যে দুআ কবুল হবেই : শাইখ আব্দুর রাযযাক বিন মুহসিন আল বাদার | Je Duwa Kobul Hobei

  • বই : যে দুআ কবুল হবেই
  • লেখক : শাইখ আব্দুর রাযযাক বিন মুহসিন আল বাদার
  • প্রকাশনী : দারুল কারার পাবলিকেশন্স
  • বিষয় : দুআ ও যিকির
  • অনুবাদক : শাইখ মুহাম্মাদ ইমরান বিন ইদরিস
  • সম্পাদক : শাইখ আব্দুল্লাহ শাহেদ মাদানী
  • পৃষ্ঠা : 56

إن الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله ومن والاه وبعد.
আলহামদুলিল্লাহ! প্রশংসা মাত্রই এক ও অদ্বিতীয় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য। সালাত ও সালাম মুষলধারে বর্ষিত হোক আমাদের শ্রেষ্ঠ নেতা মুহাম্মদ, তাঁর পরিবার, তাঁর সহচর ও অনুসারীদের উপর।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানবজাতিকে প্রেরণ করেছেন একমাত্র তারই ইবাদত করার জন্য। আল্লাহ তাআলার ইবাদতের মধ্যে উত্তম একটি ইবাদত হলো তার নিকট দোয়া করা। মহান আল্লাহর বাণী,
(وإذا سألك عبادي عني فإني قريب * أجيب دعوة الداع إذا دعان * فليستجيبوا لي وليؤمنوا بي لعلهم يرشدون
আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।
১. সূরাহ বাকারাহ ২: ১৮৬ – যে দোয়া কবুল হবেই
হাদীসে এসেছে দোয়াই ইবাদত,
عن النعمان بن بشير ، عن النبي ﷺ قال ” الدعاء هو العبادة «قال ربكم ادعوني أستجب لكم “
নু’মান ইবনু বাশীর সূত্রে বর্ণিত। নবী বলেছেন, দোয়া একটি ‘ইবাদত। “তোমাদের রব বলেছেন : তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিবো”।
দোয়া শুধু ইবাদতই নয়। বরং আল্লাহর নিকট সম্মানিত ফযীলতপূর্ণ
একটি বিষয়। হাদীসে এসেছে,
عن أبي هريرة ، عن النبي ﷺ قال ” ليس شيء أكرم على الله من الدعاء “
আবূ হুরাইরাহ হতে বর্ণিত। নবী বলেন, আল্লাহ তা’আলার নিকট
দোয়ার চেয়ে কোনো জিনিস বেশি সম্মানিত নয়।
সুতরাং ইবাদতের মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত হলো দোয়া করা। আমি অধীন এ সম্পর্কিত শাইখ আব্দুর রাজ্জাক বিন আব্দুল মুহসীন আল-বাদ্র রচিত ১, ১৬llelell অতি মূল্যবান এ বইটি অনুবাদ করতে পেরে আবারও মহান আল্লাহর প্রশংসা আলহামদুলিল্লাহ।
এই বইটিতে লেখক দোয়া কবুল হওয়ার জন্য মুসলিম ব্যক্তির মাঝে যে সমস্ত বৈশিষ্ট্য থাকা জরুরী সে সমস্ত শর্ত, পদ্ধতি ও সময় সম্পর্কে অতি চমৎকার উপকারী আলোচনা করেছেন।
বইটিতে উল্লেখিত শর্ত, পদ্ধতি ও সময়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে কেউ যদি দোয়া করে তাহলে তার দোয়া আল্লাহ ফেরত দেবেন না। কেননা আল্লাহ তাআলা
– v ২. সূরা আল-মু’মিন ২৩ ৬০। আবু দাউদ ১৪৭৯, তিরমিযী ২৯৬৯, আদাবুল ৭১৪, আল্লামা আলবানী
২৫ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। ৩. আদাবুল মুফরাদ ৭১২, সহীহ ইবনু হিব্বান ৮৭০, আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।
যে দোয়া কবুল হবেই কারো চাওয়াকে অপূর্ণ রাখতে লজ্জাবোধ করেন। তার দোয়া কবুল হবেই হবে হয়তো সে যা চাচ্ছে তা দুনিয়াতেই পাবে নয়তো তার এই দোয়ার বদৌলতে তার কোনো বিপদ দূর করা হবে অথবা তার এই দোয়ার প্রতিদান তাকে পরকালে দেওয়া হবে। তবে তার দোয়া কবুল হবেই হবে ইনশাআল্লাহ।
হাদীসে এসেছে,
عن أبي هريرة ، قال : قال رسول الله ﷺ : ” ما من رجل يدعو الله بدعاء إلا استجيب له فإما أن يعجل له في الدنيا وإما أن يدخر له في الآخرة وإما أن يكفر عنه من ذنوبه بقدر ما دعا ما لم يدع بإثم أو قطيعة رجم أو يستعجل ” . قالوا يا رسول الله وكيف يستعجل قال ” يقول دعوت ربي فما استجاب لي ” .
আবূ হুরাইরাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহানবী শু বলেছেন, যে কোন ব্যক্তি আল্লাহর নিকট কোন দোয়া করলে তার দোয়া কবুল হয়। হয়তো বা সে দুনিয়াতেই তার ফল পেয়ে যায় অথবা তা তার আখিরাতের পাথেয় হিসেবে জমা রাখা হয় অথবা তার দোয়ার সম পরিমাণ তার গুনাহ মাফ করা হয়, যতক্ষণ না সে পাপ কাজের অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার দোয়া করে অথবা দোয়া কুবলের জন্য তাড়াহুড়া করে। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তাড়াহুড়া করে কিভাবে? তিনি বলেন, সে বলে, আমি আমার প্রতিপালকের নিকটে দোয়া করেছিলাম, কিন্তু আমার দুআ তিনি কবুল করেননি।
“হয়তো বা তার দোয়ার সমপরিমাণ গুনাহ মাফ করা হয়” এই অংশ
ব্যতীত হাদীসটি সহীহ ।
৪. তিরমিযী ৩৬৯৮
৫. সিলসিলাহ আহাদীসুয যঈফাহ হা. ৪৪৮৩। যে দোয়া কবুল হবেই
সময় স্বল্পতা, শত সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দারুল কারার পাবলিকেশন্স বইটিকে পাঠক মহলে পেশ করেছে এই জন্য পাবলিকেশন্সের প্রতি রইল অসংখ্য ধন্যবাদ। ধন্যবাদ জানাই তাদেরকে যারা আমাকে এতদূর পর্যন্ত আসতে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছে, বিশেষ করে পাবলিকেশন্সের পরিচালক সম্মানিত আল-আমীন বিন ইউসুফ (হাফি.)-কে যিনি আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাকে বাস্তবে রূপ দিতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে পরামর্শ ও উৎসাহ প্রদান করেছেন এবং বইটি পাঠক মহলে পেশ করতে যাবতীয় কার্যাবলী সম্পাদন করেছেন। আল্লাহ তাআলা তাদের সকলকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমীন!!
আশা করি পাঠকবৃন্দ বইটি পড়ে তদানুযায়ী দোয়া করত আল্লাহর নিকট থেকে তার কাঙ্ক্ষিত বস্তু চেয়ে নিতে সচেষ্ট হবেন। আল্লাহুম্মা আমীন।
والله الموفق والمستعان وعليه التكلان
বিনীত মুহাম্মাদ ইমরান বিন ইদরিস
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
«إن ربي لسميع الدعاء
নিশ্চয় আমার রব আহ্বান শ্রবণকারী।
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
(وإذا سألك عبادي عني فإني قريب * أجيب دعوة الداع إذا دعان فليستجيبوا لي وليؤمنوا بي لعلهم يرشدون )
আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
ادعوا ربكم تضرعا وخفية : إنه لا يحب المعتدين * ولا تفسدوا في الأرض بعد إصلاحها وادعوه خوفا وطمعا : إن رحمت الله قريب من المحسنين )
তোমরা বিনিতভাবে এবং গোপনে তোমাদের রবকে ডাক। নিশ্চয় তিনি সীমালংঘনকারীদের পছন্দ করেন না। আর যমিনে শান্তি স্থাপনের পর তোমরা সেখানে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না। আর আল্লাহকে ভয় ও আশা নিয়ে ডাক। নিশ্চয় আল্লাহর অনুগ্রহ সৎকর্মশীলদের খুব নিকটে। *
-V ৭. সূরাহ ইব্রাহীম ১৪৩৯
৮. সূরাহ বাকারাহ ২: ১৮৬
৯. সূরাহ আল-আ’রাফ ৫ : ৫৫-৫৬ – যে দোয়া কবুল হবেই
এ বিষয়ে আল-কুরআনুল কারীমে আরো অনেক আয়াত রয়েছে।
আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দাদেরকে দোয়া করার জন্য উৎসাহ প্রদান করেছেন এবং আগ্রহী করে তুলেছেন যদিও তিনি তাদের ও তাদের দোয়া থেকে সম্পূর্ণরূপে অমুখাপেক্ষী। যেমনটি হাদীসে কুদসীতে এসেছে,
عن أبي ذر عن النبي ﷺ فيما روى عن الله تبارك وتعالى أنه قال : “يا عبادي إني حرمت الظلم على نفسي وجعلته بينكم محرما فلا تظالموا، يا عبادي كلكم ضال إلا من هديته فاستهدوني أهدكم، يا عبادي كلكم جائع إلا من أطعمته فاستطعموني أطعمكم، يا عبادي كلكم عار إلا من كسوته فاستكسوني أكسكم، يا عبادي إنكم تخطئون بالليل والنهار وأنا أغفر الذنوب جميعا فاستغفروني أغفر لكم، يا عبادي إنكم لن تبلغوا ضري فتضروني ولن تبلغوا نفعي فتنفعوني، يا عبادي لو أن أولكم وآخركم وإنسكم وجنكم كانوا على أتقى قلب رجل واحد منكم ما زاد ذلك في ملكي شيئا، يا عبادي لو أن أولكم وآخركم وإنسكم وجنكم كانوا على أفجر قلب رجل واحد ما نقص ذلك من ملكي شيئا، يا عبادي لو أن أولكم وآخركم وإنسكم وجنكم قاموا في صعيد واحد فسألوني فأعطيت كل إنسان مسألته ما نقص ذلك مما عندي إلا كما ينقض المخيط إذا أدخل البحر، يا عبادي إنما هي أعمالكم أحصيها لكم ثم أوفيكم إياها فمن وجد خيرا فليحمد الله ومن وجد غير ذلك فلا يلومن إلا نفسه”.
আবূ যার থেকে বর্ণিত যে, নবী বলেন : আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, ওহে আমার বান্দারা! আমি আমার নিজ সত্তার উপর অত্যাচারকে হারাম করে নিয়েছি এবং তোমাদের পরস্পরের মধ্যেও তা হারাম বলে ঘোষণা করছি। অতএব তোমরা একে অপরের উপর অত্যাচার করো না। হে আমার বান্দারা! তোমরা সবাই ছিলে পথভ্রষ্ট, তবে আমি যাকে সুপথ দেখিয়েছি সে ব্যতীত। তোমরা আমার কাছে হিদায়াত প্রার্থনা করো, আমি তোমাদের হিদায়াত দান করব। হে আমার বান্দারা! তোমরা সবাই ক্ষুধার্ত, তবে আমি যাকে খাদ্য দান করি সে ব্যতীত। তোমরা আমার কাছে আহার্য চাও, আমি তোমাদের আহার করাব। হে আমার বান্দারা! তোমরা সবাই বস্ত্রহীন, কিন্তু আমি যাকে পরিধান করাই সে ব্যতীত। অতএব তোমরা আমার কাছে পরিধেয় চাও, আমি তোমাদের পরিধান করাব। হে আমার বান্দারা! তোমরা রাত-দিন অপরাধ করে থাকো। আর আমিই সব অপরাধ ক্ষমা করি। সুতরাং তোমরা আমার কাছে মাগফিরাত প্রার্থনা করো, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিব। হে আমার বান্দারা! তোমরা কখনো আমার অনিষ্ট করতে পারবে না, যাতে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হই এবং তোমরা কখনো আমার উপকার করতে পারবে না, যাতে আমি উপকৃত হই।
হে আমার বান্দারা! তোমাদের আদি, তোমাদের অন্ত, তোমাদের মানুষ ও জিন জাতির মধ্যে যার অন্তর আমাকে সবচেয়ে বেশি ভয় পায়, তোমরা সবাই যদি তার মতো হয়ে যাও তাতে আমার রাজত্ব একটুও বৃদ্ধি পাবে না। হে আমার বান্দাগণ! তোমাদের আদি, তোমাদের অন্ত, তোমাদের সকল মানুষ ও সকল জিন জাতির মধ্যে যার অন্তর সবচাইতে পাপিষ্ঠ তোমরা সবাই যদি তার মতো হয়ে যাও তাহলে আমার রাজত্ব কিছুমাত্র হ্রাস পাবে না। হে আমার বান্দা! তোমাদের আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত সকল মানুষ ও জিন যদি কোনো বিশাল মাঠে দাঁড়িয়ে সবাই আমার কাছে আবদার করে আর আমি প্রত্যেক ব্যক্তির চাহিদা পূরণ করি তাহলে আমার কাছে যা আছে তাতে এর চাইতে বেশি হ্রাস পাবে না, যেমন কেউ সমুদ্রে একটি সূঁচ ডুবিয়ে দিলে যতটুকু তা থেকে হ্রাস পায়। হে আমার বান্দারা। আমি তোমাদের ‘আমলই তোমাদের জন্য সংরক্ষিত রাখি। এরপর পুরোপুরিভাবে তার বিনিময় প্রদান করে থাকি। সুতরাং যে ব্যক্তি কোনো কল্যাণ অর্জন করে সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে। আর যে তা ব্যতীত অন্য কিছু পায়, সে যেন নিজেকেই দোষারোপ করে।
এতো কিছু সত্ত্বেও বান্দারা যেন তার নিকটে চায় এটা তিনি পছন্দ করেন। দোয়া করার প্রতি একজন বান্দা যত বেশি গুরুত্ব দেবে, সে আল্লাহ তা’আলার ভালোবাসাও তত বেশি পাবে। এমনকি রাসূলুল্লাহ বলেছেন,
“ليس شيء أكرم على الله تعالى من الدعاء”.
আল্লাহর নিকট দোয়ার চেয়ে অধিক মর্যাদাপূর্ণ কোনো কিছু নেই।”
রাসূলুল্লাহ আরো বলেন, ” lead a jis pa যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট চায় না, আল্লাহ তার উপর রাগান্বিত হন। ১২
وبني أدم حين يسأل يغضب…
الله يغضب إن تركت سؤاله…
আল্লাহর নিকট না চাইলে তিনি রাগ করেন আর বনী আদম তথা মানুষের নিকট কোনো কিছু চাওয়া হলে সে রাগ করে। ১৩
সুতরাং বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহ তাঁর নিকট প্রার্থনাকারীদেরকে কতই না ভালোবাসেন। তিনি তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তিনি তাদের ডাকে সাড়া দেবেন, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবেন এবং তাদের কাঙ্ক্ষিত বস্তু প্রদান করবেন— যখন তাদের দোয়ার মাঝে শরয়ী
১০. সহীহ মুসলিম ২৫৭৭
১১, তিরমিযী ৩৩৭০, আলবানী তার সহীহুল জামে (৫৩৯২) গ্রন্থে একে হাসান বলে মন্তব্য করেছেন। ১২. তিরমিযী ৩৩৭৩, আলবানী তার সহীহুল জামে (২৪১৮) গ্রন্থে একে হাসান বলে মন্তব্য করেছেন। ১৩. শুআবুল ঈমান ১১00 যে দোয়া কবুল হবেই
শর্তসমূহ পাওয়া যাবে এবং দোয়া কবুলের বাধা ও প্রতিবন্ধকসমূহ দূরীভূত হবে।
আল্লাহর কিতাব কুরআনে ও এবং সুন্নাতে রাসূল হাদীসে অনেক দলীল রয়েছে যেগুলো প্রমাণ করে যে, মুস্তাজাব দোয়া অর্থাৎ যে দোয়া অবশ্যই কবুল হবে এমন দোয়ার জন্য বেশ কিছু মূলনীতি রয়েছে। দোয়া করার সময়ে সেসব মূলনীতিসমূহ মেনে দোয়া করা অবশ্য কর্তব্য। আর কিছু প্রতিবন্ধক আছে যেগুলো থেকে সতর্ক থাকাও জরুরী, যাতে তার দোয়াকে ফিরিয়ে দেয়া না হয় এবং প্রত্যাখ্যান করা না হয়।
আহ্বানকারীর জন্য যেসব বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব প্রদান করা জরুরী সেসব বিষয়ের মধ্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ সম্পর্কে ইবনুল কাইয়ূম একটি চমৎকার সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেছেন যা খুবই কল্যাণকর ও উপকারী। অতঃপর তিনি দোয়ার ক্ষেত্রে এই মূলনীতি বর্ণনা করে যে কথার দ্বারা তার আলোচনা শেষ করেছেন, তা হচ্ছে :
«فإن هذا الدعاء لا يكاد يرد أبدا»
এই (মূলনীতিসমূহ মেনে) প্রার্থনাকৃত দোয়া কখনোই ফিরে দেওয়া হয় না।
তার আলোচনা ছিল নসীহত ও কল্যাণে ভরপুর। তার কথাগুলোর তালীক ও ব্যাখ্যাসহ প্রচার-প্রসার করা প্রয়োজন যেন সেসবের লক্ষ্য উদ্দেশ্য এবং তার ব্যাপক উপকারীতা আমাদের নিকট স্পষ্ট হয়ে যায়। তাই শুরু থেকেই তাঁর কথাগুলিকে পূর্ণাঙ্গভাবে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
ইমাম ইবনুল কাইয়ুম বলেন, যখন দোয়া করার সাথে নিম্নোক্ত বিষয়সমূহ একত্রিত হবে –
১৪. আল-জাওয়াবুল কাফী ১৭ যে দোয়া কবুল হবেই ১. যা চাওয়া হচ্ছে সে বিষয়ে মন স্থির রাখা এবং যাবতীয় মনোযোগ তাতেই নিবদ্ধ করা।
২. দোয়া কবুলের ছয়টি সময়ের কোনো একটি সময়ে দোয়া করা।
সেগুলো হলো—
(ক) রাতের শেষ তৃতীয়াংশ,
(খ) আযানের সময়,
(গ) আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়,
(ঘ) ফরজ সালাতের শেষ অংশ,
(ঙ) জুমু’আর দিন ইমাম মিম্বারে ওঠা থেকে সালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত,
(চ) আসরের সর্বশেষ সময়।
৩. অন্তরে একাগ্রতা নিয়ে আসা, প্রভুর সামনে নিজেকে পূর্ণরূপে সঁপে দেয়া, তার প্রতি নত হওয়া, তার অনুগত হওয়া, বিনয়ী ও নম্র হওয়া।
৪. দোয়াকারী কিবলা মুখী হবে।
৫. দোয়া করার সময় পবিত্র অবস্থায় থাকা।
৬. আল্লাহর নিকট দুই হাত তুলে দোয়া করা।
৭. দোয়া করার পূর্বে আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান বর্ণনা করা।
৮. অতঃপর তার নবী মুহাম্মাদ এর উপর দরূদ পড়ে দোয়া শুরু করা।
৯. দোয়া করার পূর্বে তাওবা এবং ইস্তেগফার করা। যে দোয়া কবুল হবেই
১০. দোয়ার সাথে লেগে থাকা, কিন্তু দোয়া কবুলের জন্য তাড়াহুড়া না করা।
১১. দোয়া করার সময় কাঙ্ক্ষিত বস্তু পাওয়ার প্রবল আশা এবং আল্লাহর শাস্তির ভয় রাখা।
১২. আল্লাহর তা’আলার নাম ও গুণাবলীসমূহ এবং তার তাওহীদের
ওসীলা দিয়ে দোয়া করা।
১৩. দোয়া করার পূর্বে কিছু দান-সাদাকা করা।
এই ১৩টি বিষয় যদি দোয়ার মাঝে থাকে তাহলে এই দোয়া কখনোই ফিরিয়ে দেয়া হবে না, অর্থাৎ কবুল হবেই; বিশেষ করে যে দোয়াগুলো কবুল হওয়ার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সংবাদ দিয়েছেন এবং যে দোয়াগুলোর শব্দে ইসমে আযম থাকে। ১৫
১৫. আল-জাওয়াবুল কাফী ১৬-১৭ পৃষ্ঠা
Collect This Original Book Je Duwa Kobul Hobei
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?