বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের মানুষদের সাহিত্যমুখী করার অন্যতম কাণ্ডারী হুমায়ুন আহমেদ। উপন্যাস, গল্পগ্রন্থ, নাটক,সিনেমা – কি না তৈরি করেছেন তিনি। তবে তিনি যে চারখানা মঞ্চনাটকও লিখেছেন সেটা ক’জন জানে!! তার ই একটি হলো “মহাপুরুষ”।
বইয়ের ভূমিকা থেকে জানা যায়, কোনো এক অজ্ঞাত লোকের বহুদিনের অনুরোধে লিখেছিলেন তার মঞ্চনাটক “মহাপুরুষ”।
বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ অনুসারে নানা সময় নানা মহামানব এই পৃথিবীতে এসেছিলেন মানুষের কল্যাণের জন্য, মানুষকে সত্যের পথে নিয়ে আসার জন্য। তবে বর্তমানের তথাকথিত সভ্য মানুষদের অসভ্য আচরণে তা মোটেও মনে হয় না।
নাটকটিতেও আবির্ভাব ঘটে শ্বেত চাদর পরিধান করা এক ব্যক্তির। যিনি নিজেকে ” মহাপুরুষ” বলে আখ্যায়িত করেন। প্রথমেই সেই মহাপুরুষের পরিচয় হয় এক অন্ধ ভিক্ষুক আর তার মেয়ের সঙ্গে। সারাদিনে দশ টা টাকা না পাওয়া ঐ ভিক্ষুক, ঐ সময়ে সেখানে মদ্যপ অবস্থায় উপস্থিত হওয়া মহাকৃপন যুক্তিবিদ্যার শিক্ষক রমিজ সাহেবের কাছ থেকে পেয়ে যায় ১০০ টাকা। দীর্ঘ সংলাপ ঘটে রমিজ সাহেব ও মহাপুরুষ এর। কিন্তু এরপরই ঘটে আশ্চর্য ঘটনা, বাড়ি ফেরার পর থেকে বদলে যেতে থাকে রমিজ সাহেবের সব কিছু। দীর্ঘদিন ছন্নছাড়া হওয়া তার পরিবারকে আবার ঢেলে সাজাতে চান তিনি। কিন্তু ঘুমালেই তিনি স্বপ্নে দেখেন কোনো এক নারীর কান্না। কে সে নারী, কিইবা হয় তার পরিবারের সঙ্গে!!! কে ছিলো সেই মহাপুরুষ?
✒️হুমায়ূন আহমেদের কালজয়ী লেখাগুলোর মতো এই মঞ্চনাটকটি হয়তো কোনো পাঠককে টানবে না। তবে এই নাটকটির মাধ্যমে হুমায়ূন আহমেদ হয়তো এটাই বোঝাতে চেয়েছেন, আমাদের সকলের জন্যই একজন মহাপুরুষ সুপ্তাবস্থায় থাকে। যখনই তার আগমন ঘটবে তখনই বদলে যায় সবকিছু, সুন্দর হয়ে ওঠে সবকিছু। নিতান্তই ছোট্ট একটি নাটক, তবে বহন করে খুবই গুঢ় অর্থ। সর্বোচ্চ ২০ মিনিটে শেষ করতে পারবেন বইটি। পড়তে পারেন।
নাকটির মঞ্চায়নের ক্ষেত্রে লেখক বলছেন, নাকটটি যেকেউ মঞ্চায়ন করতে পারবে, তবে কোনো সংলাপ পরিবর্তন করা যাবে না এবং নাটকটি অবশ্যই “আগুনের পরশমণি ছোয়াও প্রাণে” গানটি দিয়ে শেষ করতে হবে।
বই: মহাপুরুষ
লেখক: হুমায়ূন আহমেদ
প্রকাশক: জ্ঞানকোষ প্রকাশনী
পৃষ্ঠাসংখ্যা: ৭২
মুদ্রিত মূল্য: ১২০ টাকা
শিমুল চৌধুরী
১২ আশ্বিন, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ।