স্কেচ বই | লেখিকা : ফারজানা মিতু | Sketch : Farzana Mitu Books

বই : স্কেচ

লেখিকা : ফারজানা মিতু – রিভিউ / পাঠ প্রতিক্রিয়া!

ধরণ : সামাজিক থ্রিলার
প্রচ্ছদ : সজল চৌধুরী
প্রকাশক : নালন্দা প্রকাশনী
মূল্য : ৩০০ টাকা
বইকথা মূল্যঃ ২১০

“মুখোশ” এর পরবর্তী পর্ব “স্কেচ”। “মুখোশ” বইটির চেয়ে আরও একধাপ এগিয়ে “স্কেচ” নামক বইটি। খুন, প্রেম, জিঘাংসা, অবিশ্বস্ততাকে সাথে নিয়েই এগিয়ে চলেছে কাহিনী। এবারের বইটিতে মূল চরিত্র ধারণ করছে বুবুন ওরফে আবরার চৌধুরী, যিনি কি না তার আসল পিতৃ পরিচয়ের খোঁজ করে চলেছেন। কিন্ত তিনিও আফজাল চৌধুরীর মতো মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন তার পিতা আফজাল চৌধুরী, আশফাক চৌধুরী নয়।

আসলে কে আবরার চৌধুরীর পিতা? আফজাল চৌধুরী নাকি আশফাক চৌধুরী নাকি এদের কেও নন অন্যকেও!

এই প্রশ্নকে অগ্রাধিকার দিয়েই বইটি রচিত।

বিশ্বস্ততার দিক দিয়ে রায়ান এবং মালেক কেও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

আবার ইয়েলো ওরলেনডার নামক বিষাক্ত ফুলগাছ, কালো জীব গাড়ি, হোটেল গ্রীনলাইট সবকিছু একটা থ্রিলার ভাব দেয়। আসলেই কাহিনীর শেষ অংশ খুঁজতে বইটির শেষপাতা পর্যন্ত যেতে হয়েছে।

কাহিনি সংক্ষেপ
স্কেচ কাহিনীর সূত্রপাত মুখোশ উপন্যাস কাহিনীর আঠারো বছর পর। আফজাল চৌধুরী নয়, উপন্যাসের নায়ক এখন আবরার চৌধুরী। যে চলনেবলনে, স্বভাব চরিত্রে বাবা আফজাল চৌধুরীর কার্বনকপি। বাবার মতোই ছেলের বিশ্বাস সে আফজাল চৌধুরীর ভাই আশফাক চৌধুরীর সন্তান নয়। আবরার লেগে যায় নিজের জন্মের উৎস জানতে। আর এই জানার পথে আবারও সামনে এসে দাঁড়ায় অনেক মুখোশ ধারী মানুষেরা। স্বাতী, সত্য, তিতির, তানভীর ছাড়াও রয়েছে রায়ান নামের একজন মানুষ যে ছিল বাবা আফজাল চৌধুরীর বিশ্বস্ত সহচর। ঘটতে থাকে একটার পর একটা ঘটনা। থাকবে খুন, থাকবে প্রেম। থাকবে জিঘাংসা, থাকবে অবিশ্বস্ততা। বইয়ের পাতায় পাতায় থাকবে রুদ্ধশ্বাস জড়ানো মুহূর্ত। মুখোশের মতো আপনাকেও শেষ পাতা পর্যন্ত যেতে হবে কাহিনীর শেষ অংশটুকু খুঁজতে। আপনারা তৈরি তো? স্কেচ মুখোশ বইয়ের দ্বিতীয় পর্ব।
আমার প্রিয় জনরা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার। মেলায় কেনার জন্য লিস্ট করলাম। এর বাইরে যদি মৌলিক কোনোটা বাদ পড়ে যায় আমাকে জানাবেন।
১) দিমেন্তিয়া -এম. জে. বাবু
২)অ্যাবসেন্টিয়া -এম. জে. বাবু
৩)ঋ-মুশফিক উস সালেহিন
৪) জল কুঠুরি- মুশফিক উস সালেহিন
৫)স্কেচ- ফারজানা মিতু
৬) মুখোশ – ফারজানা মিতু
৭)সপ্তশ- সালেহ তিয়াশ
আপাতত এগুলো লিস্টে আছে। কেউ যদি জানেন তাহলে জানাতে পারেন।
বই – স্কেচ – পাঠ প্রতিক্রিয়া!
লেখক – ফারজানা মিতু ( Farzana Mitu) 
প্রকাশনা – নালন্দা 
এ বছরের নতুন বই পড়া শুরু হলো স্কেচ পড়ার মাধ্যমে। স্কেচ আমার দ্রুত পড়বার তাগিদ থাকার কারণ রয়েছে। কিছুদিন আগেই “মুখোশ” পড়ে শেষ করলাম তো। মুখোশের সিকুয়েলই “স্কেচ”। 
থ্রিলার ঘরনার উপন্যাস আমার ভালো লাগে। মুখোশ ছিল মাইল্ড থ্রিলার। তবে স্কেচে এসে থ্রিল জমে উঠেছে। দশ ফর্মার বই তিন দিনেই পড়ে শেষ পড়লাম। নিয়োগ পরীক্ষার পড়াশোনার চাপ না থাকলে একদিনেই শেষ হতো। 
ভালো থ্রিলারের বৈশিষ্ট্য হলো দ্রুত পড়ে শেষ করতে হয়। স্কেচ সেদিক থেকে সফল। পাতায় পাতায় খুনখারাপি নেই এই বইয়ের। তবে গল্পের শেষে এসে এভাবে দুই দুইটা খুন হয়ে যাওয়া একটা ঝটকার মতো লেগেছে। 
স্কেচের ঘটনাপ্রবাহ উচ্চবিত্তের জীবনপ্রবাহ ঘিরে। উচ্চবিত্তের চোখ দিয়ে মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্তের কীভাবে গোচরে আনা হয়, তার একটা সফল বর্ণনা লেখক দেখিয়েছেন গল্পে। আর যে মেসেজটা গল্পে পাওয়া যায় তা হলো অনৈতিক মানুষ যত বুদ্ধিমানই হোক, শেষ পর্যন্ত নিয়তি তার অনুকূলে থাকে না। কোনো না কোনোভাবে পরাস্ত তাকে হতেই হয় নিয়তির কাছে। 
আমার মনে হয়েছে এ গল্পের সবচেয়ে শক্তিশালী চরিত্র স্বাতী। মানবিক সীমাবদ্ধতাকে যে অতিক্রম করতে পারে নি কিছুতেই। বাস্তবতার মারপ্যাঁচে আটকে পড়া হতভাগ্য স্বাতীকে না পারা যায় ভালোবাসতে না পারা যায় ঘৃণা করতে। সবচেয়ে প্রাণবন্ত চরিত্র স্বপন, পাঠকের চোখে আপন আপন মনে হওয়ার মতো। 
গল্প কয়েক জায়গায় এত নাটকীয় ভঙ্গিতে মোড় নিয়েছে যে স্বাভাবিক স্রোতে ফিরতে একটু সময় লেগেছে আবার। শেষে এসে মনে হলো আরো একটা সিকুয়েল হলে ভালো হয় এই গল্পের। 
সব মিলে ভালো লেগেছে। রেটিং ১০ এ ৮ দেয়া যায় অনায়াসেই।
আসছে “স্কেচ” এর পরবর্তী পর্ব “সাইলেন্স”।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?