“প্রত্যেক লেখকই চোর।”
হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। প্রত্যেক লেখকই চোর। আর এটা আমার বক্তব্য না। সরাসরি না হলেও আকার ইঙ্গিতে এই বক্তব্যটি উপস্থাপন করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন জনপ্রিয় লেখক অস্টিন ক্লেওন।
যার ভাষ্যমতে, পৃথিবীতে নতুন বলে কিছু নেই। সব কাজের জন্ম অনেক আগেই হয়েছে। শিল্প সাহিত্যের বেলাতেও তা ব্যতিক্রম নয়। আমরা শুধু বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করছি মাত্র। একাধিক ব্যক্তির চিন্তাধারা, তাদের পদাঙ্ক, তাদের কর্মফলকে চুরি করছি। তারপর সেগুলোর সংমিশ্রণকে রূপ দিচ্ছি নিজেদের সৃষ্টি হিসেবে। আর এ কাজে ভিন্নতা এলেই সেসব হয়ে ওঠে আমাদের মৌলিক কাজ। ক্লেওন তার বইতে এরকম দশটি উপায় দেখিয়েছেন, যা আপনার সৃজনশীলতার ভিত্তিকে শক্ত করে তুলবে।
১২৮ পৃষ্ঠার এই বইটি পড়ে শেষ করতে আমার এক ঘণ্টাও লাগেনি। ভীষণ ইন্টারেস্টিং এবং ইউনিক কনসেপ্ট। প্রাঞ্জল উপস্থাপনা। সেইসাথে অনুবাদটাও চমৎকার। বইয়ের ভেতরকার সেটআপটা খুব ভালো লেগেছে। স্ক্র্যাপবুক স্টাইলের হওয়াতে পড়ে আরাম পেয়েছি।
স্টিল লাইক অ্যান আর্টিস্ট এর বাংলা অর্থ দাঁড়ায় শিল্পীর মতো চুরি করো। আক্ষরিক অর্থেই বইটা আপনাকে শেখাবে- কীভাবে চুরি করতে হয়। শুধু শেখাবে বললে ভুল হবে, আপনাকে রীতিমতো মোটিভেট করবে।
কিন্তু এই চুরি করার ব্যাপারটা অপরাধ কিংবা নেতিবাচক কেন্দ্রিক হবে না। বরং আপনি এটাকে সৃজনশীল উপায়ে নিতে শিখবেন। আরও সহজভাবে যদি বলি, চুরি শব্দটাকে অনুকরণ শব্দে বদলে ফেলুন। তারপর শিখুন কীভাবে অনুরকণ করতে হয়। এ প্রসঙ্গে বইয়ে উদ্ধৃত উইলসন মিজনার এর বক্তব্যটি হলো, ‘তুমি যদি শুধুই একজন লেখককে অনুকরণ করো তবে সেটা হবে চুরি; যদি অনেকজনকে অনুকরণ করো তাহলে সেটা হবে গবেষণা।’
বইটা মূলত আত্মোন্নয়ন ঘরানার। লেখক তার ব্যক্তি জীবনের অভিজ্ঞতা, দর্শন, গবেষণা এবং অসংখ্য গুণীজনদের জীবন থেকে সৃজনশীলতার ভাবাদর্শ তুলে এনেছেন। যা পড়লে আপনি নিজের যেকোনো কাজে, বিশেষ করে সৃজনশীল পেশা, লেখালেখিতে উৎসাহ ও আগ্রহ খুঁজে পাবেন। সব মিলিয়ে বেশ উপভোগ্য একটি বই।
যারা অনুবাদ এবং আত্মোন্নয়নমূলক বই পছন্দ করেন, তাদের জন্য ‘স্টিল লাইক অ্যান আর্টিস্ট’ সাজেস্ট রইল। হ্যাপি রিডিং।
.
বই: স্টিল লাইক অ্যান আর্টিস্ট
লেখক: অস্টিন ক্লেওন
ভাবানুবাদ: রিয়াজ মোরশেদ সায়েম
প্রচ্ছদ: সব্যসাচী মিস্ত্রী
প্রকাশনী: অক্ষরবৃত্ত
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১২৮
মলাট মূল্য: ২৮০ টাকা
Leave a comment