সিরাজাম মুনিরা – আরিফুল ইসলাম

  • বইয়ের নাম: সিরাজাম মুনিরা
  • লেখক: আরিফুল ইসলাম
  • প্রকাশনী: সমকালীন প্রকাশন
  • প্রচ্ছদ: সমকালীন গ্রাফিক্স টিম
  • সম্পাদনা: মুওয়াফফিকা বিনতে আব্দুল্লাহ্,আব্দুল্লাহ আমান।
বানান ও ভাষারীতি: আব্দুল্লাহ আমান,মাহবুবুর রহমান,ওমর হাসানাত কাসিম,মুফতি আবু উসাইম সারোয়ার।

লেখকের কথা:

সিরাত পড়তে গিয়ে কিছু কিছু ঘটনা আমরা খুব একটা মনোযোগের সাথে পড়ি না।শুধু চোখ বুলিয়েই চলে যাই।আবার কিছু ঘটনা আছে, যেগুলো প্রচলিত নয়; ধারাবাহিকভাবে সিরাতের কিতাবে পাওয়াও যায় না।এমন ঘটনাগুলোকে আমি এই বইয়ে উল্লেখ করেছি।বইটি লেখার মূল উদ্দেশ্য হলো,পাঠকরা যেন বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সিরাত পড়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন।সাধারণত দেখা যায়, কেউ একটি সিরাতগ্রন্থ পড়েই হাত গুটিয়ে বসে পড়েন।আমাদের বিশ্বাস, সিরাজাম মুনিরা বইটি পাঠকের এই ধারণা ভেঙে দিতে সক্ষম হবে, ইনশাআল্লাহ!

বইটি পড়ে সিরাত অধ্যয়নের তৃষ্না আরো বেড়ে যাবে এই আমাদের প্রত্যাশা।

বই থেকে:
এইসব ভালোবাসা মিছে নয় গল্প থেকে একটুখানি –

এক দুই দিন নয়। বাবার সাথে মেয়ের প্রায় ষোলোটা বছর পর দেখা। সুদীর্ঘ এই ষোলো বছরে মেয়ে একবারও বাপের বাড়ি যায় নি।এতো বছর পর বাবা এলেন মেয়ের বাড়িতে, কিন্তু একি! মেয়ের বাড়িতে গিয়ে বিছানায় বসতে চাইলে মেয়ে বিছানা গুটিয়ে ফেললেন।নিজের বাবাকে বসতে দিতে চাচ্ছেন না!

বাবা খুব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,মেয়ে, আমি।  এই বিছানার উপযুক্ত নই, নাকি বিছানা আমার উপযুক্ত নয়?

মেয়ে উওর দিলেন, এটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিছানা আর আপনি হলেন একজন নাপাক মুশরিক!

আবু সুফইয়ান হচ্ছে সেই বাবা আর তার মেয়ে উম্মু হাবিবা রাযিয়াল্লাহু আনহা; নবিজির স্ত্রী।

আবু সুফইয়ান হুদাইবিয়ার সন্ধি নবায়ন করতে আসলে তার মেয়ে উম্মু হাবিবা রাযিয়াল্লাহু আনহা নিজের বাবাকে নবিজির বিছানায় বসতে দেননি।

বাপ-মেয়ের মধ্যকার প্রগাঢ় বন্ধন ও রক্তের সম্পর্কের চেয়ে নবিজির প্রতি নিখাদ ভালোবাসাটাই বড়ো মনে হয়েছে উম্মু হাবিবা রাযিয়াল্লাহু আনহার কাছে।

শেষ সম্বল গল্প থেকে –
ইসলামের প্রথম সময়ে ইসলাস প্রচার বন্ধ করার জন্য মক্কার কাফিররা নবিজীকে সম্পদের লোভ দেখিয়ে বলেছিলো- ‘তুমি যত সম্পদ চাও আমরা দেবো।’ আল্লাহর কাছে তিনি যদি সম্পদ চাইতেন,আল্লাহ অবশ্যই তাকে সম্পদ দিতেন, অথচ সেই নবির ইন্তেকালের আগে তার ঘরে মাএ সাত দিনার সম্পদ! নবিজি এই শেষ সম্বলটুকু ও ঘরে রাখলেন না।ইন্তিকালের আগের দিন আয়িশা রাযিয়াল্লাহু আনহাকে নির্দেশ দেন নিজের শেষ সম্বল সাত দিনার সম্পদটুকুও সাদকাহ্ করে দিতে।

নবিজি তার পরিবারকে এমন অবস্থায় রেখে যান যে, তিনি যেদিন ইন্তিকাল করেন,সেদিন রাতে ঘরে  চেরাগ জ্বালানোর তেলটুকু পর্যন্ত আয়িশা রাযিয়াল্লাহু আনহাকে প্রতিবেশীর ঘর থেকে ধার করে আনতে হয়েছিল!

আয়িশা রাযিয়াল্লাহু আনহা বলেন,নবিজি বলেছেন, আমরা (রাসূলগণ) যা কিছু ( সম্পদ)রেখে যাই,কেউ তার ওয়ারিশ হয় না।সবই সাদাকাহ্।

লেখকের পরিচিতি:

আরিফুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরতা মেধাবী এই তরুণের আগ্রহের জায়গা নানান ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা মানুষের জীবনের গল্প।পাঠকের যাপনে ইসলামকে আরো বেশি আপন করে তুলতে লিখে চলেছেন দু-হাত ভরে।

৩২ জন সাহাবির জীবনের গল্প নিয়ে লিখেছেন তারা ঝলমল প্রথম খন্ড। দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশের অপেক্ষায়!

চার ইমামের গল্প নিয়ে লিখেছেন চার তারা। মহিয়সী নারীদের জীবনের গল্প নিয়ে লিখেছেন পুণ্যবতী।

পাঠ প্রতিক্রিয়া:

সিরাজাম মুনিরা বইটি অনেকটি গল্প রয়েছে। এই ছোট ছোট গল্প গুলো অনেকগুলো শিক্ষা দিয়েছে। প্রত্যেকটি গল্প ছিল শিক্ষনীয়। নবীজি (স.) এর আর্দশ, জীবনযাপন, তার ভালোবাসা এবং কি শেখার আছে গল্পগুলো থেকে এই বিয়ষগুলো নিয়েই মূলত বইটি লিখা।অসাধারণ একটি বই! যতই পড়ছি ততই আগ্রহ বেড়েছে।ইসসস, আরেকটু বড় হলেও পারতো। আমি অপেক্ষায় আছি লেখকের বাকি বই গুলো(ওপারেতে সর্বসুখ,পুণ্যবতী,চার তারা,কুরআনের গল্প, খোঁপার বাঁধন) কবে পড়তে পারবো। এই সহ মোট তিনবার বইটি পড়া শেষ কিন্তু এতোদিনে রিভিউ লিখতে বসলাম।

বইয়ের প্রচ্ছদ:

বইটির প্রচ্ছদ ও খুব সুন্দর ছিলো।বইটি পড়তে আমার একটুও সমস্যা হয় নি।বানান বা ছাপানো কোনো কিছুতেই এুটি পাই নি আমি। যার ফলে বইটি পড়ে আনন্দিত হয়েছি।”সমাকালীন প্রকাশনী ” কে অসংখ্য ধন্যবাদ তার জন্য। এভাবেই পড়ার আগ্রহ তৈরি করবেন পাঠকদের মাঝে আশা রাখি!

মন্তব্য:

সবার সব বই পচ্ছন্দ না ও হতে পারে।তবে আমার কাছে বইটি অসম্ভব ভালো লেগেছে। এটা ইসলামিক বই।যারা ইসলামিক বই পড়েন তারা পড়তে পারেন। নিরাশ তো হবেনই না বরং উপকার হবে।তবে প্রত্যেক পাঠকই পড়তে পারেন।পড়ার মতো একটি বই!

লেখকের এই বই নবম বই। 

লেখকের জন্য অনেক দোয়া ও শুভকামনা রইলো!

ভুল এুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন!

বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?