প্রাইমারি স্কুল পেরিয়ে যখন মাদরাসার অঙ্গনে পা রাখি, তখনকার ঘটনা। আমাকে পাঞ্জাবি আর টুপি-পরা দেখে আমাদের গ্রামের এক হিন্দু প্রতিবেশী বললেন, ‘তোমরা মোল্লা-মৌলভিরা কী করলা, তোমাদের কুরআনের অনুবাদ তো আমাদের ধর্মের লোকই করল!’ তার বক্তব্যের সেই অনুবাদক হলেন ‘গিরিশ চন্দ্র সেন’।
তার কথার সত্য-মিথ্যা নিয়ে বিতর্কে যাচ্ছি না। আজ প্রায় এক যুগ পরে এসেও তার কথা আমার স্পষ্ট মনে থাকার কারণ হলো, কুরআনের অনুবাদক হিসেবে একজন হিন্দু পণ্ডিতের নাম শোনা।
পারিবারিক সূত্রে সিয়ানের সঙ্গে আমার পরিচয় তার পথ-চলার শুরু থেকেই। সিয়ানের কাজের মানের ব্যাপারে এর কর্তা ব্যক্তিরা কেমন সিরিয়াস, তা আমি দেখতে দেখতেই বড় হয়েছি। এটা আমার কাছে আর কোনো বলার গল্প নয়, জীবনের অংশ।
‘মহিমান্বিত কুরআন : শব্দে শব্দে অর্থ’ প্রকল্পের কাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমি সাথে ছিলাম এবং এখনো আছি।
এই কুরআনের প্রকল্পের কাজ শেষ হতে প্রায় ১০টি ধাপ পার করতে হয়েছে। এর প্রত্যেকটি ধাপে সিয়ানের প্রধান সম্পাদক, শ্রদ্ধেয় বড় ভাই আবু তাসমিয়া আহমদ রফিক যেভাবে সাজিয়েছেন, দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, তা সত্যিই মনে রাখার মতো। টিমের প্রত্যেক সদস্যও নিজ দায়িত্ব পালনে ছিলেন খুবই আন্তরিক ও তৎপর। দিন-রাত টানা পরিশ্রম করে বেশ অল্প সময়ের মধ্যে একটি মানসম্পন্ন কাজ এই জাতির ইতিহাসে যুক্ত করেছেন সবাই মিলে।
আমি নিজে এ প্রকল্পের তিনটি ধাপের কাজের সঙ্গে যুক্ত থেকেছি। শুরুতেই কাজটির মৌলিকত্ব ছিল মুগ্ধ করার মতো। এত সুন্দর পর্যায়ক্রমিক একটা সিস্টেম ডেভেলপ করা হয়েছে এই বিশেষ প্রকল্পটির জন্য, যা সত্যিই অসাধারণ।
আল্লাহ তা’আলার অশেষ মেহেরবানি, দীনের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের অংশীদার হওয়ার সুযোগ দান করেছেন।
মাদরাসার ছাত্র, সাধারণ মানুষ— বাংলা ভাষাভাষী যারাই কুরআন বুঝে পড়তে চান, মহিমান্বিত কুরআন তাদের সকলের জন্য অত্যন্ত উপকারী হবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি। আল্লাহ আমাদের ভুল-ত্রুটি মাফ করে দিন। তাঁর কুরআনের ছায়াতলে জীবন কাটানোর তাওফিক দিন। কিয়ামতের দিন তাঁর আরশের তলে ছায়া দিন। আমিন।
অর্ডার লিংক : https://tinyurl.com/y5pe3e52
লিখেছেন : আহমেদ ইমতিয়াজ আল-আরাব
প্রকল্পের টিম মেম্বার