বইয়ের নামঃ সে আসে ধীরে
লেখকঃ হুমায়ূূন আহমেদ
প্রকাশকঃ অন্য প্রকাশনী
প্রকাশ কালঃ ২০০৩
মূল্যঃ ১৫০ টাকা
এই উপন্যাস টি হুমায়ূন আহমেদের বিখ্যাত চরিত্র হিমু নিয়ে লেখা। অনেকে বলে থাকেন হিমু যে হলুদ পাঞ্জাবি পরে ঘুরে বেড়ায় সেই পান্জাবির একটা বিশেষত্ব আছে। একটা সময়ে পান্জাবির রং আর পৃথিবীর রং এক হয়ে যায়। অদ্ভুত স্বপ্নময় আলোয় চারিদিক ঝলমল করে ওঠে। এই আলোর আর এক নাম “কন্যা সুন্দর আলো” কারন এই আলোতে অতি সাধারন চেহারার মেয়ে কেও অদ্ভুত রূপবতী মনে হয়। মনে হয় পৃথিবীর সব রূপ নিয়ে সে এসেছে।
আমার প্রায়ই জানতে ইচ্ছে করে যখন এই মাহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত হয় তখন হিমু কি করে? কি ভাবে? হিমুর কাছে এই মাহেন্দ্রক্ষণের বিশেষত্ব কি?
হিমুর মাজেদা খালার স্বামী মানে তার খালু সাহেব তার অদ্ভুত রকম চাল চলনের জন্য তাকে সহ্য করতে পারতো না। তবে স্বীকার করত যে হিমু একজন ভালো ছেলে। একদিন তার ব্যাধি পেয়ে বসে,কথা না বলার ব্যাধি। এই ব্যাধির জন্য তার খালা ও খালুর বিদেশ যাওয়ার ভাবনা থাকলেও সমাধান আসে হিমুর খুব সহজ চিকিৎসার দ্বারা। সে এক অদ্ভুত চিকিৎসা। ‘গু ‘ নামক অখাদ্য খাওয়ানোর জন্য জোর করায় কথা বলে উঠে তার খালু। যদিও হিমুর জন্য তার খালুর চিকিৎসা হয়, তাও তিনি কথা বলবেন না হিমুর সাথে।
এই মাজেদা খালাই হিমুকে আসমা নামক এক ভদ্র মহিলার কথা জানায়,যার অঢেল সম্পদ থাকা সত্ত্বেও সন্তান নেই। দত্তক চায় এক ছেলেকে, আর এই কাজ করে দিবে হিমু। সে ঠিক করে ইমরুল কে দত্তক দিবে আসমা বেগমের কাছে। ইমরুল এর মা ফরিদা খুবই অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি আছে। তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা দরকার। হিমু ইমরুল কে দত্তক দিয়ে দিবে আসমা বেগমকে, এবং আসমা বেগমের কাছ থেকে টাকা নিয়ে হিমুর মাকে চিকিৎসা করবে, এমনটি ভাবছে । হঠাৎ করে আসমা বেগম হিমু কে বলে তার নাকি নিজেরই সন্তান হতে যাচ্ছে যা সে নিজেও জানতো না । এবং এটাই সত্যি হয়ে যায়।
আসমা বেগম ও তার স্বামী হিমু কে পুরস্কার দিতে চায়, তার বদলে হিমু ইমরুলের মা”র চিকিৎসার জন্য সাহায্য চায়। এতে করে সবার সমস্যার সমাধান আসে অদ্ভুত ভাবে। অসাধারণ সব মজার মজার কথা আর তার সাবলিলতা, আর তার আধ্যাত্মিক শক্তি আছে কি নাই এই ভাবনা আমাকে দারুণ মোহ সৃষ্টি করেছে। সব মিলিয়ে বই খানা দারুণ। অদ্ভুত সব কাণ্ড নিয়ে বই খানা শেষ হয়। বই খানা পড়ে আমি খুব আনন্দ পেয়েছি। এবং কিছু বাস্তবতার চিত্র অত্যন্ত সুন্দর সুক্ষ্ম ভাবে লেখক তুলে ধরেছেন। আমাদের প্রিয় লেখকের সার্থকতা এখানেই। বই খানা পড়ার পর,আমার কাছে মন খারাপের দাওয়াই মনে হয়েছে।
———————ইসরাত জাহান
১৯|০৭|২২
Leave a comment