- বই : সালাফগণের দুনিয়াবিমুখতা
- লেখক : মুহাম্মাদ মাহিন আলম
- প্রকাশনী : বিলিভার্স ভিশন পাবলিকেশন্স
- বিষয় : আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা
- সম্পাদক : উস্তায আব্দুল্লাহ মাহমূদ
- পৃষ্ঠা : 268, কভার : হার্ড কভার
- আইএসবিএন : 9789843529466, ভাষা : বাংলা
‘দুনিয়াসক্তি’ রোগের একমাত্র ওষুধ হলো, যুহদ। এর সরল অর্থ হলো, দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি, দুনিয়াবিমুখতা। যুহদ হলো ইসলামি জীবনদর্শন। একজন মুসলিম যেভাবে দুনিয়া থেকে গা বাঁচিয়ে চলে, সেটাকেই যুহদ বলে। যেভাবে জীবনধারণ করেছিলেন প্রাণের নবি , তাঁর সাহাবি ও উম্মাতের শ্রেষ্ঠ প্রজন্মের মানুষেরা। যেভাবে জীবন পরিচালনা করে মুসলিম জাতি অর্ধ পৃথিবীর কর্তা হয়েছিল সেই জীবনপদ্ধতিই হলো, যুহদ। আজকের ভোগবাদী ও বস্তুবাদী জীবনব্যবস্থায় যুহদ হলো পরিত্যক্ত। স্রোতের সঙ্গে গা ভাসিয়ে মুসলিমরাও আজ নির্যাতিত, নিষ্পেষিত ও অচ্ছুতজাতি।
এ জাতি যতদিন না তাদের নেককার পূর্বসূরি তথা সালাফে-সালিহিনের জীবনপদ্ধতিকে পুনরায় আপন করে না নিবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মুক্তি নেই। সেই মুক্তির পথের একটি ক্ষুদ্র নকশা এই বইটি।‘যুহদ’ বিষয়ক বেশ কিছু কিতাবাদি প্রকাশিত হয়েছে।
বইগুলোর বেশির ভাগই তাহকীককৃত নয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর নামে মুনকার, জাল হাদীসও উল্লেখ আছে কিছু কিছু বইতে, অথচ সেগুলো চিহ্নিত করে দেওয়া হয়নি। এমতাবস্থায় আমরা ‘যুহদ’ ও ‘রিকাক’ বিষয়ক বিশুদ্ধ বর্ণনাসমূহ প্রয়োজনীয় সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ সংকলন করার ইচ্ছা করি। যা মৌলিক ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন গ্রন্থ হবে।
সংকলকের আভাষ
[ এক ]
একটা রোগ। যে রোগে আক্রান্ত হয়ে মুসলিম জাতি বিশ্বের বিজেতা ও শাসক থেকে পরাজিত ও শাসিত জাতিতে পরিণত হয়েছে। কী সেই রোগ?
রোগটা হলো ‘দুনিয়াসক্তি। খুবই ভয়ংকর রোগ। এর সঙ্গে আরো অনেকগুলো মারাত্মক বিধ্বংসী রোগ ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে। একবার যদি দুনিয়াসক্তির রোগ অন্তরে বাসা বাঁধে, তাহলে বাকি রোগগুলোও তাদের জীবাণু ছড়িয়ে দিতে থাকে। এই দুনিয়াসক্তির প্রধান উপাদান হলো- টাকা, নারী, বাড়ি, গাড়ি আর দুনিয়ার যত বিলাসী বস্তুর প্রতি আসক্তি।
‘দুনিয়াসক্তি’ রোগের একমাত্র ওষুধ হলো, যুহদ। এর সরল অর্থ হলো, দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি, দুনিয়াবিমুখতা। যুহদ হলো ইসলামি জীবনদর্শন। একজন মুসলিম যেভাবে দুনিয়া থেকে গা বাঁচিয়ে চলে, সেটাকেই যুহদ বলে। যেভাবে জীবনধারণ করেছিলেন প্রাণের নবি, তাঁর সাহাবি ও উম্মাতের শ্রেষ্ঠ প্রজন্মের মানুষেরা। যেভাবে জীবন পরিচালনা করে মুসলিম জাতি অর্ধ পৃথিবীর কর্তা হয়েছিল সেই জীবনপদ্ধতিই হলো, যুহদ।
আজকের ভোগবাদী ও বস্তুবাদী জীবনব্যবস্থায় যুহদ হলো পরিত্যক্ত। স্রোতের সঙ্গে গা ভাসিয়ে মুসলিমরাও আজ নির্যাতিত, নিষ্পেষিত ও অদ্ভুতজাতি। এ জাতি যতদিন না তাদের নেককার পূর্বসূরি তথা সালাফে সালিহিনের জীবনপদ্ধতিকে পুনরায় আপন করে না নিবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মুক্তি নেই। সেই মুক্তির পথের একটি ক্ষুদ্র নকশা এই বইটি।
[ দুই ]
‘যুহদ’ বিষয়ক বেশ কিছু কিতাবাদি প্রকাশিত হয়েছে। বইগুলো বেশির ভাগই তাহকীককৃত নয়। রাসূলুল্লাহ -এর নামে মুনকার, জাল হাদীসও উল্লেখ আছে কিছু কিছু বইতে, অথচ সেগুলো চিহ্নিত করে দেওয়া হয়নি।
এমতাবস্থায় আমরা ‘যুহদ’ ও ‘রিকাক’ বিষয়ক বিশুদ্ধ বর্ণনাসমূহ প্রয়োজনীয় সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ সংকলন করার ইচ্ছা করি। যা মৌলিক ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন গ্রন্থ হবে।
এই সংকলনটির বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে:
১. একাধিক প্রাচীন ও আধুনিক মুহাদ্দিসদের তাহকীকি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশুদ্ধতম হাদীসসমূহের সংকলন। ক্ষেত্র বিশেষে ব্যাখ্যামূলক ও সহীহ হাদীসের অনুকূল দয়ীফ বর্ণনা আনা হলেও তার যথাযথ মানোল্লেখ রয়েছে। কিছু মাকতু বর্ণনা রয়েছে যেগুলোর ব্যাপারে মুহাক্কিকদের হুকুম পাওয়া যায়নি।
২. প্রাথমিকভাবে বইটি সংকলন করা হয়েছে প্রসিদ্ধ ছয় হাদীস গ্রন্থের ‘যুহদ’ অথবা ‘রিকাক’ অধ্যায়সমূহ থেকে। এরপর মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবাহ, সুনানুদ দারিমি, শুআবুল ঈমান, নাসায়ি সুনানুল কুবরা, মুসতাদরাক হাকিম ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থসমূহের ‘যুহদ’ ও ‘রিকাক’ বিষয়ক অধ্যায়সমূহ থেকে বর্ণনা সংগ্রহ ও সংকলন করা হয়েছে।
প্রাচীন ইমামদের যুহদ ও রিকাক বিষয়ক একাধিক হাদীসগ্রন্থ সংকলন রয়েছে। ‘কিতাবুয যুহদ” অথবা ‘কিতাবুয যুহদ ওয়ার রিকাক’ শিরোনামেই গ্রন্থ রয়েছে:
১. ইমাম ইবনুল মুবারাক (মৃত্যু: ১৮১ হি.)
২. ইমাম মুআফি (মৃত্যু: ১৮৫ হি.) ৩. ইমাম ওয়াকি (মৃত্যু: ১৯৭ হি.)
৪. ইমাম আসাদ (মৃত্যু: ২১২ হি.)
৫. ইমাম আহমাদ (মৃত্যু: ২৪১ হি.)
৬. ইমাম হান্নাদ (মৃত্যু: ২৪৩ হি.) ৭. ইমাম আবু হাতিম আল-রাযি (মৃত্যু: ২৭৭ হি.)
৮. ইমাম ইবনু আবিদ্দুনইয়া (মৃত্যু: ২৮১ হি.)
৯. ইমাম ইবনু আবি আসিম (মৃত্যু: ২৮৭হি.) ১০. ইমাম আবু দাউদ (মৃত্যু: ২৭৫ হি.)
১১. ইমাম ইবনু আরাবি (মৃত্যু: ৩৪০ হি.)
১২. ইমাম বাইহাকি (মৃত্যু: ৪৫৮ হি.) ১৩. ইমাম খাতীব বাগদাদি (মৃত্যু: ৪৬৩ হি.)
১৪. ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ (মৃত্যু: ৭২৮ হি.)
সহ আরো ইমামদের। এসব গ্রন্থের নির্বাচিত বিশুদ্ধ বর্ণনাসমূহও গ্রন্থটিতে সংকলিত হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
৩. বইটিতে ঐসব বর্ণনাই প্রাধান্য দিয়ে সংকলন করা হয়েছে, যেগুলো সনদের দিক থেকে সর্বাধিক বিশুদ্ধ ও ভাষ্যের দিক থেকে সর্বাধিক পূর্নাঙ্গ। হাদীসের পুনরাবৃত্তি হয়নি।
৪. বইটিতে বাজারে বিদ্যমান অনুবাদসমূহ থেকেই ‘অনুবাদ’ গ্রহণ করা হয়েছে।
৫. গুরুত্বপূর্ণ আয়াত ও হাদীসসমূহে সংক্ষিপ্ত তাফসীর ও ব্যাখ্যা/ফায়দা যোগ করা হয়েছে।
যে সমস্ত মুহাদ্দিস ও মুহাক্কিকদের তাহকীক ও তাখরীজকৃত গ্রন্থ থেকে সংকলিত:
১. ইমাম বৃসীরি ২. ইমাম ইরাকি
১০. শাইখ সা’দ
১১. শাইখ উসামা
৩. ইমাম হাইসামি
| ১২. শাইখ আবদুর রহমান
৪. ইমাম মুনযীরি
৫. শাইখ আলবানি
১৩. শাইখ মুখতার আহমাদ
১৪. শাইখ হামীদ
৬. শাইখ যুবাইর
১৫. শাইখ মাশহুর হাসান
৭. শাইখ আরনাউত
১৬. শাইখ মাজদি ফাতহি সাইয়িদ
৮. শাইখ বাশশার আওয়াদ মারুফ
১৭. শাইখ আহমাদ ফারীদ
৯. শাইখ হুসাইন আদ-দারানি | ১৮. শাইখ আবু ইসহাক আল-হুওয়াইনি প্রমুখ।
ভুলত্রুটি থেকে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। কোনো সুহৃদ পরামর্শ বা কোনো সংশোধনী জানালে শোকরগুজার থাকব।
মুহাম্মাদ মাহিন আলম mahin@believersvision.com
সম্পাদকের আভাষ
ইন্নাল হামদালিল্লাহি ওয়াহদাহ ওয়াস সলাতু ওয়াস সালামু আলা মাল্লা নাবিয়্যাহ বা’দাহ
একজন মুসলিমের গোটা জীবনটা হবে যুহদের সাজে সজ্জিত। কারণ, যুহদ মানে সর্বক্ষেত্রে পরিমিত পরিমাণ মাধ্যম অবলম্বন করা। মুসলিম যদি তার জীবন যুহদের সাজে না সাজায়, তাহলে শয়তান তাকে পেয়ে বসবে। ইমাম ইবন কাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘জ্ঞানী মাত্রই জানেন যে, মানুষের মধ্যে প্রবেশের জন্য শয়তানের তিনটি পথ রয়েছে। তন্মধ্যে প্রথমটি হলো অতিরঞ্জন ও অপচয়। মানুষের যতটুকু প্রয়োজন তার অতিরিক্তটুকুই অতিরঞ্জন ও অপচয়। ঐ অতিরিক্তটুকুই শয়তানের অংশ এবং অন্তরে তার প্রবেশদ্বার। এ থেকে মুক্তির উপায় হলো, খাদ্য, ঘুম, ভোগ-বিলাস, বিশ্রাম-সহ নফসের সকল চাওয়া-পাওয়া পরিপূর্ণভাবে যোগান না দেওয়া। এ পথ বন্ধ হলে শয়তান একটি প্রবেশপথ হারাবে।”
তাই প্রতিটি মুসলিম ব্যক্তি যুহদ অবলম্বন করে শয়তানকে নিজের মাঝে প্রবেশ করা থেকে অন্তরায়ের দেওয়াল তৈরি করবে। এ কারণে নবি বলেছেন,
قد أفلح من أسلم ورزق كفافا وقنعه الله بما آتاه
সে ব্যক্তিই সফলকাম হয়েছে, যে ইসলাম গ্রহণ করেছে এবং তাকে পরিমিত রিযিক প্রদান করা হয়েছে এবং আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট রেখেছেন।
সফল মুসলিম হওয়ার জন্য যুহদের প্রয়োজনীয়তা অধিক হওয়ার কারণে এ বিষয়ে বাংলাভাষায় একটি তথ্যবহুল ও বিশুদ্ধ বর্ণনা সম্বলিত বইয়ের আকাঙ্ক্ষা ছিল বহুদিন যাবৎ। কারণ, বাংলাভাষায় এ বিষয়ে বেশ কিছু গ্রন্থ অনুবাদ হলেও সেসব বইয়ে বিশুদ্ধ বর্ণনার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আলহামদুলিল্লাহ সেই চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেছেন উদ্যমী, চিন্তাশীল, পরিশ্রমী ব্যক্তিত্ব জনাব মাহিন আলম। বইটির বিন্যাস ও সংকলনের পরতে পরতে মুহতারাম সংকলনের পরিশ্রম, চিন্তাশীলতা ও উদ্যমের সাক্ষ্য রয়েছে। বাংলাভাষায় বইটি এক অনন্য সংযোজন।
আমাদের মতো দুর্বল ঈমানদারদের জন্য বইটি বেশ উপকারী হবে এবং জীবনের সকল ক্ষেত্রে আমাদের মরচে ধরা ঈমানে নতুন শান ফিরিয়ে আনতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখবে, ইনশাআল্লাহ। আমরা হতে পারবো যুহদের রঙে রঙিন বি-ইযনিল্লাহ।
আল্লাহ যেন এ কাজটি গ্রহণ করেন এবং এটিকে আমার, সংকলক ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আখিরাতের পরিত্রাণের অবলম্বন বানিয়ে দুআ করবেন। সাধ্যমতো এ অনুবাদকর্মটি নির্ভুল রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরও মানবীয় দুর্বলতার কারণে ভুল থাকা খুবই স্বাভাবিক। কোনো ভুল নজরে পড়লে বা কোনো সংশোধনী প্রয়োজন মনে হলে অনুগ্রহপূর্বক জানিয়ে কৃতার্থ করবেন। ধন্যবাদ জানাচ্ছি বিলিভার্স ভিশনকে বইটি প্রকাশের জন্য এবং বাংলাভাষী পাঠকদের হাতে একটি অনবদ্য উপহার তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য।
আল্লাহর অনুগ্রহ ও ক্ষমাপ্রার্থী
আব্দুল্লাহ মাহমুদ
২১ই আগস্ট 2022 খ্রিস্টাব্দ
abdullahmahmud@believersvision.com
মানবজীবন দুভাগে বিভক্ত। একটি দুনিয়ার জীবন অপরটি আখিরাতের জীবন। দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী হলেও আখিরাতের জীবন চিরস্থায়ী। আখিরাতের জীবনের শুরু থাকলেও যেহেতু শেষ নেই, সেহেতু দুনিয়ার সংক্ষিপ্ত জীবনের চেয়ে আখিরাতের অনন্ত জীবনের প্রতি মানুষের পক্ষপাতিত্ব থাকা উচিত। একইভাবে দুনিয়ার জীবনের প্রতি অকারণে মোহে থেকে মানুষের বিরত থাকা বাঞ্ছনীয়। দুনিয়া বিমুখতা অন্তর এবং শরীরকে প্রশান্তিতে রাখে। আর দুনিয়ার প্রতি অধিক আগ্রহ দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি বৃদ্ধি করে। ইসলামি দৃষ্টিতে কোনো বস্তু বাদ দিয়ে তার চেয়ে উত্তম বস্তুর প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করাকে যুহদ বলে। অন্তর থেকে দুনিয়ার ভালোবাসাকে বের করে ফেলার নাম যুহদ বা দুনিয়াবিমুখতা। জীবনধারণের অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত বস্তু পরিত্যাগ করার নামও যুহদ। অন্তরে দুনিয়ার প্রতি মোহ বা আকর্ষণ রেখে দুনিয়ার দরকারি কাজকর্ম পরিত্যাগ করার নাম যুহদ নয়; এটা বরং মূর্খ ও অপারগদের কাজ। দুনিয়ার চাকচিক্য ও সম্পদের প্রতি অনীহা ও আখিরাতের শান্তির প্রতি আগ্রহী হয়ে, নিজের জীবন পরিচালনা করাই যুহদ। যুহদ অর্থ এই নয় যে, দুনিয়ার মানুষ ও সম্পদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কেবল ইবাদতে মশগুল থাকবে। একজন সম্পদশালী মানুষও যাহিদ বা দুনিয়াবিমুখ হতে পারে। ১
যুহদ মানে এই নয় যে তালি দেওয়া কাপড় পরা, মানুষকে এড়িয়ে চলা, সমাজ থেকে দূরে থাকা, প্রতিদিন সাওম রাখা। কারণ নবি হচ্ছেন- যুহদ অবলম্বনকারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। অথচ তিনি নতুন কাপড় পরতেন। কোনো প্রতিনিধি দল এলে সেজন্য পরিপাটি হতেন। জুমুআর দিন ও ঈদের দিনে নিজেকে পরিপাটি করতেন। মানুষের সঙ্গে মিশতেন। মানুষকে কল্যাণের দিকে আহ্বান করতেন, দীনি বিষয়াদি শিক্ষা দিতেন। তিনি তাঁর সাহাবিদেরকে প্রতিদিন সাওম রাখতে বারণ করতেন। বরঞ ‘যুহদ’ মানে হচ্ছে- হারাম থেকে বেঁচে থাকা এবং আল্লাহ যা অপছন্দ করেন সেটা থেকেও বেঁচে থাকা। বিলাসিতা প্রকাশ ও অতিমাত্রায় দুনিয়া উপভোগ থেকে দূরে থাকা। পরকালের জন্য উত্তম সম্বল গ্রহণ করা। যুহদের সবচেয়ে উত্তম ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে নবি-এর জীবনীতে। ২
দুনিয়াবিমুখ কেন হতে হবে এ বিষয়ে শাইখ ড.আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া বলেন, দুনিয়া আখিরাতের জন্য খেতস্বরূপ। তারপরও তার প্রতি মোহ করতে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ:
১. দুনিয়াকে একমাত্র উদ্দেশ্য নেওয়া হলে চিন্তা থাকবে প্রবৃত্তি পূর্ণ করা, তারপর তা আখিরাত থেকে বিমুখ হয়ে যাবে।
২. যদি দুনিয়ার চাহিদা পূরণ করতে নেমে যায় তখন তাকে গুনাহে লিপ্ত করবে। ৩. যদি দুনিয়ার চিন্তা কারো কাছে বড়ো হয়ে যায়, তখন শাস্তি অনিবার্য হয়ে যাবে।
৪. দুনিয়া মূলত পার হওয়ার পথ মাত্র। সেখানে অবস্থান নিয়ে নিলে আসল বাড়ি ভুলে যাব।
৫. দুনিয়া নশ্বর, তা চিরস্থায়ী কখনো হবে না। তার সম্পদ ও চাকচিক্য মানুষদের
ধোঁকাগ্রস্ত করে।
৬. দুনিয়ার ভালোবাসা সকল প্রকার অনিষ্টের মূল।
৭. দুনিয়ার ভালো ও মন্দে অনেক মানুষই টিকে থাকতে পারে না।
৮. দুনিয়ার ভালোবাসা মানুষকে অঙ্ক করে দেয়। সে ভালোমন্দ বিচারের ক্ষমতা
হারিয়ে ফেলে।
৯. দুনিয়া কখনো ওয়াদা পূরণ করে না।
১০. দুনিয়ার ভালোবাসার সর্বশেষ পরিণতি কষ্টের।
সালাফগণের দুনিয়াবিমুখতা : মুহাম্মাদ মাহিন আলম | Salafgoner Duniabimuhkota By Muhammad Mahin Alom – বইটি ক্রয় করুন ওয়াফিলাইফ থেকে।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?