খালিদ বিন ওয়ালিদ। একটি নাম। একটি ইতিহাস। ইসলামী ইতিহাসের আকাশে উজ্জ্বল অনন্য এক নক্ষত্র। যার বীরত্বে অভিভূত হয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ‘সাইফুল্লাহিল মাসলুল’ (তথা আল্লাহর উন্মুক্ত তরবারি) উপাধিতে ভূষিত করেছেন। এই মহান বীর সেনানী সারা জীবনে ছোট বড় প্রায় শতাধিক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, সম্মুখে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অনেক যুদ্ধে, কিন্তু তিনি একটি যুদ্ধেও পরাজিত হননি।
তিনি ছিলেন অপরাজেয়, অপ্রতিরোধ্য, সীসাঢালা প্রাচীরের সমার্থক। সামরিক নেতৃত্বের গুণাবলির সমাবেশ ঘটেছিল তার জীবনের সর্বক্ষেত্রে। দোর্দণ্ড প্রতাপ, প্রচন্ড সাহসিকতা, উপস্থিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা, তীক্ষ্ণ মেধা ও ক্ষিপ্রতা এবং শত্রুর ওপর আকস্মিক ও তীব্র আঘাত হানতে তিনি ছিলেন তুলনারহিত ব্যক্তিত্ব। তাঁর নেতৃত্বে মুসলিম বীর যোদ্ধারা ইসলামের আহ্বান ও আবেদন ছড়িয়ে দিতে, মাজলুমদের সাহায্য করতে এবং জালিমদের উদ্ধত হাত ভেঙে দিতে ছুটে গিয়েছেন পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। তাঁদের তরবারির ঝলকানিতে কুপোকাত হতো কাফিরদের মসনদ। রোম, পারস্য ও বাইজান্টাইনের বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনীর বহর অসহায় পরাজয়ে নাস্তানাবুদ হয়েছে খালিদ বিন ওয়ালিদের নেতৃত্বাধীন গুটিকতক মুজাহিদের সামনে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইনতিকালের অব্যবহিত পরেই পুরো মুসলিম বিশ্বে ধর্মত্যাগের হিড়িক পড়ে।
ইসলামের ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় বিপর্যয়ের কালো মেঘ। নবুয়তের দাবিদার মিথ্যাবাদী মুসাইলামার শক্তিশালী বাহিনীকে পরাজিত করে ইসলামের কালেমা খচিত পতাকা সমুন্নত রাখতে অতুলনীয় ভূমিকা পালন করেছিলেন এই সমর-নায়ক।
এই মহান বীর তথা খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদি.-এর পূর্ণাঙ্গ জীবনী, বিশেষ করে তার সমর-জীবনের বিস্তারিত বিবরণ উঠে এসেছে ‘সাইফুল্লাহিল মাসলুল;খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ রাদি.’ নামক গ্রন্থটিতে। সাথে সাথে গ্রন্থটিতে প্রাসঙ্গিকভাবে উঠে এসেছে খালিদ রাদি. এর সমসাময়িক আমর ইবনুল আস, আবু উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ, মুসান্না ইবনে হারেসা রাদি. সহ আরো কয়েকজন মুসলিম বীর সেনাপতির সংক্ষিপ্ত জীবনী। বইটি আপনাকে নিয়ে যাবে ইসলামী ইতিহাসের বিজয়গাথার স্বর্ণীল দিনে। তাপিত হৃদয়ে অনুভব হবে স্বশরীরে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন উত্তাল রণাঙ্গনে। আরবি অশ্বের ক্ষুরের আঘাতে উত্তপ্ত ধূলিকণায় আচ্ছাদিত হচ্ছে কাফের শিবির। সুতরাং আল্লাহর উন্মুক্ত তরবারির বিস্তারিত জীবনকথায় আপনাকে স্বাগতম।
#ইসলামী ইতিহাস #বই খালিদ বিন ওয়ালিদ