শবনম : সৈয়দ মুজতবা আলী | Shabnam: Syed Mujtaba Ali

  • বইয়ের নাম: শবনম।
  • লেখক: সৈয়দ মুজতবা আলী।
  • ধরন: উপন্যাস।
  • প্রকাশনী: বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র।
  • গায়ের মূল্য: ২২৫ টাকা মাত্র।
  • পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৪৪।

“শবনম” বাংলা সাহিত্যের সার্থক প্রেমের উপন্যাসগুলির কাপ্তান। এটা নিছক প্রেমের পলাশ প্রসূন নয় বরং শবনম নামের একজন তুর্কি বংশোদ্ভূত আফগান ধনাঢ্য ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের কন্যার সাথে মজনুন নামক এক বাঙালী যুবকের অন্তর্বেদনা, প্রেমের আলেখ্য। হৃদয়ের সব ভালোবাসা অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতেও যেখানে নিঃশেষ হয়ে যায় নি।

সৈয়দ মুজতবা আলী বাংলা সাহিত্যের অন্যতম একজন সার্থক লেখক। সার্থক ঔপন্যাসিক, অপরাজেয় রম্যলেখক কিংবা বাংলা ভ্রমণকাহিনীর মহান গুরু কত অভিধায় তাকে অভিহিত করা যায়। এটা নিছক প্রেমের পলাশ প্রসূন নয় বরং শবনম নামের একজন তুর্কি বংশোদ্ভূত আফগান ধনাঢ্য ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের কন্যার সাথে মজনুন নামক এক বাঙালী যুবকের অন্তর্বেদনা, প্রেমের আলেখ্য। হৃদয়ের সব ভালোবাসা অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতেও যেখানে নিঃশেষ হয়ে যায় নি। শবনমের দুটি মাত্র কথা “বাড়িতে থেকে বেড় হয় । তুমি বাড়িতে থেকো  আমি ফিরবো”, কিন্তু বহু বছর কেঁটে যায় কত বছর কেউ জানে না।  তবু শবনমের বাড়ি ফেরা হয় না।  সত্যি  আর কখনো ফিরবে নাকি ফিরবেনা???  

সৈয়দ মুজতবা আলী উপন্যাসটিতে ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন তা সত্যিই বাংলা সাহিত্যে বিরল দৃষ্টান্ত। অবশ্য লেখক এক বহুভাষাবিদ পন্ডিত হওয়ার কারণে কঠিন সব ফার্সি ও ফরাসি কবিতার দারুণ সব অনুবাদ করেছেন। পাঠক নায়ক-নায়িকার প্রেম ও বিয়ের আবাহনগীতি গাইতে গাইতে সামনে আগাতেই হোঁচট খান যেন। শবনম লিখেছে, “বাড়িতে থেকো। আমি ফিরব”। এই আশাতেই মজনুন থাকে। দিন, মাস, বছর পেরিয়ে যায়, শবনমের দেখা নাই। এত ভালবেসে শবনম কি তবে উড়াল দিলো? 

শবনম” কালজয়ী। “শবনম” এক রহস্য। শবনম হয়ে ওঠে, ” শারদ-প্রাতে গন্ধবিধুর মাঠের শেফালি-বিছানো গালিচায় বিরহিনী নিশীথিনীর অশ্রুশিশির।”—

“আমার মিলনে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেও না,   “আমার বিরহে অভ্যস্ত হয়ে যেত না”।~~শিরিন শিলা

” প্রথমে দেখেছিলুম কপালটি। যেন তৃতীয়ার ক্ষীণচন্দ্র। শুধু, চাঁদ হয় চাপা বর্ণের, এর কপালটি একদম পাগমান পাহাড়ের বরফের মতই ধবধবে সাদা। সেটি আপনি দেখেন নি? অতএব বলব নির্জলা দুধের মত। সেও তো আপনি দেখেন নি। তা হলে বলি বন-মল্লিকার পাপড়ির মত। নাকটি যেন ছোট বাঁশী। ওইটুকুন বাঁশীতে কি করে দুটো ফুটো হয় জানি না। নাকের ডগা আবার অল্প অল্প কাঁপছে। গাল দুটি কাবুলেরই পাকা আপেলের মত। “

এই সকল সৌন্দর্যের অধিকারীই হলো সৈয়দ মুজতবা আলীর সৃষ্ট চরিত্র শবনম। 

গল্পের নায়কের মতো করেই একজন পাঠকেরও শবনম প্রেমে পড়ার জন্য যথেষ্ট এই ব্যাখ্যা। 

শবনম – মজনুনের প্রেমকাব্য পাঠককে রীতিমতো ভাবের স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে সৃষ্টিসুখের উল্লাসে। কষ্টের লোনাজলে অবগাহন করতে শেখাবে এই শবনম – মজনুনের গল্প। 

 সহস্র শ্রুতিমধুর কবিতায় মুগ্ধ হওয়া এই কাহিনীকাব্যে কবি  খাজা শামসুদ্দীন মুহাম্মদ হাফিজ, শেখ সাদী, জালালুদ্দিন রুমি, কলীম কাসানি, সত্যেন দত্ত, কালিদাস প্রমুখ জগদ্বিখ্যাত কবিগণ।  কাব্যমধুর ফুল হয়ে পাতায় পাতায় সুবাস ছড়িয়ে দেয় এই শবনম ও মজনুন। 

গল্পের এক মোড়ে এই বাক্য পাঠকের অন্তরে দারুণ রোমাঞ্চ সৃষ্টি করে । বাড়িতে থেকো। আমি ফিরবো”,

শবনমের শেষ দুটি কথা এই গল্পের পাঠকের মনে এক অদ্ভুত অনুভূতি সঞ্চার করবে, আপনাকে এই পূর্ণদৈঘ্য প্রেম গল্পেও এক অপেক্ষার শিহরণ জাগিয়ে তুলবে। 

পরিশেষে, করেছি আবিষ্কার তোমারে ভালোবাসিবারপ্রথম যেমন বেসেছিনু ভালো, সেই বাসি প্রতিবার। ‘ 

লেখকের কলম ধরে এসেছে মধুময় প্রেমের স্মৃতি যার আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে বিরহে মিলন এক প্রেমিকের অপেক্ষা। শবনমের হারিয়ে যাওয়া  রহস্যের অপেক্ষা!

বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?