Post ID 111561
বইঃ মানবজনম
লেখকঃ সাদাত হোসাইন।
“মানবজনম” – (সাদাত হোসাইন) এর বেশিরভাগ জুড়ে একটা ফনা তোলা কালসাপ ফোঁস ফোঁস করে বেড়ায় । এই কালসাপ লোভের, কামের, বিকৃতির, প্রতিশোধের। মানুষের অন্তরে বাস করা সাপটা বইয়ের পৃষ্ঠা জুড়ে খাপ খোলা তলোয়ারের মত ঘুরতে থাকে যেকোনো মুহূর্তে ছোবল মারার অপেক্ষায়।
‘অপেক্ষা’ এখানে একমাত্র নিষ্ককলুষতার চিহ্ন-নতুন করে শুরু করার প্রতীক। আর বাকি চরিত্রগুলো প্রচন্ড ক্ষমতালিপ্সু, আত্মকেন্দ্রিক, আত্মপরিচয়ের সন্ধানে ব্যতিব্যস্ত। চরিত্রগুলোর বৈপরীত্য অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রমাণ করে মানব চরিত্র সরলরৈখিক নয়। বিচিত্র অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে চলতে থাকা মানব জনমের এক জীবনে প্রতিটি মানুষই ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবেশে ভিন্ন ভিন্ন কেউ হয়ে ওঠে। অনেক সময় নিজেই নিজেকে চিনতে পারে না। সে জানেনা সে কি চায়, সে বুঝে উঠতে পারেনা সে কেন সামনে যাচ্ছে, সে শুধু জানে যেতে হবে। “মানব জনম গতির জনম।”
নয়নের সাথে আব্দুল ফকির যে কবারই মুখোমুখি হয়-সময় গুলো বড়ই অদ্ভুত।আত্মজিজ্ঞাসায় জর্জরিত নয়ন তবুও বারবার ফিরে আসে ফতেপুরে। প্রতিশোধ স্পৃহা ?নিয়তি?
একদিকে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী তৈয়ব খাঁ, অন্যদিকে রহস্যঘেরা আধ্যাত্মিকতার বলয়ে নিজেকে অসামান্য করে তোলা আব্দুল ফকির, তাদের ঘিরে- তাদের একঁগুয়েমী -বিকৃতি-ক্রোধকে ঘিরে গড়ে ওঠা চরিত্রগুলো একে একে জীবন্ত হয়ে ওঠে এই উপন্যাসের পরতে পরতে।
সাপের ওঝার খোলসে আব্দুল ফকির নিজেই যেন এক গোখরা সাপ। তার বিকৃত লালসার শিকার তৈয়ব খাঁ’র মেয়ে কোহিনুর ,উপন্যাসে নেপথ্যে থেকে কাহিনীর গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করে সে ।রহস্যেই থেকে যায় সবটা জুড়ে। সাপে কাটা চিকিৎসার নামে আব্দুল ফকিরের হাতে ধর্ষিত কোহিনুরকে কলঙ্কের হাত থেকে বাঁচাতে অথবা নিজেকে ,হঠাৎই তৈয়ব খাঁ এক রাতে মেয়েকে বিয়ে দিয়ে পাঠিয়ে দেয় ঢাকায়।
কোহিনূরের সন্তান নয়ন যখন জানতে পারে তার জন্ম পরিচয়- হিসহিস করে ওঠে সে।পাল্টা ছোবলের পরিকল্পনায় মুখোমুখি হয় আব্দুল ফকিরের। তার চ্যালেঞ্জ আব্দুল ফকির কে সতর্ক করে তুলে, পাকা খেলোয়াড় ফকিরের চালের কাছে নয়ন নস্যি।
এদিকে খাঁ বাড়ীর অন্দরমহলে ক্ষমতার পালাবদলের খেলায় হঠাৎই কেন্দ্রে চলে আসে আলাভোলা মনির-ক্ষমতার গন্ধ যাকে খুব পাল্টে দেয়। রক্ত কি হিংস্রতা বহন করে? নইলে ক্ষমতার গন্ধ পেয়েই মনির এতোটা বদলে যাবে কেন? খাঁ বাড়ি তার লোভের -ক্ষমতার দ্বন্ধে ভেতরে-বাইরে কত শত্রু তৈরি করেছে তার ইয়াত্তা নেই। চিরকাল শাসন-শোষণের বেড়া ডিঙিয়ে ভেতরে ভেতরে সবাই জোট পাকায়। চেনা মানুষ স্ত্রী আমোদী বেগমকেও তাই তৈয়ব খাঁ’র চিনতে কষ্ট হয়, তাতো তার সব সময়ই হয়েছে। তৈয়ব খাঁ কাউকেই বুঝতে চায়নি, অথচ তার ভবঘুরে ছেলে দবির খাঁ’র মেথর স্ত্রীর কাছেই ( যাদের খাঁ বাড়িতে আশ্রয় জোটেনি) দিন শেষে তার আশ্রয় হয়, যখন সে খুবই অসহায়।
হেমা। অন্যতম প্রধান নারী চরিত্র। শহরের নাগরিকতায় বেড়ে ওঠা জেদি , অভিমানী হেমা নয়ন কে ভালোবাসে -কিন্তু কাছে টানে না। সে চায় নয়ন তার মতো করে ভালো থাকুক, উদ্ভ্রান্ত নয়নের মাঝে স্থিরতা আসুক, নিজেই এসে ধরা দিক। ” আমি অপেক্ষা করবো বলেই যে তোমাকে আসতেই হবে এমন নয় নয়ন, তুমি না আসলেও ক্ষতি নেই আমি জানব অপেক্ষার নামই মানব জনম”। কিন্তু নয়ন কি নিজেই নিজেকে পেয়েছে? রাহাত-হেমার একতরফা প্রেমিক ও বন্ধু -জানে যে হেমা নয়ন কে ভালোবাসে, তবুও তার ভালোবাসার কমতি হয় না। রাহাতের ভালোবাসায় পাগলামি আছে, প্রেম আছে। হঠাৎই ভাসিয়ে নিতে চায়-কিন্তু হেমা অটল পাহাড়।
অন্য নারীদের প্রতি নিষ্ঠুর হলেও কন্যা পারুলের জন্য আব্দুল ফকিরের যে ভালোবাসা- তা অকৃত্রিম। মানব চরিত্রের বৈপরীত্যই ফুটে উঠেছে আব্দুল ফকির ও পারুলের বিভিন্ন সময়ের খুনসুটিতে।মেয়েকে অদ্ভুত ভালোবাসায় আচ্ছন্ন করে তার নাকের ডগায় দিনের-পর-দিন অকাজ,বিকৃতি চালিয়ে যায় আব্দুল ফকির।
কাঁচা বয়সের ভুলে শহুরে ভন্ড প্রেমিকদের ফাঁদে পড়ে হতবাক পারুল ও তার বান্ধবী লতা। খুব অল্পতেই যদিও তারা বেঁচে যায়। একদিন হঠাৎ পারুল যখন পিতার বিকৃতি টের পায়,বান্ধবী লতাকে সেই একই সাপেকাটা চিকিৎসার নামে ধর্ষণ উদ্ধত অবস্থায় আবিষ্কার করে-তখনই বটির কোপে পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে যেন পিতার অন্যায়ের প্রায়শ্চিত্ত করে পারুল। এ যেন দীর্ঘদিন ধরে পারুলের মায়ের উপরে চলে আসা অন্যায়ের প্রতিশোধ। এ যেন আব্দুল ফকিরের জন্য এক নির্মম পরিণতি, পৃথিবীতে তার একমাত্র ভালবাসার মানুষ নিজ কন্যার হাতে খুন হওয়া।
পরিবারগুলোতে সব ভাঙ্গনের শব্দ। শহুরে হেমা তার বাবা-মায়ের ডিভোর্স নিয়ে চিন্তিত, অন্যদিকে ফতেপুর গ্রামে আব্দুল ফকিরের মেয়ে পারুল তার পাগলি (?) মাকে আগলে রাখে সারাদিন। আমোদী বেগমরা স্ত্রী হয়েও স্ত্রীর মর্যাদা বঞ্চিত, তৈয়ব খাঁয়ের দাসী হয়েই কাটিয়ে দেয় একটা জীবন। অন্যদিকে মেথর কন্যার মাঝেই দবির খাঁ খুঁজে পায় শান্তি ও আশ্রয়।
‘সাদাত হোসাইন’ আশ্চর্য মুন্সিয়ানায় একে একে নির্মাণ করেছেন প্রত্যেকটি চরিত্র।প্রত্যেকটা চরিত্রই যেন তার অনিবার্য পরিণতি বরণ করেছে উপন্যাসের শেষ দিকে এসে। নয়নের আত্মপরিচয় খুঁজে পাওয়া, কুয়াশায় আচ্ছন্ন হিমালয়ের কাছে হেমার সাময়িক হারিয়ে যাওয়া,’অপেক্ষার’ জন্ম নেয়া- সব কিছুই তাই আর খাপছাড়া মনে হয়নি। শহুরে ও গ্রামীণ দুই পটভূমিই একটা উপন্যাসে চমৎকার ভাবে সেঁটে দিয়েছেন লেখক-যা মোটেও বেখাপ্পা মনে হয়নি।
দিনশেষে এ মানব জনম তাই কখনো হেমাদের অপেক্ষার নাম, পারুলের স্পর্শ তৃষ্ণার নাম, তৈয়ব খাঁ-আমোদি বেগমের না-বলা গল্পের নাম – জীবনের অমীমাংসিত অঙ্কের নাম, ফখরুল আলম এর কাছে নয়নের জন্ম পরিচয়ের বাইরে এক পিতার চরিত্রের নাম, রাহাতের বিষন্ন কষ্টমাখা ফোঁটা ফোঁটা জলের ভেতর গোটা জীবনের নাম, মনিরের ভেতর নতুন এক তৈয়ব খাঁ’র ছায়ার নাম, অনুশোচনার – ভালোবাসার দ্বন্ধে এক পারুলের তার ভাইয়ের প্রতি ভালবাসার নাম; দিনশেষে মানব জনম এক অন্তহীন বিভ্রমের নাম।
“মানবজনম” এক মাস্টারপিস উপন্যাসের নাম।
(৩০/০৮/২০১৮ ইং বুক রিভিউ টি লিখি, কিন্তু নানা ব্যস্ততায় কম্পোজ ও পোস্ট করা হয়ে উঠেনি। ইতিমধ্যেই আরো অনেক বই পড়া হয়েছে সাদাত হোসাইন’র। অন্দরমহল, আরশিনগর, নির্বাসন, নিঃসঙ্গ নক্ষত্র, ছদ্মবেশ-আলাদা আলাদা গল্পের স্বাদ ও নির্মাণ প্রত্যেকটি লেখায়। এরই মাঝে একদিন আবিষ্কার করি “সাদাত হোসাইন অফিশিয়াল ফ্যান্স ক্লাব”। উনাদের জন্য এই লেখাটা শেয়ার করা।
সাদাত হোসাইন এর কোন লেখাটি বেস্ট এটি বলার মত সময় এখনো হয়নি বলে আমি মনে করি। আমি আরো মনে করি উনার মাত্র শুরু এবং শুরুটা বেশ সাড়া জাগানো,বাংলা কথাসাহিত্যে আরো অনেক কিছু দেয়ার ক্ষমতা রাখেন তিনি। শুভকামনা প্রিয় লেখক।
“হয়তো বিভ্রম আর অপেক্ষার নামই মানবজনম।”
একটা মানুষের জীবনে সবচাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কি? রক্ত?না। উত্তর টা হচ্ছে- ‘সম্পর্ক,মায়া’।
এই মায়ার কারণেই হয়তো বা কোহিনূর-অমল বাবু,কোহিনূর-ফখরুল আলম,নয়ন-ফখরুল আলম,আব্দুল ফকির-পারুল,নয়ন-হেমা,নয়ন-পারুল,হেমা-রাহাত,তৈয়ব খাঁ-এস্কান্দার কিংবা নয়ন-আসমা এদের সবার অনুভব অথবা সম্পর্কের গভীরতা স্পর্শ করে গেছে আমার চোখের জল।
মানবজীবন যেখানে একটা নিয়মিত চক্রের মতো সময়ের ফেরে একই রূপে বারবার ফিরে আসে।যেখানে মানবজীবন সম্পর্কের জটিলতা দেখায়, কিছু বিভ্রম অথবা কোনো মায়াজালে আচ্ছন্ন হয়ে পরম প্রতাপশালী চরিত্রও যখন নিজের সবচেয়ে ভালোবাসার প্রিয় কোনো মানুষ থেকে দূরে সরে যেতে বাধ্য হয়।
অথবা,মানবজনম এমন একটা উপখ্যান,যেখানে ভিন্ন বৈচিত্র্যময় মানব চরিত্রের ঘটনাবহুল জীবনের আখ্যান রয়েছে।
এই উপন্যাসে থাকা একেকটা চরিত্রের জীবন লেখক কি সুনিপুণ দক্ষতায় এক সুতায় বেঁধে দিয়েছেন!শুরু থেকেই সাদাত হোসাইন এর এই গল্প জুড়ে দেওয়ার জন্যই তাঁকে আমার এতো পছন্দ।মানবজনম সাদাত ভাইয়ের লেখা আমার প্রথম পড়া উপন্যাস,আর সবচাইতে প্রিয় লেখাও বটে!
এক অদ্ভুত মুগ্ধতার সাথে লক্ষ্য করেছিলাম প্রত্যেকটা চরিত্রের জীবনের কোনো না কোনো প্রান্তে আমি অবস্থান করছি। লেখকের এ এক মনোমুগ্ধকর ক্ষমতা! মানুষের ভেতরটা এভাবে পড়তে পারেন বলেই তিনি লেখক বুঝি?
কাহিনী নিয়ে বিস্তারিত অনুভূতি বলতে গেলে হয়তো লেখা আরেকটা উপন্যাসের আকার ধারণ করবে।তাই চরিত্র নিয়ে সংক্ষেপে নিজস্ব প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছি।
তৈয়ব খাঁ: সাদাত ভাইয়ের ভাষায় বৃদ্ধ বয়সে এসে গেলে মানুষ এক বর্ষীয়ান বটবৃক্ষে রূপান্তর হয়।তৈয়ব খাঁ ও তেমন একজন মানুষ। জমিনের উপর প্রভাব বিস্তার করার ইচ্ছে বা জিঘাংসা নিয়ে যার সারা জীবন কেটেছে।এই মানুষটাকে নিয়ে মিশ্র অনুভূতি হয় বলতে গেলে।একইসাথে প্রভাবশালী বংশরক্ষক এবং মায়াময় একজন পিতা হিসেবে তাঁর দার্শনিক শক্তিশালী কথাবার্তা আমাকে জীবন নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে।
কোহিনূর: পিতার কাছে দুনিয়ার সবচেয়ে দামী রত্ন সে,চোখ ধাঁধানো অনিন্দ্য সুন্দরী। তাঁর জন্ম হয়েছিল ভুল সময়ে, ভুল জায়গায়! জীবনের কড়াঘাতে বদলে যাওয়া প্রতিভাময়ী এই ভিন্ন ব্যক্তিত্বের রমণী উপন্যাসের পুরোটা জুড়েই প্রভাব ছড়িয়ে ছিল ঠিক সবচেয়ে মূল্যবান উজ্জ্বল রত্নটির মতোই।
আব্দুল ফকির: এমন বিকৃত রুচির প্রভাব ছড়ানো কবিরাজ বা ওঝা কুসংস্কারাচ্ছন্ন গ্রামীণ বাংলায় নতুন কিছু নয়।গ্রাম্য মানুষের অজ্ঞতা আর অন্ধ বিশ্বাসই এরকম আব্দুল ফকির কে তৈরি করে।
হেমা: উপন্যাসের সবচাইতে স্নিগ্ধ,মিষ্টি,আপন আপন অনুভব করায় যে চরিত্র সে হচ্ছে হেমা। নিজের সকল কষ্ট,অপ্রাপ্তি বা অপূর্ণতা বুকে লুকিয়ে যে সবার কষ্ট দূর করে,সবার শান্তির আশ্রয়, সে-ই হেমা।কারো কাছে পরম আকাঙ্খিত অধরা বস্তু আবার কারো জন্য আঁকড়ে ধরার মতো শক্ত খুঁটির নামটি হেমা।যার কাছে গেলে,মিশলে মা মা ভাবনায় মন আচ্ছন্ন হয়!
নয়ন: সবচেয়ে অসহায় চরিত্র, নিজের পঁচিশ তম বছরে এসে যে নিজের অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। সুদর্শন এই করুণ যুবকটির জন্য অসম্ভব মায়া হয়,মন খারাপির মেঘে থমথম হয়ে রয় বুক। কিন্তু আমি মনে করি এই চরিত্রটা এমন অসহায়তার খোলস ভেঙ্গে শক্তিশালী কেউ হতে পারতো।তার এই ব্যর্থতার জন্য হয়তো প্রভাব বিস্তারকারী কেউ বলে মন মানতে চায় না।
পারুল:সে এক বিষ্ময়! শহরের পোলা বিয়ে করার স্বপ্ন এই অস্বাভাবিক রকমের সুন্দরী তরুণীর জীবনটা ঝড়ের মুখে ফেলে দিয়েছে। শুরুতে তার কাজকর্ম বিরক্তিকর লাগলেও শেষ মূহুর্তে এসে তার জন্যই উপন্যাসটার স্বার্থকতা খুঁজে পেয়েছি।মন ছটফট করে,বিশ বছর পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তার জীবনে কি ঘটবে তা জানার জন্য!
রাহাত: বেঁচে থাকতে এরকম দু একটা দৈনন্দিন অভ্যাস থাকলে জীবনে হতাশাবোধ আসে না। হেমার প্রতি তার এক তরফা ভালোবাসা, সাপোর্ট মন ছুঁয়ে গেছে।ঝুম বৃষ্টিতে কদম ফুল ভরা ভ্যানে সানগ্লাস পরা এই যুবকটার লেখা গান,সদ্য প্রকাশিত এলবামের নাম কিংবা উৎসর্গ পত্র বুকের ভেতর কেমন করা অনুভব জাগায়।
এরপর আদুরী বেগম,মনির,আসলাম সাহেব,রেণু,ফজু ব্যাপারী,লতা, জুলফিকার এরা কেউ অপ্রধান বলে মনে হয় নি। এদের ছাড়া, এদের অনুভব, চারিত্রিক বৈচিত্র ছাড়া উপন্যাস টা স্বার্থকতা পেতো না।
সবমিলিয়ে মানবজনম আমার জন্য একটা গভীর অনুভবের নাম। গভীর ভালোবাসা।
সবাই যদি বলে “সাদাত হোসাইন এর কোন লেখা তোমার সবচাইতে প্রিয়?” আমি কোনোরকম দ্বিধা না রেখে বলে দেই “মানবজনম।” আমায় অনেকে এজন্য পারুল, অপেক্ষার মা বলে সম্বোধন করে।এতে আমি ক্ষুব্ধ হই,ক্ষেত্রবিশেষে ক্ষিপ্ত। কিন্তু আমার নিঃস্তরঙ্গ জীবনে এটাও একটা ভালোলাগার আছড়ে পড়া ঢেউ।
ফটো কার্টেসি: Ishu Ibhu