দশ লেখক দশ জীবন – লেখক : জহির উদ্দিন বাবর | Ten writers ten lives Author: Zahir Uddin Babar

দশ লেখক দশ জীবন – Dosh Lekhok Dosh Jibon 
লেখক : জহির উদ্দিন বাবর
প্রকাশনী : রাহনুমা প্রকাশনী
বিষয় : ইসলামী ব্যক্তিত্ব, সাহিত্য ও সাহিত্যিক
পৃষ্ঠা : 375, কভার : হার্ড কভার
আইএসবিএন : 9789849385922, ভাষা : বাংলা

Image
লেখার জন্য বিখ্যাত মনীষীদের 
                        অনেক প্রশংসা পেয়েছি……..
মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী আল-আযহারী
বয়স আশি ছুঁইছুঁই। বার্ধক্যের এই পর্যায়ে এসেও দুই বছরে লিখেছেন প্রায় ছয় হাজার পৃষ্ঠা! এই বয়সেও তিনি একজন সরব লেখক। ছয় দশকের বেশি সময় ধরে লিখে চলেছেন অনবরত। বাংলা ভাষায় ইসলামি ধারার সাহিত্যভান্ডার সমৃদ্ধ করতে যারা নিরলস কাজ করে চলেছেন, তাদের একজন তিনি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বড় বড় প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত। জানাশোনা, অভিজ্ঞতা এবং কাজের বিস্তৃতিতে সম্ভবত জীবিত লেখকদের মধ্যে তিনি শীর্ষে। গোটা জীবনটাই তিনি নিবেদন করেছেন লেখালেখির জন্য। লেখাই তার নেশা, পেশা এবং ইবাদত। বর্ণাঢ্য জীবনের নানা অধ্যায় নিয়ে কথা বলেছেন প্রবীণ আলেম লেখক মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী।
☑️[মার্চ ২০২০ লেখকের মিরপুরের বাসায় সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়; সঙ্গে ছিলেন হাসান আল মাহমুদ]

আপনার বয়স আশির কাছাকাছি। এই বয়সে সব মিলিয়ে কেমন আছেন?

আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তায়ালার লাখো শোকর। কারণ, আমার বয়সী অনেকেই এখন আর নেই। পিছনে ফিরলে কাফেলায় আর সঙ্গের লোক দেখি না! যাদেরকে নিয়ে পথচলা শুরু করেছিলাম, পিছনে তাকালে দেখি তারা কেউ আর নেই! প্রায় সবাই চলে গেছেন—দুই-একজন ছাড়া। এ জন্য একটু অসহায়ও বোধ করি। আমাদের যারা বুঝতে পারতেন, সেই লোকগুলো আর নেই! যারা মূল্যায়ন করতেন, তারা চলে গেছেন। যারা নতুন এসেছে, অনেকেই চেনে না। যার ফলে একটু অসহায়ত্ব বোধ করি।

আপনার জন্ম কত সালে?

আমার আব্বা লিখে গেছেন, যা দেখেছি, ১৩৪৯ বাংলার ১৫ জৈষ্ঠ্য, শুক্রবার সকাল আটটা। ১৯৪২ সালের মে মাসের ২৯ তারিখ ছিল সেটি।

আপনার পরিবারের সংক্ষিপ্ত পরিচয়টা বলবেন কি?

সিলেট শহর থেকে পাঁচ মাইল পশ্চিমে টুকেরবাজারে আমাদের বাড়ি। আমরা সিলেটের তালুকদার পরিবারের সন্তান। সিলেটে তালুকদার ও জমিদার একটু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের বাড়িটা একদম নদীর পাড়ে। আমার শৈশবে নদী বেশ প্রবহমান ছিল। অনেক সুন্দর একটি বাড়ি। সুরমা নদীর দীর্ঘ বাঁক এখানে এসে ঘুরেছে। আমাদের বাড়ির একাংশও নদীগর্ভে চলে গেছে। তবে আমাদের বাড়িটি রয়ে গেছে।

জমিদার আর তালুকদারের মধ্যে পার্থক্য হল— জমিদারদের প্রজা থাকত, তারা জমির খাজনা তুলে সরকারকে দিত। এ জন্য সরকারের সব জুলুমের অংশীদার। আর তালুকদারের ব্যাপারটা তা ছিল না। তাদের রায়ত ছিল না, তবে তারা সরকারকে সরাসরি খাজনা দিত।

হাওড়-বাঁওড়ে পূর্ণ সিলেট এলাকাটি মাছের জন্য বিখ্যাত। বড় বড় অনেক হাওড় এই জেলায় রয়েছে। এখানকার অধিবাসীদের বড় একটি অংশ মৎস্যজীবী। আমাদের লোকেরাও বড় বড় হাওড়ের লিজ ও জলমহাল নিয়ে ব্যবসা করত। তাই আমাদের তালুকদার পরিচয়টা হারিয়ে গেছে। আমরা নেহাৎ মৎস্যজীবী বলেই পরিচিত হয়ে অনেক ঝক্কি-ঝামেলা সয়ে গেছি। আমাদের কেউ আর সেই তালুকদার লেখে না। ১৯২৪ সালের একটি দলিলে আমার দাদার নামের সঙ্গে তালুকদার দেখি। এর আগে জানতাম না। যে, আমরা বংশে তালুকদার। আমার আব্বার ব্যবসা ছিল। তিনি ১৯৭১ সালে ৮৬ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। তার অনেক নৌকা ছিল। পরিবহনের জন্য নৌকা ভাড়া দিতেন। সে যুগে পাকা রাস্তাঘাট ছিল না বলে নৌকার বেশ গুরুত্ব ছিল।

শিশুকালের কোন গল্পটি আজও মনে পড়ে?

ছোটবেলা নানাবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছি। একদিন খেলা করছিলাম। এ সময় কোত্থেকে যেন এক ব্রাহ্মণ ঠাকুর আমাকে দেখে বলে ওঠে, ‘এই ছেলে, আরে বাপরে বাপ! এই ছেলের বাবা গভীর রাতে নদী পার হয়ে ওষুধ আনতে গিয়েছিল।’ আম্মা অন্দর থেকে ঠাকুরের কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। তিনি পরে আমাকে বলেছেন, ঘটনাটি সত্য।

আমার বয়স তখন দুই বছর। প্রচণ্ড জ্বর হয়েছিল। আমার আম্মা তার বাহুতে একাধিক দাগ দেখিয়ে বললেন, ‘এগুলো তোমার কামড়ের দাগ। আমি বললাম, ‘আমাকে এত কামড় দিতে দিলেন কেন?’ বললেন, ‘আমার ছেলে যদি কামড় দিয়ে একটু শান্তি পায়, সেটাই ছিল আমার জন্য শান্তি!’ কচি দাঁতের কামড়ে আম্মার বাহু থেকে ঝরঝর করে রক্ত বয়ে গিয়েছিল। আব্বা ছিলেন জ্ঞানী লোক। পুঁথিশাস্ত্রের পণ্ডিত। ওই সময় আশপাশে কোনো ডাক্তার ছিল না। গভীর রাতে বর্ষায় উন্মত্তা সুরমা নদী এক জেলে-নৌকার সাহায্যে পার হয়ে গেলেন ডাক্তারের খোঁজে! কিন্তু তখন রাত আড়াইটা তিনটা। মানুষজন নেই। ডাক্তারের বাড়ি চেনেন না। পরে তিনি ওই গ্রামের মসজিদে গিয়ে আজান দেন। সেই আজান শুনে এক মুরব্বি ছুটে আসেন। তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘আজানের সময় কি হয়েছে যে, আপনি আজান দিলেন?’ আব্বা বললেন,

💕আরো পড়তে অথবা দেখতে :- অনুগ্রহ করে Hardcopy ক্রয় করুন।
We Respect Every Author Hardwork – boipaw.com™
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?