নারীবাদি বনাম নারীবাঁদি লেখক : কারিম শাওন – Naribadi Bonam Naribadi By Kareem Shawn

বই : নারীবাদি বনাম নারীবাঁদি

লেখক : কারিম শাওন (এর বই)
প্রকাশনী : ফেরা প্রকাশন
বিষয় : ইসলামে নারী
পৃষ্ঠা : 207, কভার : হার্ড কভার
ভাষা : বাংলা
 

বই : নারীবাদি বনাম নারীবাঁদি লেখক : কারিম শাওন (এর বই) প্রকাশনী : ফেরা প্রকাশন বিষয় : ইসলামে নারী পৃষ্ঠা : 207, কভার : হার্ড কভার
ছবি : 

নারীবাদি বনাম নারীবাঁদি

মুল কথা

নারীবাদি বনাম নারীবাঁদি – ‘সত্যবাদী’ শব্দটায় যেমন কারও সমস্যা থাকার কথা না, ‘নারীবাদী’ শব্দের বেলায়ও তা-ই। কিন্তু সমস্যা হলো, এই শব্দের কতিপয় প্রয়োগকারীকে নিয়ে। কারণ, তাদের কথা ও কাজের মাঝে রয়েছে বিস্তর ফারাক। শিকারকে আকৃষ্ট করতে শিকারি তো কত লোভনীয় ফাঁদই পাতে! একটু গভীরে গিয়ে তাদের দৃষ্টিতে ‘নারী অধিকার’ ‘নারী স্বাধীনতা’র সংজ্ঞা জানতে চান; সদুত্তর মিলবে না। যে উত্তর পাবেন, বিবেক থাকলে ভাববেনওরা তো পানির পেয়ালায় মদ পান করতে চাইছে, মদ!ওরা নিরাপদ ঘরকে খাঁচা অপবাদ দিয়ে নারীকে ঘর থেকে বের করে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়েছে। ওদের রঙিন চিঠির খামের ভেতরে আছে নারীকে ভোগ করার ঘৃণ্য নীলনকশা। দুর্জনের ছলের অভাব হয় না আসলে!নারী হলো শিকড়, যে কিনা আঁকড়ে ধরে রাখে। অঙ্কুরে বিনষ্ট করতে পারলে শিকড় মজবুত হবে না। নারী হলো সূতো, যে কিনা গেঁথে রাখে, বেঁধে রাখে। সূতো কেটে দিলে সুচেরা একা একা ঘর বাঁধতে পারবে না। তাতে ধ্বংস হবে পরিবার, সমাজ তথা গোটা জাতি।

আরো কিছু কথা

নারী জাতি পুরুষ জাতির প্রতিদ্বন্দ্বী নয়; বরং বিপদে-আপদে, সুখে-দুঃখে, হাসি-কান্নায়, একে অপরের পথ চলার সঙ্গী। দু’পক্ষই জীবন নামক দীর্ঘ একটা পথ পাড়ি দিতে ছুটে চলছে, সফলতার সাথে গন্তব্যে পৌঁছবে বলে। অচেনা পথ ধরে একই গন্তব্যের দিকে ছুটে চলা কারও দেখা পেলে বন্ধু হয়ে পরস্পর পরস্পরের দ্বারা উপকৃত হতে হয়; শত্রুর মতো একে অপরের সাথে ঝগড়া-বিবাদ করতে হয় না। কারণ, বিনা হেতু দ্বন্দ্বে জড়ালে দু’পক্ষেরই ক্ষতি । তখন দেখা যাবে, পারস্পরিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে উভয়পক্ষের কেউ-ই সঠিক গন্তব্যে পৌঁছতে পারেনি; নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছবে তো দূরের কথা। উপরন্তু যদি দেখা যায়, দুর্গম এই চলার পথে পাশাপাশি হেঁটে চলা অভিযাত্রী দল দুটো কতিপয় প্রয়োজনীয়তার জন্য একে অপরের ওপর বাধ্যতামূলক নির্ভরশীল, তখন তো ঝগড়া-বিবাদ করার প্রশ্নই ওঠে না।
কিছু প্রয়োজনীয়তা, কিছু চাহিদা যা নর ও নারীকে পৃথক করেছে; সেগুলোর কোনোটাই এ দুই জাতি নিজে থেকে নিজেদের ভেতরে যুক্ত করেনি। বিধাতা এই চাওয়াগুলোকে দেহাত্মার সাথে জুড়ে দিয়েছেন। এরপর একদলের চাওয়া পূরণের উপায় দিয়েছেন অপর দলের কাছে।
জগতের বস্তুগত চাহিদাগুলো নাহয় কোনো এক রকমে পূরণ করা গেল। কিন্তু বসন্তের রঙিন ফুলের মতো হৃদয়ে যে থোকা থোকা ভালোবাসা তৈরি হতে থাকে, সেগুলো তো ফেলে দেওয়া যায় না। অভিযাত্রী অপর দলের কাউকে বৈধ উপায়ে সেগুলো দিতে ইচ্ছে হয়। আবার সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের মতো তনুমনে যে অদমনীয় কাম জাগ্রত হতে থাকে, এটাকেও তো উপেক্ষা করা যায় না। অভিযাত্রী অপর দলের কারও স্পর্শ বৈধ উপায়ে পেতে ইচ্ছে হয়।
বসন্তের বাতাস শুরু হওয়ার পর থেকে সাড়ে তিন হাত দেহাত্মার ঘরে যা-ই ঘটছে—মনে হচ্ছে সেগুলো অপূর্ণাঙ্গ, অর্ধেক; অভিযাত্রী অপর দলের কারও কাছে আছে বাকি অর্ধেক সেটার সাথে মিলেই তবে রংগুলো পূর্ণতা পাবে। এ এক অনিবার্য লেনাদেনা!
আমি কিছু চাল আর আগুন এনে দিই, তুমি কিছু চাল ফুটিয়ে দাও, এরপর দুজনে দুজনকে লোকমা তুলে খাইয়ে দেবো। আমি চারটা দেয়াল তুলে এর ওপরে একটা ছাদ বানিয়ে দিই, তুমি ঘরের ভেতরটা গুছিয়ে দাও; এরপর দুজনে দুজনকে জড়িয়ে ধরে শান্তিতে একটু ঘুমোব। বাকি রইল ঝুম বৃষ্টিতে হাত ধরে ভেজা, নির্জন সমুদ্র তীরে খালি পায়ে হাঁটা, জোছনা রাতে নরম ঘাসে চিৎ হয়ে তারা দেখা।
একজন ভেঙে পরলে অপরজন তাকে নিরাপদ আশ্রয়স্থলের মতো বুকে আগলে রাখবে। বুকের ব্যথাগুলোর অর্ধেকটা নিজের নামে লিখে নেবে। দুশ্চিন্তাগুলো একটা দুষ্টু হাসিতে ভুলিয়ে দেবে। বন্ধুর মতো পাশে থেকে কাঁধে হাত রেখে পথ চলবে। দেখি তো তোমার কতগুলো কষ্ট’ বলে জড়িয়ে ধরে অদৃশ্য সংযোগের মাধ্যমে ৫১% কষ্ট নিজে নিয়ে বৈধ সঙ্গী/সঙ্গিনীকে প্রশান্ত করে দেবে।
তাই ‘নারী বনাম পুরুষ’ তুলনা করাটা একপ্রকারের অসুস্থ প্রতিযোগিতা। গল্পটা যেখানে ভিন্ন ধরনের হওয়ার কথা ছিল, সেখানে নারীকে পুরুষের প্রতিদ্বন্দ্বী বানিয়ে পরস্পরকে মুষ্টিযুদ্ধের মঞ্চে উঠিয়ে দিয়েছে মানুষ শয়তানগুলো। ইসলাম এসবের শিক্ষা কখনোই দেয় না, দেয়নি; বরং এমন অপার্থিব একটা সম্পর্ককে যারা সর্বদা বিতর্কিত করতে চেয়েছে, ইসলাম তাদের ঝেঁটিয়ে তাড়িয়েছে। নিজেদের গায়ে দুর্গন্ধ নিয়ে উলটো ওরাই ইসলাম নামক সুগন্ধি ফুলের দিকে আঙুল তোলার ধৃষ্টতা দেখায়। তাই সম্পূর্ণ লেখায় ‘ইসলাম বনাম মানুষ-শয়তান’ তুলনামূলক বিভিন্ন আলোচনার মাধ্যমে এই মানুষ-শয়তানগুলোর মুখোশ খুলে দিয়েছি।
মুখোশ খুলে দিতে গিয়ে কঠিন কিছু কথা বলেছি, কঠিন কিছু শব্দ ব্যবহার করেছি। হ্যাঁ, কথা ও শব্দগুলো কঠিন, তবে সত্য। সত্য তো একটু কঠিনই হয়, একটু তেঁতো হয়।
ইনিয়েবিনিয়ে কথা না বলে, ঘ্যানঘ্যান প্যানপ্যান না করে স্পষ্টভাবে সাদা কালোর পার্থক্যগুলো মানুষকে জানানো উচিত। বন্ধুরূপী শত্রুদের চেনানো উচিত, ওপরে সুগন্ধি মাখা অথচ ভেতরে পচন ধরা আত্মাগুলোকে মাটি চাপা দেওয়া উচিত। সুশ্রী আবরণে ঢাকা কুৎসিত চরিত্রগুলোকে উন্মোচন করা উচিত, চোরকে সাধু না বলে সাধুকে সাধু বলা উচিত।
কেউ চুরি করার পর তাকে ‘চোর’ বলে সম্বোধন করলে ব্যাপারটা তো এমন নয় যে, সে কখনোই আর সাধু হতে পারবে না। অভ্যাস বদলে মানুষের কাতারে এসে দাঁড়ালে দ্বিগুণ প্রশংসিত হবে—এক. খারাপ কাজ বাদ দেওয়ার জন্য, দুই ভালো কাজ শুরু করার জন্য। উপরন্তু, অন্ধকার থেকে আলোতে আসা আত্মাগুলো হবে পরবর্তীদের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অপরাধীর অপরাধকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হয় অপরাধীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে, অনুগামীদের সতর্ক করতে এবং সততার মর্যাদাকে আরও উচ্চে তুলে ধরতে। তাই আপাতত সাধুদের স্বার্থেই চোরকে ‘চোর’ বলে যেতে হচ্ছে। নয়তো আপনাকে ‘আগামীকাল’ ক্ষমা করবে না আর ‘আগামী-কুল’ ছি-ছি করে লজ্জা দেবে।
মৌনতা অবলম্বীরা এই যে চোরদের ছাড় দিয়ে চলেছে, এখন যদি তাদের দিকেই একটু বাঁকা দৃষ্টিতে তাকানো শুরু করি, তাহলে এর অর্থ দাঁড়ায় তারা নিজেরাও চৌর্যবৃত্তির সুবিধাভোগী কি না? না থাক, দর্শকের ভূমিকায় থাকাদের এবারের মতো প্রশ্নের মুখোমুখি করছি না। তবে হয়তো কোনো একদিন অন্য কোনো এক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তারা থাকবে, ইনশাআল্লাহ।
সে যাহোক,
সত্য নিয়ে এই যে একটা লুকোচুরি চলছে, ফলে দর্শকের ভূমিকায় থাকা মানুষগুলো সত্য শুনে অভ্যস্ত না হওয়ায়, সত্য শোনার যোগ্যতাটুকুও তারা হারিয়ে ফেলেছে। এতে করে চক্ষু উন্মোচনকারী সত্যগুলো শুনলে সেগুলোকে তাদের কাছে অস্বাভাবিক, অবাস্তব, অতিরঞ্জিত, আদিখ্যেতা, আশ্চর্যজনক সর্বোপরি অসম্ভব বলে মনে হয়। হ্যাঁ, সত্য বলতে যেমন যোগ্যতা থাকা চাই, সত্য শোনারও যোগ্যতা থাকা চাই। আর এই যোগ্যতাটার নাম হলো ‘সাহস’ ।
যেকোনো কাজের তাত্ত্বিক চর্চা এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা থাকলে সেই কাজের ওপর দক্ষতা বাড়ে। কিন্তু এটা খুব দুঃখজনক একটা সত্য কথা যে, সত্য বলার ও শোনার দক্ষতা থাকা তো দূরের কথা, সত্যের পাঠশালায় মিথ্যার মাকড়েরা বিশাল বিশাল জাল বুনে সুখের সংসার বেঁধেছে। আর মানুষ ভাবছে তারা এখনও মানুষই আছে। যেখানে সত্য নেই, সেখানে বিবেক নেই; যেখানে বিবেক নেই, সেখানে মনুষ্যত্ব নেই; আর তাই সেখানে মানুষও নেই ।
“কারিম শাওন”
নারীবাদি বনাম নারীবাঁদি বইটি ওয়াফিলাইফে প্রি অর্ডার চলছে তাই এখনি সংগ্রহ করুননারীবাদি বনাম নারীবাঁদি PDF Download Free চাহিয়া লেখককে নিরুৎসাহিত করবেন না এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন বই। তাই নারীবাদি বনাম নারীবাঁদি বইটি পিডিএফ ডাউনলোড এভেলেবেল নেই।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?