গডফাদার : আমিনুল ইসলাম | God Father By Aminul Islam

⊙ বইয়ের নামঃ গডফাদার
⊙ লেখকঃ আমিনুল ইসলাম
⊙ জনরাঃ ক্রইম থ্রিলার
⊙ প্রকাশনীঃ সতীর্থ প্রকাশনা
⊙ প্রকাশকালঃ ২০২১
⊙ প্রচ্ছদঃ আদনান আহমেদ রিজন
⊙ সম্পাদকঃ তাহমিদ রহমান
⊙ পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৭৮
⊙ নির্ধারিত মূল্যঃ ২৮০৳

গডফাদার  : আমিনুল ইসলাম | God Father By Aminul Islam
𝕆𝕙 𝕡𝕒𝕣𝕥𝕚𝕤𝕒𝕟 𝕔𝕒𝕣𝕣𝕪 𝕞𝕖 𝕒𝕨𝕒𝕪
𝕆𝕙 𝔾𝕠𝕠𝕕𝕓𝕪𝕖 𝕓𝕖𝕒𝕦𝕥𝕚𝕗𝕦𝕝, 𝔾𝕠𝕠𝕕𝕓𝕪𝕖 𝕓𝕖𝕒𝕦𝕥𝕚𝕗𝕦𝕝, 𝔾𝕠𝕠𝕕𝕓𝕪𝕖 𝕓𝕖𝕒𝕦𝕥𝕚𝕗𝕦𝕝 !
𝔹𝕪𝕖 ! 𝔹𝕪𝕖 !
𝕆𝕙 𝕡𝕒𝕣𝕥𝕚𝕤𝕒𝕟 𝕔𝕒𝕣𝕣𝕪 𝕞𝕖 𝕒𝕨𝕒𝕪
𝔹𝕖𝕔𝕒𝕦𝕤𝕖 𝕀 𝕗𝕖𝕖𝕝 𝕕𝕖𝕒𝕥𝕙 𝕒𝕡𝕡𝕣𝕠𝕒𝕔𝕙𝕚𝕟𝕘……..

~ বই থেকে ।

‘মাফিয়া’ সম্পর্কে আমরা কতটুকু অবগত আছি বা কতটুকু জানি। আমরা অনেকেই হয়ত তাদের সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণাই রাখি, আবার অনেকে একটু কম। চলুন বইয়ের মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে যেনে নিই মাফিয়া কী বা কাকে বলে, এদের উৎপত্তি স্থল এবং এদের কাজ সম্পর্কে।
মাফিয়া শব্দটির উৎপত্তি সিসিলিতে। অনেকের মতে এটি আরবি উৎসের শব্দ। সিসিলি এক সময় মুসলিম শাসিত আমিরাত বা রাজ্য ছিল। তাই মাফিয়া যে আরবি উৎসের শব্দ সেটি সরাসরি প্রত্যাখান করা যায় না। সিসিলির এপানি এবং মারসালা অঞ্চলের কিছু গুহা বা গোপন আস্তানায় সরকার বিরোধী, বিদ্রোহী, অবিভাসী, অপরাধী প্রভৃতি লুকিয়ে থাকত আরব শাসকদের নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ সেখানে অভিযান চালাত। তাই অভিযান
কারী মুয়াফা থেকে স্হানগুলোর নাম হয়ে যায় মাফিয়ে। বলা হয় আরবি মুয়াফা থেকে উদ্ভূত মাফিয়ে থেকে মাফিয়া।
আর একটি মতে, সিসিলীয় শব্দ মাফয়ুস্থ বা মাফিয়ে কিংবা ইতালীয় মাফিয়োসো হতে মাফিয়া শব্দের উদ্ভব। মাফিয়ুস্থ ও মাফিয়োসো শব্দের অর্থ সদম্ভে হাঁটা, বাহাদুরি, সাহসিকতা,নির্ভীকতা প্রভৃতি। উনিশ শতকে মাফিয়ুস্থ শব্দের অর্থ ছিল মস্তান, উদ্ধত, নির্ভীক, উদ্যমী এবং গর্বিত।
মাফিয়ার সংঙ্গাঃ পরস্পর নির্ভরশীল কিন্তু নিবিড় সম্পর্কহীন অথচ পরস্পর যোগাযোগবদ্ধ অভিন্ন সাংগাঠনিক কাঠামো এবং আচরণবিধি পালনকারী অপরাধী দলসমূহের জোটকে মাফিয়া বলে।
মাফিয়া শব্দের সঙ্গে অপরাধীর সংশ্লিষ্টতা: ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে “ mufiusi di la Vicaria ” ( “ ভিকারিয়ার মাফিয়োজি “) শিরোনামের নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়ার পর মাফিয়া শব্দটি অপরাধ বা অপরাধীর গোপন সংগঠনের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য হয়ে যায়। ১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে পালের্মোর প্রিফেক্ট ফিলিপ্পো আন্তেনিও গুয়ালতেরিও – এর একটি দাপ্তরিক প্রতিবেদনে মাফিয়া শব্দটির প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাবহার হয়। এর পর থেকে শব্দটি রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবহার হতে থাকে।
মাফিয়ারা বিভিন্ন অপরাধ মূলক কাজে জড়িয়ে থাকে। এর মধ্যে মাদক, অস্ত্র, অবৈধ পন্য প্রভৃতিসহ যেকোনো চোরাচালানে সহায়তা, বিবাদে মধ্যস্থতা ও বিপদে কাঙ্খিত সহায়তা প্রদান এবং অবৈধ অর্থ লেনদেন বা চুক্তির সমন্বয় আর দেখভাল মাফিয়াদের প্রধান কাজ। মাফিয়া সদস্যরা সার্বভৌম সংস্থার সদস্য হিসেবে নিজেদের সম্ভ্রান্ত ও সম্মানিত বলে দাবি করে।

🔹ফ্লাপ হতেঃ

খুব সাধারণ একটা ছেলে; নাম মাসুদ কবির। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি জড়িয়ে পড়ে অন্ধকার জগতের সাথে। যার হাতের ইশারায় দেশ জুড়ে ঘটতে শুরু করে একের পর এক হঠকারী ঘটনা।
সেই সময়ে দেশে ফিরে আসে নব্বই দশকের আরেক মাফিয়া ত্রাস দাউদ খলিল;
যাকে মাফিয়া জগতে চেনে ‘দ্যা গডফাদার কিলার’ নামে। জেল থেকে বের হওয়া অর্ক, মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা আব্রাহাম রাতুল; দুজনেরই লক্ষ হয়ে দাঁড়ায় অদৃশ্য শক্তির উৎসকে খুঁজে বের করা। যার কারণে তছনছ হয়ে গেছে অর্কের জীবন, যে কিনা পুরো দেশে বিছিয়ে রেখেছে অদৃশ্য এক জাল।
এই গল্প অন্ধকার জগতের গল্প, যে গল্পের নির্মাতাই বিধ্বংসী। যেখানে প্রতিটা অধ্যায়ে রয়েছে পরাজিত মানুষের গল্প। যারা আলোর দেখা পেয়েও সেই আলো কখনোই স্পর্শ করতে পারে না।
বাটারফ্লাই ইফেক্ট এর পরের গল্প ‘গডফাদার’।

🔹পাঠ – প্রতিক্রিয়াঃ

গডফাদার সিরিজের দ্বিতীয় বই “গডফাদার”। বইটি
বাটারফ্লাই ইফেক্টের সিকুয়েল। বেশ কিছুদিন আগে শেষ করেছি বইটা। ২৭৮ পৃষ্ঠা এবং পচাত্তরটি অধ্যায়ের সমন্বয়ে নির্মিত বেশ মোটাসোটা একটি বই। সিরিজের প্রথম বই বাটারফ্লাই ইফেক্ট পড়ার পর নিজের ইন্টারেস্ট আর ধরে রাখতে পারিনি। খুব দ্রুতই পড়ে ফেললাম সিরিজের সিকুয়েল “গডফাদার”। বইটি লেখা হয়েছে মূলত মাফিয়া নিয়ে, অন্ধকার জগতের বাসিন্দাদের নিয়ে। সম্পূর্ণ বইটি শেষ করার পর তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলে মনে মনে বলতে পেরেছি ; “আলহামদুলিল্লাহ, অবশেষে বেশ ভালোভাবেই সম্পূর্ণটা পড়ে শেষ করেছি।”
গডফাদার সিরিজের সবচেয়ে ইউনিক দিক হচ্ছে সিরিজের প্লট। সিরিজটা সম্পন্ন করতে লেখকের যে কতটুকু পরিশ্রম হয়েছে, তা সিরিজটা সম্পন্ন করেই বুঝতে পারলাম।
গডফাদার বইটিকে বলা যায় এক উত্তেজনাপূর্ণ থ্রিলার। বইটির শুরু থেকেই গল্প এগিয়ে গেছে রেসিং কারের গতিতে। সম্পূর্ণ বই জুড়ে রয়েছে নানা ঘটনার সমাহার। বিশ্বাসঘাতকতা, বন্ধুত্ব, অসাধারণ টুইস্ট, অ্যাকশন, রাজনৈতিক করাল গ্রাস, ভাঙ্গা গড়ার গল্প, নাটকীয়তা, রোম্যান্স, সুখ, দুঃখ সহ আরো অনেক কিছুই রয়েছে বইটিতে।
বইটি যদিও ক্রাইম থ্রিলার নিয়ে লেখা হয়েছে। তবুও লেখক গল্পের ভিতরে দিয়েছেন রোমান্টিকতার ছোঁয়া। অন্ধকার জগতের ব্যাস্ত গল্পের মধ্যে সামান্য রোমান্টিকতা বেশ ভালোই উপভোগ করেছি আমি।
বইয়ের ভালো খারাপ দুটো দিক থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তেমনি গডফাদার বইটিও। তবে এই বইয়ের ভালো খারাপের তুলনা করতে গেলে বইয়ের ৮৫% ই ভালো বলব আমি।
পুরো গডফাদার সিরিজ জুড়ে লেখকের একটি দিক আমার কাছে একটু নরমাল মনে হয়েছে। সেটা হচ্ছে তাড়াহুড়ো। যেটা বাটারফ্লাই ইফেক্টে একটু বেশি, এখানে একটু কম।
বইটিতে সিকুয়েন্স চেঞ্জ হয়েছে খুব দ্রুত। এক টাইমলাইন থেকে অন্য টাইমলাইনে খুব দ্রুত যাওয়ায় ; পড়ার সময় সামান্য বেগ পেতে হয়েছিল।
তাছাড়া বইয়ের একশন সিনগুলো তুলে ধরা হয়ে একটু তাড়াহুড়োর মধ্য দিয়ে।
বিষয়গুলো আর একটু ডিটেইলসে লিখলে খারাপ হতো না। আশা করি পরবর্তী এডিশনে লেখক তার তাড়াহুড়োর যায়গাগুলো খেয়াল করবেন।

🔹চরিত্রায়নঃ

চরিত্র বিল্ড আপে সিরিজের প্রথম বই বাটারফ্লাই ইফেক্টে একটু ঝামেলা ছিল। তবে লেখক গডফাদার বইয়ে সব চরিত্র গুলো বিল্ড আপ আরো জোরদার করেছেন।
গডফাদার বইয়ের চরিত্র গঠন পদ্ধতি ছিল মনমতো। প্রধান চরিত্রে ভূমিকা রেখেছেন মাসুদ কবির। মূল চরিত্র হিসেবে খুব ভালো ভাবে পাঠকদের সামনে তুলে ধরতে পেরেছেন লেখক। বইটি পড়ার পর এই চরিত্রটিকে ভালো লাগবে না এমন ব্যাক্তি হয়ত একজনকেও খুজে পাওয়া যাবে না। আর ভালো লাগার মূল কারণই হচ্ছে লেখকের চরিত্র বিল্ড আপের সুন্দর পদ্ধতি। এত সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছে যেন পাঠক নিজেই মূল চরিত্রের ভিতরে ঢুকে যায়। যেটা আমার ক্ষেত্রে হয়েছিল।
চরিত্র গঠনে লেখকের আর একটি দক্ষতা ছিল দেখার মতো। সেটা হচ্ছে গল্পের ভিলেনকে গল্পের মূল চরিত্র বানিয়ে দেয়া। অর্থাৎ গল্পে মাসুদ কবির ছিলেন একজন মাফিয়া এবং তিনিই মূল চরিত্র।
প্রধান চরিত্র মাসুদ কবিরের পাশাপাশি আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিল ; যার নাম দাউদ খলিল। যিনি গল্পের মধ্যে ‘দ্যা গডফাদার কিলার’ নামে পরিচিত।
এছাড়া রুদ্র,অর্ক, রাতুল,মৃদুলা,সোবহান তালুকদার,
রায়হান, জমজ ভাই দিয়াগো ও কার্লস সহ আরো বেশ কিছু চরিত্রের দেখা পাওয়া যায় পুরো বইটি জুড়ে। এই চরিত্রগুলোকেও খুব ভালোভাবেই বিল্ড আপ করতে পেরেছেন লেখক।

🔹গল্প বুনট » লেখন–শৈলী » বর্ণনাভঙ্গিঃ

একজন নবীন লেখক হিসেবে লেখকের লেখন শৈলীর প্রশংসা করতেই হয়। সহজ ও সুন্দর শব্দ চয়নে পাঠকদের আকৃষ্ট করে নিয়েছেন তিনি তার লেখনীর মাধ্যমে।
গল্প বুননে লেখক তার সুনিপুনতার পরিচয় রেখেছেন। একটা ঘটনার পর অন্য একটি ঘটনা নিদারুণ ভাবে সাজিয়ে গেছেন শেষ অবধি।
বর্ণনাভঙ্গি নিখুঁত বলবনা তবে বেশ শক্তপোক্ত। লেখকের সুন্দর বর্ণনাভঙ্গির মাধ্যমে গল্পটা দৃশ্যায়ন করা সম্ভব হয়েছে। বইয়ের আসল স্বাধ পেয়েছি তার বর্ণনাভঙ্গির মাধ্যমে। তবে কিছু যায়গায় বর্ণনাতে সামান্য ঘাটতি লক্ষ করা গেলেও লেখকের সাবলীল বর্ণনার কাছে তা নিতান্তই তুচ্ছ।

🔹লেখক নিয়ে কিছু কথাঃ

লেখক আমিনুল ইসলামের নতুন করে পরিচয় দেয়ার মতো কিছুই নেই। তার লেখার সাথে আমার পরিচয় হয় গডফাদার সিরিজের প্রথম বই বাটারফ্লাই ইফেক্টের মাধ্যমে। গডফাদার সিরিজ পড়ে শেষ করার পর আমার পছন্দের লেখকের তালিকায় তার নামটাও যোগ করে রেখেছি। বলা চলে তার লেখার ভক্ত হয়ে গেছি এখন আমি। আগামীতে লেখক থেকে আরও বেশি আশা থাকবে।আশা করি তিনি নিরাশ করবেন না। গডফাদার সিরিজের জন্য তাকে বার বার ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

🔹বানান ও সম্পাদনাঃ

সম্পাদক এবং বানান সংশোধক তাহমিদ রহমান ও আনন্দ অকৃষ্য বইটিকে নির্ভূলভাবে পাঠকদের কাছে তুলে ধরতে চেষ্টার কোনো কমতি রাখেনি। যা বইটি সম্পূর্ণ পড়লেই বুঝা যায়। তাই বলে একদম নির্ভূল ছিল তা না। সম্পাদনায় সামান্য ত্রুটি লক্ষ করা গেলেও বানানে বেশ কিছু ভূল চোখে পড়ার মতো। টাইপিং মিস্টেক,একই শব্দ বার বার একসঙ্গে ব্যবহার,আদালা দুটি শব্দ একসঙ্গে মিলে যাওয়ার মতো ভূল গুলোও লক্ষের বাইরে নয়। সব ভূল তুলে ধরতে না পারলেও কিছু ভূল আমি তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
⚈ পৃষ্ঠা :৩৫ –“ ‘এখনা’ থেকে মুক্তি পাওয়া দরকার।” বাক্য গঠনে এখনা স্থানে এখান হবে।
⚈ পৃষ্ঠা :৩৮ – “ কামনার দৃষ্টিতে মানুষকে তাকিয়ে থাকতে ‘দেখ’ সে। “বাক্য গঠনে দেখ স্থানে দেখে হবে।
⚈ পৃষ্ঠা ৮০ – “ আগে আগুন দিয়ে ‘যায়া’ যাক। এখানে যায়া স্থানে যাওয়া হবে।
⚈ পৃষ্ঠা ৮২ – ‘ঘটানাটা’ স্থানে ঘটনাটা হবে।
⚈ পৃষ্ঠা ১০২ – ‘ দোকানরকে’ স্থানে দোকানদারকে হবে।
⚈ পৃষ্ঠা ১৪২ – ‘সবকেছু’ স্থানে সবকিছু হবে।
⚈ পৃষ্ঠা ১৭৩ – “একমাত্র এই কাজটাই ‘করলমাসুদ’।” এখানে দুটি শব্দ একসাথে ব্যবহার হয়েছে।
⚈ পৃষ্ঠা ২৭৫ – “ ‘কিন্তু কিন্তু’ আমি নিজেকে মারতে পারব।” এখানে একই শব্দ দুইবার ব্যবহৃত হয়েছে।

🔹অবসানঃ

গডফাদার সিরিজের এখন পর্যন্ত প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা দুটি। লেখক আরো কাজ করতে চেয়েছিলেন সিরিজটির উপর। কিন্তু কিছুদিন আগে লেখকের এক ঘোষণার মাধ্যমে যানা যায় কোনো এক কারণে তিনি সিরিজটিকে আর বাড়াতে পারবেন না। তাই দ্বিতীয় পার্টেই সিরিজের অবসান ঘটে। এর ফলে গডফাদার বইটির শেষটাও ঘটে একটু ভিন্ন ভাবে।
গডফাদার সিরিজের শেষ বই গডফাদারে যদিও লেখক খুব সুন্দর একটা ইতি টেনে দিয়েছেন। তবুও কেন যেন মনে হয় বইয়ের শেষটা এখনো অপূর্ণই রয়েছে।

🔹প্রোডাকশনঃ

সতীর্থের প্রোডাকশন নিয়ে কোনে কথা হবে না। বরাবরের মতোই দারুণ কাজ করেছে গডফাদার বইটিতেও। ক্রিম কালারের পৃষ্ঠা, হার্ডকভার, শক্তপোক্ত বাঁধাইয়ের অসাধারণ মেলবন্ধনে বইটি নির্মিত৷ এত সুন্দর মলাট, পৃষ্ঠা বাঁধাইয়ের কারণে বইটি ধরেও যেমন ভালো লেগেছে তেমনি পড়েও। সতীর্থের জন্য শুভকামনা রইল।

🔹প্রচ্ছদঃ

প্রচ্ছদ এর কথা বলতে গেলে এককথায় বলব অসাধারণ। কালার কম্বিনেশন জোস লেগেছে। সাদা,কালো এবং নীলের মাঝে ফুটে উঠেছে দুই গডফাদারের প্রতিচ্ছবি। নামলিপির প্যাটার্নও ভালো লাগার মতো । নামলিপিকে একটা হাত কিছু সরঞ্জামের মাধ্যমে আটকে রেখেছে। সব মিলিয়ে প্রচ্ছদটা দৃষ্টি কেড়ে নেয়ার মতো।
বইটির প্রচ্ছদ শিল্পী আদনান আহমেদ রিজন ভাই। তার প্রতিটা প্রচ্ছদ আমার মন কেড়ে নেয়। তেমনি এটিও। ভাইয়ের জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল, তিনি যেন এমন সুন্দর সুন্দর কাজ সবসময় চালিয়ে যেতে পারেন।

🔹খুচরা আলাপঃ

আমি বাটারফ্লাই ইফেক্টের রিভিউয়ে বলেছিলাম বইটির প্লট সাধারণ কোনো মুভি বা বইয়ের গল্পকেও হার মানিয়ে দেয়ার মতো। এখন সম্পূর্ণ গডফাদার সিরিজটা পড়েও ওই একই কথা বলতে হচ্ছে আমাকে।
যদি কেউ ক্রাইম থ্রিলার জাতীয় জনরার বই পড়তে চান। যেখানে রয়েছে অসাধারণ সব অ্যাকশন, রয়েছে চমৎকার কিছু টুইস্ট, রয়েছে চরিত্রের গভীরতা। নিঃসন্দেহে বইটি তাকে আমি পড়তে বলব।
একটা কথা বলে নেয়া ভালো, বইটি কিন্তু শুধুমাত্র প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য। কারণ বইয়ে কয়েক জায়গায় লেখক কিছু অ্যাডাল্ট সিনের বর্ণনা এবং অ্যাডাল্ট কথাবার্তা ব্যবহার করেছেন। অবশ্য এই অ্যাডাল্ট কথাগুলো লেখক এমন এমন পজিশনে এমন সব চরিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন, যার ফলে বইটি হয়ে উঠেছে আরো ইন্টারেস্টিং।
বইটির আর একটি ইন্টারেস্টিং পয়েন্ট হচ্ছে বইয়ে ইংরেজি ভাষার ব্যবহার। প্রায় প্রতিটা পাতায় লেখক ইংরেজি ভাষার ব্যাবহার করে গেছেন। যা বইটি পড়ার সময় বই পড়ার উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল।
সতর্কীকরণ
➣ এই বইয়ে উল্লেখিত সকল ঘটনা ও বর্ণনা সম্পূর্ণরূপে কাল্পনিক। বাস্তবতার সাথে মিল খুঁজে পেলে দায় কোনো ভাবেই লেখকের নয়।
➣ গডফাদার সিরিজের প্রথম বই ‘বাটারফ্লাই ইফেক্ট’ পড়ার পর এই বইটি পড়ার অনুরোধ রইল। নতুবা এই বইয়ের কিছু অংশ খাপছাড়া বলে মনে হতে পারে।
বাটারফ্লাই ইফেক্ট বইয়ের রিভিউ লিংক আমি কমেন্ট দিয়ে দিব। চাইলে পড়ে নিতে পারেন।
🔹পার্সোনাল রেটিংঃ ৮.৫/১০
বন্ধুত্ব হোক বইয়ের সাথে…..
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?