 টি অধ্যায়ে আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু মেসেজ থাকবে।
৪/এখন আলোচনা করব উপরের অধ্যায়গুলো ছাড়াও যে অধ্যায়গুলো আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং মাস্ট রিড, ক্রিটিক্যাল থিংকিং এর প্রধান যে স্তম্ভগুলো রয়েছে লেখক এখানে তার চারটি স্তম্ভ উল্লেখ্য করেছেন। এছাড়াও একজন ক্রিটিক্যাল থিংকিং এর প্রতিচ্ছবি এই বইয়ের ৮৬ পৃষ্ঠায় দেখতে পারবেন।
যে বিষয়গুলো মনে হয়েছে মোস্ট ইম্পর্টেন্ট।
আরো রয়েছে ক্রিটিক্যাল থিংকিং ও সক্রেটিসের প্রশ্নমালা এবং একটি ক্রিটিক্যাল থিংকিং এক্সারসাইজ ও জীবন ঘটিত একটি ছোটগল্প দিয়ে এই বইটি শেষ করা হয়েছে।
লেখক সম্পর্কে,
এ বইটির লেখক সম্পর্কে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। এখনকার মানুষ এর চিন্তা ভাবনা উন্নত অনুন্নত তাই আগের মতো লেখকেরা এখন নিজেদেরকে ভালভাবে প্রকাশ করতে পছন্দ করেন না। যেমন ধরা যায় আমাদের “আরিফ আজাদ”বিগত কয়েক বছর তিনি বই মেলায় প্রথম স্তরে রয়েছেন কিন্তু তার ব্যক্তিগত সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানে এবং আজ পর্যন্ত তার ছবি পাবলিকলি এখনো প্রকাশ পায়নি।
বইটি নিয়ে লেখক বিশ্বাস করেন যে বিষয়গুলোতে
লেখক বলেন। আমি বিশ্বাস করি, বইটি পড়লে আপনার চিন্তার জগতে পরিবর্তন আসবে এবং এবং মানুষের মনস্তাত্ত্বিক সম্পর্কে আপনার ধারণা বাড়বে।
তিনি আরো বলেন, আপনার ভিতরে অতিরিক্ত বিশ্বাস বা ওভার কনফিডেন্স থাকলে সেটা কিছুটা হলেও কমে যাবে। সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা বাড়বে।
বইটিতে লজিক্যালি যে কথাগুলো বলা রয়েছে
আজকাল মোটিভেশনাল স্পিচ এর যুগ। চারো দিকে শুধু মোটিভেশন এবং মোটিভেশন। যে পারে সে ও মোটিভেশন দেয় যে না পারে সে ও দেয় আর কিছু ইয়াং জেনারেশন সেটা শুনে মনে করে। এখন থেকে আমিও ফাটিয়ে ফেলবো কিন্তু ফাটানো তো হয়না খানিক সময়ের জন্য যেটা হাওয়া ফুলানো বেলুন থাকে কিছুক্ষণ পর সেটি চুপসে যায়। এর পিছনে রয়েছে গভীর চিন্তা ভাবনার অভাব।
ধরুন একজন পাইলট আপনাকে মোটিভেশন দিচ্ছে। এভাবে করলে এটা হবে ওভাবে করলে ওটা হবে। একটা সময় তার কিছুই ছিলো না কিন্তু সে এখন লক্ষ্য বা কোটি টাকার মালিক। আর এই মোটিভেশন শুনে আপনি ভাবলেন উনি যদি পারে তাহলে আমি কেন পারব না? আর আপনার চিন্তাভাবনা কিন্তু এখানেই শেষ অথচ আপনি ভুলেই যাচ্ছেন যে একজন পাইলট এ পর্যন্ত আসার জন্য তাকে এর পেছনে প্রচুর সময় মেধা ও শ্রম দিতে হয়েছে।
ধরুন একজন পাইলট সে পাইলট হওয়ার জন্য পাঁচ বছর শ্রম দিয়েছে এখন আপনাকে এ 5 বছর ধরে মোটিভেশনাল স্পিচ যদি কেউ না শোনায় এ পাঁচ বছর পর্যন্ত আপনার মোটিভেশন থাকবে তো?
আজকে এ পর্যন্তই। এরপর কোন বইটি নিয়ে আলোচনা করতে পারি ধন্যবাদ তা নিচের কমেন্টে জানাতে পারেন।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?