November 30, 2023

মুসলিম প্যারেন্টিং – ডঃ মুহাম্মাদ আব্দুল বারী

বই: মুসলিম প্যারেন্টিং
লেখক: ডঃ মুহাম্মাদ আব্দুল বারী
প্রকাশনী: গার্ডিয়ান পাবলিকেশনস
প্রকাশকাল: ১৫ অক্টোবর, ২০২১
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২০০
নির্ধারিত মূল্য: ২২০ টাকা

যখন একটি শিশুর জন্ম হয়, তখন জন্ম হয় একজন বাবা এবং একজন মা এর। নবজাতক শিশু যেমন ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরে এই জগৎ সম্পর্কে জ্ঞানশূন্য থাকে, ঠিক তেমনই যারা প্রথম পিতা-মাতা হন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারাও প্যারেন্টিং এর জগৎ সম্পর্কে জ্ঞানশূন্য থাকেন। এরপর বাবা-মা যেমন তার শিশু সন্তানকে এই জগৎ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে সহায়তা করেন, তেমনই সেই বাবা-মাকেও প্যারেন্টিং এর জগৎ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের জন্য সহায়তা করার অনেক মাধ্যম রয়েছে। যেমন: প্যারেন্টিং স্পেশালিষ্টদের লেকচার শোনা, প্যারেন্টিং নিয়ে আয়োজিত সেমিনার বা ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করা অথবা প্যারেন্টিং বিষয়ে বই পড়া। আজকে আমি আপনাদেরকে প্যারেন্টিং বিষয়ে একটা চমৎকার বইয়ের খোঁজ জানাবো।

বইটির নাম “মুসলিম প্যারেন্টিং।” এই বইটি লিখেছেন ডঃ মুহাম্মাদ আব্দুল বারী। ডঃ বারী একজন মুসলিম স্কলার এবং একইসাথে তিনি একজন প্যারেন্টিং স্পেশালিষ্ট। তিনি প্যারেন্টিং বিষয়ে নিয়মিত লিখছেন ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এই বিষয়ে বক্তব্য রাখছেন। প্যারেন্টিং বিষয়ে ওনার অনেক লেকচার রয়েছে। ইংল্যান্ডের কিউব পাবলিকেশন্স থেকে প্যারেন্টিং নিয়ে ”A Guide to Parenting in Islam’ শিরোনামে ওনার দুটো সিক্যুয়াল ”Cherishing Childhood, Addressing Adolescence’ প্রকাশিত হয়েছে। মূলত এই দুটি বইকে একসাথে করে বাংলায় “মুসলিম প্যারেন্টিং” নামে প্রকাশ করা হয়েছে। ডঃ বারী বাংলাদেশ এবং পশ্চিমা জীবনধারাকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তাই তিনি এই দুই সমাজব্যবস্থায় প্যারেন্টিং নিয়ে নানা সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে কথা বলেছেন। তার এই বই থেকে দুই সমাজের বাংলা ভাষাভাষী বাবা-মায়েরা উপকৃত হবেন ইন শা আল্লাহ।

পুরো বইটিকে দুই পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রথম পর্বে শৈশবের লালন-পালন নিয়ে এবং দ্বিতীয় পর্বে কৈশোরের পরিচর্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
প্রথম পর্বে লেখক প্যারেন্টিং এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লিখেছেন। বিষয়গুলোর শিরোনাম হলো যথাক্রমে:
★ আল্লাহর পক্ষ থেকে আমানত
★ প্যারেন্টহুড-এর প্রস্তুতি
★ শৈশবকাল এবং স্কুলপূর্ববর্তী সময়
★ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বছরগুলো
★ পারিবারিক পরিবেশ
★ মুসলিম চরিত্র গঠন

প্রথম পর্বের ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় পর্বেও লেখক আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। বিষয়গুলোর শিরোনাম হলো যথাক্রমে:
★ কিশোর বয়সের চ্যালেঞ্জ
★ সামাজিক অসুস্থতার প্রবল আক্রমণ
★ শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের প্রেরণা
★ পারিবারিক পরিবেশ
★ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দিনগুলো
★ দায়িত্ববোধের জগতে

উপরোক্ত শিরোনামের লেখাগুলোতে লেখক বিভিন্ন উপশিরোনামে ধারাবাহিকভাবে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এই আলোচনা থেকে একজন পাঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় জানতে পারবেন। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি বুঝতে পারবেন। অধিকাংশ মানুষ মনে করে সন্তান মায়ের গর্ভে আসলে বা ভূমিষ্ট হলে প্যারেন্টিং শুরু হয়। কিন্তু আসলে প্যারেন্টিং শুরু হয় একজন নারী বা পুরুষ যখন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এই বিষয়টি যখন একজন পাঠক জানবেন, তখন তিনি বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের সময় মানুষটি তার স্বামী বা স্ত্রী হিসেবে কেমন হবে এই চিন্তার পাশাপাশি মানুষটি তার সন্তানের বাবা বা মা হিসেবে কেমন হবে এই চিন্তাটাও করতে পারবেন। মোটকথা বইটি শেখাবে কিভাবে একজন পিতা বা মাতা তার সন্তানের দৈহিক ও আত্মিক উন্নতি নিশ্চিত করতে পারে। আমি মনে করি একজন বাবা অথবা মায়ের প্যারেন্টিং স্কিল ডেভেলপমেন্টে এই বইটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *