১৭টা কারণে তোমায় ভালোবাসি

এ বছর দুটো রোমান্টিক ঘরানায় লেখা উপন্যাস আমার মনে দাগ কাটতে পেরেছে তার মধ্যে এটা একটা। 

“১৭টা কারণে তোমায় ভালোবাসি” উপন্যাসটা রোমান্টিক ঘরানায় লিখতে গিয়ে আমাদের বাস্তবতার কথা মনে করিয়ে দেয়। মনে করিয়ে দেয় এমন এক সমাজের কথা যেখানে উল্লিখিত উপন্যাসের প্রতিটি অক্ষরও অশুদ্ধ হওয়ার কথা আমি ভাবতে পারি না। আমার মনে হয় এর পরতে পরতে লেখা প্রতিটি কথা সত্য হওয়ার আমূল সম্ভাবনা সবসময় রয়ে যাবে। 
যে কোনো ধরণের আন্দোলনের আড়ালে কি সবসময় মহৎ উদ্দেশ্য থাকে? সবসময়ই কি আমরা যাদের চোখের সামনে দেখে অনুপ্রাণিত হই তারা সত্যিই ভালো হয়? সত্যিই অনুপ্রেরণার যোগ্য হয়?
একটু করে চোখ ঘোরালেই বুঝতে পারবেন, বর্তমান সমাজে বেশিরভাগ মানুষ আসলে মহৎ হতে গিয়ে কেবল মুখোশ পড়ে আছে। দেখবেন কীভাবে একটা টপিক ধরে কিছু মানুষ নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য কতটা নিচে নামতে পারে। 
আপনারা যদি আরো সতর্ক দৃষ্টিতে দেখেন, তখন আরো কিছু অপ্রিয় সত্য বের হবে। আপনারা বুঝবেন বর্তমান সমাজে প্রত্যেকটা ইন্ডাস্ট্রি কতটা জঘন্য মানসিকতার লোক দ্বারা ভরে গেছে। যদিও সেটা ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আঁচ করতে পারবেন না। 
যেমনটা কেউ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ পড়লেই বুঝতে পারবেন না বিভীষণ আদতেও খারাপ ছিল নাকি ভালো! 
এই যে গল্পের আড়ালেও গল্প থাকে, ঘটনার পেছনেও রচিত হয় বিভিন্ন ঘটনা, সেসব লেখক রোমান্টিক এক উপন্যাস লিখতে গিয়ে যেভাবে তুলে ধরেছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। 
কিছু ক্ষেত্রে আইডোলিয়োজির ধাক্কা না খেলে হয়তো আমি এই উপন্যাস বারংবার পড়তাম। আমি পড়তাম, কেন নীহারিকা হান্নান সতেরোটি কারণে রূপমকে ভালোবেসেছিল। এই কাহিনী আমি বার বার পড়তে রাজি। 
সত্যিই কি তবে অনেক দারুণ উপন্যাস এটি? সত্য বলতে, এই উপন্যাসকে আমি একেবারেই পারফেক্ট বলছি না। ভুল আছে। প্রত্যেক অধ্যায়ের শুরুতে নীহারিকার অস্তিত্বের টানাপোড়েনের যে অবস্থা আমরা দেখতে পাই, তা তিন চার অধ্যায়েই প্রতিষ্টিত হওয়ার কথা। সাত আট অধ্যায় পর্যন্ত একিভাবে প্রত্যেকটি অধ্যায়ের সূচনা করা কিঞ্চিৎ বিরক্তি ঘটায় বটে। 
এর বাইরে সত্যি বলতে চরিত্রগুলোকে নিয়ে আমার অনেক কিছু বলার থাকলেও বলতে পারছি না। এর গল্প যেভাবে চরিত্রগুলোকে প্রতিষ্ঠিত করেছে, এরপর আমি শুধু এদেরকে নিয়ে ভাবনা ছাড়া আর কিছুই করতে পারব না। 
আমি গল্পটা আবার পড়তে চাই। আমি মনে মনে চাই, নীহারিকা আর রূপমের একটা চমৎকার উপসংহার ঘটুক। এমন উপসংহার যাতে আমি তৃপ্তি ভরে ঘুমোতে পারব, কোনো এক কালে আমিও লিখতে পারব কারো জন্য, ‘১৭টা কারণে তোমায় ভালোবাসি’। 
(আরো সংযুক্ত – এটার কথা উল্লেখ না করলে ভুল করা হবে। প্রুফ রিডার হিসেবে যাবেদ খান আবু বকর দারুণ কাজ করেছে। তার উত্তোরত্তর সাফল্য কামনা করছি।)
রিভিউ ক্রেডিট : Jewel Ul Alom
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?