Title প্রণব মুখার্জি : রাজনীতির ভেতর বাহির – প্রথম খণ্ড
Author গৌতম লাহিড়ী
Publisher আল-হামরা প্রকাশনী
Quality হার্ডকভার
ISBN 9789849618683
Edition 1st Published, 2022
Number of Pages 120
চার দশকের বেশি সাংবাদিক জীবন। এই সময়কালে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীদের কাছ থেকে দেখার সুযােগ পেয়েছি। দেশের অভ্যন্তরে ধ্বং বিদশ ভ্রমণ করেছি সফরসঙ্গী হয়ে। রাজনৈতিক উত্থান-পতনের সাক্ষী হয়েছি। আমার বহু সতীর্থ সাংবাদিক অক্কেবার বলেছেন- অজ্ঞ তা নিয়ে বই কেল লিখছি না ? জবাব। দিয়েছি- রিপাের্ট করে এত ক্লান্ত যে অলসতা পেয়ে বসেছে। এর মধ্যে হঠাৎ অভূতপূর্ব করােনা মহামারিত সারা বিশ্বের সঙ্গে ত্মতও আক্রান্ত। বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় হলাে নিজেকে ঘরবন্দি করে রাখা। জলজীবন স্তব্ধ। এই প্রথম সান্ধী হলাম লকডাউনের।
হঠাৎ একদিন অনুজপ্রতিম সাংবাদিক কুণাল ঘােষের সহকর্মী অভিজিত ঘােষ টেলিফোন করে জানতে চহিলাে কি করছি। ওরা তখন ই-বুক পাের্টাল খুলছে। আমি যেন একটা বই লিখি। কুণাল চাইছে প্রণববাবুকে নিয়ে। বিশেষ করে প্রণবের প্রধানমন্ত্রী হতে না পারার নেপথ্য কাহিনী। বাঙালিদের মধ্যে ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সব যােগ্যতা থাকলেও জওহরলাল নেহেরুর মত ব্যক্তিত্বের বিকল্প স্বপ্নে দেখাও পাপ।
তিনি কখনাে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা ভেবেছিলেন কিনা জানা যায় না। নিশ্চিতভাবে যিনি হতে পারতেন তিনি সুভাসচন্দ্র বােস। তাঁর কাহিনী ভিন্ন। এরপর স্বাধীন ভারতে প্রথম বাঙালি যার কাছে প্রস্তাব এসেছিলাে তিনি- মার্কসবাদী নেতা জ্যোতি বসু। শুনেছি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মনের কোণে বাসনা ছিলাে। তবে কোনাে সম্ভাবনা তৈরি হয়নি। তৃণমূল কংগ্রেস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী করার স্বপ্ন নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলাে। এখনও তাকে ঘিরে জল্পনা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীত্ব নিয়ে যাকে ঘিরে আধুনিক ভারতে সবচেয়ে বেশি চর্চা হয়েছে- তিনি প্রণব মুখার্জি। তিনি কি প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। তাঁর কাছে কখনাে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব এসেছিলাে? তিনি কি কোনাে ষড়যন্ত্রের শিকার? গান্ধী পরিবার তাঁকে সব ক্ষমতা দিয়েছিলাে। কিন্তু বাইরে থেকে টানা অদৃশ্য এক রেখার মধ্যেই কি তাঁর ক্ষমতা সীমিত ছিলাে? সাংবাদিকতার সুযােগে কাছ থেকে প্রণববাবুকে দেখার সুযােগ হয়েছে।
কখনাে কোনাে রিপাের্টিং-এর রােজনামচা লিখে রাখিনি। স্মৃতির মণিকোঠা থেকে তথ্যগুলাে উদ্ধার করে একসূত্রে বাঁধার চেষ্টা করলাম। তথ্যগুলির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কয়েকটি প্রামাণ্য স্মৃতিকথার সাহায্য নিয়েছি। আমার নিজের কয়েকটি টুকরাে টুকরাে লেখা।
বলে রাখা ভালাে- এই বইয়ের যাবতীয় তথ্যের প্রামাণ্যতা প্রণব মুখার্জির নয়। তিনি আমাকে তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত করেননি। তবে তাঁর সাথে ঘনিষ্ঠতার সুযােগে বহু ঘটনার সাক্ষ্ণী হতে পেরেছি।
বীরভূমের এক অখ্যাত গ্রাম থেকে ভারতের শাসক দলের প্রভাবশালী নেতা হয়ে ওঠা প্রণব মুখার্জির কাহিনী বেশ বিস্ময়কর। কোনাে পারিবারিক প্রভাবে নয়, সম্পূর্ণ নিজ যােগ্যতায় ক্ষমতার অলিন্দের কাণ্ডারি হয়ে ওঠেন তিনি। ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের পরে তিনিই দ্বিতীয় প্রশাসক যিনি ‘ভারতরত্ন’ উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। অন্যরা অর্থনীতি, কলা, সমাজসেবার জন্য। প্রণব মুখার্জির রাজনৈতিক জীবনে একবার নয়, অন্তত চারবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিলাে। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত অধরাই থেকে গেলাে। আবার কবে বাঙালির জীবনে এই সম্ভাবনার তৈরি হবে তার অপেক্ষায় সবাই। তবে তিনি ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন।
আমার প্রণব মুখার্জি স্মৃতিকথন মূলত দুটি পর্যায়ে। বাংলাদেশে প্রণববাবু শ্রদ্ধার আসনে রয়েছেন। সেই বিষয় নিয়ে আমার পৃথক খণ্ড লেখার আগ্রহ রয়েছে। এইখণ্ডে মূলত প্রণববাবুর রাজনৈতিক জীবন, বহু উত্থান-পতন নিয়ে লিখেছি। আমার মতে প্রণববাবুর রাজনৈতিক জীবন স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতের আধুনিক রাজনৈতিক ইতিহাসের চলমান সাক্ষ্য-প্রমাণ।
প্রথম খণ্ডটি শেষ হবে প্রণববাবুর রাষ্ট্রপতি হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত। তারপর রাষ্ট্রপতি হওয়ার গােপন কাহিনী। বলতে দ্বিধা নেই। প্রণববাবুকে নিয়ে লিখতে প্রথম উৎসাহিত করেছিলেন ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মােয়াজ্জেম আলি। তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যােগাযােগ ছিলাে প্রণববাবুর। এজন্য বইটি তাকে উৎসর্গ করেছি। একই সঙ্গে আমার স্বর্গীয় শিক্ষক পিতা ধীরেন্দ্রনাথ লাহিড়ী। যার প্রেরণায় আমি সাংবাদিক হতে পেরেছি। সর্বশেষ আমার অনুজপ্রতিম সাংবাদিক-সাহিত্যিক কুণাল ঘােষ। যার অকুণ্ঠ সহযােগিতা ছাড়া আমি লেখক হতে পারতাম লা। এজন্য তাঁর উপস্থাপনা বইটির সাথে যুক্ত করছি।
সবশেষে অনুজপ্রতিম জাকওয়ান হুসেইনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। শুভকামনা রইল আল-হামরা প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধিকারী এবং এই বইয়ের প্রকাশক খান মুহাম্মদ মুরসালীনের প্রতি।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?