দ্য কিংডম অব আউটসাইডারস লেখক: সোহেল রানা ll bangla book review with upcoming pdf

নাম: দ্য কিংডম অব আউটসাইডারস

লেখক: সোহেল রানা ২

প্রকাশনী:- গার্ডিয়ান পাবলিকেশনস

ধরনঃ    হার্ডকভার।

ক্যাটাগরি :- ডিটেকটিভ, ইন্টেলিজেন্স ও সিক্রেট এজেন্সি।

ISBN।    9789848254707

প্রকাশকাল:-1st Published, 2020

Number of Pages 320

Country বাংলাদেশ

Language বাংলা।

রিভিউ______________________________

দীর্ঘ সফরে বের হয়েছিলেন নবি ইয়াকুব (আ)। মরূপ্রান্তেই দিলেন যাত্রা বিরতি। ক্লান্ত পথিক একটুখানি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়েছিলেন। স্বপ্নে আল্লাহ জানালেন, যে ভূমিতে এখন তার অবস্থান উত্তরাধিকারসূত্রে এই ভূমির মালিক হবে তার বংশধরেরা। সৃষ্টিকর্তার এই প্রতিশ্রুতির উপর ভিত্তি করেই এই ঘটনার প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর পরে মালিকানার দাবি নিয়ে ইহুদিরা এলো ‘প্রমিজল্যান্ড’ তথা জেরুজালেমে। তারপর পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইহুদিরা এসে জড়ো হতে লাগলো ফিলিস্তিনে। কিন্তু এতো মানুষের জায়গা হবে কোথায়! ফলশ্রুতিতে উচ্ছেদ করা হতে লাগলো ফিলিস্তিনিদের। 

‘আউটসাইডার’ ইহুদিরা আরবের বুকে গড়ে তুললো তাদের কিংডম। ইহুদিদের এই কিংডমের ইতিহাস, রাজনীতি, অর্থনীতি নিয়ে লেখক সোহেল রানা লিখেছেন তারা গবেষণাধর্মী বই “দ্য কিংডম অব আউটসাইডারস”। ইতিহাস বলে ইহুদিরা ব্যবিলনীয়, রোমানীয়, মিশরের ফারাও, খ্রিস্টান ক্রসেডারদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছিল। নির্যাতিত হয়েছে নাজিবাদী জার্মান এমনকি রাশিয়ার জার শাসকদের দ্বারাও। কিন্তু মুসলিমদের দ্বারা ইহুদিরা জাতিগতভাবে নির্যাতিত হয়েছে এমন কোন ইতিহাস পাওয়া যায় না। অথচ হাস্যকর উত্তরাধিকারের দাবীতে আরবের বুকেই চেপে বসলো ইহুদিরা। 

বাস্তুহারা ফিলিস্তিনিরা যে বিনা প্রতিবাদে তাদের জায়গা ছেড়ে দিয়েছিল তাও নয়। ছোট ছোট সহস্র সংঘর্ষ ছাড়াও চার চারটি বড় ধরনের (আবর- ইজরাইল) যুদ্ধ হয়। কিন্তু কখনো সন্মুখ সমরে, কখনো কূটনৈতিক কৌশলে হেরে যেতে থাকলো আরবরা। আজও এই অসমাপ্ত যুদ্ধ চলছে, এখনও ফিলিস্তিনিদের রক্তে লাল হচ্ছে তাদের জন্মভূমি। 

” দ্য কিংডম অব আউটসাইডারস” বইটিতে লেখক ইহুদিদের পূর্বপুরুষ ইয়াকুব আ. থেকে শুরু করে বনি ইসরাইলের ইতিহাস, বিভিন্ন সময়ে ইহুদিদের নির্যাতিত হবার এবং নির্যাতন করার ইতিহাস, সর্বোপরি বেলফোর ঘোষণার মধ্য দিয়ে ইহুদিবাদের উত্থানের ঐতিহাসিক- রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন। 

সব ধর্মের মানুষকেই যে জায়োনিস্ট বলা যায় সেটা নিয়েও সুন্দর আলোচনা আছে। চারটি আরব – ইজরাইল যুদ্ধের বিশ্লেষণী উপস্থাপন, ফিলিস্তিনের রাজনীতিতে হামাস -ফাতাহর অবস্থান, অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসেবে ইহুদিদের উত্থান, জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে গিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের উপর প্রভাব বিস্তারের কৌশল নিয়েও আছে তথ্যবহূল আলোচনা।

বিশ্বজুড়ে ইজরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ, আমান, শিনবেতের বিছিয়ে দেয়া জালে আটকে পড়ে কতো আরব বিশ্বাসঘাতকতা করছে নিজের দেশের সাথে, কতো জন হচ্ছে গুপ্তহত্যার শিকার, লোমহর্ষক সেইসব সত্য ঘটনাও উঠে এসেছে বইটিতে। “দ্য কিংডম অব আউটসাইডারস” বইয়ের আর্কষণীয় দিক এর উপস্থাপন ভঙ্গি ও তথ্যের সত্যতা। অত্যন্ত সহজ এবং প্রাঞ্জল ভাষায় ইহুদিবাদের ঐতিহাসিক-রাজনৈতিক- অর্থনৈতিক তিনটি দিক তুলে ধরেছেন লেখক। 

বর্ণনা ভঙ্গিতে নিয়ে এসেছেন ফিকশনের আবহ। বিশটি ভিন্ন অধ্যায়ে ইহুদিবাদের চুলচেরা বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন লেখক। সেই সাথে ফুটনোটে তথ্যসূত্র দিয়ে তথ্যের শুদ্ধতা নিশ্চিত করেছেন। সাদা নীলের প্রচ্ছদটাও ভালো লেগেছে। চোখে পড়েছে কিছু প্রিন্টিং মিসটেক। আশা করি দ্বিতীয় সংস্করণে সংশোধিত হবে এগুলো। লেখকের কিছু কলাম আগেও পড়েছি। এই বই পড়ে মনে হয়েছে উপস্থাপন দক্ষতায় সেগুলোকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। সব ধরনের পাঠকের কাছে উপভোগ্য হতে পারার মতো একটা বই।

লিখেছেন:- মরিয়াম মুন্নী

বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?