অপেক্ষা পিডিএফ ভার্সন – লেখক হুমায়ূন আহমেদ
মৃত মানুষদের জন্যে আমরা অপেক্ষা করি না!
আমাদের সমস্ত অপেক্ষা জীবিতদের জন্যে! বইটা পড়ার সময় অসম্ভব সুন্দর এক বিষাদ চেপে বসে মনের মধ্যে।
সুপ্রভা যে সত্যি সত্যি ছাদ থেকে লাফ দিয়ে মারা যায় সেটা আমি বই টা পড়া শুরু করার আগে থেকেই জানতাম! কিন্তু তারপর ও সেই মুহুর্ত টায় চোখের পানি আটকে রাখা সম্ভব হয় নি!
সুপ্রভা চলে যাওর পর এত সুন্দর উপন্যাস টাও আর ভালো লাগছিল না!প্রচুর রাগ হচ্ছিল সুরাইয়ার উপর!
যেদিন হঠাৎ করেই হাসিনুজ্জামান নিখোঁজ হয়ে যায় সেদিন থেকেই শুরু হয় অপেক্ষা! গর্ভবতী সুরাইয়া তাঁর ছেলে ইমনকে নিয়ে স্বামীকে ফিরে পাবার অপেক্ষায় রত হন! তারপর পৃথিবীতে আসে ছোট্ট সুপ্রভা।
দীর্ঘদিন স্বামীকে ফিরে না পেয়ে সে গিয়ে তাঁর বড় ভাই জামিলুর এর বাসায় গিয়ে ওঠে। কিন্তু তার স্বামী যে একদিন ফিরবেই চিন্তা মাথা থেকে দূর করতে পারেন নাস।
সবাইৎসবার জন্য অপেক্ষা করে। কিন্তু মৃত মানুষের জন্য কি কেউ অপেক্ষা করে? মৃত মানুষের জন্যে আমারা অপেক্ষা করি না। আমাদের সমস্ত অপেক্ষা জীবিতদের জন্যে। এই চরম সত্যটি না জেনেই ছোট্ট সুপ্রভা পৃথিবী থেকে বিদায় নিল!
মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অপেক্ষা ব্যাপারটি খুব প্রয়োজন। কিন্তু সবাই কি অপেক্ষা করতে পারে?
শ্রেষ্ঠমানুষের জীবন কি চক্রের মত? যেই চক্রের শুরু নেই,শেষ নেই। রহস্যময় চক্রের ভেতর এই জীবন ঘুরপাক খেতে থাকে? চক্র ঘুরছে।
এই চক্রের ভেতর ঘুরপাক খেতে খেতে অপেক্ষা করে কেউ কেউ। সকলেই কি করে? কীসের এতো অপেক্ষা?
টভালোবাসতে সবাই পারে কিন্তু অপেক্ষা করে জীবন কাটাতে কত জনে পারে?