প্রচ্ছদ টি খেয়াল করুন । কমান্ডোটির হাতে সুইজারল্যান্ডের তৈরি ব্রুগার এন্ড থমেট এমপি 9 সাবমেশিন গানটি শোভা পাচ্ছে । সম্ভবত মাথায় সাপ্রেসর মোড়ানো । রেড ডট সাইট সহ লেজার এইম পয়েন্টার ও টেকটিক্যাল ফ্ল্যাশলাইট সমৃদ্ধ দারুন এক মিনিয়েচার। নাজিম উদ্দিনের অপারেশন করাচি টাইপ থ্রীলার ট্রিলার হবে হয়তো । তবে এইরকম ধারনা করিলে আপনার জন্য এক কোষ নেগেটিভ রেসপন্স ব্রো …😆 বইটি মূলত নেভি সিল কমান্ডো অফিসারের আত্ম উপলব্ধি।এটাকে মোটিভিশনাল বইয়ের ক্যাটাগরিতে ফেললে ভুল হবে ।
লেখক মূলত বুঝাতে চেয়েছেন যে একজন নেভি সিল কমান্ডো যখন তৈরি হয় , যখন সে স্বপ্নের ইনসিগনিয়া তার ইউনিফর্ম এ ব্যবহার করার অনুমতি লাভ করে এতে সবাই খুশি হলেও নেভি সিল কমান্ডো বুঝে যে এটা অর্জন করতে তাকে -হেল উইকে-র মতো এক ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন পাড়ি দিতে হয়েছে । শারীরিক সক্ষমতার সবোর্চ্চ পরাকাষ্ঠা অর্জন করতে হয়েছে । ফুলফিল হেভি গিয়ার পড়ে আর্কটিকে ডুব দিতে হয়েছে । দাঁতে দাঁত চেপে সমুদ্রের গহীনে ফেড়ে উঠা কোনো অন্ধকার গুহাতে মধ্যরাতে একাকি মানসিক সক্ষমতার পরিচয় দিতে হয়েছে । মাথা ঠান্ডা রেখে ব্ল্যাক শার্ক ,ওয়াইট শার্ক এর সাথে ঝুঝতে হয়েছে । নিজের চেষ্টার সবকিছু দিয়েই কেউ কিছু অর্জন করতে সক্ষম হয় ।
বইটিতে তিনি জীবন ঘনিষ্ঠ দশটি উপদেশ শেয়ার করেছেন নিজের সামরিক জীবনের গভীর অনুধাবন থেকে । প্রত্যেকটি উপদেশ বাস্তবিক কমান্ডো লাইফের ইস্পাত কঠিন উদাহরন দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে উপদেশ গুলো নিছক কোন মোটিভিশন পিল নয় যে শুনে কোন একসময়ে বোমি করে উগড়ে দিব। বরং এটা যে জীবন সাজানোর ,জীবনকে গোছানোর এক অমোঘ নিয়ম যা আমাদেরকে সঠিক ব্যক্তিত্ববান ও আদর্শ মহাপৌরুষ হিসেবে জীবনে অবদান রাখতে সহায়তা করবে । শুরুর উপদেশটা দিয়েছেন ঘুম থেকে উঠে বিছানা গোছানোর মধ্যে দিয়ে যে তোমার দিনটা শুরু হোক সঠিক ভাবে একটি কাজ সম্পন্ন করার মধ্যামে । মূলত সামরিক জীবনে বিছানা গোছানো , বুট জুতা আয়নার মতো পরিষ্কার রাখা , হ্যাভারস্ন্যাক , ড্রয়ার,রুম , আলমিরা ইত্যাদি গোছানোতে দুর্বলতা পেলে ঐ কমান্ডোর ব্যাপক ঠ্যাঙ্গানি আছে । কারন এইগুলো সেল্প ডিসিপ্লিন । যে মানুষ টি নিজের শরীরের উপর ডিসিপ্লিন মেইনটেইন করতে জানেনা । যার আশপাশ অগোছালো থাকে , সে সৈনিকদের ডিসিপ্লিন মেইনটেনেন্স করবে কিভাবে ..!
এরপর সামনে যত আগাবেন তত এমেইজড হবেন ।দুনিয়ার বাস্তবতার সাথে আপনার এডাপ্টিবিলিটি ঈর্ষণীয় বৃদ্ধি পাবে । দুনিয়ার বিপদ, আপদ, সংকট আপনি সহ্য করার হ্যাকস শিখে যাবেন ।
মেইক ইয়োর বেড Video Review
সব যদি বলে দেই হবে … নিজেরা পড়ে বাকিটা নিজেরাই জেনে নিন । মেক ইয়োর বেড উইলিয়াম এইচ ম্যাকরাভেন হার্ডকভার জ্ঞানকোষ প্রকাশনী প্রচ্ছদ মূল্য-২০০ টাকা পৃষ্ঠা সংখ্যা-৯৫
অধ্যায়
এক দিন শুরু হােক একটা সুসম্পন্ন কাজ দিয়ে
পৃথিবীকে বদলাতে চাইলে বিছানা গুছান যত্ন নিয়ে
করােনাডাে, ক্যালিফোর্নিয়া। প্রশান্ত মহাসাগরের তীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে তিন তলা একটি ভবন। বাইরে থেকে দেখতে একদমই সাদামাটা। এটাই ছিল সিল ট্রেইনিংয়ের ব্যারাক। কোনাে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় রাতে জানালগুলাে খােলা থাকত। সমুদ্র থেকে ভেসে আসত প্রকাণ্ড সব ঢেউয়ের বালির ওপর আছড়ে পড়ার শব্দ।
ব্যারাকের কামরাগুলােতে বিলাসের কোনাে ব্যবস্থা নেই। আমিসহ মােট চারজন অফিসার একটা রুমে থাকতাম, সেখানে চারটা খাট আর কাপড়-চোপড় রাখার একটা ক্লজেট বাদে আসবাব বলতে আর কিছু ছিল না। যতদিন ব্যারাকে ছিলাম, ঘুম থেকে উঠে আমার প্রথম কাজ ছিল বিছানা গুছানাে। এরপর বাকি দিন জুড়ে একটার পর একটা চলতে থাকত—ইউনিফর্ম পরিদর্শন, দীর্ঘ দৌড়, লম্বা সাঁতার, বাধা ডিঙ্গানাে—এসব। সাথে সিল ইনস্ট্রাক্টরদের হয়রানি তাে আছেই। মেইক ইয়াের বেড ১৩।
আমাদের রুমে ইনস্ট্রাক্টরের প্রবেশের সাথে সাথে ক্লাস লিডার লেফটেন্যান্ট জুনিয়র গ্রেড ড্যানিয়াল স্টুয়ার্ড সবাইকে সাবধান হতে বলল। চিফ প্যাটি অফিসার আমার দিকে আসছেন দেখে দ্রুত জুতাে পরে দাড়িয়ে গেলাম। বেশ কঠোর এবং আপাত অনুভূতিহীন এই অফিসার সবুজ রঙের মাড় দেওয়া টুপি দিয়ে ইউনিফর্ম পরিদর্শন শুরু করলেন। আগা থেকে গােড়া পর্যন্ত প্রতিটি ইঞ্চি গভীর মনােযােগ নিয়ে পর্যবেক্ষণ করছেন। একে একে দেখছেন, জামা এবং ট্রাউজারের ভাঁজ মিলেছে কি না, বেল্টের পিতল কাচের মতাে চিকচিক করছে কি না, বুট আঙুলের প্রতিবিম্ব দেখা যাওয়ার মতাে ঝকঝকে কি না ইত্যাদি। আমার পােশাকে সন্তুষ্ট হয়ে তিনি এবার বিছানা পরিদর্শনে গেলেন।
বিছানাটাও কামরার মতাে সাদাসিধে। স্টিলের কাঠামাের ওপর
মােড়ানাে থাকে। তার ওপর একটা চাদর। আর তার ওপর স্যান্ডিয়াগাের হিমশীতল সন্ধ্যা কাটানাের জন্য আছে উলের তৈরি ধূসর রঙের একটা কম্বল, যার দুই প্রান্ত তােষকের নিচে পােক্তভাবে এঁটে থাকে। চতুর্ভুজাকারে সুচারুরূপে ভাঁজ করা আরেকটা কম্বল থাকে পায়ের দিকে। আর বিছানার উপরের অংশের মধ্যভাগে থাকে লাইটহাউস ফর দ্যা ব্লাইন্ডের তৈরি একটা বালিশ। এই বালিশটি অবশ্যই নিচে থাকা কম্বলের সাথে নব্বই ডিগ্রি কোণে থাকতে হয়। এটাই আদর্শ বিছানার বিবরণ, যা থেকে এক ইঞ্চি ব্যত্যয় ঘটলেই আছে কঠোর শাস্তি—হিট দ্যা সার্ফ-এর মানে, সমুদ্রতীরে গিয়ে গড়াগড়ি খেয়ে যেতে হবে মজা করে অবশ্য সুগার কুকিও বলা হয়। ১৪ মেইক ইয়াের বেড
যা হােক, এবার বিছানা পরিদর্শনের পালা। আমি অনড় থেকে আড়চোখে দেখতে পাচ্ছি—তিনি বেশ ক্লান্তির সাথে আমার বিছানার দিকে তাকালেন। একে-একে বিছানার চাদরের কোনা, কম্বল, বালিশ সব ঠিকমতাে গুছানাে আছে কি না পরখ করে দেখছেন। পরক্ষণে পকেট থেকে একটা কয়েন বের করে টস করতে লাগলেন, বেশ কয়েকবার। এবার শেষ বারের মতাে কয়েনটা ছুড়ে মারলেন উপরের দিকে। বিছানার ওপর কয়েকবার লাফাল কয়েনটা। তারপর সেখান থেকে তুলে নিলেন হাতে।
এরপর আমার দিকে ফিরে চোখে চোখ রাখলেন আর মাথা নাড়ালেন—এর বেশি কিছু নয়। আমি অবশ্য কখনাে তাকে কথা বলতে দেখিনি। এত সূক্ষ্মভাবে বিছানা তৈরি করাটা তার কাছে বিশেষ কিছু নয়, সেহেতু প্রশংসা করাটাও অনুচিত—এটা ধরেই নিয়েছি। বিছানা গুছানাের কাজটা দিয়ে আমার দিন শুরু হয়। দিনের একটা সুন্দর শুরু খুঁজে পাওয়ার জন্য কাজটা ঠিকভাবে করা গুরুত্বপূর্ণ। উপরন্তু, এই কাজ নিয়মানুবর্তিতাকে প্রকাশ করে, প্রকাশ করে গভীর মনােযােগ ও সুচারুরূপে কাজ করার সক্ষমতা। দিনশেষে যাতে বলা যায়, অন্তত একটা কিছু ঠিকভাবে করেছি, যেটা নিয়ে আমি গর্ব করতে পারি।
মার্কিন নৌবাহিনীতে আমি যতদিন ছিলাম, বিছানা গুছানাের কাজটা আমার সাথে ছিল। তখন আমি ইউএসএস গ্রেব্যাক-এ সিল হিসেবে দায়িত্বরত, অসুস্থ অনুভব করায় সাবমেরিনের অভ্যন্তরীণ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার আমাকে প্রতিদিন তাগাদা দিয়ে বিছানা গুছিয়ে নিতেন। বলতেন, যদি বিছানাটাই ঠিকমতাে গুছানাে না থাকে বা চারপাশ অপরিচ্ছন্ন থাকে, তাহলে ভালাে সেবা আশা করি কীভাবে? পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি থাকার এই মানসিকতা মিলিটারি জীবনের পুরােটাজুড়ে খুঁজে পেয়েছি। মেইক ইয়াের বেড ১৫
ত্রিশ বছর পরের ঘটনা। জঙ্গি হামলায় টুইন টাওয়ার ভেঙে পড়েছে, পেনিসেলভেনিয়ায় বিধ্বস্ত হয়েছে যাত্রিবােঝাই বিমান আর ওদিকে পেন্টাগন কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
আমি তখন ভয়াবহ এক প্যারাসুট দুর্ঘটনায় যে আঘাত পেয়েছিলাম, সেটা থেকে সেরে উঠছি। হাসপাতালের একটা বিছানা আমার সরকারি কোয়ার্টারে নিয়ে আসা হয়েছে। সারাটা দিন তখন সে বিছানায় শুয়ে-বসে কাটাচ্ছি। নিজেকে এভাবে দেখতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। মন-প্রাণ দিয়ে চাইছিলাম বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে, চাইছিলাম অন্য সিল সদস্যদের সাথে যােগ দিয়ে শত্রুদের নিঃশেষ করে দিতে।
ততদিনে অসুস্থতাকে অনেকটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। কারাে সাহায্য ছাড়া দাঁড়াতে পারি। সেই সময় উঠে দাঁড়িয়ে প্রথম যে কাজটা করেছি সেটা হলাে বিছানা গুছানাে; যারা দেখতে আসবেন তাদের চোখে যেন খারাপ না দেখায়। আমি যে দুর্ঘটনা কাটিয়ে উঠে নিজের মতাে করে চলা শুরু করেছি, তা বুঝানাের। একটা প্রচেষ্টাও বটে।
৯/১১ দুর্ঘটনার এক মাসের মধ্যে আমাকে বদলি করা হয় হােয়াইট হাউসের নবগঠিত কম্বেটিং টেরােরিজম অফিসে। পরের দুই বছর সেখানেই কাটে।
অক্টোবর, ২০০৩। এবার অস্থায়ী বদলি হিসেবে আমাকে পাঠানাে হয় বাগদাদ এয়ারফিল্ডে। প্রথম কয়েক মাস আমি আর্মিদের বিশেষ খাটে শুয়েছি। প্রতিদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে স্লিপিং ব্যাগটাকে মুড়ানাে ও খাটের এক প্রান্তে বালিশটা রাখা দিয়ে আমার দিন শুরু হতাে।
একই বছরের ডিসেম্বর মাস। সে সময় মার্কিন সৈন্যরা সাদ্দাম হুসেইনকে কারারুদ্ধ করে। কারাবাসকালে তাকেও আর্মিদের সেই
১৬ মেইক ইয়াের বেড বিশেষ খাটে শুতে দেওয়া হয়। সাধারণ সৈন্যদের তুলনায় সে আরামেই থাকত। তার খাটে চাদরের সাথে দেওয়া হতাে একটা কম্বলও। কোনাে সৈন্যের জন্য এটা ছিল বিশেষ কিছু। সৈন্যরা সাদ্দাম হুসেইনের ঠিকঠাক যত্ন নিচ্ছে কি না তা দেখার জন্য আমি মাঝে মাঝে পরিদর্শনে যেতাম। দেখতাম সাদ্দাম হুসেইন অজানা কোনাে কারণে তার বিছানা গুছিয়ে রাখত না। বিছানার পায়ের দিকে চাদর আর কম্বল এলােমেলােভাবে পড়ে থাকত।
পরবর্তী দশ বছরে আমি জাতির কিছু শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সাথে কাজ করার সুযােগ পাই। তাদের মধ্যে জেনারেল, প্রাইভেটস, অ্যাডমিরাল, রাষ্ট্রদূতসহ অনেকেই ছিলেন। তারা প্রত্যেকে দেশের বাইরের বিভিন্ন মিশনে কর্মরত ছিলেন, নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছিলেন বিশ্বব্যাপী মার্কিনিদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার জন্য।
সেখানে জীবন খুব কঠিন। গােটা দিনের মধ্যে আপনি খুব অল্প কিছুই খুঁজে পাবেন, যা আপনার দিনকে সুন্দর করতে পারে। প্রায়শই যুদ্ধক্ষেত্রে চোখের সামনে সৈন্যদের মারা যেতে দেখা যায়। চারদিকে শােকের বন্যা বয় আর দিন হতে থাকে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর। যেন শেষই হতে চায় না। সে দিনগুলােতে দরকার এমন কিছু, যা আপনাকে একটু সতেজতা দিতে পারে, দিতে পারে নতুন করে শুরু করার অনুপ্রেরণা। তা যতই ছােটো হােক না কেন। একইভাবে, সুচারুরূপে বিছানা গুছিয়ে দিন শুরু করাটা তুচ্ছ মনে হলেও এই একটা কাজ দিনশেষে আপনাকে ভরসা দিতে পারে, যােগাতে পারে নতুন দিন শুরু করার আত্মবিশ্বাস। | তাই বলি—যদি নিজের জীবনকে বদলে দিতে চান, অথবা গােটা বিশ্বকে, দিনটা শুরু হােক নিজের বিছানাটাকে সুন্দরভাবে গুছিয়ে!
মেইক ইয়োর বেড – উইলিয়াম ম্যাকরাভেন
অনুবাদ: ইউসুফ মুন্না
মে ১৭, ২০১৪। আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার জন্যে। যদিও আমি একসময় সেখানকারই ছাত্র ছিলাম, কিন্তু ভয় হচ্ছিল সেখানকার ছাত্রছাত্রীরা আমার কথা পছন্দ করবেন কি না। হাজার হোক, একজন মিলিটারি অফিসারের জীবন, যুদ্ধে-কষ্টে ভরপুর। কিন্তু অবাক করে দিয়ে, আমার সে বক্তব্য সবাই খুব ভালোভাবে গ্রহণ করলেন। সেখানে মূলত আমার সিল জীবনের দশটা মূল্যবান শিক্ষা নিয়ে কথা বলেছি। যেগুলো শুনে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে, নিয়মগুলো শুধু সিল প্রশিক্ষণের জন্যই খাটবে। তবে সত্যি বলতে যে কারো জীবনের নানান ক্ষেত্রে প্রয়োগ করার মতো অনেক কিছুই সেখানে ছিল। গত তিন বছরে এমন অনেকের সাথে আমার দেখা হয়েছে, যারা আমার সাথে তাদের জীবনের গল্প ভাগাভাগি করেছেন, বলেছেন হাঙরের ভয়ে পালিয়ে না আসার গল্প, হাল না ছেড়ে দেওয়ার বা ঘণ্টা না বাজানোর গল্প। বলেছেন প্রতিদিন সকালবেলা ঠিকঠাক বিছানা গুছানোর অভ্যাস কীভাবে কঠিন সময় পাড়ি দিতে সাহায্য করেছে, তার গল্প। প্রত্যেককেই কৌতূহলী মনে হয়েছিল। জানতে চেয়েছিল আমার জীবনে এই দশটি শিক্ষার প্রভাব এবং এসবকে কেন্দ্র করে চারদিকে থাকা মানুষগুলো সম্পর্কে, আরও বিস্তৃতভাবে। এই বই সে উদ্দেশ্যকে সফল করার একটা প্রচেষ্টা। বইটির দশটি ভিন্ন ভিন্ন অধ্যায়ে শিক্ষার পাশাপাশি ছোটো ছোটো গল্পও তুলে ধরা হয়েছে। আলোকপাত করা হয়েছে সে সময়ে আমার চারদিকে থাকা মানুষগুলো, তাদের অধ্যবসায় এবং সাহসিকতা সম্পর্কে। আশা করি ছোট্ট বইটা আপনাদের কাছে উপভোগ্য হবে।
—উইলিয়াম এইচ. ম্যাকরাভেন
বইঃ মেইক ইয়োর বেড PDF Download Full No Available
লেখকঃ উইলিয়াম ম্যাকরাভেন
ভাষান্তরঃ ইউসুফ মুন্না
“” যদি পৃথিবীটা বদলাতে চাও তাহলে সকালে উঠে নিজের বিছানা গোছাও””
এই উক্তিটি কয়েকবছর আগে শুনে আমার কাছে খানিকটা ইন্টারেস্টিং লেগেছিল।ভেবেছিলাম বিছানা গোছানোর সাথে পৃথিবী পাল্টানোর আবার কি সম্পর্ক হতে পারে!না বুঝেই শেয়ার করেছিলাম।কিছুদিন আগেই এই বইটি সম্পর্কে জানি এবং দেখলাম যে উক্তিটি এবই থেকেই।সেটার সূত্র ধরেই কেনা ও পড়া।
বইটিতে আমেরিকান নেভি সিলের উচ্চপদস্থ একজন অফিসার তার সিলে প্রশিক্ষন নেয়ার সময়কার কিছু টুকরো টুকরো গল্প এবং সেগুলো থেকে সাধারন মানুষদের জন্য দশটি শিক্ষা বর্ননা করেছেন।যাতে দেখানো হয়েছে কিছু প্রশিক্ষনের কষ্টের কথা,হাঙরের ভয়ে পালিয়ে না আসার গল্প,প্রতিদিন সকালে ঠিকঠাক বিছানা গুছানোর অভ্যাস কিভাবে কঠিন সময় পাড়ি দিতে সাহায্য করেছে তার গল্প।তিনি বলেছেন যে প্রচন্ড ইচ্ছেশক্তির ফলেই একমাত্র কঠিন কাজগুলোকে উৎরানো সম্ভব হয়।তার ট্রেনিং জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এবং ইরাক আফগানিস্তান যুদ্বে কাজ করার সময় তার বিভিন্ন পরিস্হিতির সম্মুখিন হওয়া কিছু বিষয়ের গল্প।ইরাক যুদ্ধে ওসামা বিন লাদেনের ধরা পরার পর একমাস তার অধীনে থাকার সময়ের কিছু বিষয় তিনি এই বইতে বর্ননা করেছেন।
তিনি বলেছেন আত্মবিশ্বাসে বলিয়ান, হার না মানা কিছু সেনাদের গল্প।একজন সেনা যুদ্বে তার দুই পা হারিয়েও কিভাবে নিজেকে পরবর্তী কাজের জন্য তৈরী করেছেন এবং তার অবস্হার জন্য কখনই হতাশ না হয়ে বরং গর্ভিত হয়েছেন সে বিষয়গুলোর গোপন রহস্য।কিভাবে ভুল না করলেও জীবন আমাদের কিছু বিষয়ের মুখোমুখি করে এবং এসময় নিজেকে তৈরি করার কিছু গোপন রহস্য তিনি এই বইতে তার অভিজ্ঞতা থেকে বর্ননা করেছেন।
যারা প্রশাসনের সাথে জড়িত,নানা ঝামেলা এবং ঝুকির মধ্য দিয়ে যেতে হয় এবং নানা কষ্টে হতাশ হওয়া লোকদের জন্য বইটি সম্ভবত কাজে দিবে।