মানসিক সুস্থতার সুরক্ষায় আমাদের করণীয় কী?

শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা; দু’টোই আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি অনেক বড় নেয়ামত। মানুষ তার শারীরিক সুস্থতা নিয়ে যতটা ভাবিত হয়- মানসিক সুস্থতা ততই অবহেলিত থেকে যায়। অথচ এই অবাধ তথ্য-প্রযুক্তির যুগে মানুষ হরহামেশাই আক্রান্ত হচ্ছে নানা জাগতিক অস্থিরতায়। সোশাল মিডিয়ায় মানুষ নিজের ব্যক্তিজীবনকে যতটা পাবলিকলি শেয়ার করছে- তত বেশিই সে হচ্ছে সাইবার বুলিইং -এর শিকার। 

আমাদের কাছের কেউ যখন কখনো কোনো বিপদে পড়ে, কিম্বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনে পড়ে বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হয়, দেখা যায় তাদের সমব্যথী হওয়ার পরিবর্তে আমরা বরং তাদেরকেই দোষারোপ করা শুরু করি। কখনো বলি, এটা তোর পাপের শাস্তি, কখনো বলি, তোর সাথে এমনই হওয়া উচিত। তাদের মানসিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা না করে আমরা নানা উপদেশের পসরা সাজিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করি।

একজন ঈমানদানের জান, মাল ও ইজ্জত তার অপর মুমিন ভাইয়ের কাছে নিরাপদ থাকার কথা ছিলো, অথচ সামান্য মতপার্থক্যের দরুন আমরা সোশাল মিডিয়ায় দেখি- একজন মুসলিম তার অপর মুসলিম ভাইকে নিয়ে নোংরা এবং তাচ্ছিল্যপূর্ণ বাক্যবাণ নিক্ষেপ করতে ছাড়ে না। এ ধরণের সাইবার বুলিইং এর শিকার ব্যক্তি নানা ধরণের মানসিক অস্থিরতায় ভোগে; এক পর্যায়ে কেউ কেউ বিষণ্ণতায় ভোগা শুরু করে। 

অশ্লীল গালিগালাজ কখনোই একজন মুমিনের আচরণ হতে পারে না। এ ধরণের ফাসেকী আচরণ থেকে আল্লাহ আমাদের মুসলিম উম্মাহকে হিফাজত করুন। বড়ই দুঃখের বিষয়, আজকাল সোশাল মিডিয়ায় আমাদের মুসলিম ভাইদের ইসলামের স্বার্থে (!) গালিগালাজ করতে দেখা যায়। এতে করে অন্যরা ইসলামের সৌন্দর্য উপলব্ধির বদলে মুসলিমদের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা লাভ করে।

অপর ভাইয়ের সাথে সুন্দর করে হাসাও একধরণের সাদাকা। আপনার স্ত্রী, সন্তানের প্রতি সুন্দর ব্যবহার আপনার প্রতি তাদের হক্ব। আপনার কাছে অন্য ভাইয়ের ইজ্জত আব্রুর সুরক্ষা আপনার প্রতি তার হক্ব। আমাদের বেশিরভাগ মানসিক জটিলতা ও অস্থিরতার কারণ নিহিত আছে আমাদের পারস্পারিক ও সামাজিক সম্পর্ক এবং বোঝাপড়ার জায়গাতে। 

আমাদের সুন্দর পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কগুলোর উন্নয়নে আমাদের আরো আন্তরিক হতে হবে। ইসলামী মুয়ামালাত তথা আদবকেতার চর্চাই পারে আমাদের জীবনকে আরেকটু গোছাতে, আরেকটু স্থিরতা দিতে। আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দিন। আমীন।

বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?