লুপারক্যালিয়া উৎসব থেকে ‘সাধু ভ্যালেন্টাইন দিবস’ এর উৎপত্তি

মানুষ যখন একেবারেই প্রিমিটিভ (primitive)  ছিল, তখন তারা প্রকৃতি পুজা করতো। ১৪ ফেব্রুয়ারী, ১২,১৩,১৪,১৫ ফেব্রুয়ারী, ফাল্গুনে উত্তর গোলার্ধে, বিশেষ করে ইউরোপে, এবং আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশেও বসন্ত বরণ হতো। বসন্তের আগমন,  নতুন ফুল ফুটবে,  নতুন যৌবন আসবে। তাহলে আমরা যদি বসন্তের শুরুতে গান বাজনা ফুর্তি যৌবনের কাজ করি, তাহলে আমাদের যৌবন এবং ফুর্তি নিটুট থাকবে। প্রকৃতি আমাদের এটা দিয়ে দেবে। এই ধরনের একটা চেতনায় প্যাগান যুগের, প্রিমিটিভ যুগের, প্রাচীন যুগের অসভ্য মানুষেরা প্রকৃতি পুজা করতো।

 

এ রকম ইউরোপে একটা ছিল, ফিস্ট অব লুপারক্যালিয়া (feast of lupercalia)।  লুপারক্যালিয়া উৎসব। ভারতে ‘বসন্ত বরণ’। পরবর্তীতে এগুলো খৃস্টানাইজ্ড করা হয়।…

ঠিক তেমনই এই লুপারক্যালিয়া উৎসবটা বসন্তের শুরুতে প্রাচীন প্যাগান যুগে ছিল। পাদ্রীরা দেখলেন, এটাকে যদি একটা ধর্মীয় রূপ দিয়ে আমরা করে দিই, তাহলে ধর্মটা সহজ হয়, সহজেই ওরা আমাদের ধর্মে এসে যাবে। এইজন্য ‘সেন্ট  ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ নামে ১৪ ফেব্রুয়ারির এই দিবসের প্রচলন ঘটানো হলো। কিন্তু এই ভ্যালেন্টাইন কোন ভ্যালেন্টাইন, এটা দেখার জন্য আপনারা ইন্টারনেটে যাবেন, উইকিপিডিয়ায় যাবেন। দেখবেন, কোনো ঠিক নেই। এটা মুলত লুপারক্যালিয়া দিবসটাকে খৃস্টানাইজ্ড করা। 

লুপারক্যালিয়া মূলতই একটা প্যাগান উৎসব, প্রকৃতি পূজার উৎসব। এটা পুরোটাই কুসংস্কার। প্রকৃতি পূজারিদের বিশ্বাস অনুযায়ী, বসন্তের শুরুতে উৎসব করলে সারা বছর বসন্তের অনুভূতি বজায় থাকবে! বৈশাখের শুরুতে ‘এসো হে বৈশাখ’ বললে বৈশাখ শুভময় হবে! মূলত প্যাগান যুগের লোকেরা করতো এই ধরনের বিশ্বাস। তারা প্রকৃতিকেই ‘বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করতে পারে’ বলে বিশ্বাস করতো। এ বিশ্বাসের প্রভাব আধুনিক যুগেও বিভিন্নসমাজে বিদ্যমান রয়েছে।…

তথ্যসূত্র: ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ এর ১২-০২-১৬ তারিখের জুমআর খুতবা।

[প্রকাশিতব্য সংকলন গ্রন্থ-ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহ. এর খুতবা সমগ্র

মিম্বরের আহবান-১]

বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?