রিভিউ | আনপ্রটেক্টেড : মিরিয়াম গ্রসম্যান এম.ডি | Unprotected

বই : আনপ্রটেক্টেড – পাঠ প্রতিক্রিয়া!
লেখক : মিরিয়াম গ্রসম্যান এম.ডি
প্রকাশনী : সিয়ান পাবলিকেশন
বিষয় : ইসলামে নারী
অনুবাদক : আশিক আরমান নিলয়, সানজিদা সিদ্দিকী কথা
পৃষ্ঠা : 220, কভার : পেপার ব্যাক, সংস্করণ : 1st Published, 2022
আইএসবিএন : 9789848046135, ভাষা : বাংলা

ষাটের দশকে পশ্চিমে ঘটা যৌন বিপ্লব অনেক আশা আর উৎসাহ নিয়ে এসেছিল। পশ্চিমারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতো ‘দায়িত্বহীন যৌনতা’ তাদের শারীরিক শান্তি পাশাপাশি অফুরন্ত মানসিক শান্তি দান করবে। কিন্তু সময়ে সাথে সাথে চিকিৎসাশাস্ত্র উন্নতি ফলে একদিকে যেমন তাত্ত্বিকভাবে এই ধারনা ভুল প্রমানিত হয় তেমনি বাস্তব ফলাফলও ‘যৌনতা সম্পর্কে পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গি’ বিরুদ্ধেই যায়। কিন্তু ব্যক্তিস্বাধীনতা, উদারনৈতিকতা মত পবিত্র বিশ্বাস এর কাছে মাথা নত করতে হয় পরিক্ষালব্ধ জ্ঞান ও বাস্তবতা কে। তাছাড়া রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ও অর্থনৈতিক কারণে ধামাচাপা পড়ে যায় “শারিরীক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর দায়িত্বহীন যৌন সম্পর্কের নেতিবাচক প্রভাব” সংক্রান্ত আলোচনা। 
একদিনে চেম্বারে রোগীদের কান্না অন্যদিকে স্কুল-কলেজ, এমনকি পুরুষ্কারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য সংস্থার ‘অপর্যাপ্ত ও মতাদর্শ’ প্রভাবিত 
‘স্বাস্থ্যশিক্ষা’ দেওয়া ভুল তথ্য লেখককে বইটা বাধ্য করে। লেখকের ভাষায় “আমার পেশা ছিনতাই হয়ে গেছে। আমার রোগীরা মারা যাচ্ছে। তারা প্রাই কাঁদত। নিজের অজান্তে কাঁদতাম আমিও। আমি বিরক্ত”। অবশ্য প্রথমে পলিটিক্যাল ইনকারেক্ট হওয়ার ভয়ে নাম প্রকাশ করছিলেন না কিন্তু পরে আরো কিছু গবেষকদের কাছ থেকে উৎসাহ পেয়ে নামটা প্রকাশ করে। বইটা মূলত “ভুল তথ্য জানার কারণে আক্রান্ত রোগী কান্না ও প্রচলিত স্বাস্থ্যশিক্ষার” প্রতি লেখকের দুঃখ ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। 

আনপ্রটেক্টেড মূল বই পরিচিতি
মূল বইটা মোট ৮ টি অধ্যায়ে বিভক্ত। প্রতিটা অধ্যায়ের প্যাটার্ন প্রায় এক, তবে টপিক ভিন্ন। প্রতিটা অধ্যায়ে লেখক প্রথমে তাকে কাঁদানো একজন রোগীদের কথা বর্ণণা করেছেন। তারপর আলোচনা করেছেন দেশে এমন রোগী সংখ্যা কত। তাদের এই অবস্থার জন্য কীভাবে মতাদর্শ প্রভাবিত স্বাস্থ্যসংস্থা গুলো দায়ী। অথচ তাদের উচিত ছিল জনগণকে সঠিক তথ্য সরবরাহ করা। কীভাবে স্কুল, কলেজ এ পাওয়া ভুল তথ্যর কারণে তার রোগীদের আজ এই করুন অবস্থা। তারপর শারীরিক ও মানসিক গঠনের কারণে কেন লাগামহীন যৌনতা, একাধিক সঙ্গী, ও অন্যন্য বিকৃত যৌনতা কেন মানুষের সহ্য হয় না তা নিয়ে কিছু চিকিৎসাশাস্ত্র সংক্রান্ত আলোচনা করেছেন।তাছাড়া কীভাবে স্কুল কলেজের সিলেবাসে কিংবা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে এই তথ্য গুলো নেই তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দেখিছেন কিছু ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ও। অন্য রোগের বেলায় প্রতিরোধে জন্য ব্যাক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করলেও মারাত্মক যৌনরোগ গুলো কে দেখানো হয় হালকা হিসাবে। মারাত্মক রোগ গুলোকে “সবার হয়, একদিন না একদিন হতো ‘ ইত্যাদি বলে স্বাভাবিককরণ করা হয়। ১ম ও ২য় অধ্যায়ে আলোচনা করেছেন “দায়িত্বহীন যৌন সম্পর্ক ও এর ফলে সৃষ্ট মানসিক সমস্যা নিয়ে।”
৩য় অধ্যায়টা হলো ” স্রষ্টায় বিশ্বাস কীভাবে মানসিক শান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে”।৪র্থ ও ৫ম অধ্যায় “এইডস, সমকামীতা,ও মানসিক অশান্তি ” নিয়ে। ৬ষ্ঠ অধ্যায় ” গর্ভপাত ও গর্ভপাত পরবর্তী মানসিক অশান্তি নিয়ে “। ৭ম ও ৮ম অধ্যায় হলো ” গর্ভধারণে নারীদের দেরি ও এর ফলে তৈরি হওয়া মানসিক সমস্যা সংক্রান্ত আলোচনায়। মোট কথা বইটা পড়লে পাঠক পশ্চিমা বিজ্ঞান যে স্পষ্ট ও সচ্ছ না তা উপলব্ধি করতে পারবেন, বুঝতে পারবে ব্যাক্তি স্বাধীনতার স্লোগানে প্রচ্যে রাষ্ট্রগুলো কে এই সংস্কৃতি আমদানির ভয়াবহ। বুঝতে পারবেন যৌনতা ও মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য ইসলাম সংস্কৃতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?